ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নতুন দুই রেলপথে বদলে দিবে মধ্য এশিয়া!

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail নতুন দুই রেলপথে বদলে দিবে মধ্য এশিয়া!

মধ্য এশিয়ার প্রথম রেলপথটি তৈরি হয়েছিল সামরিক কারণে। ১৮৮০ সালে রাশিয়া যখন ট্র্যাক স্থাপনের কাজ শুরু করে, তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল কারাকুম মরুভূমির চারপাশে (বর্তমান তুর্কমেনিস্তান) সৈন্য পরিবহন করা, যেন রুশ শাসনের বিরোধিতাকারীদের প্রতিরোধ চূর্ণ করা যায়। তাদের উদ্যোগে মাত্র আট বছরের মধ্যে ক্যাস্পিয়ান সাগর থেকে সমরখন্দ পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে ট্রেন চলাচল শুরু করে।

১৮৮৮ সালে তরুণ ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা (এবং ভারতের ভবিষ্যৎ ভাইসরয়) হিসেবে ওই রেলপথ পাড়ি দিয়েছিলেন জর্জ কার্জন। তিনি লিখে গেছেন, এটি রাশিয়াকে স্থানীয় বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তারে সহায়তা ও ভারতে আক্রমণ চালানোর ক্ষমতা দ্বিগুণ করেছিল। সেই থেকে এ অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে রেলপথটি।

কিন্তু আজ ক্ষমতার ভারসাম্য বদলাতে শুরু করেছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনারা বিদায় নেওয়ায় একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া আবার ইউক্রেন নিয়ে ব্যস্ত। ফলে নিজেদের প্রভাব বাড়ানো ও ইউরোপের বাণিজ্য রুটে বৈচিত্র্য আনার দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে চীনের সামনে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও চীনের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আগ্রহী।
বর্তমানে এসব প্রচেষ্টার মধ্যমণি হয়ে উঠেছে দুটি নতুন অবিচ্ছেদ্য রেলপথ। আগামী ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর সমরখন্দে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে এগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে অগ্রগতির প্রথম লক্ষণ সামনে আসে গত মে মাসে। সেসময় কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভ ঘোষণা দেন, চীন, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানকে সংযোগকারী একটি রেলপথের নির্মাণকাজ শুরু হবে ২০২৩ সালে।

চীনা রেলপথ এরই মধ্যে কাজাখস্তানের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে রাশিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুট হয়ে উঠেছে। ইউরোপের সঙ্গে চীনের রেলপথ বাণিজ্যের সিংহভাগই হয় এই রুট দিয়ে। ২০১৬ সালে রেলপথটি দিয়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছিল, যা ২০২১ সালে বেড়ে সাড়ে সাত হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

এ অবস্থায় তুর্কমেনিস্তান, ইরান ও তুরস্ক হয়ে চীন থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথ খুলে দেবে নতুন একটি রেলপথ। এর ফলে যাত্রাপথের দূরত্ব প্রায় ৯০০ কিলোমিটার ও সময় অন্তত আট দিন কমে যাবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এটি যাবে রাশিয়াকে পাশ কাটিয়ে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে মস্কোর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া-নির্ভর রুট দিয়ে পণ্য পরিবহন এখন অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

চায়না কমিউনিকেশনস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাসোসিয়েশনের ইয়াং জি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপীয় গ্রাহকদের জন্য ‘মহাঅনিশ্চয়তা’ সৃষ্টি করেছে। রাশিয়াকে পাশ কাটানোর জন্য তাদের কেউ কেউ জাহাজে করে ক্যাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে তুলনামূলক ধীরগতির ও খরুচে রেলপথ ব্যবহার করছে। নতুন রেলপথটি রাশিয়াকে বাদ দিয়ে চীন ও ইউরোপের মধ্যে একটি বিকল্প রুট সৃষ্টি করবে।
কিরগিজস্তানের পরিবহনমন্ত্রী এরকিনবেক ওসোয়েভ বলেছেন, ট্রান্স-কিরগিজ সংযোগ রেলপথ দিয়ে বছরে ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টন মালামাল পরিবহন হবে, যার সিংহভাগই যাবে অন্য জায়গায়। এ প্রকল্পের কর্মসংস্থান, কর ও ট্রানজিট ফি কিরগিজস্তানের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে।

পরিকল্পনাটি অবশ্য নতুন নয়। এটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১৯৯৭ সালে। রাশিয়া একে কখনোই পছন্দ করেনি। খরচ ও রুট নিয়ে একমত হতে পারেনি চীন-কিরগিজস্তান। এটি কিরগিজ জনগণের বিস্তৃত অংশকে সেবা দেবে নাকি সরাসরি ইউরোপে যাবে, তা নিয়ে শুরু হয় মতবিরোধ। আবার, রেলপথের গেজ ট্র্যাক চীন-ইউরোপে ব্যবহৃত ১ দশমিক ৪৩৫ মিটার থেকে কিরগিজস্তানের মানদণ্ড অনুসারে ১ দশমিক ৫২০ মিটারে কোথায় গিয়ে পরিবর্তন হবে সেটি নিয়েও দেখা দেয় বিতর্ক। ফলে পরিকল্পনাটি বারবার স্থগিত হতে থাকে।
ওসোয়েভ বলেছেন, চীন, কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তান অবশেষে ২৮০ কিলোমিটার রেল রুটের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এতে খরচ হবে ৪১০ কোটি ডলার। সরাসরি বিনিয়োগ অথবা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে প্রকল্পটিতে। চীন সীমান্তের তুরুগার্ট পাস থেকে পশ্চিম কিরগিজস্তানের জালালাবাদ পর্যন্ত যাবে রেলপথটি। ১৯১৬ সালে রুশ নির্মিত একটি রেলপথ দিয়ে এরই মধ্যে উজবেকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত কিরগিজ শহরটি। আর গেজ ট্র্যাক পরিবর্তিত হবে মাকমালে। এ প্রকল্পের ভূতাত্ত্বিক জরিপ শিগগির শুরু হবে এবং সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হবে আগামী মার্চের মধ্যে।

এরই মধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কাজাখস্তানে একদিনের সফর শেষে তিনি আসন্ন সমরখন্দ সম্মেলনে অংশ নেবেন। তাছাড়া গত আগস্টেই কিরগিজস্তানে পৌঁছেছেন চীনা বিশেষজ্ঞরা। উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শভকাত মিরজিওয়েভ বলেছেন, প্রকল্পটি আমাদের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সাথে সংযুক্ত করবে, যার ফলে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হবে। আর কিরগিজ প্রেসিডেন্ট জাপারভ বলেছেন, এর জন্য তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ব্যক্তিগত সমর্থন পেয়েছেন। গত জুলাইয়ে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নেরও সমর্থন পেয়েছিল পরিকল্পনাটি।

সমরখন্দ সম্মেলনে আরেকটি রেলওয়ে প্রকল্প তুলে ধরবেন উজবেক প্রেসিডেন্ট মিরজিওয়েভ। আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে উজবেকিস্তান ও পাকিস্তানকে সংযুক্ত করবে এই রেলপথটি। উজবেক সীমান্ত থেকে উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফ পর্যন্ত এরই মধ্যে একটি ছোট রেলপথ রয়েছে। নতুনটি যাবে কাবুল হয়ে পাকিস্তানের পেশোয়ার পর্যন্ত, দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৫৭৩ কিলোমিটার। এই রেলপথ তৈরির ফলে পাকিস্তানের বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে সমুদ্র সংযোগ পাবে স্থলবেষ্টিত উজবেকিস্তান ও আফগানিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উজবেকিস্তান থেকে পাকিস্তানে পণ্য পরিবহনে প্রয়োজনীয় সময় ৩৫ দিন থেকে মাত্র চারদিনে নেমে আসবে। এর জন্য ট্রানজিট ফি পাবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।

তবে দুটি রেলপথের ভাগ্যই নির্ভর করছে, সেগুলো চীন ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে অর্থায়ন পায় কি না তার ওপর। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের সমস্যাগুলো বেইজিংকে একা কোনো অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে সতর্ক করে তুলেছে।

তাছাড়া ট্রান্স-কিরগিজ রেলপথের চেয়ে ট্রান্স-আফগান রেলপথের ভবিষ্যৎ বেশি অনিশ্চিত দেখাচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা তালেবানের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্কে জড়াতে রাজি নয়। ফলে, উভয় পরিকল্পনাই ভেস্তে যাওয়ার বড় আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু যদি প্রকল্প দুটি শেষপর্যন্ত আলোর মুখ দেখে, তাহলে বিশ্বের সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত হওয়া এবং রাশিয়ার ওপর কম নির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যাবে মধ্য এশিয়া।

নতুন দুই রেলপথ   বদলে দিবে   মধ্য এশিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ব্রাজিলে ভারীবৃষ্টি ও বন্যায় ১০ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির থেকে বন্যার সৃষ্ট হয়েছে। এই বন্যায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে, প্রায় ২৪ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।  

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যে বন্যার কারণে শতাধিক পৌরসভার প্রায় ৩ হাজার ৩০০ জন বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে অনেককেই আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডা সিলভা এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত স্থান পরিদর্শন করবেন তিনি। রাজ্যের গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট জানিয়েছেন, ওই রাজ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ বিপর্যয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

আগামী কয়েকদিনে আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টির মধ্যেও নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ভারী বৃষ্টিতে বেশ কিছু ব্রিজ ভেঙে পড়েছে এবং রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।


ব্রাজিল   ভারীবৃষ্টি   বন্যা   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে চীনে মহাসড়ক ধস, নিহত ২৪

প্রকাশ: ০৯:৪৫ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail চীনে বৃষ্টিপাতে মহাসড়কে ধস

চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে একটি মহাসড়কের অংশ ধসে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩০ জন।

কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের পর গুয়াংডংয়ের মেইঝো শহর এবং ডাবু কাউন্টির মধ্যকার ওই মহাসড়কের ১৭ দশমিক ৯ মিটার (৫৮.৭ ফুট) অংশ ধসে পড়ে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরে জানায় ২৪ জন নিহত হয়েছে।

বিবিসি জানায়, মহাসড়কের ধসে পড়া অংশে ২০টি গাড়ি আটকে পড়ে। পরে উদ্ধারকারীরা গাড়িতে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত ৩০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের অবস্থা গুরতর নয় বলে জানানো হয়েছে গণমাধ্যমের খবরে।

সংবাদমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, বিধ্বস্ত যানবাহনগুলো একটি গভীর গর্তে পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা সেখানে পড়ে থাকা গাড়িগুলোকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন মহাসড়কটি বন্ধ করে দিয়েছে। গত মাসেও গুয়াংডং প্রদেশে প্রবল বর্ষণের কারণে বন্যা হয়েছিল। সে সময় লক্ষাধিক মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।


চীন   মহাসড়ক   ধস  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

প্রকাশ: ০৯:২৮ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় হামলার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। বুধবার এ ঘোষণা দেন তিনি।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জড়ো হওয়া মানুষের সামনে পেত্রো বলেন, তাঁর দেশ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে যাচ্ছে।

গাজায় হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করে আসছেন পেত্রো। তিনি অন্যান্য দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।

লোকভর্তি জনসমাগমস্থলে পেত্রো তাঁর ঘোষণায় বলেন, ‘আপনাদের সামনে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিচ্ছেন যে, আগামীকাল আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কগুলো ছিন্ন করব...’। পেত্রো তাঁর বক্তব্যে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপ্রধানকে গণহত্যাকারী বলে আখ্যা দেন।

পেত্রো আরও বলেন, গাজার এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের কোনো দেশ নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।

গত বছরের অক্টোবরে গাজায় হামলার পরপরই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দক্ষিণ আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়া। সেসময় কলম্বিয়া, চিলি ও হন্ডুরাসসহ দক্ষিণ আমেরিকার আরও কয়েকটি দেশ ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।

এদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অভিযোগ করে বলেছেন, পেত্রোর এই ঘোষণা ‘ইহুদিবিদ্বেষী ও ঘৃণায় পরিপূর্ণ’। তাঁর এই পদক্ষেপ হামাসের জন্য পুরস্কার।


ইসরায়েল   কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউরোপ যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণকারী ৮ মরদেহ দুপুরের পৌঁছবে বাংলাদেশে

প্রকাশ: ০৯:১৫ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকালে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণকারী আট বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুরের মধ্যে দেশে পৌঁছানোর কথা।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের দেওয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলা হয়েছে, লাশবাহী কফিনগুলো সৌদিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইটযোগে ২ মে দুপুর সোয়া বারোটায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার লিবিয়ায় নিযুক্ত ও তিউনিসিয়ার অনাবাসিক দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশারের উপস্থিতিতে মিশনের কর্মকর্তারা মরদেহগুলো তিউনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষরাতের দিকে এ দুর্ঘটনার পরপরই ত্রিপোলিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে মরদেহের সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু এবং মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করেন।

পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং মরদেহ ফিরিয়ে আনতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে। স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় আট বাংলাদেশির কফিন বন্দি মরদেহ। ছবি : সংগৃহীত

৮ নিহতের মধ্যে সজল, নয়ন বিশ্বাস, মামুন শেখ, কাজী সজীব ও কায়সার খলিফা মাদারীপুর জেলার এবং রিফাত, রাসেল ও ইমরুল কায়েস আপন গোপালগঞ্জ জেলার অধিবাসী ছিলেন।

জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে গেলে জীবিত উদ্ধার ৪৪ জনের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের ৪ জন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অপরজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছেন


ইউরোপ   লিবিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন