বাংলাদেশের
মতো খুব কম দেশই সমালোচনাকারীদের
বিভ্রান্ত করতে পেরেছে। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই
করে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। সে সময় ওয়াশিংটনে
দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের সভাপতিত্বে ওয়াশিংটন স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের সভা হয়েছিল। সেখানে বাংলাদেশে বড় ধরনের খাদ্যসংকট,
দুর্ভিক্ষও হওয়ার শঙ্কা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে হ্যাঁ সূচক প্রশ্নের জবাবে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘বাস্কেট কেস’ বা ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিলেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সঙ্গে সেই তকমা লেগে যায়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বহুল জনসংখ্যা, দারিদ্র্যতা, ভঙ্গুর অর্থনীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ কারণে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটি। অবশেষে বাংলাদেশ ২০২১ সালে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশ,
মিতব্যয়ী সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল ও দক্ষিণ এশিয়ার
অবিশ্বাস্য অর্থনৈতিক যোদ্ধা হিসেবে স্বাধীনতার অর্ধশতবর্ষ উদযাপন করেছে।
বাংলাদেশের এমন অগ্রগতির জন্য দেশটির কর্ণধাররা অবশ্য প্রশংসিত হন। দীর্ঘদিন ধরে প্রগতিশীল সামাজিক নীতি গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার। বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ। চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে নারীদের। সামাজিক উন্নয়নের সূচকে ভারত, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে গার্মেন্টস শিল্প। যেমনটি আমরা ব্যাখ্যা করি, করোনা মহামারি আঘাত হানার আগে, দশ বছরে বাংলাদেশ বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চীনের যেখানে ৮ শতাংশ। বাজার মূল্যে দেশটির মাথাপিছু জিডিপি, প্রায় আড়াই হাজার ডলার, যা ভারতের চেয়ে বেশি। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের তালিকায় স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার কথা। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রশংসনীয় উদ্যোগ বাংলাদেশের।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, তবে সেই সম্ভাবনার জায়গাগুলো কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, স্বল্প মূলধন ও অর্থ সরবরাহে ভারসাম্যের চাপ অনেক উন্নয়নশীল দেশকে জটিলতায় ফেলেছে। এমন পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকটাপন্ন পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো সঙ্কুচিত নয়। তবে মানদন্ড ধরে রাখা দরকার।
দ্য ইকোনমিস্টের পরামর্শ, বাংলাদেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে হবে। যদিও সমস্যাগুলো কাঠামোগত এবং রাজনৈতিক দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে এবং যা অবনতির গুরুতর ঝুঁকিতেও রয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি তৈরি পোশাক খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল, যা মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশ। শিগগির স্বল্পোন্নত অবস্থার সঙ্গে যুক্ত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য শর্তাদি হারাতে পারে বাংলাদেশ। তবে ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইলেকট্রনিক্সের মতো উচ্চমূল্য সংযোজিত শিল্পে বৈচিত্র্য আনার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টা অপ্রতিরোধ্য। যদিও দুর্নীতি, বিধিনিষেধ, ক্রেডিট পেতে অসুবিধাসহ নানা কারণে বাধাগ্রস্ত হয় এসব শিল্প।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। তিনি জাতির পিতা ও বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্র স্পর্শ করেছেন তিনি।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, চাকরি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য বেড়েছে। বিগত কয়েক বছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের রেটিংয়ে অবনতি হয়েছে দেশটির। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার শঙ্কাও রয়েছে।
শক্তিশালী সরকারের প্রতি, ৭৫ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অযৌক্তিক নয়। ২৯টি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টাসহ বাংলাদেশ বহু বার অস্থিতিশীলতার ছোবলে পড়ে। আরও টেকসই শাসনের সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগকে প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এমনকি তার পরিবারের উত্তরাধিকার ও সম্ভবত এটি সুরক্ষার জন্য হলেও। দেশের ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির ভিত্তি হবে এমন স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধার করাও অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, পশ্চিমা সরকারগুলো চাপ প্রয়োগ করতে অনিচ্ছুক। তবে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে সতর্ক তারা। দেশটির উচ্চবিত্তদের অনেকেই পশ্চিমের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে ভালোভাবে দেখে। বিশেষ করে ব্যবসার সুযোগ থেকে শুরু করে তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করার ব্যাপারে। বাংলাদেশ অতীতের তুলনায় বিদেশি পুঁজির ওপরও বেশি নির্ভরশীল।
বৈশ্বিক উষ্ণ জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশেরও পরিবেশগত হুমকি বাড়ছে। বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস বলছে, তাপমাত্রা ১ দশকি ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। এক তৃতীয়াংশ কৃষি জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের বিপর্যয় একটি তীব্র সংবেদনশীল অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। সেই ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশের আরও উন্নয়নমূলক অগ্রগতি দরকার।
মন্তব্য করুন
ভারতের প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস দেশে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। দিল্লি প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দিল্লির কংগ্রেস প্রধান অরবিন্দর সিং লাভলি। তবে দল থেকে পদত্যাগ করেননি তিনি। লোকসভা নির্বাচনে ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের মধ্যে তার এই দল ছেড়ে যাওয়াকে কংগ্রেসের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের দিল্লি শাখার সভাপতির পদ ছেড়েছেন অরবিন্দর সিং লাভলি। দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বাঁধার কারণেই ক্ষোভে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
রোববার সকালে অরবিন্দর সিং লাভলি জানান, তিনি কংগ্রেসের দিল্লি শাখার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, দিল্লির কংগ্রেস কর্মীদের স্বার্থরক্ষা করতে পারেননি তিনি। তাই দলের সভাপতির পদে থাকার আর কোনও কারণ দেখছেন না তিনি।
উল্লেখ্য, অরবিন্দর সিং লাভলি দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা। মাঝখানে ২০১৭ সালের দিকে একবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কয়েক মাসের মধ্যে প্রত্যাবর্তন করেন কংগ্রেসে। আম আদমি পার্টির প্রবল বিরোধী হিসাবে পরিচিত লাভলি।
লোকসভা ভোটের মধ্যে লাভলির পদত্যাগে দিল্লি কংগ্রেসে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে। পদত্যাগপত্রের পাশাপাশি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে লেখা চিঠিতে আম আদমি পার্টি তথা আপের সঙ্গে জোট নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে অরবিন্দর লিখেছেন, ‘যে দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ এনে তৈরি হয়েছে, তাদের সঙ্গে জোটের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিল দিল্লি কংগ্রেস ইউনিট। এরপরও দল সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লিতে আম আদমি পার্টির (এএপি) সঙ্গে জোট গঠনের।’
এছাড়া দলের প্রদেশ পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে লাভলি চিঠিতে বলেছেন, ‘এখন আমার কোনও কথাই গুরুত্ব পায় না। এমনকী দলের ব্লক সভাপতিদের নিয়োগেরও অনুমতি দেওয়া হয় না।’
কংগ্রেস দিল্লি অরবিন্দর সিং পদত্যাগ লোকসভা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
চীনের দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী শহর গুয়াংজৌতে শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে ৫ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে টর্নেডোর আঘাতে হেনেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রবিবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টর্নেডোটি শহরের বাইয়ুন জেলার ঝোংলুওটান শহরে আনুমানিক বেলা ৩টায় আঘাত হানে। এতে ১৪১টি কারখানা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কোনো আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এসময় টর্নেডোর ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২.৮ কিলোমিটার দূরে লিয়াংতিয়ান গ্রামের আবহাওয়া কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ২০.৬ মিটার নিবন্ধিত হয়েছিল।
প্রাদেশিক আবহাওয়া ব্যুরোর প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে, টর্নেডোটি তৃতীয় স্তরের ছিল। টর্নেডোর সর্বোচ্চ তীব্রতার মাত্রা পাঁচ থেকে দুই স্তর নিচে।
মন্তব্য করুন
সৌদি আরবে সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি কয়েকদিনের এই সফরে গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাত প্রতিরোধের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় । ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সৌদি আরবের উদ্দেশে পাড়ি দেবেন ব্লিঙ্কেন। সাম্প্রতিক সময়ে ইরান এবং ইসরাইলের মধ্যকার দীর্ঘ ছায়া যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো তিনি ওই অঞ্চলে সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর মন্ত্রীদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ করার কথা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির চলমান প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন ব্লিঙ্কেন। হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতের বিষয়েও আলোচনা করবেন তিনি।
ম্যাথিউ মিলার জানান, সংঘাত ছড়িয়ে না পড়ার গুরুত্বের বিষয়ে জোর দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একই সঙ্গে এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য চলমান প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করবেন তিনি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার আগে সৌদি আরব এবং ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল। তবে হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। আলোচিত ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন।
পঞ্চম দফা সৌদি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবিত অভিবাসন আইন নিয়ে চার বছর ধরে চলছিল আলোচনা-পর্যালোচনা। শেষে এ আইন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ২৭ দেশের এ জোট। এতে মূলত অনিয়মিত, অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো এবং মানব পাচার রোধে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীরা আগের মতো সুযোগ পাবেন না। সেইসঙ্গে বন্ধ হচ্ছে প্রতারণার মাধ্যমে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগও। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বেশিরভাগ আবেদন নাকচ হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের আবেদন আর আগের মতো অনির্দিষ্টকাল
ঝুলে থাকবে না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই।
ইইউর নতুন আইনে সম্প্রতি রাজনৈতিক আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় অভিবাসন নীতির সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন করা হয়েছে। এটি ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। যেখানে আছে ১০টি ধারা। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়া, মরক্কো ও বাংলাদেশের মতো দেশের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের বেশিরভাগ আবেদন নাকচ হয়ে যাবে, যাদের দ্রুত বন্দি ক্যাম্পে পাঠানো হবে। এসব বন্দি ক্যাম্প করা হবে সীমান্ত, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর এলাকায়। সেখান থেকে নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে। এসব বন্দিশিবির নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তারা বলছেন, এসব বন্দিশিবিরে পদ্ধতিগত বন্দিত্ব ও মানবাধিকারের অবমূল্যায়নের আশঙ্কা রয়েছে। ইউরোপীয় নেতাদের ভাষ্য, নতুন নিয়মে যেমন অবৈধ অভিবাসন কমবে, তেমনি সুগম হবে দক্ষ শ্রমিকের পথও। বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের জন্য, বিশেষ করে দক্ষ এবং মেধাবীদের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হবে। এখন অভিবাসনের জন্য তারা বৈধ উপায়ে আবেদন করতে পারবেন। পাশাপাশি ভালো পেশা, উন্নত জীবনমানও নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে সরকারের মানব পাচার রোধের যে চেষ্টা রয়েছে, সেটিও এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা এ চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, অবশেষে ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশী ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় আইনি কাঠামো দাঁড় হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লায়েন বলেছেন, এ চুক্তি আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়াকরণে দক্ষতা বাড়াবে। ইইউর নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপের প্রতিটি দেশের সীমান্তে বসছে কড়া নিরাপত্তা। আগে শুধু ইতালি, গ্রিসের মতো উপকূলীয় দেশগুলোতে অভিবাসী ঢল সামলাতে হতো। এখন দায়িত্ব ভাগ করে নেবে ইইউর সদস্য দেশগুলো। এ ছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ সীমান্তের বাইরে যাচাই করা হবে। তা গ্রহণ না হলে আবেদনকারীকে ফিরতে হবে নিজ দেশে। প্রতিটি দেশের সীমান্তে থাকছে আশ্রয়কেন্দ্রও। কোনো সদস্যদেশ আশ্রয়প্রার্থীদের নিতে রাজি না হলে, অর্থ বা অন্যান্য সম্পদ দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। নতুন ব্যবস্থাপনায় অভিবাসী অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করলে সাত দিনের মধ্যে তার চেহারা ও হাতের বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ পরিচয়, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বোচ্চ ১২ সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হবে কে থাকবেন আর কাকে ফিরতে হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীকেই দেওয়া হবে আইনজীবী। প্রতারণা করে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না। অবশ্য দেশে ফিরলে সত্যি জীবনের হুমকি আছে, তেমন আবেদনকারীরা থাকার সুযোগ পাবেন। তবে আগের মতো যে কেউ চাইলেই রাজনৈতিক আশ্রয় পাবে না। শিশুরা বিশেষ সুবিধা পাবে। তাদের অধিকার স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা পর্যবেক্ষণ করবে।
এদিকে নতুন আইনের কড়া সমালোচনা করেছে ইউরোপের কট্টর দক্ষিণ ও বামপন্থিরা। সেই তালিকায় আছে হাঙ্গেরি ও পোলান্ডের সরকার। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন, এ চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য শেষ পেরেক। এখন আর কোনো সীমান্ত নিরাপদ থাকবে না। হাঙ্গেরি কখনো গণ-অভিবাসনের উন্মাদনা মানবে না। সূত্র: ডয়চে ভেলে, ইউরোপাইইউনিউজ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের বাফেলোতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
নিহতদের পরিচয় এখনো জানা যানা যায়নি। এ ছাড়াও কী কারণে তাদেরকে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হলো সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।
প্রশাসনের বরাত দিয়ে মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, হান্ড্রেট জেনার স্ট্রিটে দুই ব্যক্তিকে গুলি করা হয়েছে এমন খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পরে তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। এই ঘটনায় গোটা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাফেলো পুলিশ বলছে, হামলাকারীকে ধরতে অভিযান চলছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
নিউইয়র্ক গুলি ২ বাংলাদেশি নিহত
মন্তব্য করুন
ভারতের প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস দেশে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। দিল্লি প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দিল্লির কংগ্রেস প্রধান অরবিন্দর সিং লাভলি। তবে দল থেকে পদত্যাগ করেননি তিনি। লোকসভা নির্বাচনে ইতোমধ্যেই দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের মধ্যে তার এই দল ছেড়ে যাওয়াকে কংগ্রেসের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
চীনের দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী শহর গুয়াংজৌতে শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে ৫ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে টর্নেডোর আঘাতে হেনেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রবিবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবিত অভিবাসন আইন নিয়ে চার বছর ধরে চলছিল আলোচনা-পর্যালোচনা। শেষে এ আইন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ২৭ দেশের এ জোট। এতে মূলত অনিয়মিত, অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো এবং মানব পাচার রোধে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীরা আগের মতো সুযোগ পাবেন না। সেইসঙ্গে বন্ধ হচ্ছে প্রতারণার মাধ্যমে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগও। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বেশিরভাগ আবেদন নাকচ হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের আবেদন আর আগের মতো অনির্দিষ্টকাল