ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জ্বালানি সংকটে বিকল্প হয়ে উঠছে কয়লা, পরিবেশের কী হবে?

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail জ্বালানি সংকটে বিকল্প হয়ে উঠছে কয়লা, পরিবেশের কী হবে?

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার চতুর্থ মাসের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী কয়লার চাহিদা ১১গুণ বেড়ে গেছে। কয়লাকে বলা হয় সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণকারী জীবাশ্ম জ্বালানি। যেটির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধে একবছর আগেও নানা উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হচ্ছিল। এখন সেই কয়লার খোঁজে ছুটছে নানা দেশ, হু হু করে বাড়ছে দাম।
 
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার মাতওয়ারা বন্দর দিয়ে গত বছরের শেষভাগ পর্যন্তও খুব বেশি জাহাজ চলাচল করতো না। ছিলো না কোনো ব্যস্ততা। ওই বন্দর দিয়ে মূলত কাজুবাদামের চালান যেত। কিন্তু ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বন্দরের দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ঘুমন্ত বন্দরটি যেন হঠাৎ করে পুরোপুরি সজাগ হয়ে উঠেছে। একের পর এক কয়লা বোঝাই জাহাজ মাতওয়ারা বন্দর থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। 

গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করলে শাস্তি হিসেবে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার সব ধরনের জ্বালানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ফলে বিশ্ববাজারে রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, রেকর্ড উচ্চতায় উঠে যায় জ্বালানির দাম। 

যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো বিশ্বে। বিশেষ করে রাশিয়ার গ্যাস ও কয়লার উপর নির্ভরশীল ইউরোপ পড়েছে সবচেয়ে বেশি বিপদে। ইউরোপের দেশগুলো এখন চাহিদা মেটাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে জ্বালানি পণ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। 
তানজানিয়া এতদিন সাধারণত পূর্ব আফ্রিকার প্রতিবেশী দেশগুলোতে থার্মাল কয়লা রপ্তানি করত। প্রতিবেশী দেশগুলোর বাইরে কয়লা রপ্তানির কথা এতদিন তানজানিয়া সরকার চিন্তাও করতে পারতো না। 

কারণ, দেশটির দক্ষিণপশ্চিমের খনিগুলো থেকে সবচেয়ে কাছের বন্দর মাতওয়ারায় কয়লা আনতেও তাদের ছয়শ কিলোমিটারের বেশি সড়কপথ পাড়ি দিতে হয়। তানজানিয়ার মাতওয়ারা বন্দর ভারত মহাসাগরে। 

থার্মাল কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার হয়। জ্বালানির অভাবে পুরো বিশ্বেই এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সংকটে পড়েছে। যার ফলে কয়লার চাহিদা বেড়ে গেছে। ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে থার্মাল কয়লার দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশের ক্রেতারা এখন তানজানিয়া, বতসোয়ানা এমনকি মাদাগাস্কারের মত দেশগুলোর অপেক্ষাকৃত দুর্গম কয়লা খনি থেকেও উচ্চমূল্যে কয়লা কিনতে রাজি আছে। এই যে কয়লার চাহিদা পুনরায় বেড়ে যাওয়া, তা এক বছর আগেও করা জলবায়ু পরিকল্পনার সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। বিভিন্ন দেশের সরকার এখন রাশিয়ার জ্বালানির উপর নির্ভরতা থেকে নিজেদের মুক্ত করতে চাইছে। 

এদিকে বিদ্যুতের বাড়তে থাকা দামের উপরও লাগাম টানার চেষ্টা করছে। এজন্য তারা আবারও সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণকারী জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। 

তানজানিয়ার একটি কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান আহমেদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউরোপের ক্রেতারা এখন কয়লার জন্য যেকোনো জায়গায় যাচ্ছে। 
‘‘তারা অনেক ভালো দাম দিতেও চাইছে।” 

গত কয়েকমাসে ইউরোপমুখী কয়লার চালান অনেক বেড়ে গেছে বলে জানায় কমোডিটিস ট্রেডার ‘কার্গিল’। 
কার্গিলের সমুদ্র পরিবহন বিভাগের প্রেসিডেন্ট জন ডিলেমান বলেন, ‘‘ইউরোপ এখন অন্যান্য ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামছে। বিকল্প জ্বালানি গ্যাস অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

‘‘ইউরোপকে এখন অবশ্যই কয়লার উৎস খুঁজে পেতে হবে এবং আমরা শিগগিরই কলম্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি আরো দূরের দেশ থেকেও ইউরোপে অনেক বেশি কয়লার চালান যেতে দেখতে পাব।” 

যদিও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যে কোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। ফলে কয়লার চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং উচ্চমূল্যে তা বিক্রির সুযোগ খুব বেশি দিন নাও থাকতে পারে। তারপরও কয়লা সমৃদ্ধ দেশগুলো একে তাদের জন্য খুব ভালো সুযোগ হিসেবে দেখছে, যে সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে চায় না। 

তানজানিয়া সরকার আশা করছে এ বছর তাদের কয়লা রপ্তানি দ্বিগুণ হবে এবং তা প্রায় ছয় লাখ ৯৬ হাজার ৭৭৩ টনে পৌঁছে যাবে। দেশটির মাইনিং কমিশন থেকে রয়টার্সকে বলা হয়, এ বছর তাদের কয়লা উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৭ টনে পৌঁছাবে বলে তারা আশা করছেন। 

মাইনিং কমিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সচিব ইয়াহইয়া সেমাম্বা বলেন, কয়লা রপ্তানির এই উল্লম্ফন থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে বলে আশা করছে সরকার। ওই অর্থ দিয়ে একটি রেলপথ নির্মাণের কথা চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। যে রেলপথ কয়লা উৎপাদনকারী রুভুমা অঞ্চলের সঙ্গে মাতওয়ারা বন্দরকে জুড়বে। 

তানজানিয়ার খনি কোম্পানি ‘রুভুমা কোল’ এরই মধ্যে একটি ট্রেডারের মাধ্যমে অন্তত চার লাখ টন কয়লা রপ্তানি করেছে। গত নভেম্বর থেকে কয়লার ওই চালান নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও ভারতে গিয়েছে। 

এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে রুভুমা কোল’র সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল রয়টার্স। কিন্তু তারা কথা বলতে রাজি হননি। 
চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং যোগান স্বল্পতার কারণে কয়লা নিয়ে আবারও বাণিজ্যের পথ খুলেছে। ব্রেমার রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, গত জুলাই মাসে বিশ্বব্যাপী জীবাশ্ম এ জ্বালানির চাহিদা এবং যোগান রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে থার্মাল কয়লা আমদানি করছে। আগে যেগুলো এশিয়ার বাজারে যেত। ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার চতুর্থ মাসেই বিশ্বব্যাপী কয়লার চাহিদা ১১গুণ বেড়ে গেছে। 

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে ইইউর দেশগুলো রাশিয়া থেকে গ্যাস পাচ্ছে না। এদিকে তারা রাশিয়া থেকে কয়লা আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে ইইউর দেশগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মক চাপে পড়েছে এবং ওই চাপ দিন দিন বাড়ছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে জ্বালানির বিকল্প উৎস খুঁজছে। 

ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে রাশিয়া ইইউর থার্মাল কয়লার চাহিদার ৭০ শতাংশ মেটাতো। ইইউর মোট গ্যাসের চাহিদার ৪০ শতাংশের সরবরাহও আসতো রাশিয়া থেকে। 

এসব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন ইউরোপের দেশগুলো পরিবেশ নিয়ে আর চিন্তা করতে পারছে না। জলবায়ু রক্ষায় এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে তারা যেসব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল সেগুলো এখন পাশে সরিয়ে রেখে তারা জ্বালানি মজুদের দিকে অধিক মনযোগ দিয়েছে। 

সামনে শীত আসছে। সেসময় ইউরোপজুড়ে জ্বালানির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। কীভাবে তারা ওই চাহিদা সামাল দেবে, কীভাবে তারা নাগরিকদের ঘর গরম রাখবে সেই চিন্তাতেই দিশেহারা ইউরোপের বড় বড় এবং শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোও। 

বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে তারা এখন বন্ধ করে দেয়া কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা নিয়েছে। ইউরোপ নিয়ে ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘‘শক্তিশালী প্রণোদনা কয়লা এবং লিগনাইট উৎপাদনকে এক বছর আগের স্তরের চেয়ে ২৫ শতাংশ উপরে ঠেলে দিয়েছে। গত তিন বছর ধরে সম্পূর্ণ প্ল্যান্ট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও।” এনার্জি থিংক-ট্যাঙ্ক এম্বার এর তথ্যানুযায়ী, থার্মাল কয়লা পোড়ানো বেড়ে গেলে তা জলবায়ু রক্ষায় কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন হ্রাসের যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল তার সঙ্গে নানা দেশকে সাংঘর্ষিক অবস্থায় নিয়ে যাবে। এক ইউরোপীয় ইউনিয়নে যদি রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশগুলো যদি আরো কয়লা পোড়ানো শুরু করে তবে এক বছরেই কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। 

যদিও ইউরোপের দেশগুলোর সরকার বলছে, এ পরিবর্তন অস্থায়ী। যদিও জ্বালানি সংকট কতদিন থাকবে তার উপর সম্পূর্ণ পরিস্থিতি নির্ভর করছে। 

ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি পর্যন্ত তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে কয়েকটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা পিছিয়ে দিয়েছে। 

বতসোয়ানার একটি কয়লা কোম্পানি আশা করছে, অন্তত আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত কয়লার বাজার এমন শক্তিশালী থাকবে। যদি তাই হয়, যদি তারপর কয়লার বাজার পড়তে শুরু করে তবুও তারা তাদের কয়লা উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করবে। 

কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘‘কয়লাকে ঘিরে যেসব নেতিবাচক কথা বলা হতো এখন সেগুলো পরিত্যাগ করা হয়েছে। যুদ্ধের কারণে যে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে সে পরিস্থিতিতে কয়লাকে শক্তির একটি উৎস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।”

জ্বালানি সংকট   কয়লা   পরিবেশ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতে বেড়েছে মুসলিম, কমছে হিন্দুদের সংখ্যা: রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৩:০৪ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে গত ৬৫ বছরে হিন্দু জনগোষ্ঠী কমেছে। অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে বেড়েছে সংখ্যালঘু বা মুসলিমদের সংখ্যা। ১৯৫০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যার ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ। 

১৯৫০ সালে ভারতে মুসলিম ছিল ৯.৮৪ শতাংশ। এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যার ১৪.১৫ শতাংশ মুসলিম। শিখ জনসংখ্যা ১.২৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১.৮৫। বৃদ্ধির হার ৬.৫৮ শতাংশ। এছাড়া খ্রিষ্টান জনসংখ্যা ৫.৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে খ্রিষ্টান জনসংখ্যার হার ২.২৪ থেকে ২.৩৬ শতাংশ হয়েছে। 

অন্যদিকে ১৯৫০ সালে ভারতের নাগরিক ছিলেন ৮৪ শতাংশ হিন্দু। পরের ৬৫ বছরে এই চিত্রটা পালটে গেছে। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ৮ শতাংশ কমেছে হিন্দুর সংখ্যা। 

এই সমীক্ষাতে দেখা গেছে, মিয়ানমারেও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে, এছাড়া হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে নেপালে। ১৬৭টি দেশের সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রীর ইকনমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল। 

এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় হিন্দুদের সংখ্যা ভারতে ধারাবাহিকভাবে কমেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, এই রিপোর্ট প্রমাণ করছে, ভারতে সংখ্যালঘুরা কেবলমাত্র সুরক্ষিতই নয় বরং সংখ্যার হারে ক্রমবর্ধমান। 

এদিকে, ভারতেরে উল্টো চিত্র বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। এই দুই দেশে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা (হিন্দু) বেড়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১৮.৫ শতাংশ হিন্দু নাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু বেড়েছে ৩.৭৫ শতাংশ। এই ৬৫ বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে হিন্দুদের সংখ্যা বেড়েছে ০.২৯ শতাংশ।


ভারত   মুসলিম   হিন্দু   সংখ্যালঘু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাফায় হামলা নিয়ে বাইডেনের কড়া হুঁশিয়ারি

প্রকাশ: ০২:০৪ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আগেই। এখন বাকি রয়েছে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির রাফা শহর। তবে লাখ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠা এই শহরে বড় ধরনের হামলার বিরোধিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

ফিলিস্তিনিদের হত্যায় ইসরায়েলকে শক্তি যুগিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই তিনিই এখন রাফায় অবস্থানকারী ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য মানবিকতার বুলি প্রকাশ করলেন। 

বুধবার (৯ মে) তিনি জনসম্মুখে ঘোষণা করেন, ইসরায়েলি যদি রাফায় অভিযান চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কোনো অস্ত্র সরবরাহ করবে না। খবর রয়টার্সের 

সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট করতে চাই, যদি ইসরায়েল রাফাতে হামলা চালায় তাহলে আমি তাদের কোনো অস্ত্র সরবরাহ করবো না। 

গাজায় ইসরায়েল অভিযান চালানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই প্রথম তেল আবিবের বিরুদ্ধে জনসম্মুখে শক্ত ভাষায় কথা বললেন। 

তিনি স্বীকার করেছেন, গাজায় বেসরকারি নাগরিকদের হত্যায় ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবহার করছে। গত সাত মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আর এ সময়ের মধ্যে তারা ৩৪ হাজার ৭৮৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। 

ইসরায়েলকে ২ হাজার পাউন্ড বোমা দেওয়ার বিষয়ে বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এসব বোমা এবং অন্য উপায়ে গাজার বেসরকারি নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছে। 

মার্কিন সরকারের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, রাফাতে হামালার বিষয়ে ওয়াশিংটন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এরই অংশ হিসেবে বোমার একটি চালায় আটকে দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাড এরদান ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপকে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্বাস হচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখতে পারে।


রাফা   হামলা   বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মিসরে ইসরায়েলি গোয়েন্দাকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশ: ০১:২৫ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

মিশরের বন্দরনগরী আলেক্সান্দ্রিয়ায় ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশী জিব কিপার নামে এক ইসরায়েলি গোয়েন্দাকে গুলি করে করা হয়েছে। ফিলিস্তিনপন্থি মিসরীয় একটি সশস্ত্র গ্রুপ এ হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওই ইহুদিবাদী ব্যবসায়ীকে মঙ্গলবার (৭ মে) আলেক্সান্দ্রিয়ায় হত্যা করা হয়। খবর টাইমস অব ইসরাইল ও আল-মায়াদিন টিভির।

ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরের বন্দরনগরী আলেক্সান্দ্রিয়ায় ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে থাকা ইহুদি সেনাদের হয়ে কাজ করা গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ওই ইসরায়েলি ব্যবসায়ী ছিলেন। তাকে গত মঙ্গলবার হত্যা করা হয়।

গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই তেলআবিবের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আছে ফিলিস্তিনপন্থি বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী। শুধু তাই নয় লেবানন, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে নিয়মিত হামলাও চালিয়ে আসছে তারা। সবশেষ গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফাহতে স্থল অভিযানকে কেন্দ্র করে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে সতর্ক করে মিসর।

জানা যাচ্ছে, সেই সতর্কবার্তা উপেক্ষা করায় ইহুদি সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে মিসরভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো। নিজেদের গোয়েন্দা দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তারা ছদ্মবেশী ওই ইসরায়েলিকে হত্যা করেছে।

নিহত জিব কিপার ছিলে এলএলসি গ্রুপ নামক একটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ওই কোম্পানি মিসর থেকে সবজি ও ফল রপ্তানি করে। মিসরের আলেক্সান্দ্রিয়ায় গ্রুপটির সদরদপ্তর অবস্থিত এবং ইসরাইল ও ইউক্রেনে এটির দপ্তর রয়েছে।

ইসরাইলি ওয়াইনেট নিউজ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, জিব কিপার কানাডার পাসপোর্ট নিয়ে মিসরে প্রবেশ করেছিল। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ‘ভ্যানগার্ডস অব লিবারেশন’ নামের একটি সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। ‘ভ্যানগার্ডস অব লিবারেশন’ নিজেদের গত বছর জুন মাসে তিন ইসরাইলি সেনাকে হত্যা করে মৃত্যুবরণকারী মিসরীয় যুবক মোহাম্মাদ সালাহ’র অনুসারী বলে দাবি করে।

সংগঠনটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা একজন ‘অপরাধী ইসরায়েলি এজেন্টকে’ হত্যা করেছে। নিহত ইহুদিবাদী মিসর থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পক্ষে লোক নিয়োগ করত বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ভ্যানগার্ডস অব লিবারেশনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইহুদিবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে মিসরীয় জনগণের সংগ্রামের পথে কিপারের হত্যাকাণ্ড একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

মিশরীয় পুলিশ বাহিনীর সদস্য ২৩ বছর বয়সি মোহাম্মাদ সালাহ গত বছরের জুন মাসে সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে প্রবেশ করে ইহুদিবাদী সেনাদের বিরুদ্ধে এক বীরোচিত অভিযান চালান। তার হামলায় তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর দখলদার সেনাদের পাল্টা হামলায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


মিসর   ইসরায়েল   গোয়েন্দা   গুলি   হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পাকিস্তানে অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে গাঁজার চাষ

প্রকাশ: ০১:০৪ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাকিস্তানি আইনে গাঁজার চাষ নিষিদ্ধ হলেও দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে হাজার হাজার হেক্টর জমি রয়েছে যেখানে শত শত বছর ধরে গাঁজার চাষ হচ্ছে। 

দীর্ঘ সময় ধরে চরম অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাতিষ্ঠানিক অনিয়ম ও দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, করোনা মহামারি, বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটির অর্থনীতিকে নাজুক করে তুলেছে। সংকট মোকাবিলায় বিদেশি সাহায্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে উচ্চসুদে ঋণও নিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প চিন্তা-ভাবনা করছে পাক কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা করা হচ্ছে গাঁজা চাষের। 

গাঁজা সাধারণত মাদক হিসেবেই বেশি পরিচিত। তবে এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে এবং ওষুধ হিসেবেও এর প্রয়োগ হয়। মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় অনেক দেশেই এটি নিষিদ্ধ। আবার ওষুধি ব্যবহারের জন্য অনেক দেশই এর ব্যবহার বৈধ করেছে। এমনকি বহুদিন নিষিদ্ধ থাকলেও সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও গাঁজা দিয়ে ওষুধ তৈরির অনুমতি দিয়েছে। দিনদিন এর চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর একটা বড় বাজার তৈরি হয়েছে। অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বিকাশমান সেই বাজারের সুযোগ নিতে চাচ্ছে পাকিস্তান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গাঁজা চাষ বিষয়ক একটি অধ্যাদেশও জারি করেছে দেশটি।


গাঁজা   পাকিস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শিক্ষার্থী ভিসায় কঠিন শর্ত আরোপ অস্ট্রেলিয়ার

প্রকাশ: ১১:৪৬ এএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমন নিয়ন্ত্রণে এবার নতুন পদক্ষেপ নিলো অস্ট্রেলিয়া। ভিসার আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে এই তথ্য।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের অবশ্যই ন্যূনতম ২৯ হাজার ৭১০ অস্ট্রেলীয় ডলারের বাংলাদেশি মুদ্রায় (২১ লাখ ৪৬ হাজার ৯২২ টাকা) সমপরিমাণ অর্থ সঞ্চিত থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই সঞ্চিত অর্থ সংক্রান্ত ব্যাংক নথি প্রদর্শন করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনের জন্য আগে প্রদর্শনযোগ্য সঞ্চিত অর্থের বাধ্যবাধকতা ছিল ন্যূনতম ২১ হাজার ৪১ অস্ট্রেলীয় ডলার, পরে ২০২৩ সালের অক্টোবরে তা বৃদ্ধি করে ২৪ হাজার ৫০৫ অস্ট্রেলীয় ডলারে উন্নীত করা হয়। সেই হিসেবে এবার দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হলো প্রদর্শনযোগ্য সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ। আগামীকাল শুক্রবার থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি বিবৃতিতে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসায় আবেদনে যেসব কাগজপত্র-নথি সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক, সেসবের মধ্যে ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ বিষয়ক নথিও অন্তর্ভুক্ত। এই নথি অন্তর্ভুক্ত করা না হলে আবেদন গ্রহণ করার নিয়ম নেই।


শিক্ষার্থী ভিসা   অস্ট্রেলিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন