ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ডলারের বিরুদ্ধে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে এশিয়ার মোবাইল ফোনভিত্তিক সেবা?

প্রকাশ: ০৯:২৪ এএম, ২৩ জুলাই, ২০২২


Thumbnail ডলারের বিরুদ্ধে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে এশিয়ার মোবাইল ফোনভিত্তিক সেবা?

মুদ্রার দরে উত্থানপতন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। প্রায়ই এই দর উঠানামা করে। তবে এই পরিবর্তন কোনও কোনও সময় আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং শিল্পে বড় ধরনের এবং স্থায়ী প্রভাব ফেলে। এখানে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৬৭ সালে ব্রিটিশ পাউন্ডের অবমূল্যায়নের বিষয়টি। তখন মুদ্রাটির দরের পতন ছিল ব্রেটন-উডস সম্মেলন পরবর্তী যুগের দিনবদলের প্রতীক। 

ওই ঘটনার পর এশিয়ায় মার্কিন ডলারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বলা যায়, তখন এশিয়ায় ডলারের চাহিদা হয়ে ওঠে আকাশচুম্বী। সে সময় ডলার নিয়ে এই উন্মাদনার সুযোগ নেন একজন ডাচ মুদ্রা ব্যবসায়ী। তার নাম ডিক ভ্যান ওয়েনেন। তিনি ছিলেন ব্যাংক অব আমেরিকার সাথে সংশ্লিষ্ট। এ কারণে সহজেই সুযোগটি নিতে পারেন ডিক ভ্যান ওয়েনেন। সিঙ্গাপুরে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন একটি আন্তঃসীমান্ত আর্থিক লেনদেনের সংস্থা। ওই ঘটনার অর্ধ-শতক বছরেরও বেশি সময় পর আরও একবার মুদ্রা-নির্ভরশীলতা নিয়ে আলোচনার পাদপ্রদীপে ফিরেছে মার্কিন ডলার।

ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বৃদ্ধিতে ২০ বছরের মধ্যে মার্কিন ডলারের মূল্য এখন সর্বোচ্চ। মূলত দুটি লক্ষ্য নিয়ে ডলারকে শক্তিশালী করেছে ওয়াশিংটন। এর একটি হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি কমানো। আর অন্যটি হচ্ছে- ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শায়েস্তা করা। আমেরিকার এই পদক্ষেপ ইতোমধ্যেই বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যতের ওপর দীর্ঘ ছায়া ফেলেছে।

তবে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনটা এবার ডলারের পক্ষে যাবে না। কারণ, এশীয় ব্যাংকগুলো ডলারের চাহিদা কমাতে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চাহিদা কমানোর এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘ডি-ডলারাইজেশন’। এটি হচ্ছে- আমদানি ও রফতানিকারকরা কোন মুদ্রায় মূল্য চালান (ইনভয়েস) লেনদেন করবেন তা আর্থিক সেবাদাতারা নির্ধারণ করে দিতে পারে না।

এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা শক্তিশালী ডলারে বিনিয়োগ করাই যদি নিরাপদ মনে করেন-  তাতেও তাদের বাধ সাধার সুযোগ কম। তবে অর্থায়নকারীরা যেসব আন্তঃসীমান্ত লেনদেনে মার্কিন মুদ্রায় বিনিময় তেমন প্রয়োজন নেই, সেখানে এর সরবরাহ কমাতে পারে।

যেহেতু বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। তাই প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এটি সহজেই করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গে’ একটি বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য প্রতিবেদন লিখেছেন অ্যান্ডি মুখার্জি। প্রতিবেদনের শিরোনাম, “দ্য মোবাইল ফোন ইজ এশিয়া’স হেজ এগেইনস্ট দ্য ডলার”।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে প্রথম মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লেনদেন শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়া। তার এক দশক পর চালু হয় চীন ও ভারতে। এরপর কিউআর কোড স্ক্যানের উদ্ভব এবং স্মার্টফোন হাতে হাতে চলে আসায় দ্রুত এই সেবার বিস্তার ঘটে। এখন এশিয়ার দেশে দেশে মোবাইল ফোন-ভিত্তিক আর্থিক সেবা পেয়েছে বিপুল জনপ্রিয়তা।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গ্রাহকের থেকে সেবা বা পণ্যের দাবিকৃত মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে পাচ্ছেন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। এই অগ্রগতি এতটাই বিস্ময়কর গতিতে হয়েছে যে, ২০২১ সালে বিআই ফাস্ট (BI-FAST) নামক খুচরা লেনদেন ব্যবস্থা চালু করে ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমেরিকায় সরকারিভাবে একই রকম সেবা চালুর প্রস্তাবিত সময়ের (২০২৩ সাল) দুই বছর আগেই তা করা হয়।      

এশিয়ার প্রতিটি দেশ সফলভাবে মোবাইল ফোনের আর্থিক খাতকে বিকশিত করছে। নীতিনির্ধারকরা এখন এই সাফল্যকে এক ছাতার নিচে এনে আরও বড় লেনদেন নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করতে চান। আন্তঃসীমান্ত এ নেটওয়ার্ক দেশগুলোর স্থানীয় লেনদেন ব্যবস্থাকে যুক্ত করবে। খুব শিগগির যা চালু হতে পারে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পাঁচটি বড় অর্থনীতি- ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনে। সম্প্রতি বালিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকারদের বৈঠকে একথা জানিয়েছেন ব্যাংক অব ইন্দোনেশিয়ার গভর্নর পেরি ওয়ারিজো।   

পরিকল্পনা অনুযায়ী, থাইল্যান্ডে কেউ যদি ইন্দোনেশীয় অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করেন- তাহলে এর মূল্য সরাসরি ইন্দোনেশীয় রুপিয়াহ থেকে থাই বাথে রুপান্তরিত হবে। ইন্দোনেশিয়ায় থাই অ্যাপ ব্যবহারেও মিলবে একই সুবিধা। ফলে মাঝখান থেকে দূর হবে ডলারের মধ্যসত্ত্ব ভূমিকা।

আর এমনটি হলে- স্বল্প মূল্যের কেনাকাটার ক্ষেত্রেও, এই লেনদেন ব্যবস্থায় যুক্ত একটি অর্থনীতির ব্যাংক একাউন্ট, বাকি চারটি অর্থনীতির সাথে লেনদেনযোগ্য হবে।

এতে সবচেয়ে সুবিধা মিলবে আঞ্চলিক পর্যটনের বিকাশে। যেমন পর্যটকরা যখন ক্রেডিট কার্ডে মূল্য পরিশোধ করেন তখন তাদের বাড়তি ফি দিতে হয় সেবাদাতা কোম্পানিকে। সঙ্গে ডলারের বিপরীতে নিজ দেশের মুদ্রার অসুবিধাজনক বিনিমর দরেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু নতুন লেনদেন ব্যবস্থায় ইন্দোনেশিয়ায় ভ্রমণকারী সিঙ্গাপুরের কোনও নাগরিক যখন মোবাইল ফোনে পেমেন্ট করবেন- তখন তার ব্যাংক একাউন্ট থেকে সম-পরিমাণ সিঙ্গাপুরি ডলার কেটে নিয়ে তা মার্চেন্ট বা সেবাদাতার একাউন্টে রুপিয়াহ দিয়ে পরিশোধ করা হবে। কিউআর কোডের মাধ্যমেও করা যাবে এ লেনদেন, ফলে তা স্থানীয়ভাবে করা আর্থিক লেনদেনের চেয়ে মোটেও আলাদা কিছু হবে না।  

গত বছর সিঙ্গাপুরের মোবাইলে ব্যাংকিং সেবাদাতা পে-নাউ বিশ্বের প্রথম আন্তঃদেশ সংযোগ স্থাপন করে থাইল্যান্ডের প্রমপট-পে’র সাথে। এতে দেশদুটির মোবাইল ব্যবহারকারীরা সরাসরি নিজেদের মধ্যে লেনদেনের সুযোগ পেয়েছেন। 

আঞ্চলিক এই লেনদেন নেটওয়ার্ক যদি ভৌগলিকভাবে বিস্তার লাভ করে- তাহলে ব্যবসা ও ভোক্তা বান্ধব পেমেন্টের সুযোগ সকলেই নিতে উৎসাহী হবে। কিউআর কোড দিয়ে মূল্য শোধ করায় গোপনও থাকবে মূল্যদাতার ফোন নম্বর। সম্প্রতি এই সুবিধা একে-অপরের ব্যাংকিং সেবা গ্রাহকদের দেওয়া শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড।

তবে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। সবচেয়ে বড় চাপ তৈরি হবে ব্যাংকিং খাতে। প্রতিটি দেশে একটি বড় ব্যাংকিং সংস্থাকে সার্বিক পেমেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হবে। ওই দেশের কোনও গ্রাহক যখন অন্য দেশে গিয়ে কিউআর কোড দিয়ে মূল্য পরিশোধ করবেন- তখন ওই গ্রাহককে অ্যাপ স্ক্রিনে মুদ্রার বিনিময় হার জানাতে হবে সংস্থাটিকে। ভোক্তা যদি ওই হারে মূল্য দিতে সম্মতি দেন- তাহলে ওই গ্রাহকের সেবাদাতা ব্যাংক অন্য দেশের ব্যাংককে টাকা পাঠাবে। দিনে দুইবার মধ্যস্ততাকারী উভয় বৃহৎ ব্যাংককে একে-অন্যের সকল পাওনা অর্থ পরিশোধও করতে হবে।

যদিও প্রক্রিয়াটি চ্যালেঞ্জিং, তবে বেশ সম্ভাবনাময়। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা সব দেশের জন্যই এতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। এরা সকলে যোগ দিলে এটি ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’ এর মতোই লেনদেনের এক বৈশ্বিক জালে রূপ নেবে। এতে ভোক্তারাও যে লাভবান হন- সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের ঘটনা এরইমধ্যে তা প্রমাণ করেছে। 

সূত্র: ব্লুমবার্গ


ডলার   মোবাইল ব্যাংকিং   পর্যটন   অর্থনীতি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ক্ষুধায় বহু মানুষ মারা যেতে পারে সুদানে: জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৪:০০ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে অনাহারে বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি বলেছে, পশ্চিম সুদানের দারফুরে মানুষের অনাহার ঠেকোনোর সময় ফুরিয়ে আসছে। ক্রমবর্ধমান সহিংসতা গোটা জাতিকে শেষ করে দিচ্ছে।

শুক্রবার যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা বলেছে, দারফুর এবং সুদানের অন্যান্য যুদ্ধকবলিত এলাকায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। এসব এলাকায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি না দিলে ক্ষুধায় বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। পরবর্তীতে এই সংঘাত দেশটিতে গৃহযুদ্ধের রূপ নেয়। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে অনেক মানুষ। যুদ্ধের কারণে দেশটির কৃষি উৎপাদন ৭৮ শতাংশ কমে গেছে।

ডব্লিউএফপির পূর্ব আফ্রিকার পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড শুক্রবার বলেছেন, খাদ্যাভাবে মানুষ বাদামের খোসা খেতে বাধ্য হচ্ছে। শিগগিরই তাদের কাছে সহায়তা না পৌঁছালে দারফুর ও সংঘাত বিধ্বস্ত সুদানের অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক অনাহার এবং মৃত্যুঝুঁকি দেখতে হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের (আইসিআরসি) দুজন কর্মী দক্ষিণ দারফুরে অস্ত্রধারীদের গুলিতে নিহত হন। আহত হন আরও তিনজন কর্মী। অঞ্চলটিতে সর্বশেষ বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আরএসএফের উত্তর দারফুরের রাজধানী এল ফাশের ঘেরাও করার সময়।

পরিস্থিতি বর্ণনা করে সুদানে জাতিসংঘের ডেপুটি হিউম্যানিটেরিয়ান কোঅর্ডিনেটর টবি হেওয়ার্ড বলেন, শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে পুরো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং ক্রমাগত বিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে।

হেওয়ার্ড আরও বলেন, এল ফাশেরই একমাত্র শহর যেটি এখনো আরএসএফ দখল করতে পারেনি। সেখানে অন্যান্য এলাকা থেকে আসা হাজারো উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে। এল ফাশেরে অন্যান্য এলাকা থেকে সহিংসতায় উদ্বাস্তু হওয়া ৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।

তবে ‘ইউএন অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স’ (ওসিএইচএ) বলছে, এল ফাশেরকে তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা বাসিন্দারা এখন বিপদে পড়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সেখানকার ৩৬ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়েছে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বৃহস্পতিবার বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া সংঘাতে এল ফাশের ও এর আশপাশে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, পশ্চিম এল ফাশেরে এক ডজনেরও বেশি গ্রামে হামলা চালানো হয়েছে। যৌন সহিংসতা, শিশু হত্যা, বাড়িঘরে আগুন এবং অবকাঠামো ধ্বংসসহ ভয়ংকর সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

সংঘাতের এমন পরিস্থিতি আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দারফুরে খাদ্য সহায়তা বিতরণের কাজ থেমে গেছে। ওই অঞ্চলের ১৭ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভুগছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএফপি।

ওসিএইচএ এর হিসাবে, যুদ্ধের কারণে সুদানে ৪৬ লাখ শিশুসহ ৮৭ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে। দেশটির ২ কোটি ৪৮ লাখ মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।


জাতিসংঘ   সুদান   ক্ষুধা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

১৪ হাজার ডলারের অলঙ্কার বিক্রি ১৪ ডলারে!

প্রকাশ: ০৩:৫৮ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

মূলত বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটির দুল জোড়ার দাম লেখার কথা ছিল ২৩৭,০০০ পেসো (১৪ হাজার ডলারের বেশি)। অথচ ভুলে সেখানে লেখা ছিল ২৩৭ পেসো (১৩.৮৫ ডলার বা প্রায় ১৪ ডলার)। অর্থাৎ, ভুলক্রমে দামের সঙ্গে থাকা শেষের তিনটি শূন্য বাদ পড়েছিল।

বিলাসবহুল অলঙ্কার প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ডগুলোর ইতিহাসে অন্যতম ব্যয়বহুল ভুল এটি।

কিন্তু কীভাবে ঘটল এই ঘটনা। জানা গেছে, মেক্সিকোর বাসিন্দা রোজেলিও ভিয়ারিয়াল একদিন অলসভাবে কার্তিয়েরের ওয়েব পেজ স্ক্রল করছিলেন। হঠাৎ তার চোখ পড়ে দারুণ এক জোড়া কানের দুলের সঙ্গে অবিশ্বাস্য কম দাম লেখা।

২০ এপ্রিল এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) শেয়ার করা একটি পোস্টে তিনি লেখেন, 'অলঙ্কারগুলোর দাম দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।'

সিবিএস নিউজের তথ্যমতে, দুল জোড়ায় ১৮-ক্যারেট স্বর্ণের সঙ্গে ১৪২ ক্যারেটের হীরা লাগানো ছিল।

মূলত বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটির দুল জোড়ার দাম লেখার কথা ছিল ২৩৭,০০০ পেসো (১৪ হাজার ডলারের বেশি)। অথচ ভুলে সেখানে লেখা ছিল ২৩৭ পেসো (১৩.৮৫ ডলার বা প্রায় ১৪ ডলার)। অর্থাৎ, ভুলক্রমে দামের সঙ্গে থাকা শেষের তিনটি শূন্য বাদ পড়েছিল।

পেশায় চিকিৎসক ভিয়ারিয়াল সুযোগটি হাতছাড়া করেননি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই জোড়া দুল কিনে ফেলেন।

তিনি এক্স-এ লিখেছেন, 'আমার সারা শরীর দিয়ে ঘামের স্রোত বইছিল।' 

বোঝা যায়, কম দামে অতি দামি দুলগুলো কিনতে পেরে তিনি দারুণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তবে, তার স্বস্তি খুব অল্প সময় স্থায়ী হয়েছিল। কারণ কার্তিয়ের তার অর্ডার বাতিল করার চেষ্টা করেছিল এবং তাকে গহনার পরিবর্তে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারা পরিবর্তে তাকে এক বোতল শ্যাম্পেন পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ভিয়ারিয়াল দমে যাননি।

সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়, ওই ব্যক্তি মেক্সিকোর ফেডারেল কনজিউমার প্রোটেকশন এজেন্সির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলে কার্তিয়েরকে তলব করা হয়।

ভিয়ারিয়াল জানান, কয়েক মাস ধরে টানাপোড়েনের পর বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটি শেষ পর্যন্ত দুই জোড়া কানের দুল তাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর একজোড়া তার জন্য, আরেক জোড়া তার মায়ের জন্য। 

২৬ এপ্রিল ভিয়ারিয়াল এক্স-এ সুন্দর করে মোড়ানো একটি বাক্সের ছবি শেয়ার করেন। এতে বোঝা যায়, শেষ পর্যন্ত দুলগুলো তিনি হাতে পেয়েছেন।

কার্তিয়েরের এই ভুলকে তিনি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে কেন দেখলেন না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, কোম্পানির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া আমাকে তাদের বিরুদ্ধে বিরক্ত করেছে। 

তিনি বলেন, 'আমার অর্ডার বাতিল করার পর আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা দুই ধরনের কথা বলে। প্রথমে তারা বলেছিল, কানের দুলগুলোর দাম দুর্ঘটনাক্রমে ভুল লেখা ছিল।'

পরে আবার তারা জানায়, কানের দুলটির স্টক শেষ হয়ে গেছে, তাই তারা অর্ডার অনুযায়ী জিনিস দিতে পারবে না। প্রতিষ্ঠানটি মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিয়ারিয়ালের পোস্টে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

কেউ কেউ বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে তার জয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ কেউ কোম্পানির ভুলের সুযোগ নেওয়ার জন্য তার সমালোচনা করেছেন।

কিছু ব্যবহারকারী এমনকি বলেছেন, তার উচিত দুলগুলো ফেরত দেওয়া বা সেগুলোর ওপর কর দেওয়া উচিত।

তবে ভিয়ারিয়াল জানিয়েছেন, কানের দুল পেয়ে তিনি 'খুব খুশি' হয়েছেন। 

তিনি বলেন, আমি একজন ভোক্তা হিসেবে আমার অধিকার বুঝে নিয়েছি, তবে অনেকেই তা করতে পারে না। তাই এই মামলাটি মেক্সিকোর জনগণকে ভোক্তা অধিকার আইনসহ তাদের অন্যান্য মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে সহায়তা করবে।


ডলার   অলঙ্কার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আদানির সাত কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

প্রকাশ: ০৩:৩৩ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

এবার গৌতম আদানির তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির মধ্যে ৭টিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি।

তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারের নিয়ম না মানা ও সম্পর্কিত পক্ষের (রিলেটেড পার্টি) সঙ্গে লেনদেনসংক্রান্ত বিধিভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে শেয়ারবাজার কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

যে সাতটি কোম্পানিকে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি এনার্জি সলিউশনস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পোর্টস, আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস ও আদানি উইলমার।

গত বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার লেনদেন ও গবেষণা সংস্থা হিনডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদনে রীতিমতো ঝড় ওঠে। তাদের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে শেয়ারদর বাড়িয়ে প্রতারণা করার পাশাপাশি বেআইনি লেনদেন করত। এর মধ্য দিয়ে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়েছে। এরপরই তদন্তে নামে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি।

অবশেষে সেই ধারাবাহিকতায় গৌতম আদানির তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির মধ্যে ৭টির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ জারি করে তারা। ফলে আদানিদের বিরুদ্ধে হিনডেনবার্গের প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে আবারও শোরগোল তৈরি হয়েছে ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলে।

বিষয়টি একই সঙ্গে রাজনৈতিক রং পেয়েছে। সেবির নোটিশ জারির কথা প্রচার হতেই গতকাল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হয়েছে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বিবৃতিতে বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানার পরে এবং সুপ্রিম কোর্টের চাপে সেবি আদানিদের বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো।

সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, সেবির এই নোটিশ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে হিনডেনবার্গ রিসার্চের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যে তদন্ত তারা শুরু করেছিল, তারই অংশ। যদিও আদানি গোষ্ঠী আবারও যথারীতি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, শোকজ নোটিশ কোনো অভিযোগ নয়, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের কাছে কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে।

আদানিদের যেসব কোম্পানিকে সেবি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে গোষ্ঠীর প্রধান সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজেস, আদানি গ্রিন এনার্জি ও আদানি টোটাল গ্যাস লিমিটেড স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছে, সেবি নোটিশ পাঠিয়েছে গোষ্ঠীর হোল্ডিং কোম্পানিকে বা মূল সংস্থাকে। পাশাপাশি আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন, আদানি পাওয়ার, আদানি এনার্জি সলিউশনস ও আদানি উইলমার জানিয়েছে, তারা সেবির নোটিশ পেয়েছে। সেবির ওই নোটিশ মূলত সংস্থাগুলোর ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের হিসাবসংক্রান্ত বলে উল্লেখ করে সব কটি সংস্থা দাবি করে, কোনো আইন ভঙ্গ করা হয়নি।

আদানি গোষ্ঠী এমন দাবি করলেও বিবৃতিতে কংগ্রেসের সম্পাদক জয়রাম রমেশ স্মরণ করিয়ে দেন, গৌতম আদানির ওইসব কোম্পানির একাধিক সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছিল। আদানি পোর্টসের নিরীক্ষক ডেলয়েট হাসকিনস অ্যান্ড সেলস সংস্থার ২০২২-২৩ সালের অডিট প্রতিবেদনে এমন একাধিক লেনদেনের দিকে আঙুল তোলা হয়।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর রীতিমতো লন্ডভন্ড হয়ে যায় গৌতম আদানির ব্যবসা সাম্রাজ্য। তাঁর সম্পদমূল্য ১০ হাজার কোটি ডলার কমে যায়। বিশ্বে ধনীদের তালিকায় পাঁচের মধ্যে থাকা আদানি চলে যানে ২০-এর ঘরে। এরপর অবশ্য ধীরে ধীরে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠেছেন আদানি।

আজ এই প্রতিবেদন লেখার সময় গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ছিল ৮০ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৮ হাজার ৪০ কোটি ডলার। ফোর্বস ম্যাগাজিনে ধনীদের তালিকায় তাঁর স্থান এখন ১৭তম।


গৌতম আদানি   সাত কোম্পানি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশের সঙ্গে গাম্বিয়ার বাণিজ্য বৃদ্ধির আশাবাদ

প্রকাশ: ০৩:০২ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের সঙ্গে গাম্বিয়ার বাণিজ্য ও কৃষিতে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

গাম্বিয়ার বানজুলে ২-৩ মে অনুষ্ঠানরত ১৫তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক প্রস্তুতিমূলক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সভার সাইভলাইনে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মামাদোউ তাংগারার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

সৌজন্য সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং গাম্বিয়ার কৃষি খাতে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। হাছান মাহমুদ গাম্বিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য

দুই দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনদের এর সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাবনা দেন।

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষি খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা সম্প্রসারণের ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার হতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্যও তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনি সমস্যা সমাধানে ওআইসির দৃঢ় ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ দিন সন্ধ্যায় অপর এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত রিয়াদ মনসুর ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের সমর্থনের কথা অবহিত করেন।

ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন স্থায়ীভাবে নিরসনের লক্ষ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ওআইসির সদস্য দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দিচ্ছেন। পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, গাম্বিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নাইজেরিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদুর রহমান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ অনুবিভাগের মহাপরিচালক ওয়াহিদা আহমেদ বৈঠক দুটিতে উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ   গাম্বিয়া   বাণিজ্য   বৃদ্ধি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পেঁয়াজ রপ্তানি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল ভারত

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় ৬ মাস পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার পর অবশেষে তা তুলে নিল ভারত। আজ শনিবার দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।

বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য (মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইস- এমইপি) ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে ডিজিএফটি।

ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, চলমান লোকসভা নির্বাচনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারে আসীন দল বিজেপি। গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের কারণে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের কৃষকরা ব্যাপক লোকসানের শিকার হন; ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে তাদের। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে রাজ্যটির প্রতিটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপি প্রার্থীরা।

ভোটের ফলাফলে যেন কৃষকদের ক্ষোভের আঁচ না থাকে— সেজন্যই বিজেপি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বলে ধারণা অনেক রাজনীতি বিশ্লেষকের।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রকে বলা হয় ভারতের পেঁয়াজের রাজধানী। দেশটির মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের অধিকাংশই আসে এই রাজ্য থেকে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরিশাসসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করে ভারত।

ভারতের রাজনৈতিক অর্থনীতিতেও পেঁয়াজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ফসল, বিশেষ করে ভোটের সময়। ১৯৮০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ওই নির্বাচনকে ‘পেঁয়াজের নির্বাচন’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং কংগ্রেসের সভানেত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধজ্ঞা দিয়েছিল নয়াদিল্লিতে সে সময়ে আসীন কংগ্রেসবিরোধী সরকার।

নির্বাচনে জয়ের পর পেঁয়াজের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কংগ্রেস সরকার; এতে কৃষক ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে রীতিমতো পেঁয়াজ রপ্তানির হিড়িক পড়ে যায় এবং বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এক পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য ৬ রুপি পর্যন্ত উঠেছিল, যা ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে রীতিমতো ‘রাজকীয় মূল্য’।

গত বছর ডিসেম্বরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত হলেও পরে তা আরও বাড়ানো হয়। তার আগে ২০২৩ সালের আগস্টে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছিল নয়াদিল্লি।


পেঁয়াজ   রপ্তানি   নিষেধাজ্ঞা   ভারত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন