ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানে কারাগারে বন্দী নারী অধিকারকর্মীর চিঠিতে ভয়ংকর নির্যাতনের বিবরণ

প্রকাশ: ০৮:৩৬ এএম, ১২ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

গত বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইরানের রাজধানী তেহরানে এসেছিলেন কুর্দি তরুণী মাহাশা আমিনি (২২)। কিন্তু ইরানের ‘নিয়ম’ অনুযায়ী হিজাব না পরায় দেশটির ‘নীতি পুলিশ’ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এর তিন দিন পর পুলিশ হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইরানের নীতি পুলিশের এমন হোকারি আচরণ ও মাহশার মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশটির মানুষ। দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ যা এখনো চলছে। নিজেদের সাধারণ অধিকার রক্ষার্থে নারী পুরুষ সকলেই একযোগে রাস্তায় নেমে পরেছেন নীতি পুলিশের এই আইন বহির্ভূত আচরণ রুখতে।

বিক্ষোভ দমনের সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে ইরানের সরকার। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী এখন কারাগারে। এর মধ্যে অনেকের সাজা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড হয়েছে অনেকের। কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরও হয়েছে।

ইরানে দমনপীড়নের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। চার বছর আগে একটি চিনিকলের শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানানোয় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেপিদেহ কোলিয়ানক নামে এক মানবাধিকার কর্মীকে। সেই মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার পর কোলিয়ান এখনো কারাগারে বন্দী। ইরানের নারী অধিকারকর্মীদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ তিনি। সম্প্রতি কারাগার থেকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন কোলিয়ান। সেখানে বর্ণনা করেছেন, কীভাবে বন্দীদের কাছ থেকে জোর করে বিভিন্ন অভিযোগের দায় স্বীকারের জবানবন্দি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পরে এসব ব্যক্তিকে বিভিন্ন সাজা, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হচ্ছে।

কোলিয়ান বর্তমানে এভিন কারাগারে আছেন। ইরানের রাজধানী তেহরানের অদূরের এই কারাগার নিয়ে পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমালোচনা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অভিযোগ, এভিন কারাগারের কর্তৃপক্ষ সেখানে থাকা বন্দীদের নির্যাতন ও অনির্দিষ্টকাল কারাগারে আটক রাখার হুমকি দেন। বন্দীদের দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে দায় স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয়। বন্দীদের চিকিৎসা দেওয়া হয় না।

ওই কারাগারে থাকা কোলিয়ানের লেখা চিঠিতেও বন্দীদের নির্যাতন, অত্যাচার ও জোর করে অপরাধের দায় স্বীকার করিয়ে নেওয়ার বিবরণ আছে। কোলিয়ান তাঁর চিঠিতে কীভাবে কারাগার কর্তৃপক্ষ তাঁকে ও অন্য বন্দীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে ও চালাচ্ছে, তার বর্ণনা দিয়েছেন। কোয়ালিন তাঁর চিঠিতে বলেছেন, বন্দীদের জোর করে বিভিন্ন অপরাধের দায় স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয়। দায় স্বীকার করলে সেসব ভিডিও ধারণ করে পরে রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেখানো হয়।

মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে প্রায় চার মাস ধরে চলা বিক্ষোভের প্রশংসা করে কোলিয়ান চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমার বন্দিজীবনের চতুর্থ বছরে এসে অবশেষে আমি ইরানের চারদিক থেকে স্বাধীনতার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। এভিন কারাগারের পুরো প্রাচীর ভেদ করেও নারী, জীবন ও স্বাধীনতার জন্য মানুষের আর্তচিৎকার শুনতে পাচ্ছি।’

কারাগারে থেকেই বর্তমানে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন কোলিয়ান। তিনি তাঁর চিঠিতে এভিনের কথিত ‘সাংস্কৃতিক’ শাখার বর্ণনা দিয়েছেন। এই শাখার অধীনেই আইন বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয় তাঁকে। সে বর্ণনায় কোলিয়ান লিখেছেন, কারাগারের এই সাংস্কৃতিক শাখা নামে যে ভবন আছে, সেখানে বন্দীদের নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বন্দীদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।

কোলিয়ান লিখেছেন, ‘পরীক্ষার কক্ষ তরুণ-তরুণীদের দিয়ে ভরা। সেখানে তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের শিকার বন্দীর চিৎকার শুনতে পাই।’

গত ২৮ ডিসেম্বর কোলিয়ানের পরীক্ষা ছিল। ওই দিন ওই ‘সাংস্কৃতিক শাখায়’ পরীক্ষা দিতে যান তিনি। সেদিন সেখানে কী দেখেছেন, তাঁর বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে কোলিয়ান লিখেছেন, ‘ওই দিন ছিল হাড় হিম করা শীত। ভবন থেকে বের হওয়ার দরজায় তুষার পড়ছিল। কম বয়সী একটা ছেলের চোখ। পরনে কিছুই নেই বললে চলে। তার পরনে ছিল শুধু পাতলা একটি টি-শার্ট। একজন তদন্ত কর্মকর্তার সামনে বসে আছে ওই তরুণ। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল তাকে। তদন্তকারীর সামনে বসে ঠান্ডায় কাঁপছিল ওই তরুণ আর বলছিল, আল্লাহর দোহাই আমাকে আর মারবেন না। কিন্তু তদন্তকারীরা চাচ্ছিল তরুণ তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ স্বীকার করুক। এ সময় আমি ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন আমি চিৎকার করে তরুণকে বলি, দায় স্বীকার করবে না। অত্যাচারীরা নিপাত যাক।’

ইরানের মানবাধিকারকর্মীরা ২০০৯ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্ট নিউজ এজেন্সি (এইচআরএএনএ) নামে একটি সংবাদমাধ্যম চালু করেন। সংবাদ সংস্থাটির দেওয়া হিসাবে, মাসা আমিনির মৃত্যুর পর শুরু হওয়া বিক্ষোভের জেরে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১৯ জন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৯টি শিশুও আছে। এ ছাড়া আরও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাঁরা এখন কারাগারে আছেন। বিক্ষোভকারীদের অন্তত ১০০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, বন্দীদের জোরপূর্বক জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে। মামলায় লড়তে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা কোনো আইনজীবী নিয়োগ দিতেও পারেন না। বন্দীদের নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এমনকি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, এমন বিক্ষোভকারীদের পরিবারের ওপর চাপ দিয়ে বলা হচ্ছে, মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি কাউকে যেন জানানো না হয়। কর্তৃপক্ষ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। যদিও সেপ্টেম্বরে গণবিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন বন্দী বিক্ষোভকারীর দায় স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দি টিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছে।

চিঠিতে কোলিয়ান ২০১৮ সালে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ও জোরপূর্বক দায় স্বীকার করে নেওয়ার ঘটনার স্মৃতিচারণা করেছেন। ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে একটি চিনি কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ-ধর্মঘটের পক্ষে কথা বলেছিলেন তিনি। এ জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ইভিন কারাগারে নির্যাতনের শিকার হন কোলিয়ান।

কোলিয়ানকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন একজন নারী তদন্ত কর্মকর্তা। কোলিয়ানের ধারণা ছিল, নারী হওয়ার কারণে ওই তদন্ত কর্মকর্তা হয়তো পুরুষ তদন্ত কর্মকর্তাদের তুলনায় কিছুটা ‘নরম ও কোমল’ হবেন। কোলিয়ান আশা করেছিলেন, ওই নারী তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন চালাবেন না। কিন্তু সেটা আর হয়নি।

চিঠিতে কোলিয়ান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হওয়ার পর মুহূর্তেই তাঁর এ আশা হতাশা ও নির্মমতায় রূপ নেয়। ওই নারী কর্মকর্তা কোলিয়ান যেখানে বসে ছিলেন, সেখানে লাথি দিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার করে কোলিয়ানকে বলতে থাকেন, ‘তুই একজন কমিউনিস্ট বেশ্যা। এখন বল তুই কার কার সঙ্গে শুয়েছিস?’

এরপর ওই নারী তদন্ত কর্মকর্তা কোলিয়ানের চোখের বাঁধন খুলে দেন এবং কার কার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ছিল ক্যামেরার সামনে সেটা স্বীকার করার নির্দেশ দেন। কিন্তু কোলিয়ান তা করতে অস্বীকৃতি জানান। কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর কোলিয়ান টয়লেটে যেতে দেওয়ার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে কোলিয়ানকে নিয়ে টয়লেটের দিকে যান ওই নারী তদন্ত কর্মকর্তা। তবে কোলিয়ান টয়লেটে ঢোকার পর বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। এতে টয়লেটে আটকা পড়েন কোলিয়ান।

কোলিয়ানের চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, যে টয়লেটে তাঁকে আটকে রাখা হয়, সেটিও একটি জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ। সেখান থেকেই তিনি এক ব্যক্তিকে নির্যাতন করার শব্দ শুনতে পান। একটা পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার ওই ব্যক্তির কান্নার শব্দ কানে আসে তাঁর। কোলিয়ান চিঠিতে লিখেছেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা অথবা এক দিন ধরে আমি ওই ব্যক্তিকে নির্যাতন ও তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। আমার মনে হয় এক দিন ধরে টানা তাঁর ওপর নির্যাতন চলে। কারণ, তখন আমার সময়জ্ঞান ছিল না।’

কোলিয়ান বলেন, টয়লেট থেকে বের করে আনার পর তাঁকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়। টানা তিন চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এই সময়ে তিনি এক মুহূর্তের জন্য ঘুমাননি। এ সময় তাঁর চেতনা ঠিকমতো ছিল না। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। কক্ষে গিয়ে দেখেন সেখানে ক্যামেরা বসানো।

চিঠিতে কোলিয়ান লিখেছেন, ‘ওই কক্ষে যাওয়ার পর ওই নারী তদন্ত কর্মকর্তা আমার হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দেন। আমাকে কী বলতে হবে, সেটাই বোধ হয় লেখা ছিল সেখানে। কারণ, আমি তখন প্রায় বেহুঁশ। কিছু বুঝতে পারছিলাম না। ওই অবস্থায় কাগজটি হাতে নিয়ে আমি পড়ি। ওই দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করা হয়।’ কোলিয়ান কারাগার থেকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, ওই কাগজ পড়ার মাধ্যমে তিনি যা বলেছেন, তার ওপর ভিত্তি করেই তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চলমান এ বিক্ষোভকে ‘বিপ্লব’ অভিহিত করার মধ্য দিয়ে চিঠি শেষ করেছেন কোলিয়ান। লিখেছেন, ‘আজ মারভিন, ইজেহ, রাশত, সিসতান, বেলুচিস্তান এবং সারা ইরানের রাস্তা থেকে যে শব্দ শুনেছি, তা জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষের শব্দের চেয়েও তার জোর বেশি। এটাই বিপ্লব, নারী, জীবন ও স্বাধীনতার সত্যিকার প্রতিধ্বনি।’



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পুলিৎজার পেল রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

প্রকাশ: ০৯:৪৯ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের ভয়াবহ চিত্র ছবির মাধ্যমে তুলে ধরে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ও প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য এ বছর পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে রয়টার্স।

এ বছর ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের ভয়াবহ চিত্র ছবির মাধ্যমে তুলে ধরে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা রয়টার্স।এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ও প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্যও পুরস্কৃত করা হয়েছে সংস্থাটিকে। এছাড়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট ও  দ্য নিউইয়র্ক টাইমস তিনটি করে পুরস্কার পেয়েছে। এবারের পুলিৎজার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে সোমবার।

গাজা সংঘাত নিয়ে রয়টার্সের বেশ কয়েকটি ছবি এবার পুলিৎজারের ‘ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি’ বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে একটি তোলা আলোকচিত্রী মোহাম্মদ সালেমের। তাতে দেখা যায়, গাজায় নিহত পাঁচ বছরের এক শিশুর মরদেহ জড়িয়ে ধরে আছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। শিশুটি তার পরিবারের সদস্য। ছবিটি এ বছর সম্মানজনক ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারও পেয়েছে।

এ ছাড়া ইলন মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ‘ন্যাশনাল রিপোর্টিং’ বা ‘জাতীয় বিষয়াদি নিয়ে প্রতিবেদন’ বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে রয়টার্স। ‘দ্য মাস্ক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স’ শিরোনামে ধারাবাহিক ওই প্রতিবেদনে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্স, নিউরালিংক ও টেসলায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।

রয়টার্সের পাশাপাশি ন্যাশনাল রিপোর্টিং বিভাগে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টও। যুক্তরাষ্ট্রের এআর-১৫ রাইফেল এবং দেশটিতে বিভিন্ন বন্দুক হামলায় এই অস্ত্রের ভূমিকা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল সংবাদমাধ্যমটি। এছাড়া ‘এডিটোরিয়াল রাইটিং’ (সম্পাদকীয়) ও ‘কমেন্টারি’ (মতামত) বিভাগেও পুরস্কার জিতেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

নিউইয়র্ক টাইমস যে তিনটি বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে, সেগুলো হলো—‘ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং’ (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন), ‘ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং’ (আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রতিবেদন) ও ‘ফিচার রাইটিং’। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা, ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ও ইসরায়েলের পাল্টা হামলা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং বিভাগে সেরা হয়েছে তারা।

পুলিৎজারে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে ধরা হয় পাবলিক সার্ভিস (জনসেবা) অ্যাওয়ার্ডকে। এ বছর এই অ্যাওয়ার্ড নিজেদের দখলে রেখেছে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে কাজ করা নিউইয়র্কভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা প্রোপাবলিকা। আর ‘ব্রেকিং নিউজ’ বিভাগে এবার পুলিৎজার পেয়েছে লুকআউট সান্তা ক্লজ নামের একটি নিউজ পোর্টাল।

এবারের পুলিৎজারে অভিবাসীদের নিয়ে ছবি প্রকাশ করে ‘ফিচার ফটোগ্রাফি’ বিভাগে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। ‘এক্সপ্লেনেটরি রিপোর্টিং’ (বিষদ ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন) ও ‘ইলাস্ট্রেটেড রিপোর্টিং অ্যান্ড কমেন্টারি’ বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন দ্য নিউইয়র্কারের সাংবাদিকেরা। আর ‘ক্রিটিসিজম’ (সমালোচনা) বিভাগে পুরস্কার নিজেদের করে নিয়েছে দ্য লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুলিৎজার পুরস্কার সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ হিসেবে খ্যাত। ১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত ও নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য এ পুরস্কার দেয়া হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর পুরস্কার ঘোষণা করে।


পুলিৎজার   রয়টার্স   ওয়াশিংটন পোস্ট   দ্য নিউইয়র্ক টাইমস   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচনের ৩য় দফায় ভোটগ্রহণ শুরু

প্রকাশ: ০৮:৫৪ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আর তৃতীয় দফায় ভারতজুড়ে ১০টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রথম দফায় শতাধিক আসনে ভোটগ্রহণের পর দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়েছিল ৮৮টি আসনে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, দ্বিতীয় দফার ভোটের পরে দশ দিনের বিরতির শেষে মঙ্গলবার ভারতজুড়ে ১০টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৩টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে চারটি আসনেও আজ ভোটগ্রহণ হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃতীয় পর্বের ভোটই কার্যত স্পষ্ট করে দেবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতার কোনও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না। পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ বছর আগে হওয়া সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে এই ৯৩টি আসনের মধ্যে ৭১টি আসনে জিতেছিল বিজেপি শিবির। আর সেটি তাদের দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরা অনেকটাই নিশ্চিত করে দিয়েছিল।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা যদি প্রথম দু’টি পর্বের মতো তৃতীয় দফায়ও শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে বিজেপির পক্ষে ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

এদিকে তৃতীয় দফায় যে দশটি রাজ্যে নির্বাচন হতে চলেছে, তাতে কর্নাটক ও পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাকি আটটি রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ফলে ওই রাজ্যগুলোতে লোকসভায় ভালো ফল করার জন্য সর্বাত্মক ভাবে ঝাঁপিয়েছে ভারতের এই হিন্দুত্ববাদী দলটি।

তৃতীয় দফার ভোটে বিজেপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হলো গুজরাট। ওই রাজ্যের ২৬টি আসনের মধ্যে ২৫টিতে আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজ্যটির সুরাট আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোটের আগেই জিতে গেছেন বিজেপি প্রার্থী।


লোকসভা নির্বাচন   ভোটগ্রহণ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়েছে হামাস

প্রকাশ: ০৮:২০ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। প্রস্তাব মেনে নেওয়ার বিষয়টি মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান ইসমাইল হানিয়া।

যদিও এ বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তারা। এদিকে, যুদ্ধবিরতিতে হামাসের রাজি হওয়ার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গাজার বাসিন্দারা। সোমবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে আল জাজিরা।

চুক্তিতে সম্মত হওয়ার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। এতে বলা হয়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানিকে ফোন করে জানিয়েছেন হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মিসরের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী আব্বাস কামালকেও ফোনে একই কথা জানিয়েছেন ইসমাইল হানিয়া।

অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের বিবৃতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আপাতত মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। যদিও গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় হামাসকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান।

এদিকে, হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ফিলিস্তিনিরা। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৭৩৫ জনের প্রাণ গেছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ হাজার ১০৮ জন।


গাজা   যুদ্ধবিরতির  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পর্ন তারকাকে ঘুষ: জেল হতে পারে ট্রাম্পের

প্রকাশ: ০৮:১৫ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাবেক পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর সিএনএনের।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদন মতে বহুল আলোচিত ফৌজদারি মামলাটির শুনানিকালে বিচারক হুয়ান মারচান বলেছেন, সাক্ষীদের সমালোচনা করার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় সাবেক প্রেসিডেন্টকে এবার কারাদণ্ড দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন তিনি।

মামলার সাক্ষীদের সমালোচনা করার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এরই মধ্যে ট্রাম্পকে ৯ বারে ৯ হাজার ডলার জরিমানা করেছেন নিউ ইয়র্কের একটি আদালত।

বিচারক মারচান বলেন, সোমবার শুনানিকালে ট্রাম্প আরও একবার অর্থাৎ দশমবারের মতো একই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছেন। এবার আর জরিমানা নয়, কারাদাণ্ডের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল যেন ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলেন তিনি। মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেন প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন বলে দাবি স্টর্মি ড্যানিয়েলসের। কিন্তু এই তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে লুকিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন ট্রাম্প। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে করে গত মাসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। সেই থেকে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই শুনানি চলছে।

আগামী দুইমাস ধরে আদালতে এই মামলার শুনানি চলতে পারে। সেসব শুনানিতে ট্রাম্পকে উপস্থিত থাকতে হবে। ফলে নির্বাচনী জনসভায় না গিয়ে ট্রাম্পকে আদালতে হাজিরা দিতে যেতে হবে। এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচনী প্রচার থেকে আমাকে সরানোর জন্যই এই ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এভাবে আমাকে হারানো যাবে না।


ডোনাল্ড ট্রাম্প   পর্ন তারকা   ঘুষ   জেল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

হজ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবের নতুন নিয়ম জারি

প্রকাশ: ০৯:৪৮ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

হজ ভিসা নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করেছে সৌদি আরব। এই ভিসা দিয়ে শুধু জেদ্দা, মদিনা এবং মক্কা শহরে ভ্রমণ করা যাবে। এর বাইরে অন্যকোনো স্থানে ভ্রমণ করা যাবে না। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এমন তথ্য জানিয়েছে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, হজ ভিসা দিয়ে ২০২৪ সালে হজের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জেদ্দা, মদিনা ও মক্কা শহরে ভ্রমণ করতে পারবেন।

হজ ভিসা শুধু হজ মৌসুমের জন্যই বৈধ। এই সময়ের মধ্যে হজ ভিসা নেওয়া ব্যক্তিদের ওমরাহ পালন বা যেকোনো ধরনের আর্থিক বা অবৈতনিক কাজের ব্যাপারে নতুন নিয়মে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

দেশটিতে কাজ করা, বসবাস বা নির্ধারিত শহরের বাইরে ভ্রমণের জন্য হজ ভিসা অবৈধ। কেউ এই বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করলে তাকে ভবিষ্যতে হজে অংশ নেওয়ার অনুমতি নাও দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়াও অভিযুক্তকে দেশ থেকেও বেরও করে দেওয়া হতে পারে।

এর আগে শনিবার (৪ মে) পবিত্র হজ সামনে রেখে অনুমতি ছাড়া মক্কায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব। ওইদিন থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়।

সৌদি আরবের জননিরাপত্তা বিভাগ জানায়, মূলত পবিত্র হজে সারাবিশ্ব থেকে আগত বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে মক্কায় প্রবেশের জন্য অবশ্যই অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এমনকি সৌদি নাগরিকদেরও।

হজ   ভিসা   সৌদি আরব  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন