ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মিয়ানমারকে অস্ত্র দেয় কারা?

প্রকাশ: ০৪:৩৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail মিয়ানমারকে অস্ত্র দেয় কারা?

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর রয়েছে সমরাস্ত্রের এক বিপুল ভাণ্ডার। তার মধ্যে ভারী অস্ত্রের পুরোটাই দেশটি বিদেশ থেকে ক্রয় করে। তবে, হালকা অস্ত্র তৈরির জন্য মিয়ানমারের নিজস্ব সমরাস্ত্র কারখানা আছে।

২০১৯ সালে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন টিম মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছিল। সেসময় ওই টিমের দেয়া রিপোর্টে মিয়ানমারের কাছে কোন কোন দেশ অস্ত্র বিক্রি করে সে সম্পর্কে বলা হয়েছিল।

রিপোর্টে বলা হয়, সামরিক জান্তার নিপীড়নে দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যখন মানবিক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে তখনো সাতটি দেশের কয়েকটি কোম্পানি মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবারহ করেছে।

২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত চীন, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইসরায়েল, ফিলিপাইনস, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের ১৪টি কোম্পানি যুদ্ধ বিমান, সাঁজোয়া যান, যুদ্ধজাহাজ, মিসাইল এবং মিসাইল লঞ্চার সরবারহ করছে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কোন দেশে রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনে ব্যবহার হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলে, সেখানে অস্ত্র বিক্রি বা সরবারহ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি আইসিসিপিআরের পরিপন্থী।

চীন ওই চুক্তি স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।

সমর বিশেষজ্ঞ এবং মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রতিবেশী দুই দেশ চীন এবং ভারতের সাথে মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতার কারণে সমরাস্ত্রের বড় অংশ এ দুই দেশ থেকে কেনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

অধ্যাপক আলী বলেছেন, চীন এবং ভারতের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ যে যখন প্রথম দফায় দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সুচিকে গৃহবন্দি করা হয়, সেসময় পশ্চিমা দেশগুলো যখন তৎকালীন বার্মার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, ওই সময়ও চীন ও ভারত দেশটিকে সমর্থন যুগিয়েছে।

সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় ভারত ২০১৮ সালে মিয়ানমারকে একটি রুশ নির্মিত সাবমেরিন উপহার দিয়েছে। তবে, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চীন, রাশিয়া, ভারত, ইসরাইল এবং ইউক্রেন ছিল মিয়ানমারের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ।

মিয়ানমারের বেশিরভাগ সাঁজোয়া যান, বন্দুক এবং যুদ্ধজাহাজ আসে চীন থেকে;  আর যুদ্ধবিমান সরবরাহকারী দেশের মধ্যে রাশিয়া প্রধান। এছাড়া রাশিয়া মিয়ানমারের কাছে সাঁজোয়া যানও বিক্রি করছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীল রকেট এবং কামানের গোলার প্রধান সরবারহ আসে সার্বিয়া থেকে।

এদিকে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সামরিক জান্তা মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পর চীন, রাশিয়া এবং সার্বিয়া দেশটিকে অস্ত্র সরবারহ করা চালিয়ে গেছে, যা দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের দমনে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে যুদ্ধ বিমান, সাজোঁয়া যান, রকেট এবং কামান।

ওই বিবৃতিতে দেশটির সরকারের অস্ত্র পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।


বিশ্ব সংবাদ   মিয়ানমার   এশিয়া   অস্ত্র সরবরাহ   অস্ত্র   সমরাস্ত্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পুরুষদের বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করলো মিয়ানমার

প্রকাশ: ১২:৪৫ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পুরুষদের জন্য কাজের সন্ধানে বিদেশ গমন নিষিদ্ধ করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করায় দেশ ত্যাগে আগ্রহ বেড়েছে নাগরিকদের। ফলে কাজের নামে মিয়ানমারের পুরুষ নাগরিকদের দেশ ত্যাগ রোধে এই নীতি আরোপ করেছে জান্তা বাহিনী। 

বৃহস্পতিবার জান্তার তথ্য টিমের পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এর আগে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগ আইন প্রণয়ন করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। 

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশে কাজ করতে ইচ্ছুক পুরুষদের আবেদন গ্রহণ 'সাময়িকভাবে স্থগিত' করেছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়।

‘বহির্গমন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য বিষয় অনুসারে যাচাই করতে আরও সময় নিতে’ এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করায় দেশ ত্যাগে আগ্রহ বেড়েছে নাগরিকদের। ফলে কাজের নামে মিয়ানমারের পুরুষ নাগরিকদের দেশ ত্যাগ রোধে এই নীতি আরোপ করেছে জান্তা বাহিনী।


মিয়ানমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ফিলিপাইন

প্রকাশ: ১২:৩২ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে ফিলিপাইনে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা ১৬ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে দেশটির ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা ফিলিপাইন ইনস্টিটিউট অব ভলকানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি (পিআইভিএস)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মধ্যাঞ্চলীয় লেইতে প্রদেশের উপকূলীয় শহর দুলাংয়ের সাগরতীর থেকে ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে সমুদ্রের তলদেশের ৮ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূকম্পটির উৎপত্তিস্থল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেটের অবস্থান পরিবর্তন এই ভূমিকম্পের প্রধান কারণ। একই কারণে নিকট ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প দেখা দিতে পারে বলে সতর্কবার্তাও দিয়েছে পিভিআইএস।

ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগরের 'আগ্নেয় মেখলা' (রিং অব ফায়ার) অঞ্চলের টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থান হওয়ার কারণে ফিলিপাইনে ছোট-বড় মাত্রার ভূমিকম্প প্রায় নিয়মিত একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।


ভূমিকম্প   ফিলিপাইন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

স্ত্রীকে পিটিয়ে মারলেন কাজাখস্তানের সাবেক মন্ত্রী

প্রকাশ: ১২:১৪ পিএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কাজাখস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী কুয়েঞ্জিক বিশিমবায়েভের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ সামনে আসার পর দেশটিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

কখনও ঘুষি, কখনও লাথি। স্ত্রীকে এভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন টানা আট ঘণ্টা। 

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ঘটনায় বেকায়দায় পড়েছেন দেশে সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সকলকে সুবিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া প্রেসিডেন্টও।  

ঘটনাটি গেল নভেম্বর মাসের। ওই মাসে একটি রেস্তোরাঁয় মিলেছিল বিশিমবায়েভের স্ত্রী সালতানাত নুকেনোভার মরদেহ। যে রেস্তোরাঁতে তার মরদেহ পাওয়া যায় সেটি বিশিমবায়েভের এক আত্মীয়ের। আগের দিন রাত থেকে সেখানে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। 

ওই রেস্তোরাঁর সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। সেখানে দেখা গেছে, কাজাখস্তানের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী স্ত্রীকে টানা আট ঘণ্টা ধরে নির্যাতন চালিয়েছেন। ঘুষি-লাথির পর সালতানাতকে চুলের মুঠি ধরে পাশের ঘরে টেনে নিয়ে যান।  

আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে শৌচালয়ে গিয়ে লুকিয়েছিলেন সালতানাত। দরজা ভেঙে তাকে সেখান থেকে বার করে এনে মারধর শুরু করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সালতানাত। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা হয়েছে, মাথায় আঘাত লেগে মৃত্যু হয়েছে সালতানাতের। 


অর্থমন্ত্রী   কাজাখস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কংগ্রেস ৫০ আর তৃণমূল ১৫ আসনও পাবে না: মোদি

প্রকাশ: ১১:৩৯ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এবার লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে ১৫ আসনও পাবে না পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল। এ ছাড়া আরেক রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ৫০ আসনও পেরোতে পারবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

তৃণমূল ও কংগ্রেসের আমলে দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তৃণমূল যাই করুক না কেন তারা বেশি আসন পাবে না। তাদের পক্ষে সরকার গঠন করাও সম্ভব নয়। যতই লড়ুক না কেন।

শুক্রবার নির্বাচনী প্রচারণায় তৃণমূল ও কংগ্রেসকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন মোদি।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটই (এনডিএ) সরকার গঠন করবে। এনডিএ ৪০০ পার করবে কি না সেটাই এখন চর্চা চলছে। একটা সময় বামেদের সূর্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে অস্ত হতেই চাইত না। তবে এখন দেখুন বামেদের একটা পতাকাও দেখা যায় না।

মোদি বলেন, কংগ্রেস দেশ বিভাজন করেছিল ধর্মের ভিত্তিতে। তোষণের রাজনীতি করে ইন্ডিয়া জোট। মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) আনা হয়েছে। এর সবচেয়ে বিরোধিতা করছে তৃণমূল। এরা সিএএ নিয়ে ভুল প্রচার চালাচ্ছে। তৃণমূল এসব করে সিএএ করা আটকাতে পারবে না। মানুষ অধিকার পাবেই।


কংগ্রেস   তৃণমূল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ছাত্র বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কে পরিবর্তন আনতে পারে

প্রকাশ: ১১:২৫ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তিন সপ্তাহে গড়ানো ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্র বিক্ষোভ ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কে পরিবর্তন আনতে পারে বলে আলজাজিরার এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে। 

দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের মিডিয়া স্টাডিজ অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরি বলেছেন, এ আন্দোলন যদি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে তাহলে দুই দেশের সম্পর্কে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। যদিও বুধবার মারমুখী পুলিশ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের তাঁবু সরিয়ে ফেলে আন্দোলন এক ধরনের পণ্ড করে দেয়। 

কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটাই শেষ নয়, তারা আবার ফিরে আসবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না গাজায় গণহত্যা ও ইসরায়েলকে মার্কিন সহায়তা বন্ধ করা হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলেও অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ক্যাম্পাসগুলো ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে। তবে ফ্রান্সের প্যারিসে সায়েন্স পো বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার পুলিশ ঢুকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। এখানে অনেক শিক্ষার্থী আমরণ অনশনেও বসেছিলেন। তাদের তাঁবু সরিয়ে হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পুলিশ। খবর আলজাজিরার।

দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের মিডিয়া স্টাডিজ অধ্যাপক মোহাম্মদ এলমাসরি বলেছেন, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্যালেস্টাইনপন্থি বিক্ষোভগুলো একটি বড় ধরনের প্রজন্মগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কিছুদিন আগেও মার্কিন শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের প্রতি অনেক সহানুভূতিশীল ছিলেন। গাজায় অনেক আগে থেকে ইসরায়েলি বর্বরতা চলছে। কিন্তু এর আগে কখনো সেভাবে মার্কিন শিক্ষার্থীদের এর প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে যাওয়ায় ধৈর্যের বাঁধও যেন ভেঙে গেছে মার্কিন শিক্ষার্থীদের। 

এর আগে সর্বশেষ ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদ করে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, যে বিক্ষোভ কাঁপন ধরিয়েছিল মার্কিন প্রশাসনে। এবারও সে ধরনের একটি বিক্ষভ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে একটি প্রজন্মগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এ বিক্ষোভ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের নতুন একটা চিত্র দেখা যেতে পারে। 


এলমাসরি আলজাজিরাকে বলেন, এ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে এই প্রথম ফিলিস্তিনি ইস্যু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি ঘরোয়া ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এটি কমবেশি মূলধারায় পরিণত হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে পড়ালেখা করছেন। এখানে শুধু মার্কিন শিক্ষার্থীরা নয়, বিভিন্ন মহাদেশের এমনকি অনেক ইহুদি শিক্ষার্থীও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। কাজেই এ বিক্ষোভ নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। তরুণরাই মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্কের নতুন পটভূমি রচনা করতে পারে।

এদিকে বুধবার রাতে বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের তাঁবু সরিয়ে ফেলার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিস্থিতি এখন কার্যত শান্ত। সেদিন মারমুখী পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় শিক্ষার্থীদের। এক রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে। গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আন্দোলন পণ্ড হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটাই শেষ নয়। তারা যে কোনো সময় ক্যাম্পাসে ফিরে আসবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা থামবেন না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

এবার অস্ট্রেলিয়াজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ : যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাঁবু ফেলে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। দেশটির শীর্ষ একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শুক্রবার বিক্ষোভ করেন শত শত বিক্ষোভকারী। গাজায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভে ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এ বিক্ষোভ করছেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান সব নগরীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা দুই সপ্তাহ ধরে তাঁবু বসিয়ে বিক্ষোভ করছেন। অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা গত সপ্তাহে প্রধান হলের বাইরে জড়ো হয়ে তাঁবু ফেলে অবস্থান নেন। এ ছাড়া মেলবোর্ন, ক্যানবেরা এবং অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরগুলোতে একই ধরনের শিবির স্থাপন করেছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এখনো বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মারমুখী অবস্থানে যায়নি। শুক্রবার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিক্ষোভে অংশ নেয় তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী। এর মধ্যে ৩৯ বছর বয়সী ম্যাট তার দুই বছরের ছেলেকে কাঁধে নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে শুধু ছাত্রসমাজই বিরোধিতা করছে না। সেখানে কী হচ্ছে সেটি একবার অনুধাবন করতে পারলে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে বিষয়টিতে জড়িত হওয়া, সচেতনতা বাড়ানো এবং সংহতি প্রকাশের চেষ্টা করা।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের সমালোচক হয়ে উঠেছে। গত মাসে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অস্ট্রেলিয়ার এক ত্রাণকর্মীও নিহত হন। তবে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সরকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়াতেই প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে।


ছাত্র   বিক্ষোভ   যুক্তরাষ্ট্র   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন