ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ায় পুতিনের ওপর অসন্তোষ বাড়ছে

প্রকাশ: ০৮:৪২ এএম, ১০ অক্টোবর, ২০২২


Thumbnail রাশিয়ায় পুতিনের ওপর অসন্তোষ বাড়ছে

ইউক্রেনে রুশ সামরিক আগ্রাসন শুরু হবার আট মাস চলছে। তবে এই সময়ের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি রাশিয়া। এর জের ধরে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনে সেনা নিযুক্তির ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় সেনা নিযুক্তির ঘোষণা। টেলিভিশন ভাষণে সেদিন পুতিন বলেছিলেন, দেশের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এটি (সেনা নিযুক্তি) খুবই জরুরি।

পুতিনের ঘোষণার পর দুই লাখের বেশি মানুষের নাম নতুন সেনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রুশ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে পাঠাবে রাশিয়া। তবে পুতিনের এই উদ্যোগে রাশিয়াজুড়ে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়েছে। দেখা দিয়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভ পর্যবেক্ষক সংস্থা ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, রাশিয়াজুড়ে প্রায় ২ হাজার ৪০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

পুতিনের ঘোষণার পর রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যুদ্ধে অংশ নিতে এমন অনেককে চিঠি দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ব্যক্তিজীবনে চার কিংবা এর বেশি সন্তানের জনক। এমনকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও বেঁধে দেওয়া বয়সের বেশি বয়সী অনেকে চিঠি পেয়েছেন। সেনাবাহিনীর এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারাও এমন ঘটনার সমালোচনা করেছেন, যা রাশিয়ায় বিরল।

রাশিয়ার অনেক নাগরিক যুদ্ধে যেতে নারাজ। কোনো ধরনের ঝামেলায় না গিয়ে নির্বিঘ্ন জীবন চান তাঁরা। কিন্তু যুদ্ধে যাওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা এড়ানোও কঠিন। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের ঘোষণার পর রাশিয়ার অনেক নাগরিক দেশ ছাড়তে শুরু করেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোয় পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, এর ফলে রুশ সরকার তাঁদের জোর করে যুদ্ধে পাঠাতে পারবে না। তাঁদের জীবন রক্ষা পাবে।

পুতিন যেদিন সেনা নিযুক্তির ঘোষণা দেন, তার পরের চার দিনে রাশিয়ার প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার নাগরিক বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন বলে জানা গেছে। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান লেভাদা সেন্টারের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা বলেছেন, তাঁরা সেনা নিযুক্তির ঘোষণার পর আতঙ্কিত। এ ছাড়া উত্তরদাতাদের ১৩ শতাংশ পুতিনের এমন উদ্যোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ইউক্রেন যুদ্ধে সেনা মোতায়েনের অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে পুতিনের জনপ্রিয়তা কমতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউক্রেনে অভিযান ঘিরে এর আগে পুতিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছিল। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেন পুতিন। ওই সময় রাশিয়ায় পুতিনের প্রতি সমর্থন ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশ হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগে পুতিনের প্রতি ৬৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন ছিল। অভিযান শুরুর পর তা বেড়ে ৮০ শতাংশ হয়।

তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পাওয়া, কোনো কোনো জায়গায় রুশ বাহিনী বিপর্যয়ের মুখে পড়ার ঘটনা, সেনা নিযুক্তির অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া সরকারকে চাপের মুখে ফেলেছে। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বরে এক জরিপে পুতিনের প্রতি সমর্থন কমে ৭৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক কনরাড মুজায়কা বলেন, ‘আমি মনে করি না, পুতিনের সেনা নিযুক্তির সিদ্ধান্ত এই যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করবে। কারণ, সিদ্ধান্তটি কিছুটা দেরিতে নেওয়া হয়েছে।’ তাঁর মতে, বরং উল্টো ফল হতে পারে। নতুন করে যুদ্ধে নিয়োজিত রুশ সেনারা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন। এর বড় একটি কারণ, এসব সেনার সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা কম। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক নতুন সেনার জন্য অস্ত্র ও রসদের সমস্যার টেকসই সমাধান করতে পারেনি মস্কো।

কনরাড মুজায়কার মতে, এই মুহূর্তে ভারী যুদ্ধাস্ত্রের সংকটে ভুগছে রুশ বাহিনী। ইরান ও উত্তর কোরিয়া থেকে কিছু অস্ত্র আমদানি করা হলেও সেগুলো পর্যাপ্ত ও ততটা কার্যকর নয়। তাই এটি বড় একটি সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। চলমান যুদ্ধে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে এসব সমস্যার দ্রুত ও টেকসই সমাধান করতে হবে।  

এদিকে যুদ্ধের বর্তমান গতিপ্রকৃতি ও প্রাণহানির ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় বেশ উদ্বিগ্ন রাশিয়ার সাধারণ মানুষ। তাঁদের অনেকেই ভাবছেন, এই যুদ্ধে মস্কোর পরাজয় ঘটবে। লেভাদা সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, রাশিয়ার প্রায় ৮৮ শতাংশ মানুষ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উদ্বিগ্ন। গত আগস্টে এই হার ছিল ৭৪ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক সার্জেই রাদশেঙ্কো বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন পুতিন।

এর মধ্য দিয়ে তিনি নিজের সঙ্গেই তামাশা করছেন। আমি মনে করি, এবার পুতিনের এই বার্তা রাশিয়ায় তেমন একটা কাজ করবে না।’ অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্টন বারবাশিন বলেন, বিপুলসংখ্যক রাশিয়ানকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পুতিন পররাষ্ট্রনীতির প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর ওই প্রতিশ্রুতি হলো, তিনি বহির্বিশ্বে যে সামরিক তৎপরতা চালাবেন, সেটার কোনো প্রভাব দেশের ভেতরে পড়বে না।

এখন যে পরিস্থিতি চলছে, তার কয়েকটি বিপদ রয়েছে। বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, এর ফলে রাশিয়ার মানুষের ওপর (বিশেষত ভিন্নমতের মানুষ) দমনপীড়নের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। ক্ষমতা কমতে পারে পুতিনের। এ ছাড়া রাজনৈতিক অভিজাতদের বিভিন্ন স্বার্থরক্ষা ও বিরোধপূর্ণ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন পুতিন

কেননা শুধু সাধারণ মানুষ নন, রাশিয়ার অভিজাত রাজনীতিবিদদের মধ্যেও এখনকার পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে পুতিনের ঘনিষ্ঠজনেরাও রয়েছেন। সম্প্রতি পুতিনের মিত্র হিসেবে পরিচিত চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ ও রুশ ধনকুবের ইয়েভগেনি প্রিগোজিম জনসমক্ষে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেছেন। রুশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আন্দ্রেই গুরুলেভ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়েছে সেনা কর্তৃপক্ষ। বাস্তবতার সঙ্গে এই প্রতিবেদনের মিল নেই।

সরকারবিরোধিতার ফল ভোগ করেছেন অনেকেই। গত মাসের শেষের দিকে উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন পুতিন। এ ছাড়া যুদ্ধ চলাকালে দীর্ঘদিন ধরে জনসম্মুখে আসছেন না রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তাই গুঞ্জন ছড়িয়েছে, পুতিনের সঙ্গে শোইগুর মতবিরোধ চরমে পৌঁছেছে। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোয় খবর বেরিয়েছে, পুতিনের সেনা সমাবেশের সিদ্ধান্তে রুশ প্রশাসনের শীর্ষ অনেক সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তার সায় নেই। এ নিয়ে রুশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে।

এই বিষয়ে লন্ডনের কিংস কলেজের রুশ রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক গুলনাজ সারাফুদিনোভা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার পদ্ধতিগত দুর্বলতাকে সামনে তুলে ধরতে পারে এবং তাতে দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে। পুতিনের সামনে এটি বড় একটি চ্যালেঞ্জ।


বিশ্ব   রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ   ভ্লাদিমির পুতিন   রুশ নাগরিক   সেনা মোতায়েন   ক্ষোভ   অসন্তোষ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন অমিত শাহ

প্রকাশ: ০৭:৩০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বিহারের বাগুসারাই এলাকায় সোমবার এক নির্বাচনি র‍্যালিতে অংশ নেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা অমিত শাহ (৫৯)। র‍্যালি শেষে সেখানে একটি হেলিকপ্টারে উঠেন তিনি। 

উড্ডয়নের সময় সেই হেলিকপ্টার কিছু সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডান দিকে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছিল। মাটিতে আছাড় খাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন পাইলট।  

নিতীশ কুমারের দল জেডিইউয়ের সঙ্গে মিলে বিহারে ১৭টি আসনে লড়াই করছে বিজেপি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে গত ১৯ এপ্রিল এখানে চার আসনে নির্বাচন হয়। এরপর গত শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হয় আরও ৫ আসনে।


দুর্ঘটনা   অমিত শাহ   বিজেপি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাজস্থানে মসজিদের ভেতরে ইমামকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ রাজস্থানের আজমিরে মসজিদের এক ইমামকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মুখোশ পরা অজ্ঞাত তিন দুর্বৃত্ত।  

শনিবার (২৯ এপ্রিল) আজমিরের একটি মসজিদের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, আজমিরের রামগঞ্জের কাঞ্চননগরে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে ছয় শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন মোহাম্মদ মাহির নামের ওই ইমাম। এ সময় আক্রান্ত হন তিনি। 

এনডিটিভি বলেছে, মুখোশ পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে মোহাম্মদ মাহিরের ওপর আক্রমণ চালায়। ওই সময় তাকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে তারা। 

৩০ বছর বয়সী ইমাম মোহাম্মদ মাহির উত্তরপ্রদেশের রামপুরা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মারধরের সময় ইমামের সন্তানরা চিৎকার করলে তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। শিশুরা যাতে সাহায্যের জন্য কাউকে ফোন না করতে পারে সেজন্য মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

অভিযুক্তরা চলে যাওয়ার পর ইমামের শিশুরা মসজিদের বাইরে আসে এবং প্রতিবেশীদের ঘটনার বিষয়ে জানায়। পুলিশ বলেছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবীন্দ্র খিনচি বলেছেন, মসজিদের ভেতরে ওই ইমামকে পিটিয়ে হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করছে। ইমামকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার (হত্যা) আওতায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাজস্থান   মসজিদ   হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে কয়েক ডজন টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চার মাসের একটি শিশু আছে। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণ করা হয়েছে। এছাড়া ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে দুর্গত এলাকায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া পৃথক টর্নেডোতে কয়েক হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। টর্নেডোর আঘাতে মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে ওকলাহোমা, আইওয়া, টেক্সাস, মিসৌরি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, গত শনিবার আঘাত হানা কিছু টর্নেডোয় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৮ কিলোমিটারের বেশি।

টেক্সাস থেকে মিজৌরি পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড়ঝঞ্ঝায় কোথাও কোথায় ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওকলাহোমার সালফার শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উল্টো গেছে অনেক গাড়ি। ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এই দুর্যোগে প্রায় ১০০ ব্যক্তির আহত হয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   টর্নেডো   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশ কতটা পিছনে ফেলল পাকিস্তানকে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। সেই পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন চোখ এড়িয়ে যায় নি পাকিস্তানেরও। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ করাচিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, 'অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই।'

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, 'যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের ওপর বোঝা হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু শিল্প প্রবৃদ্ধিতে তারা এখন অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করেছে। আর তাদের এ উন্নতির দিকে তাকালে এখন আমাদের লজ্জা লাগে।'

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ(এলডিসি) থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের পথে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এছাড়া, তৈরি পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সামনে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যদা পাবে বাংলাদেশ। তখন বিশ্বদরবারে দেশটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে কমবেশি সবসময়ই অস্থিরতা ছিল। সেখানে গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত থাকায় দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এটি কোনোভাবেই সাহায্য করেনি। যেখানে, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একধরনের স্থিতিশীলতা ছিল, যা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পেরেছে।

সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে সেগুলো হলো- 

১. মাথাপিছু আয়: পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৮০ টাকা, যা তৎকালীন ৯৪ মার্কিন ডলারের সমান। নব্বইয়ের দশকের পর বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকে। 

বর্তমানে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৬৫ ডলার। আর পাকিস্তানে ১ হাজার ৪৭১ ডলার।

২. জিডিপির প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশে এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ অর্জন। অন্যদিকে, একই সময়ে পাকিস্তানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জিডিপির ৬ থেকে ৭ শতাংশ আসত শিল্প খাত থেকে। তখন পাকিস্তানে শিল্পের অবদান ছিল ২০ শতাংশ। 

বর্তমানে, বাংলাদেশে শিল্প খাতের অবদান জিডিপির ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশে জিডিপির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আর পাকিস্তানের ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার।

৩. রপ্তানি আয়: রপ্তানি আয়েও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ ৫ হাজার ৫৫৬ (৫৫.৫৬ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। 

অন্যদিকে, পাকিস্তান গত অর্থবছরে ৩ হাজার ২৫০ (৩২.৫০ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন ৬০ শতাংশ বেশি।

৪. মূল্যস্ফীতি: কোভিড মহামারি ও এর পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও উৎপাদনব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণেও মারাত্মক সমস্যায় পড়ে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দুই দেশেই আছে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি এখন অতিমাত্রায় বেশি। মূল্যস্ফীতির চাপে পাকিস্তানের মানুষ পিষ্ট। শুধু মার্চ মাসেই দেশটিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি।

৫. রির্জাভ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাংলাদেশ- পাকিস্তান দুই দেশেই আলোচিত। ডলারসংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি মূল্যে পণ্য আমদানি করতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়েছে সবার। তবে, পাকিস্তানের রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫ কোটি বা ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলারে। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ আছে পাকিস্তানের প্রায় চার গুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার কোটি বা ২০ বিলিয়ন ডলার।

৬. জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। 

৭. শ্রমশক্তিতে নারীদের অবদান: শ্রমশক্তিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অবদানেও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি ৩ জনের ১ জন নারী কাজ করেন। 

অন্যদিকে, পাকিস্তানে প্রতি ৫ জনের ১ জন কর্মক্ষম নারী। অর্থাৎ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের ৩৫ শতাংশ নারী, যা পাকিস্তানে ২০ শতাংশ।

৮. মানব উন্নয়ন সূচক: মানব উন্নয়ন সূচকেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে গড় আয়ুও বেশি। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যেখানে পাকিস্তানে মাত্র ৬৯ বছর। 

৯. শিশুমৃত্যু: আবার, শিশুমৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ৩৩। আর, পাকিস্তানে এই সংখ্যা ৭০-এর বেশি। 

১০. প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও আমাদের সাফল্য প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার হার ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে এই হার অর্ধেকেরও কম ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে লম্বা সময় ধরে গণতান্ত্রিক সরকার থাকার কারনে উন্নয়ন এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখাতে সুবিধা হয়েছে। যেখানে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার কম সময় ছিল। ফলে সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


বাংলাদেশ   পাকিস্তান   শাহবাজ শরিফ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে ৪২ জন নিহত

প্রকাশ: ০৫:৩৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছেন। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির অনেক অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

কেনিয়ার নাকুরু কাউন্টির গভর্নর সুসান কিহিকা বলেন, বাঁধ ভেঙে পানি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাদায় এখনও আরও অনেকে আটকা পড়েছেন। আমরা তাদের উদ্ধারের কাজ করছি।

মাই মাহিউর শহরের রিফ্ট ভ্যালির কাছের একটি বাঁধ পানির প্রবল চাপের কারণে হঠাৎ করেই ভেঙে যায়। এতে অনেক ঘরবাড়ি ও যানবাহন ভেসে গেছে। ওই এলাকায় চলাচলের একটি রাস্তাও ভেঙে গেছে। এতে শহরটির সাথে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, দেশটির কর্মকর্তারা বরেছেন, এল নিনো ধাঁচের আবহাওয়ার কারণে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত মার্চ থেকে কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।


কেনিয়া   বৃষ্টিপাত   নিহত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন