ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় শ্রীলঙ্কান নারীরা বেছে নিচ্ছেন যৌন পেশা

প্রকাশ: ০১:৩১ পিএম, ০১ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় শ্রীলঙ্কান নারীরা বেছে নিচ্ছেন যৌন পেশা

দীর্ঘ সময় ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দেশটির অর্থনীতি একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দেশটির জনগণ। প্রতিদিনই নতুন নতুন সমস্যার তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে   নতুন এক সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে। তা হলো বস্ত্রখাতে চাকরি হারিয়েছেন অধিকাংশ নারী। তাই নিজেদের জীবন বাঁচাতে  তারা  যৌনকর্ম বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এরই মধ্যে দেশটিতে দেহব্যবসা বেড়েছে ৩০ শতাংশ।

শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম ‘ডেইলি মিরর এলকে’ একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের এই দেশ বর্তমানে ভয়াবহ সংকটে। দারিদ্র্যেসীমার নিচে চলে যাচ্ছে বহু পরিবার। তিনবেলা খাবার যোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে অনেককে।  দেশটির বর্তমান অবস্থা অসংখ্য পরিবারকে শেষ প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। 

যৌনকর্মীদের অধিকার বিষয়ক গ্রুপ স্ট্যান্ড-আপ মুভমেন্ট লঙ্কা (এসইউএমএল)-এর তথ্যমতে, এই কঠিন পরিণতিতে সারাদেশে অস্থায়ী ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে নিষিদ্ধ পল্লী। কয়েক মাসে পতিতাবৃত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৩০ ভাগ। কারণ, জীবিকা নির্বাহের তাগিদে অধিক থেকে অধিক নারী যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এসব নিষিদ্ধপল্লীর কিছু গড়ে উঠেছে স্পা এবং সুস্থ থাকার সেন্টার হিসেবে। অনেক নারী বলেছেন, তাদের পরিবারের মুখে তিন বেলা খাবার জোটাতে একটিই মাত্র উপায় আছে। 

এসইউএমএল-এর নির্বাহী পরিচালক আশিলা ডানদিনিয়া বলেছেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বহু নারী শ্রমিককে বস্ত্রখাতের কাজ থেকে ছাঁটাই দেওয়া হয়েছে। তারা যৌনকর্ম বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমান সংকটের প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পেয়েছি, অধিক হারে নারী যৌনকর্মী হিসেবে পেশা শুরু করেছেন। তাদের বেশির ভাগই এসেছেন বস্ত্র খাত থেকে। করোনা মহামারীর পরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বস্ত্রখাত। বহু নারী কাজ হারিয়েছেন। আর বর্তমান কঠিন অবস্থা তাদেরকে জীবিকা নির্বাহের জন্য ঠেলে দিয়েছে যৌনকর্মে। 

১৮ বছর বয়েসী সালমা  (পরিবর্তিত নাম)। তিনি সংবাদ মাধ্যম এএনআইয়ের সঙ্গে তার কাহিনী শেয়ার করেছেন। জানিয়েছেন কেন তিনি বস্ত্রখাত থেকে যৌনকর্মী হয়ে উঠেছেন। সাত মাস আগে তিনি কাজ হারিয়েছেন। তারপর কয়েক মাস অসহায়ের মতো ঘুরেছেন। কোনও উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পতিতাবৃত্তিতে নেমেছেন। 

সালমা বলেন, “গত বছর ডিসেম্বরে আমি বস্ত্রখাত থেকে কাজ হারাই। তারপর দিনভিত্তিক আরেকটি কাজ   পাই। তাও যখন কর্মী সংখ্যা কম হতো, তখনই আমাকে ডাকা হতো। তখনই আমি কাজ করার সুযোগ পেতাম। কিন্তু আমার নিয়মিত উপার্জন হয় এমন একটা কাজের দরকার, যা দিয়ে আমি আমার ও পরিবারের চাহিদার কিছুটা হলেও সামাল দিতে পারব। তারপর আমি একটি স্পা’র মালিকের কাছে গেলাম। সেখানে বর্তমান সংকটের প্রেক্ষিতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। এই প্রস্তাব মেনে নিতে সায় দিচ্ছিল না আমার মন। কিন্তু পরিবারের জন্য টাকার খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। তাই আমাকে এটাই বেছে নিতে হয়।“  

রেহানার মতো একই পেশা বেছে নিয়েছেন ৪০ বছর বয়েসী সীমা  (পরিবর্তিত নাম)। তিনি সাত বছর বয়সী একটি সন্তানের মা। বিচ্ছেদ হয়েছে তার বৈবাহিক সম্পর্কের। তার ওই সন্তানের শিক্ষা ও ঘরভাড়া মেটাতে অর্থ প্রয়োজন। 

রোজি বলেন, সংকটের তুলনায় আয় পর্যাপ্ত নয়। পরিবার চালাতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা যোগান দিতে পারছিলাম না। তাই আমাকে অন্য পথ বেছে নিতে হয়েছে। আমি একটি দোকান চালাই। তা সচল রাখতে চাই। এসব কারণে আমার অর্থের প্রয়োজন। তাই এখন দেহব্যবসাকে বেছে নিতে হয়েছে। 

শ্রীলঙ্কায় নতুন করে এই যে নারীরা যৌনকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন তারা মাসে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুপি আয় করতেন বস্ত্রখাতে চাকরি করে। আর এখন দিনে দেহব্যবসা করে আয় করছেন ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার রুপি। কিন্তু এই আয় করতে গিয়ে তাদেরকে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। 

এসইউএমএলের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, এসব যৌনকর্মী মা-বাবাকে নিয়ে একই বাসায় বসবাস করেন। আর্থিক সংকটে পার্টনার তাদেরকে ছেড়ে চলে গেছে। এরই মধ্যে তাদের অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এমন দুটি মেয়ের সন্ধান পেয়েছি আমরা। তাদের দেখাশোনা করছি। কারো কাছ থেকে, এমন কি সরকারের কাছ থেকেও এ বিষয়ে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। 

এর আগে সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’ এর সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূটির কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুর রহিম সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, দেশে বর্তমানে খাদ্য অনিরাপত্তায় ভুগছে ৬৩ লাখ মানুষ। স্বাধীনতার পর দেশ সবচেয়ে কঠিন খাদ্য সংকটে ভুগছে। আগামী কয়েক মাসে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, জুনে খাদ্যে মুল্যস্ফীতি শতকরা ৮০ ভাগের ওপরে। আগামী কয়েক মাসে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। 


সূত্র: ডেইলি মিরর এল কে 


শ্রীলঙ্কা   অর্থনৈতিক সংকট   যৌন পেশা   এশিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাজস্থানে মসজিদের ভেতরে ইমামকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ রাজস্থানের আজমিরে মসজিদের এক ইমামকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মুখোশ পরা অজ্ঞাত তিন দুর্বৃত্ত।  

শনিবার (২৯ এপ্রিল) আজমিরের একটি মসজিদের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, আজমিরের রামগঞ্জের কাঞ্চননগরে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে ছয় শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন মোহাম্মদ মাহির নামের ওই ইমাম। এ সময় আক্রান্ত হন তিনি। 

এনডিটিভি বলেছে, মুখোশ পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে মোহাম্মদ মাহিরের ওপর আক্রমণ চালায়। ওই সময় তাকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে তারা। 

৩০ বছর বয়সী ইমাম মোহাম্মদ মাহির উত্তরপ্রদেশের রামপুরা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মারধরের সময় ইমামের সন্তানরা চিৎকার করলে তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। শিশুরা যাতে সাহায্যের জন্য কাউকে ফোন না করতে পারে সেজন্য মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

অভিযুক্তরা চলে যাওয়ার পর ইমামের শিশুরা মসজিদের বাইরে আসে এবং প্রতিবেশীদের ঘটনার বিষয়ে জানায়। পুলিশ বলেছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবীন্দ্র খিনচি বলেছেন, মসজিদের ভেতরে ওই ইমামকে পিটিয়ে হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করছে। ইমামকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার (হত্যা) আওতায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাজস্থান   মসজিদ   হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে কয়েক ডজন টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চার মাসের একটি শিশু আছে। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণ করা হয়েছে। এছাড়া ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে দুর্গত এলাকায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া পৃথক টর্নেডোতে কয়েক হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। টর্নেডোর আঘাতে মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে ওকলাহোমা, আইওয়া, টেক্সাস, মিসৌরি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, গত শনিবার আঘাত হানা কিছু টর্নেডোয় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৮ কিলোমিটারের বেশি।

টেক্সাস থেকে মিজৌরি পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড়ঝঞ্ঝায় কোথাও কোথায় ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওকলাহোমার সালফার শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উল্টো গেছে অনেক গাড়ি। ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এই দুর্যোগে প্রায় ১০০ ব্যক্তির আহত হয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   টর্নেডো   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশ কতটা পিছনে ফেলল পাকিস্তানকে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। সেই পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন চোখ এড়িয়ে যায় নি পাকিস্তানেরও। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ করাচিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, 'অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই।'

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, 'যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের ওপর বোঝা হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু শিল্প প্রবৃদ্ধিতে তারা এখন অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করেছে। আর তাদের এ উন্নতির দিকে তাকালে এখন আমাদের লজ্জা লাগে।'

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ(এলডিসি) থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের পথে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এছাড়া, তৈরি পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সামনে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যদা পাবে বাংলাদেশ। তখন বিশ্বদরবারে দেশটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে কমবেশি সবসময়ই অস্থিরতা ছিল। সেখানে গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত থাকায় দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এটি কোনোভাবেই সাহায্য করেনি। যেখানে, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একধরনের স্থিতিশীলতা ছিল, যা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পেরেছে।

সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে সেগুলো হলো- 

১. মাথাপিছু আয়: পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৮০ টাকা, যা তৎকালীন ৯৪ মার্কিন ডলারের সমান। নব্বইয়ের দশকের পর বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকে। 

বর্তমানে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৬৫ ডলার। আর পাকিস্তানে ১ হাজার ৪৭১ ডলার।

২. জিডিপির প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশে এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ অর্জন। অন্যদিকে, একই সময়ে পাকিস্তানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জিডিপির ৬ থেকে ৭ শতাংশ আসত শিল্প খাত থেকে। তখন পাকিস্তানে শিল্পের অবদান ছিল ২০ শতাংশ। 

বর্তমানে, বাংলাদেশে শিল্প খাতের অবদান জিডিপির ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশে জিডিপির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আর পাকিস্তানের ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার।

৩. রপ্তানি আয়: রপ্তানি আয়েও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ ৫ হাজার ৫৫৬ (৫৫.৫৬ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। 

অন্যদিকে, পাকিস্তান গত অর্থবছরে ৩ হাজার ২৫০ (৩২.৫০ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন ৬০ শতাংশ বেশি।

৪. মূল্যস্ফীতি: কোভিড মহামারি ও এর পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও উৎপাদনব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণেও মারাত্মক সমস্যায় পড়ে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দুই দেশেই আছে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি এখন অতিমাত্রায় বেশি। মূল্যস্ফীতির চাপে পাকিস্তানের মানুষ পিষ্ট। শুধু মার্চ মাসেই দেশটিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি।

৫. রির্জাভ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাংলাদেশ- পাকিস্তান দুই দেশেই আলোচিত। ডলারসংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি মূল্যে পণ্য আমদানি করতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়েছে সবার। তবে, পাকিস্তানের রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫ কোটি বা ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলারে। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ আছে পাকিস্তানের প্রায় চার গুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার কোটি বা ২০ বিলিয়ন ডলার।

৬. জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। 

৭. শ্রমশক্তিতে নারীদের অবদান: শ্রমশক্তিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অবদানেও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি ৩ জনের ১ জন নারী কাজ করেন। 

অন্যদিকে, পাকিস্তানে প্রতি ৫ জনের ১ জন কর্মক্ষম নারী। অর্থাৎ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের ৩৫ শতাংশ নারী, যা পাকিস্তানে ২০ শতাংশ।

৮. মানব উন্নয়ন সূচক: মানব উন্নয়ন সূচকেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে গড় আয়ুও বেশি। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যেখানে পাকিস্তানে মাত্র ৬৯ বছর। 

৯. শিশুমৃত্যু: আবার, শিশুমৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ৩৩। আর, পাকিস্তানে এই সংখ্যা ৭০-এর বেশি। 

১০. প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও আমাদের সাফল্য প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার হার ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে এই হার অর্ধেকেরও কম ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে লম্বা সময় ধরে গণতান্ত্রিক সরকার থাকার কারনে উন্নয়ন এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখাতে সুবিধা হয়েছে। যেখানে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার কম সময় ছিল। ফলে সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


বাংলাদেশ   পাকিস্তান   শাহবাজ শরিফ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে ৪২ জন নিহত

প্রকাশ: ০৫:৩৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছেন। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির অনেক অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

কেনিয়ার নাকুরু কাউন্টির গভর্নর সুসান কিহিকা বলেন, বাঁধ ভেঙে পানি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাদায় এখনও আরও অনেকে আটকা পড়েছেন। আমরা তাদের উদ্ধারের কাজ করছি।

মাই মাহিউর শহরের রিফ্ট ভ্যালির কাছের একটি বাঁধ পানির প্রবল চাপের কারণে হঠাৎ করেই ভেঙে যায়। এতে অনেক ঘরবাড়ি ও যানবাহন ভেসে গেছে। ওই এলাকায় চলাচলের একটি রাস্তাও ভেঙে গেছে। এতে শহরটির সাথে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, দেশটির কর্মকর্তারা বরেছেন, এল নিনো ধাঁচের আবহাওয়ার কারণে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত মার্চ থেকে কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।


কেনিয়া   বৃষ্টিপাত   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর বানাচ্ছে দুবাই

প্রকাশ: ০৫:১৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর বানাচ্ছে দুবাই। যার নামকরণ করা হয়েছে আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ধারণা করা হচ্ছে, এ বিমানবন্দরের ধারণক্ষমতা হবে ২৬ কোটি। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে বিশ্বের বড় এবং বেশি মানুষ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিমানবন্দর টার্মিনাল।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দুবাইয়ের প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম রোববার জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনালটি বর্তমান দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকারের পাঁচগুণ হবে এবং বছরে ২৬ কোটি যাত্রী পরিচালনা করবে। আগামী বছরগুলোতে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যকলাপ নতুন আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানান্তরিত হবে বলেও জানান তিনি। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় শেখ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ দুবাইয়ের এই বিমানবন্দরের চারপাশে একটি সম্পূর্ণ শহর তৈরি করেছি, যা ১০ লাখ মানুষের আবাসন চাহিদা পূরণ করবে। এটি লজিস্টিক এবং এয়ার ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলোকে হোস্ট করবে।’

দুবাইয়ের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নতুন প্রকল্প তৈরি করছি। আমাদের সন্তানদের এবং তাদের সন্তানদের জন্য ক্রমাগত এবং স্থিতিশীল বিকাশ নিশ্চিত করছি। দুবাই হবে বিশ্বের বিমানবন্দর, বন্দর, শহুরে হাব এবং এগুলোর নতুন বৈশ্বিক কেন্দ্র।’

আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সম্পন্ন হলে এটি হবে ফ্ল্যাগশিপ ক্যারিয়ার এমিরেটসের নতুন ঠিকানা এবং এতে থাকবে ৫টি সমান্তরাল রানওয়ে এবং ৪০০টি বিমানের গেট। এটি একটি নেতৃস্থানীয় বিমান চলাচল কেন্দ্র হিসেবে দুবাইয়ের অবস্থানকে মজবুত করবে বলেই জানিয়েছেন দুবাই এয়ারপোর্টের সিইও পল গ্রিফিথস।

এক বিবৃতিতে গ্রিফিথস বলেন, ‘দুবাইয়ের সমৃদ্ধি সবসময়ই এর বিমান পরিকাঠামো বৃদ্ধির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে এবং আজ আমরা সেই যাত্রায় আরেকটি সাহসী পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি।’

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট টানা ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে, যা এখন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ধারণক্ষমতাকে চাপের মধ্যে ফেলেছে। 

জানা যায়, গত বছর প্রায় ৮৭ মিলিয়ন যাত্রী এই ট্রানজিট হাব ব্যবহার করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ ২০২৩ সালে রেকর্ড ১৭ দশমিক ১৫ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক যাত্রীর ট্রানজিট ঘোষণা করে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।


বিমানবন্দর   দুবাই  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন