১১
অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৯টা। ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় একসঙ্গে উচ্চৈস্বরে বাজতে থাকা
মোবাইল ফোনগুলো ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উচ্চ আশঙ্কা’ সম্পর্কে সতর্ক করছিল দেশটির নাগরিকদের।
দ্রুততম সময়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিল রাষ্ট্রীয় জরুরি
পরিষেবা।
দুপুর
নাগাদ ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী জানায়, তারা ওই এলাকায় তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত
করেছে। এর মধ্যে জাপোরিঝিয়া, ভিনিত্সা ও লভিভের মেয়ররা জানান, তাদের এলাকায় একাধিক
রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি বাঁধ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার
কিছু অংশ। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়ার ছোঁড়া ২০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি
করে ভূপাতিত করা করেছে তারা।
ইউক্রেনজুড়ে
রাশিয়ার ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দ্বিতীয়দিনের চিত্র এটি। প্রথমদিন যেনো আরও বেশি
ভয়ংকর ছিল। ঐ ১০ অক্টোবর সারাদিনে মোট ৮৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল রুশ বাহিনী, যার
আঘাতে প্রাণ হারান অন্তত ১৯ জন।
ইউক্রেনীয়
বাহিনী বলেছে, তারা ৪৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। এই কাজে দেশটি এখনো বুক ও এস-৩০০’র
মতো সোভিয়েত আমলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া এর ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশে
নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের মজুতও ক্রমেই শেষ হয়ে আসছে।
সেই
তুলনায় পশ্চিমাদের তৈরি যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী এবং ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী ব্যবস্থাগুলো অনেক
বেশি কার্যকর। গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এগুলো পেতে চেষ্টা করছে ইউক্রেন।
গত সোমবার রাশিয়ার সমন্বিত আক্রমণের পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির
সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এসময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন,
ইউক্রেনে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যাচ্ছে।
কী
পাচ্ছে ইউক্রেন?
যুদ্ধের
শুরুর দিকে ইসরায়েলের কাছে আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছিলেন জেলেনস্কি। যদিও
তিনি পরে স্বীকার করেছিলেন, রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় আয়রন ডোম কার্যকর হবে না। কারণ এটি
নকশা করা হয়েছে স্বল্পপাল্লার রকেট হামলা ঠেকানোর জন্য এবং তা খুব সীমিত এলাকা কভার
করতে পারে।
ইউক্রেনে
রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে ক্যালিব্র এবং কেএইচ-১০১’র মতো দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র
দিয়ে। এগুলো অল্প উচ্চতায় উড়তে পারে এবং রাডার ফাঁকি দিতে খুবই দক্ষ। রুশ বাহিনী ইস্কান্দার
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সম্ভবত কিনঝাল হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার
করছে। এ দুটোই আকারে অনেক বড় এবং আয়রন ডোমের নজর এড়াতে সক্ষম।
এ
অবস্থায় ইউক্রেনের জন্য সুখবর হচ্ছে, পশ্চিমাদের তৈরি অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার
প্রথম ধাপে জার্মানির আইরিস-টি পাচ্ছে তারা। ইউক্রেন এর চারটি ব্যাটারি পাবে, যার প্রতিটিতে
তিনটি লরি-ভর্তি লঞ্চার রয়েছে। এর একেকটি লঞ্চার ৪০ কিলোমিটার রেঞ্জের ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র
বহন করে। এটি প্রায় ২০ কিলোমিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ইউক্রেনের
বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ প্রধান ডেনিস স্মাজনি জানিয়েছেন, আইরিস-টির
রাডার খুবই সংবেদনশীল। এটি ক্যালিব্রর মতো কম উচ্চতায় উড়ন্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শনাক্ত
ও ধ্বংস করতে পারবে।
ইউক্রেনে
আইরিস-টির একাধিক ব্যাটারি মোতায়েনের মাধ্যমে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের প্রধান
রুটসহ ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রতিরক্ষা লাইন স্থাপন করা সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হলো, আইরিস-টির কমান্ড যানটি বিভিন্ন গ্রাউন্ড স্টেশন ও উড়োজাহাজ থেকে পাওয়া
রাডারের তথ্যগুলোকে এক জায়গায় জমা করে। এর ফলে লক্ষ্যবস্তু যদি দেখা না-ও যায়, তবু
সেটি মোকাবিলা করতে পারে ব্যাটারিগুলো।
সোভিয়েত
আমলের বুক এবং এস-৩০০ ব্যবস্থাগুলো কেবল তাদের নিজস্ব রাডারে ধরা পড়া লক্ষ্যবস্তুকেই
মোকাবিলা করতে পারে। এছাড়া পুরোনো এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একটি একটি করে লক্ষ্যবস্তু
নির্ণয় ও তা ধ্বংস করে। সেখানে একটি আইরিস-টি ব্যাটারি তার ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্রই একসঙ্গে
ছুঁড়তে ও লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারে। এর ফলে জার্মান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটির চোখ
ফাঁকি দেওয়া আরও কঠিন।
ইউক্রেন
দ্বিতীয় যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছে তা হলো নরওয়ের নাসামস। আইরিস-টির
মতো এটিও রাডার ডেটার একাধিক উৎসকে একটি স্থানে একীভূত করে। এটি যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার
করে তার নাম আমরাম। এটি কয়েক দশক ধরে ন্যাটোর এয়ার-টু-এয়ার কমব্যাট ক্ষেপণাস্ত্র
হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ফলে বিদ্যমান বিশাল মজুতের কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ
করাও সহজ হবে।
বাইডেন
এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলেননি, তিনি ইউক্রেনকে কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিতে চান।
ইউক্রেন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধুনিক প্যাট্রিয়ট সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা
পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী কমান্ডের মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলছেন,
আপাতত আমরা কেবল এই প্রযুক্তি পাওয়ার স্বপ্নই দেখতে পারি।
প্রতিটি
প্যাট্রিয়ট ব্যাটারির দাম ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি এবং এটি চালানোর জন্য কয়েক
মাসের প্রশিক্ষণসহ কমপক্ষে ৭০ জন সৈন্যের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে
দেওয়ার মতো অতিরিক্ত প্যাট্রিয়ট নেইও। মার্কিন থিংক-ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক
অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের টম কারাকো বলেন, গত এক দশক বিমান ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র
প্রতিরক্ষায় জোর না দেওয়ার ফল এটি। সেক্ষেত্রে বাইডেন হয়তো নাসামস ব্যবস্থা দেওয়ার
গতি বাড়ানোর কথাই বলতে পারেন।
জার্মানি
গত জুন মাসেই ইউক্রেনকে আইরিস-টি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে
এটি বিলম্বিত হয়। ইউক্রেনে প্রথমবার এই ধরনের ব্যবস্থা মোতায়েন হতে যাচ্ছে। ১১ অক্টোবর
এর প্রথম চালান ইউক্রেনে পৌঁছেছে।
আইরিস-টি
মোতায়েন হলে ইউক্রেন রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার হার বাড়াতে সক্ষম হবে। অবশ্য রাশিয়ার
ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকানো আইরিস-টি বা নাসামস উভয়েরই ক্ষমতার বাইরে।
কয়েকশ কিলোমিটার রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্রটি খুব উচ্চগতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হনে।
এর আকারও অনেক বড়। আইরিস-টির সব ক্ষেপণাস্ত্র মিলিয়ে ওজন হবে ১০০ কেজির মতো। সেখানে একটি ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের ওজনই হতে পারে ৭০০ কেজি। তাছাড়া রুশ ক্ষেপণাস্ত্রটি চলার পথে দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম। এর ফলে সেটি চিহ্নিত করতে আরও বড় ও শক্তিশালী ইন্টারসেপ্টর প্রয়োজন হবে। স্মাজনির মতে, আপাতত রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সর্বোত্তম সুরক্ষা হতে পারে কংক্রিট।
বিশ্ব ইউক্রেন যুদ্ধ রুশ হামলা পশ্চিমা সহায়তা সমরাস্ত্র
মন্তব্য করুন
মার্কিন ঘাঁটি রুশ সেনা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
মন্তব্য করুন
এবার অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দেশটির সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউনিভার্সিটি অব সিডনি) তাবু স্থাপন করে অবস্থান নেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এদিনের আন্দোলন থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ান সরকার গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।
ব্রিটিশি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেলবোর্ন, ক্যানবেরাসহ অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ধরনের শিবির গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষোভের জায়গাগুলোতে স্বল্পসংখ্যক পুলিশের শান্তিপূর্ণ উপস্থিতিতে ছিল। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি পার্ক করা থাকলেও বিক্ষোভে কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না।
এদিকে, এই বিক্ষোভের কারণে অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধ্যয়নরত ইহুদী শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে এ ধরনের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে করা উচিত।
ইউনিভার্সিটি অব সিডনির উপাচার্য মার্ক স্কট বলেছেন, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস আংশিকভাবে অবস্থান করতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো সহিংসতা দেখা যায়নি।
কয়েক দফা দাবি নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরেই তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মিত্র দেশগুলো থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ ফিলিস্তিন
মন্তব্য করুন
গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।
সর্বশেষ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) অভিযান চালিয়ে ২০০ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্লাইউড, মেটাল ফেন্স, প্ল্যাকার্ড দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড এবং ক্যাম্পাস চত্বরের অস্থায়ী তাঁবুগুলো তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। এসব তাঁবুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাতে ঘুমাতেন।
ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গত মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে সেই আন্দোলন দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ১৮ এপ্রিল রাতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ অভিযানে ১০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ এবং তাদের তাঁবু-ব্যারিকেডও তছনছ করে দিয়েছিল পুলিশ।
কিন্তু পরের দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। মার্কিন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে 'ইহুদিবিদ্বেষী' আন্দোলন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে আন্দোলনের সংগঠকদের (যাদের মধ্যে ইহুধি ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন) দাবি, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভ গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ইউসিএলএ
মন্তব্য করুন
মুক্ত গণমাধ্যম বাংলাদেশ পাকিস্তান
মন্তব্য করুন
চলন্ত ট্রেনে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সাক্ষী হলেন যাত্রীরা। স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী। গত ২৯ এপ্রিল ভারতের জাহাংসি জংশনে এ ঘটনা ঘটে।
২৮ বছর বয়সি মোহাম্মাদ আরশাদ তার ২৬ বছর বয়সি স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তালাকের এ ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।
পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আরশাদের চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিয়ে হয়েছিল আফসানার সঙ্গে। বিয়ের পর দুজনে ভোপালে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে কানপুরের পুখরায়ানে যান দুজনে। সেখানে আরশাদের পৈতৃক বাড়ি। কিন্তু সেখানে গিয়েই চমকে যান আফসানা। জানতে পারেন আরশাদের আরও এক স্ত্রী রয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে আরশাদ ও তার মা আফসানার কাছে যৌতুকের দাবি করতে থাকে।
অভিযোগ, মারধরও করা হয় আফসানাকে। এরপর স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ভোপালে ফিরছিলেন আরশাদ। ঝাঁসি স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুখে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন আরশাদ। এরপরই ট্রেন থেকে নেমে যান।
এ ছাড়া স্ত্রীকে চলন্ত ট্রেনে মারধরও করেছিলেন আরশাদ। ট্রেন ঝাঁসিতে থামতেই জিআরপিকে সমস্ত ঘটনা জানান আফসানা। এরপরই আফসানাকে ফেরত পাঠানো হয় আরশাদের পৈতৃক বাড়িতে। ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। আরশাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
গোটা ঘটনার কথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও জানিয়েছেন আফসানা। স্বামীর কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
পুলিশের সার্কেল অফিসার জানিয়েছেন, আফসানার অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা থেকে রেহাই পাইনি তার বাবা-মাও।
মন্তব্য করুন
গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।