আমেরিকার
মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাত্র ১ সপ্তাহের মত সময় হাতে আছে। ৮ নভেম্বর ভোটাররা যখন ভোট
দিতে যাবেন তখন তাদের মনে একটাই জিনিস থাকবে পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম। যুক্তরাষ্ট্রে
বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ বেড়ে গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায় পৌঁছেছে। এতেই
নাভিঃশ্বাস অবস্থা ভোটারদের। গত কয়েক দশক ধরে মূল্যস্ফীতি এতটাই স্থির ছিল যে বেশিরভাগ
আমেরিকানরা এটি উপেক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে খরচ এতটাই বেড়েছে যে ভোটারদের
প্রাত্যহিক জীবনে তা গুরুতর প্রভাব ফেলছে এবং তাদের মধ্যে বিদ্যমান ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে
দিচ্ছে।
২০২১
সালের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশাল অর্থনৈতিক প্রণোদনার কারণে
মূল্যস্ফীতি সরল গতিপথে এগোচ্ছিল। কিন্তু পরে রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসনের আগে দাম
আরও বেড়ে যায়। ফলে ভোটাররা শিগগির বাড়াবাড়ি করার জন্য উপযুক্ত জবাব দিতে পারেন
মধ্যবর্তী নির্বাচনে।
পোলিং
ফার্ম পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ বলছে, আমেরিকানদের চার-পঞ্চমাংশ বলেছেন তাদের ভোটের
সিদ্ধান্তের জন্য অর্থনীতি ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’। তাদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ খাদ্য ও
ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ে ‘খুব উদ্বিগ্ন’।
প্রায়
দুই বছরের বাইডেনোমিক্সের নীতির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চেলে গেছে মূল্যস্ফীতি। বাইডেনোমিক্স
আমেরিকার ভোটারদের মুখোমুখি হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুটি দীর্ঘমেয়াদী হুমকি হলো
ক্রমবর্ধমান ‘স্বৈরাচারী’ চীনের উত্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি।
বিগত
বছরে জো বাইডেন অবকাঠামো, সেমিকন্ডাক্টর ও পরিবেশের ওপর তিনটি যুগান্তকারী বিলে স্বাক্ষর
করেছেন, যার মধ্যে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করার পরিকল্পনা করা হয়। তার কার্যনির্বাহী
এই আদেশের ফলে এটি পূর্ণাঙ্গ শিল্প নীতিতে পরিণত হয়েছে।
৮০-র
দশকে কংগ্রেস আমেরিকার গাড়ি ও চিপ নির্মাতাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার পর থেকে কেমন
একটা ফলাফল আর দেখা যায় না পরবর্তীতে। সরকার আগামী পাঁচ বছরে স্থানীয় সংস্থাগুলোকে
ভর্তুকি ও ট্যাক্স ক্রেডিট হিসাবে ১৮০ বিলিয়ন ডলার দেবে বলে জানা যাচ্ছে। যা জিডিপির
শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ, অনুমিতভাবে ফ্রান্সের চেয়েও বেশি।
বাইডেনোমিক্সের
এই পর্যায়ের লক্ষ্য অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু তার সুরক্ষাবাদ আমেরিকাকে সেগুলো অর্জনের
সম্ভাবনাকে ক্ষীণ করে তোলে। ধারণা করা হচ্ছে, বাইডেন তার গন্তব্য ঠিকভাবে চিহ্নিত করে
মাঠে নেমেছেন। তবে এই পদ্ধতির খরচ আমেরিকা ও তার মিত্র উভয় বহন করবে।
চীনের
চেয়ে উন্নত চিপমেকিংয়ে তার প্রযুক্তির নেতৃত্ব বজায় রাখতে আমেরিকা। ফলে সেমিকন্ডাক্টরগুলোর
সামরিক তাৎপর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুদ্ধের নতুন মোড়ে গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে উঠতে পারে।
আরেকটি
উদ্বেগ ব্যাটারির মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্রিন-এনার্জি কিটের জন্য চীনের ওপর আমেরিকার নির্ভরতা।
এটি শি জিনপিংকে আমেরিকার অর্থনীতির ওপর আঁকড়ে ধরতে কাজ করতে পারে। যেখানে রাশিয়ার
প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা ভ্লাদিমির পুতিনের হাতকে শক্তিশালী করেছিল।
অভ্যন্তরীণভাবে
বাইডেন মরিচা পড়া অবকাঠামো তৈরি করতে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে চান। ডেমোক্রেটরা আশা
করতে পারেন যে অভ্যন্তরীণ উত্পাদন ও মধ্যবিত্তদের চাকরির জন্য তাদের সমর্থন ঘিরে ভোটাররা
এগোবেন।
সমস্যা
হলো যে সুরক্ষাবাদ একটি বিষের বড়ি যা পুরো উদ্যোগকে দুর্বল করে দেয়। এটি বন্ধু ও
শত্রুকে একইভাবে আঘাত করে, আমেরিকার সরল বিশ্বাসের জোটকে নষ্ট করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ও দক্ষিণ কোরিয়া অভিযোগ করে যে তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্রেতারা আমেরিকার নতুন ভর্তুকি
থেকে উপকৃত হবে না। যা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করতে পারে। ইইউ তার নিজস্ব
চিপ ভর্তুকি প্রস্তুত করছে, যা আমেরিকার সঙ্গে এমনি এমনি প্রতিযোগিতা করবে। এশিয়ার
দেশগুলোকে চীনের প্রভাবের ক্ষেত্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য আমেরিকার যে প্রচেষ্টা
অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে, সবশেষ বাণিজ্য
উদ্যোগ, অভ্যন্তরীণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
পশ্চিমা
সুরক্ষাবাদ শির দাবীকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে যে গণতন্ত্র কেবল তখনই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক
নিয়মগুলোর পক্ষে যুক্তি দেয় যখন তারা অভ্যন্তরীণভাবে শক্ত অবস্থানে থাকে।
খোদ
আমেরিকাতেও, সুরক্ষাবাদ বাইডেনোমিক্সের লক্ষ্যগুলো অর্জনের পথ কঠিন করে তুলছে। উত্তর
আমেরিকায় বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি সংস্থাগুলোকে ভর্তুকি দেওয়া সেগুলোকে আরও ব্যয়বহুল
করে তুলবে। গ্রিন পরিবেশের উদ্দীপনাও কমিয়ে দেবে।
চিপ
তৈরিতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য বাণিজ্য বিভাগের পরিকল্পনা দরিদ্রদের চাকরি দেওয়া থেকে
শুরু করে নারী মালিকানাধীন ব্যবসায় সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা মোকাবিলার
প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ধরনের উদ্যোগ ভোক্তাদের এবং করদাতাদের খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে।
তবে
বাধা দেওয়ার পরিবর্তে, আমেরিকার উন্মুক্ততার সুবিধা নেওয়া উচিত। আরও উচ্চ-দক্ষ অভিবাসন
গ্রিন-টেক ও চিপমেকিং উভয় শিল্পকে উত্সাহিত করবে। সবুজ অবকাঠামো নির্মাণকে উত্সাহিত
করার জন্য অনুমতি দেওয়ার নিয়ম সহজ করা ভর্তুকির চেয়ে বেশি কিছু করতে পারে। কর কমানো
বিনিয়োগের পক্ষে বড় কাজ হতে পারে।
মিত্রদের
সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিতে মুক্ত বাণিজ্য এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের জন্য কার্বন
নিঃসরণ কমানো, স্বৈরাচারের ওপর নির্ভরতা এড়াতে কাজ করবে। যদি উদ্দেশ্য হয় যে চীনা
চিপমেকিংয়ে বাধা দেওয়া হয়, তবে আমেরিকা শিল্পকে বাধা না দিয়েও তা করতে পারে। যেমন
চীনের ওপর উন্নত চিপ প্রযুক্তি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা।
বাইডেন
উত্তর দিতে পারেন যে তাকে রাজনৈতিকভাবে সম্ভাব্য সীমানার মধ্যে কাজ করতে হবে। তার সুরক্ষাবাদী
প্রবৃত্তি কিছু ফলপ্রসূ লক্ষ্যে প্রবাহিত হচ্ছে। ডেমোক্রেটরা কার্বন নিঃসরণকে আরও দক্ষতার
সঙ্গে রোধ করার জন্য একটি ফেডারেল ক্যাপ এবং বাণিজ্য ব্যবস্থা আরোপ করার চেষ্টা করেনি।
অবকাঠামো এবং সেমিকন্ডাক্টর বিল উভয়ই আকর্ষণ করেছে।
তবে
এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা ত্রুটিপূর্ণ বলা চলে। স্বল্পমেয়াদে, মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে ভোটারদের
ভয় থেকে ক্ষতির তুলনায় ডেমোক্রেটদের জনপ্রিয়তার লাভ কম হতে পারে। একটি শিল্পভিত্তিক
পুনর্নির্মাণ এবং উত্পাদনকে উত্সাহিত করা জনপ্রিয় হতে পারে। তবে আমেরিকানদের ওপর খরচ
স্তূপ স্বরুপ হবে।
বাইডেনোমিক্স
আমেরিকাকে জলবায়ু পরিবর্তন ও চীনের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সহায়তা করতে পারে, তবে এটির
ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এটির সম্ভাবনা ক্ষীণ।
আমেরিকাকে
অবশ্যই চীনের স্টেরয়েড সংস্করণের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব শিল্প নীতি তৈরি করতে হবে। উন্মুক্ততার
কৌশল ও অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো বোঝার মধ্যেই পশ্চিমের সুবিধা নিহিত।
মধ্যবর্তি নির্বাচন মূল্যস্ফীতি যুক্তরাষ্ট্র ভোগ্যপণ্যের দাম বাইডেনোমিক্স
মন্তব্য করুন
মার্কিন ঘাঁটি রুশ সেনা মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী
মন্তব্য করুন
এবার অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দেশটির সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউনিভার্সিটি অব সিডনি) তাবু স্থাপন করে অবস্থান নেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
এদিনের আন্দোলন থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ান সরকার গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।
ব্রিটিশি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেলবোর্ন, ক্যানবেরাসহ অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ধরনের শিবির গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষোভের জায়গাগুলোতে স্বল্পসংখ্যক পুলিশের শান্তিপূর্ণ উপস্থিতিতে ছিল। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি পার্ক করা থাকলেও বিক্ষোভে কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না।
এদিকে, এই বিক্ষোভের কারণে অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধ্যয়নরত ইহুদী শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে এ ধরনের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে করা উচিত।
ইউনিভার্সিটি অব সিডনির উপাচার্য মার্ক স্কট বলেছেন, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস আংশিকভাবে অবস্থান করতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো সহিংসতা দেখা যায়নি।
কয়েক দফা দাবি নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরেই তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মিত্র দেশগুলো থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ ফিলিস্তিন
মন্তব্য করুন
গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।
সর্বশেষ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) অভিযান চালিয়ে ২০০ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্লাইউড, মেটাল ফেন্স, প্ল্যাকার্ড দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড এবং ক্যাম্পাস চত্বরের অস্থায়ী তাঁবুগুলো তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। এসব তাঁবুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাতে ঘুমাতেন।
ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গত মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে সেই আন্দোলন দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ১৮ এপ্রিল রাতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ অভিযানে ১০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ এবং তাদের তাঁবু-ব্যারিকেডও তছনছ করে দিয়েছিল পুলিশ।
কিন্তু পরের দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। মার্কিন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে 'ইহুদিবিদ্বেষী' আন্দোলন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে আন্দোলনের সংগঠকদের (যাদের মধ্যে ইহুধি ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন) দাবি, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভ গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ইউসিএলএ
মন্তব্য করুন
মুক্ত গণমাধ্যম বাংলাদেশ পাকিস্তান
মন্তব্য করুন
চলন্ত ট্রেনে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সাক্ষী হলেন যাত্রীরা। স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী। গত ২৯ এপ্রিল ভারতের জাহাংসি জংশনে এ ঘটনা ঘটে।
২৮ বছর বয়সি মোহাম্মাদ আরশাদ তার ২৬ বছর বয়সি স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তালাকের এ ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।
পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আরশাদের চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিয়ে হয়েছিল আফসানার সঙ্গে। বিয়ের পর দুজনে ভোপালে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে কানপুরের পুখরায়ানে যান দুজনে। সেখানে আরশাদের পৈতৃক বাড়ি। কিন্তু সেখানে গিয়েই চমকে যান আফসানা। জানতে পারেন আরশাদের আরও এক স্ত্রী রয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে আরশাদ ও তার মা আফসানার কাছে যৌতুকের দাবি করতে থাকে।
অভিযোগ, মারধরও করা হয় আফসানাকে। এরপর স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ভোপালে ফিরছিলেন আরশাদ। ঝাঁসি স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুখে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন আরশাদ। এরপরই ট্রেন থেকে নেমে যান।
এ ছাড়া স্ত্রীকে চলন্ত ট্রেনে মারধরও করেছিলেন আরশাদ। ট্রেন ঝাঁসিতে থামতেই জিআরপিকে সমস্ত ঘটনা জানান আফসানা। এরপরই আফসানাকে ফেরত পাঠানো হয় আরশাদের পৈতৃক বাড়িতে। ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। আরশাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
গোটা ঘটনার কথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও জানিয়েছেন আফসানা। স্বামীর কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।
পুলিশের সার্কেল অফিসার জানিয়েছেন, আফসানার অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা থেকে রেহাই পাইনি তার বাবা-মাও।
মন্তব্য করুন
গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।