ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কাশ্মির ইস্যুতে ঋষি সুনাকে আস্থা পাকিস্তানিদের

প্রকাশ: ০৩:৫০ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০২২


Thumbnail কাশ্মির ইস্যুতে ঋষি সুনাকে আস্থা পাকিস্তানিদের

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।  ১৯২২ সালের রক্ষণশীল বিধায়কদের কমিটির প্রধান সুনাককে কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা হিসাবে ঘোষণা করার মধ্য দিয়েপ্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুনাক। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর চলতি সপ্তাহে সুনাককে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস।

এদিকে ব্রিটেনের গত ২০০ বছরের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম অশেতাঙ্গ এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন পাকিস্তানিরা। তাদের আশা, ঋষি সুনাকের ‘শিকড়’ পাকিস্তানে হওয়ায় কাশ্মিরর সংকট সমাধানে ভারতকে চাপ দেবেন তিনি। গত বুধবার (২৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার ভারতীয় এবং হিন্দু ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। তবে তার শিকড় রয়েছে বর্তমান পাকিস্তানে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় পাকিস্তানের পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা শহরে বসবাস করতেন সুনাকের পিতামহ অর্থাৎ দাদা।

সাবেক ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারত ও পাকিস্তানকে আলাদা তথা দেশভাগের সময় গুজরানওয়ালা শহরে ১৯৪৭ সালে বেশ কিছু মারাত্মক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল। তবে দেশভাগের সেই অস্থির সময়ের আগেই চাকরির জন্য পাকিস্তানের গুজরানওয়ালা শহর ছেড়ে কেনিয়ায় চলে গিয়েছিলেন সুনাকের দাদা রামদাস সুনাক।

ভারতের সীমান্তবর্তী পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত শিল্প কেন্দ্র গুজরানওয়ালার অনেকেই আজ বলছেন, যুক্তরাজ্যের নতুন নেতা কাশ্মির সংকটের সমাধানের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদে অবস্থান করছেন। কারণ কাশ্মিরই দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে বিবাদের মূল বিষয়।

এপি বলছে, সুনাকের দাদা রামদাস সুনাক এবং দাদী সুহাগ রানী ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত গুজরানওয়ালায় বসবাস করতেন। যদিও শহরের এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দার সেই অনেক আগের দিনগুলোর কোনো স্মৃতি নেই।

তারপরও তারা বলছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদে ৪২ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের বিজয়ে তারা আনন্দিত বোধ করছেন। তারা আশা করছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের অধীনে পাকিস্তান ও ব্রিটেনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।

গুজরানওয়ালার কুস্তি খেলার বেশ সুনাম রয়েছে। মূলত এই খেলাটিই গুজরানওয়ালাকে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত করেছে। আর এই শহরেরই ওমর আলী নামে একজন কুস্তিগীর ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় বেশ খুশি। তিনি বলছেন, এটি আনন্দের বিষয় যে- যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর পূর্বপুরুষদের মধ্যে অনেকেই এখানে বসবাস করতেন।

স্থানীয় এক কলেজের অধ্যাপক খুররম শেহজাদের আশা, ঋষি সুনাক শুধু পাকিস্তান ও ব্রিটেনের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতেই কাজ করবেন না বরং পাকিস্তান ও ভারতের জন্য ‘সাফল্যের নতুন যুগ’ নিয়ে আসবেন।

গুজরানওয়ালা শহর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৪৭ সালের দেশভাগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ফলে সেই সময়কার বেশিরভাগ রেকর্ড ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সুনাকের দাদা শহরের ঠিক কোথায় থাকতেন তার কোনো প্রমাণ এখন আর নেই।

তবে গুজরানওয়ালার বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস, শহরের মাছলি বাজার এলাকায় হয়তো সুনাকের দাদা-দাদী বসবাস করতেন। কারণ সেসময় শহরের বেশিরভাগ হিন্দু সম্প্রদায় এখানেই বাস করত।

এপি বলছে, দেশভাগের আগে-পরে বহু হিন্দু এখান থেকে ভারতে চলে গিয়েছিল। তবে এখানকারই একটি পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দির এখনও এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাসের প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে।

মাছলি বাজার, নামটি অনুবাদ করলে হয় ‘মাছের বাজার’ এবং আশপাশের এলাকাটি তার সুস্বাদু খাবারের জন্য পরিচিত। প্রতি বছর খাদ্যপ্রেমীদের ভিড় এখানে লেগেই থাকে — তবে তা শুধু ভাজা মাছ নয়, অন্যান্য উপাদেয় খাবারের জন্যও মানুষ এখানে আসেন।

হাফিজ উমর নামে এক ব্যক্তির পরিবারের মাছলি বাজারে বসবাসের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তিনি বলছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পদে সুনাকের নিয়োগ আমাদের জন্য এবং আমাদের শহরের জন্য একটি সম্মানের বিষয়। আমরা আশাবাদী আগামী দিনে পাকিস্তান ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি হবে।

পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মুসাররাত জামশেদ চিমা বলছেন, ‘মনে হচ্ছে ঋষি সুনাকের অগ্রাধিকার হবে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। তবে আমরা আশা করি তিনি কাশ্মির সমস্যাও সমাধান করার চেষ্টা করবেন। এটিই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিবাদের প্রধান কারণ।’

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাক ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে হিন্দু-পাঞ্জাবি বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার দাদা-দাদি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেখানেই তারা বেড়ে ওঠেন। 

ঋষির দাদা রামদাস সুনাক ১৯৩৫ সালে নাইরোবিতে কেরানি হিসাবে কাজ করার জন্য গুজরানওয়ালা ছেড়ে চলে যান। এসময় তার স্ত্রী সুহাগ রানী সুনাক তার শাশুড়ির সাথে দিল্লিতে যান এবং সেখান থেকে ১৯৩৭ সালে কেনিয়ায় নিজের স্বামীর কাছে চলে যান। রামদাস ও সুহাগ রানীর ছয় সন্তান ছিল। যাদের মধ্যে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে।

আর ঋষি সুনাকের বাবা যশবীর সুনাক ১৯৪৯ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিভারপুলে আসেন এবং লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিনে অধ্যয়ন শুরু করেন।

যশবীর ১৯৭৭ সালে লিসেস্টারে উষাকে বিয়ে করেন। এর তিন বছর পর ১৯৮০ সালে ব্রিটেনের সাউদাম্পটনে ঋষির জন্ম হয়। ঋষির বাবা-মা অবসর গ্রহণ করার আগ পর্যন্ত ফার্মেসি ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন।

অবশ্য ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে সুনাকের মনোনয়নের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তাকে শুভেচ্ছা জানান। চলতি সপ্তাহে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এবং যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হওয়ায় ঋষি সুনাককে অভিনন্দন। আমি উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে এবং স্থায়ী - অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করতে তার সাথে কাজ করতে উন্মুখ।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বেশ দ্রুত ঋষি সুনাককে অভিনন্দন জানান। অভিনন্দন বার্তায় মোদি বলেন, ‘আপনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমি বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে আপনার সঙ্গে একত্রে কাজ করতে এবং রোডম্যাপ ২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। আমরা আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আধুনিক অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত করতে চাই।’

উল্লেখ্য, কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এখন উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে তবে ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান আর ভারত স্বাধীনতা পাবার আগে থেকেই কাশ্মির নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয়েছিল।

১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের পাশতুন উপজাতীয় বাহিনীগুলোর আক্রমণের মুখে কাশ্মিরের তৎকালীন হিন্দু মহারাজা হরি সিং ভারতে যোগ দেওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, এবং ভারতের সামরিক সহায়তা পান। পরিণামে ১৯৪৭ সালেই শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।

উভয় দেশের এই যুদ্ধ চলেছিল প্রায় দু’বছর ধরে। এরপর কাশ্মিরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ১৯৪৮ সালে, তবে পাকিস্তান সেনা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করে। তখন থেকেই কাশ্মির কার্যত পাকিস্তান ও ভারত নিয়ন্ত্রিত দুই অংশে ভাগ হয়ে যায়।

অন্যদিকে ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে চীন কাশ্মিরের আকসাই-চিন অংশটির নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। আর তার পরের বছর পাকিস্তান - কাশ্মিরের ট্রান্স-কারাকোরাম অঞ্চলটি চীনের হাতে ছেড়ে দেয়।

সেই থেকে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তান, ভারত ও চীন - এই তিন দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে।

কাশ্মির ইস্যু   ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী   পাকিস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার অস্ট্রেলিয়াজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৬:০৭ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

এবার অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দেশটির সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউনিভার্সিটি অব সিডনি) তাবু স্থাপন করে অবস্থান নেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এদিনের আন্দোলন থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ান সরকার গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।

ব্রিটিশি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেলবোর্ন, ক্যানবেরাসহ অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ধরনের শিবির গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

বিক্ষোভের জায়গাগুলোতে স্বল্পসংখ্যক পুলিশের শান্তিপূর্ণ উপস্থিতিতে ছিল। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি পার্ক করা থাকলেও বিক্ষোভে কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না।

এদিকে, এই বিক্ষোভের কারণে অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধ্যয়নরত ইহুদী শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে এ ধরনের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে করা উচিত।

ইউনিভার্সিটি অব সিডনির উপাচার্য মার্ক স্কট বলেছেন, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস আংশিকভাবে অবস্থান করতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো সহিংসতা দেখা যায়নি।

কয়েক দফা দাবি নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরেই তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মিত্র দেশগুলো থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা।


অস্ট্রেলিয়া   বিশ্ববিদ্যালয়   বিক্ষোভ   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ: গ্রেপ্তার প্রায় ২ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।

সর্বশেষ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) অভিযান চালিয়ে ২০০ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্লাইউড, মেটাল ফেন্স, প্ল্যাকার্ড দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড এবং ক্যাম্পাস চত্বরের অস্থায়ী তাঁবুগুলো তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। এসব তাঁবুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাতে ঘুমাতেন।

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গত মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে সেই আন্দোলন দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ১৮ এপ্রিল রাতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ অভিযানে ১০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ এবং তাদের তাঁবু-ব্যারিকেডও তছনছ করে দিয়েছিল পুলিশ।

কিন্তু পরের দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। মার্কিন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে 'ইহুদিবিদ্বেষী' আন্দোলন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে আন্দোলনের সংগঠকদের (যাদের মধ্যে ইহুধি ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন) দাবি, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   বিক্ষোভ   গ্রেপ্তার   শিক্ষার্থী   ইউসিএলএ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মুক্ত গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলল পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ২৭ দশমিক ৬৪ পেয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম। গত বছর অবস্থান ছিল ১৬৩তম।

শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকের ২০২৪ সংস্করণ প্রকাশ করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স। প্রকাশিত সূচকে দেখা যায়, ২০২৪ সালে আরও দুইধাপ পিছিয়ে মোট ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১৬৫তম। এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ২৭ দশমিক ৬৪।

এবারের মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানের পেছনে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দিক দিয়ে এবার শীর্ষস্থান দখল করেছে নেপাল; ৬০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ৭৪তম অবস্থান দখল করেছে। এর পরের অবস্থানে আছে মালদ্বীপ। ৫২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ১০৬তম অবস্থানে।

এবারের তালিকায় প্রথম অবস্থান থেকে ছিটকে তৃতীয় স্থান পেয়েছে ভুটান। ৩৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ১৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ভারত। এই তিন দেশের বৈশ্বিক অবস্থান যথাক্রমে ১৫০, ১৫২ ও ১৫৯তম। গত বছরের ১৬১ থেকে দুই ধাপ এগিয়ে এবার ১৫৯তম অবস্থান পেয়েছে ভারত।

আফগানিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বশেষ স্থান পেয়েছে। ২৬ ধাপ পিছিয়ে দেশটির বৈশ্বিক অবস্থান ১৭৮তম, পয়েন্ট মাত্র ১৯ দশমিক ০৯। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জের দিক দিয়ে গোটা বিশ্বে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক কর্মস্থল হিসেবে মিয়ানমার, চীন, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

বৈশ্বিক সূচকে শীর্ষস্থান অটুট রেখেছে নরওয়ে। তাদের পয়েন্ট ৯১ দশমিক ৮৯। শীর্ষ দশের বাকি দেশগুলো হলো ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, পর্তুগাল, আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সাংবাদিকরা কতটুকু স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন, তা যাচাই করা হয়। এই সূচকে পাঁচটি বিষয় আমলে নেওয়া হয়। এগুলো হলো—রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, আইনি অবকাঠামো, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও নিরাপত্তা।

মুক্ত গণমাধ্যম   বাংলাদেশ   পাকিস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চলন্ত ট্রেনে স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী

প্রকাশ: ০৩:৫৬ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলন্ত ট্রেনে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সাক্ষী হলেন যাত্রীরা। স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী। গত ২৯ এপ্রিল ভারতের জাহাংসি জংশনে এ ঘটনা ঘটে। 

২৮ বছর বয়সি মোহাম্মাদ আরশাদ তার ২৬ বছর বয়সি স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তালাকের এ ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।

পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আরশাদের চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিয়ে হয়েছিল আফসানার সঙ্গে। বিয়ের পর দুজনে ভোপালে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে কানপুরের পুখরায়ানে যান দুজনে। সেখানে আরশাদের পৈতৃক বাড়ি। কিন্তু সেখানে গিয়েই চমকে যান আফসানা। জানতে পারেন আরশাদের আরও এক স্ত্রী রয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে আরশাদ ও তার মা আফসানার কাছে যৌতুকের দাবি করতে থাকে। 

অভিযোগ, মারধরও করা হয় আফসানাকে। এরপর স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ভোপালে ফিরছিলেন আরশাদ। ঝাঁসি স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুখে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন আরশাদ। এরপরই ট্রেন থেকে নেমে যান। 

এ ছাড়া স্ত্রীকে চলন্ত ট্রেনে মারধরও করেছিলেন আরশাদ। ট্রেন ঝাঁসিতে থামতেই জিআরপিকে সমস্ত ঘটনা জানান আফসানা। এরপরই আফসানাকে ফেরত পাঠানো হয় আরশাদের পৈতৃক বাড়িতে। ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। আরশাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। 

গোটা ঘটনার কথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও জানিয়েছেন আফসানা। স্বামীর কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। 

পুলিশের সার্কেল অফিসার জানিয়েছেন, আফসানার অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা থেকে রেহাই পাইনি তার বাবা-মাও।


ভারত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ: অধ্যাপকের পাঁজরের হাড় ও হাত ভেঙে দিল পুলিশ

প্রকাশ: ০১:৪৩ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। এই বিক্ষোভ চলাকালে এক অধ্যাপককে গ্রেফতার করার সময় তার পাঁজরের ৯টি হাড় ও একটি হাত ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষক এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক স্টিভ তামারি সাউদার্ন ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটি এডওয়ার্ডসভিলের ইতিহাসের অধ্যাপক। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ তিনি। 

এ ঘটনায় ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, শনিবার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্টিভ তামারি দৃশ্যত বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলার বা ভিডিও ধারণের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেপরোয়াভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যান তাকে।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গ্রেফতার হওয়ার সময় অধ্যাপক তামারি মাটিতে পড়ে গেলে পুলিশের এক সদস্য তাকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। পরে দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর কয়েকজন পুলিশ তার নিস্তেজ হয়ে পড়া শরীর টেনেহিঁচড়ে একটি ভ্যানের দিকে নিয়ে যায় ও মাটিতে উপুড় করে ছুড়ে ফেলে।


যুক্তরাষ্ট্র   বিক্ষোভ   অধ্যাপক   পুলিশ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন