ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মুক্ত গণতন্ত্রের তালিকায় নেই ভারত?

প্রকাশ: ১১:০৫ এএম, ০১ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail

(পর্ব ৩)

ভারতের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো চলছে না। ভারতের মিডিয়াও গত কয়েক বছরে অনেকটা নগ্নভাবেই সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা সরকারের চাপে রীতিমতো কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছে। বিশ্বে সংবাদ স্বাধীনতার পরিসংখ্যানে ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারত এখন ১৪২ নম্বরে অবস্থান করছে। সাংবাদিক নিপীড়ন এবং একের পর এক সাংবাদিককে কারাগারে নিক্ষেপ করায় ভারত এ তালিকায় ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে।

২০১৪ সালে মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতের গণতন্ত্রের স্বাস্থ্য দুর্বল হতে থাকে। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের তুষ্ট করার রাজনীতি দিয়ে মোদি অনন্য জনপ্রিয়তায় পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির বিচার বিভাগ, গণমাধ্যম ও নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানকে মাথা নোয়াতে বাধ্য করেন। এই ধারা দিন দিনই শক্তিশালী হচ্ছে। আজকের পর্বে  আমরা গণতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন স্তম্ভ গণমাধ্যম ও ভারতে নির্বাচন ও বিচার বিভাগ সম্পর্কে আলোচনা করবো।

গত সাত দশকের গণতান্ত্রিক চর্চার ধারাবাহিকতায় ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও এর আয়োজনের প্রক্রিয়া একটি সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়ার মধ্যে এসে গেছে। নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও দক্ষ হয়ে উঠেছেন। তারা এখন স্থানীয়, রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেন। এসব নির্বাচনে এখন নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জটি আসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি পার্লামেন্টের সদস্যদের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, এদের এক-তৃতীয়াংশের বেশির বিরুদ্ধে আছে নানা ধরনের অপরাধের মামলা। নির্বাচনের সময় প্রভাব বিস্তার এবং নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সরকার গঠনে জনপ্রতিনিধি কেনাবেচার যে সংস্কৃতি ভারতে গড়ে উঠেছে, সেটাই এখন ভারতীয় রাজনীতির বড় বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে।

গত মাসে কর্নাটক রাজ্যে অনুষ্ঠিত রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে ভারতের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি ও গণতন্ত্রের জন্য অশনিসঙ্কেতের চিত্রটি দেশবাসীর সামনে অত্যন্ত নগ্নভাবে ফুটে উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, ভোট তিন ভাগে ভাগ হবে। ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, বাস্তবেও তাই ঘটেছে। কোনো দলই সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তৈরি হয় ঝুলন্ত বিধানসভা। এ পরিস্থিতিতে দু’টি দল [কংগ্রেস ও জনতা দল (এস)] কোয়ালিশন সরকার গঠনের চুক্তি করলে তাদের সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৈরি হয়। কিন্তু রাজ্যের গভর্নর, যিনি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত। তিনি এ দুই দলকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ না জানিয়ে সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ১৫ দিন সময় দেন। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ গ্রহণের পর থেকেই বিরোধী বিধায়কদের বাগিয়ে আনতে নানা চেষ্টা চালাতে থাকেন। মন্ত্রিত্বের টোপ ও প্রত্যেক বিধায়ককে এক কোটি রুপি করে ঘুষ প্রদানের প্রস্তাব বিজেপি দিয়েছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হতে থাকে। অন্য দিকে কংগ্রেস ও জনতা দল (এস) তাদের বিধায়কদের তিনটি হোটেলে নিয়ে আটকে রাখে, যা ভারতে নজিরবিহীন ঘটনা। এ দিকে রাজ্য গভর্নরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেখানে রাতভর শুনানির পর শীর্ষ আদালত বিজেপিকে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য রাজ্য গভর্নরের দেয়া ১৫ দিন সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনেন। আর এতেই বিজেপির সরকার গঠনের সব চেষ্টা নস্যাৎ হয়ে যায়। পদত্যাগ করেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। রাজ্যের গভর্নর বাধ্য হয়ে কংগ্রেস ও জেডি (এস)-এর জোটকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। এরপর জেডি (এস) নেতা কুমারস্বামীর নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়।

ভারতের বর্তমান রাজনীতির এই চিত্র শুধু কর্নাটকেই নয়, পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। এ রাজ্যে গত মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েত, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মোট আসনের এক-তৃতীয়াংশ রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা বিনা প্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অনেক স্থানেই অন্য দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিলের সাহস পাননি। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেস পুরো রাজ্যে মোট আসনের তিন-চতুর্থাংশ পেয়েছে।

ভারতের যে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে এত দিন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে বলে মনে করা হতো, সেগুলোতেও এখন রাজনীতির প্রভাব বা দলীয় প্রভাব ও নানা অনিয়ম ঢুকেছে বলে জনমনে ধারণা জন্মাতে শুরু করেছে। সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশন ছিল দেশের সব মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। কিন্তু এখন এ দু’টি প্রতিষ্ঠান নিয়েও মানুষের মনে সন্দেহ ঢুকেছে। গত জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টের চারজন বিচারপতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা অভিযোগ করেন, প্রধান বিচারপতি মামলা বণ্টনের ক্ষেত্রে অর্থাৎ বিভিন্ন বেঞ্চে মামলা প্রেরণের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করেছেন। এ অভিযোগের পর জনমনে একটি ধারণা তৈরি হয়ে যায় যে, প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির প্রভাবে পরিচালিত হচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তাদের দায়িত্ব পালন করছে বলে এত দিন যে ধারণা জনমনে ছিল, সেটিও পাল্টাতে শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন ধারণা তৈরি হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন এখন আর নিরপেক্ষ নয়, দলীয় প্রভাব এতে ঢুকে গেছে। গত বছর অক্টোবরে গুজরাট রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্ধারিত তারিখ নির্বাচন কমিশন কোনো দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে বিশেষ সুবিধা এনে দেয়। কারণ, নানা কারণে রাজ্যের ভোটারদের মধ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হলে তাতে বিরোধী দল কংগ্রেস সম্ভবত ভালো ফল করত, কিন্তু নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ায় বিজেপি বিপুল অর্থ ব্যয় করে ও দলীয় প্রভাব বিস্তার করে নির্বাচনের ফল তাদের পক্ষে আনতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এর ফলও তারা পায়। নির্বাচনে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজেপি আবারো সরকার গঠন করে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভোটের তারিখ পিছিয়ে না দিলে বিজেপির জয়লাভ করা কঠিন হতো। নির্বাচন কমিশনের আনুকূল্য পেয়েই তারা গুজরাটে ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়।

ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশে নির্বাচনী জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পিউ গ্লোবাল ভারতে সম্প্রতি একটি জরিপ চালায়। এই জরিপের ফলে দেখা যায়, ভারতে গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। পরিবর্তে তারা একজন শক্তিশালী শাসক এমনকি সামরিক শাসনের চিন্তাও করছেন। তবে ১৯৭০-এর দশকে ইন্দিরা গান্ধীর শাসনামলে ভারতের জনগণ কার্যত একজন একনায়কের শাসনই দেখেছে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই শাসন বেশি দিন টেকেনি। জনগণও এ ধরনের শাসন পছন্দ করেনি।

সমগ্র ভারতে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা জরাজীর্ণ রেল-ব্যবস্থার যেমন সংস্কার প্রয়োজন, তেমনি দেশটির গণতন্ত্রেরও সংস্কার করা প্রয়োজন বলে জনগণের একাংশ মনে করে। তবে এ কথা সত্য, ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা যত ত্রুটিপূর্ণই হোক না কেন, এর অনেক অর্জনও রয়েছে। এই ব্যবস্থা ভারতের মতো বিশাল ও নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর একটি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে, সেনাবাহিনীকে বরাবরই রেখেছে ক্ষমতার বাইরে এবং একই সাথে এই ব্যবস্থা নাগরিক স্বাধীনতাকে রেখেছে সমুন্নত; যা ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। ১৯৫০ সালে গৃহীত সংবিধানের আলোকেই দেশটির নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও পার্লামেন্ট নিজ নিজ আওতার মধ্যে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবেই চলে আসছে; কিন্তু চার বছর আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এত দিনের এসব অর্জন ক্রমেই ভঙ্গুর হয়ে উঠছে। সব জাতীয় প্রতিষ্ঠানের অবস্থাই অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা ভারতের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে বলে দেশটির নানা মহলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেমন পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলো যেকোনো সময় যেকোনো বিষয়ের ওপর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে। সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে বিরোধী দলের অনাস্থা প্রস্তাব মুহূর্তেই বাতিল হয়ে যাবে। পার্লামেন্টের বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। বিরোধী দলগুলো মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা করলেও লোকসভার স্পিকার সেই প্রস্তাব এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গ্রহণ করছেন না। এটি সুস্পষ্টভাবেই সংসদীয় রীতির বরখেলাপ। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, মোদির সরকার চায় না গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো তার স্বাভাবিক গতিতে চলুক।

এ দিকে, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে চার বিচারপতির সংবাদ সম্মেলন করে আনা অভিযোগ সম্পর্কে ভারতের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, বিচারপতিদের অভিযোগের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কেননা, প্রধান বিচারপতি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর অনেক মামলা জুনিয়র বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত বেঞ্চগুলোতে পাঠিয়ে দেন এবং এসব বেঞ্চের বিচারপতিরা সরকার সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এসব মামলা সিনিয়র বিচারপতিদের বেঞ্চে পাঠানোর কথা প্রধান বিচারপতির। কিন্তু তিনি নিয়ম লঙ্ঘন করে কিছু নির্ধারিত বেঞ্চে ওই মামলাগুলো পাঠাচ্ছেন। এ কাজ করে তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রতি জনগণের উচ্চ ধারণাকেই ভূলুণ্ঠিত করছেন। ভারতের সেনাবাহিনী আরেকটি বৃহৎ জাতীয় প্রতিষ্ঠান। গত সাত দশকের রেওয়াজ হচ্ছে, সবচেয়ে সিনিয়র জেনারেলই সেনাপ্রধান হবেন। কিন্তু মোদি সরকার সেই রীতি ভঙ্গ করে জুনিয়র জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দেয়। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই জেনারেল রাওয়াত বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে মোদি সরকারকে প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়ে আসছেন, যা ভারতের সেনাবাহিনীর ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিভিন্ন জাতীয় প্রতিষ্ঠানে এভাবে রাজনীতি ও দলীয় আনুগত্য ঢুকে পড়ায় ভারতের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়-সন্দেহ।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাজস্থানে মসজিদের ভেতরে ইমামকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ রাজস্থানের আজমিরে মসজিদের এক ইমামকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মুখোশ পরা অজ্ঞাত তিন দুর্বৃত্ত।  

শনিবার (২৯ এপ্রিল) আজমিরের একটি মসজিদের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, আজমিরের রামগঞ্জের কাঞ্চননগরে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে ছয় শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন মোহাম্মদ মাহির নামের ওই ইমাম। এ সময় আক্রান্ত হন তিনি। 

এনডিটিভি বলেছে, মুখোশ পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে মোহাম্মদ মাহিরের ওপর আক্রমণ চালায়। ওই সময় তাকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে তারা। 

৩০ বছর বয়সী ইমাম মোহাম্মদ মাহির উত্তরপ্রদেশের রামপুরা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মারধরের সময় ইমামের সন্তানরা চিৎকার করলে তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। শিশুরা যাতে সাহায্যের জন্য কাউকে ফোন না করতে পারে সেজন্য মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

অভিযুক্তরা চলে যাওয়ার পর ইমামের শিশুরা মসজিদের বাইরে আসে এবং প্রতিবেশীদের ঘটনার বিষয়ে জানায়। পুলিশ বলেছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবীন্দ্র খিনচি বলেছেন, মসজিদের ভেতরে ওই ইমামকে পিটিয়ে হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করছে। ইমামকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার (হত্যা) আওতায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাজস্থান   মসজিদ   হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে কয়েক ডজন টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চার মাসের একটি শিশু আছে। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণ করা হয়েছে। এছাড়া ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে দুর্গত এলাকায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া পৃথক টর্নেডোতে কয়েক হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। টর্নেডোর আঘাতে মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে ওকলাহোমা, আইওয়া, টেক্সাস, মিসৌরি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, গত শনিবার আঘাত হানা কিছু টর্নেডোয় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৮ কিলোমিটারের বেশি।

টেক্সাস থেকে মিজৌরি পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড়ঝঞ্ঝায় কোথাও কোথায় ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওকলাহোমার সালফার শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উল্টো গেছে অনেক গাড়ি। ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এই দুর্যোগে প্রায় ১০০ ব্যক্তির আহত হয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   টর্নেডো   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশ কতটা পিছনে ফেলল পাকিস্তানকে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। সেই পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন চোখ এড়িয়ে যায় নি পাকিস্তানেরও। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ করাচিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, 'অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই।'

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, 'যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের ওপর বোঝা হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু শিল্প প্রবৃদ্ধিতে তারা এখন অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করেছে। আর তাদের এ উন্নতির দিকে তাকালে এখন আমাদের লজ্জা লাগে।'

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ(এলডিসি) থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের পথে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এছাড়া, তৈরি পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সামনে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যদা পাবে বাংলাদেশ। তখন বিশ্বদরবারে দেশটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে কমবেশি সবসময়ই অস্থিরতা ছিল। সেখানে গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত থাকায় দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এটি কোনোভাবেই সাহায্য করেনি। যেখানে, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একধরনের স্থিতিশীলতা ছিল, যা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পেরেছে।

সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে সেগুলো হলো- 

১. মাথাপিছু আয়: পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৮০ টাকা, যা তৎকালীন ৯৪ মার্কিন ডলারের সমান। নব্বইয়ের দশকের পর বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকে। 

বর্তমানে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৬৫ ডলার। আর পাকিস্তানে ১ হাজার ৪৭১ ডলার।

২. জিডিপির প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশে এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ অর্জন। অন্যদিকে, একই সময়ে পাকিস্তানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জিডিপির ৬ থেকে ৭ শতাংশ আসত শিল্প খাত থেকে। তখন পাকিস্তানে শিল্পের অবদান ছিল ২০ শতাংশ। 

বর্তমানে, বাংলাদেশে শিল্প খাতের অবদান জিডিপির ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশে জিডিপির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আর পাকিস্তানের ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার।

৩. রপ্তানি আয়: রপ্তানি আয়েও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ ৫ হাজার ৫৫৬ (৫৫.৫৬ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। 

অন্যদিকে, পাকিস্তান গত অর্থবছরে ৩ হাজার ২৫০ (৩২.৫০ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন ৬০ শতাংশ বেশি।

৪. মূল্যস্ফীতি: কোভিড মহামারি ও এর পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও উৎপাদনব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণেও মারাত্মক সমস্যায় পড়ে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দুই দেশেই আছে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি এখন অতিমাত্রায় বেশি। মূল্যস্ফীতির চাপে পাকিস্তানের মানুষ পিষ্ট। শুধু মার্চ মাসেই দেশটিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি।

৫. রির্জাভ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাংলাদেশ- পাকিস্তান দুই দেশেই আলোচিত। ডলারসংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি মূল্যে পণ্য আমদানি করতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়েছে সবার। তবে, পাকিস্তানের রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫ কোটি বা ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলারে। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ আছে পাকিস্তানের প্রায় চার গুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার কোটি বা ২০ বিলিয়ন ডলার।

৬. জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। 

৭. শ্রমশক্তিতে নারীদের অবদান: শ্রমশক্তিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অবদানেও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি ৩ জনের ১ জন নারী কাজ করেন। 

অন্যদিকে, পাকিস্তানে প্রতি ৫ জনের ১ জন কর্মক্ষম নারী। অর্থাৎ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের ৩৫ শতাংশ নারী, যা পাকিস্তানে ২০ শতাংশ।

৮. মানব উন্নয়ন সূচক: মানব উন্নয়ন সূচকেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে গড় আয়ুও বেশি। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যেখানে পাকিস্তানে মাত্র ৬৯ বছর। 

৯. শিশুমৃত্যু: আবার, শিশুমৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ৩৩। আর, পাকিস্তানে এই সংখ্যা ৭০-এর বেশি। 

১০. প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও আমাদের সাফল্য প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার হার ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে এই হার অর্ধেকেরও কম ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে লম্বা সময় ধরে গণতান্ত্রিক সরকার থাকার কারনে উন্নয়ন এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখাতে সুবিধা হয়েছে। যেখানে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার কম সময় ছিল। ফলে সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


বাংলাদেশ   পাকিস্তান   শাহবাজ শরিফ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে ৪২ জন নিহত

প্রকাশ: ০৫:৩৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতে বাঁধ ভেঙে অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছেন। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির অনেক অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

কেনিয়ার নাকুরু কাউন্টির গভর্নর সুসান কিহিকা বলেন, বাঁধ ভেঙে পানি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত ৪২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাদায় এখনও আরও অনেকে আটকা পড়েছেন। আমরা তাদের উদ্ধারের কাজ করছি।

মাই মাহিউর শহরের রিফ্ট ভ্যালির কাছের একটি বাঁধ পানির প্রবল চাপের কারণে হঠাৎ করেই ভেঙে যায়। এতে অনেক ঘরবাড়ি ও যানবাহন ভেসে গেছে। ওই এলাকায় চলাচলের একটি রাস্তাও ভেঙে গেছে। এতে শহরটির সাথে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, দেশটির কর্মকর্তারা বরেছেন, এল নিনো ধাঁচের আবহাওয়ার কারণে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত মার্চ থেকে কেনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।


কেনিয়া   বৃষ্টিপাত   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর বানাচ্ছে দুবাই

প্রকাশ: ০৫:১৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর বানাচ্ছে দুবাই। যার নামকরণ করা হয়েছে আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ধারণা করা হচ্ছে, এ বিমানবন্দরের ধারণক্ষমতা হবে ২৬ কোটি। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে বিশ্বের বড় এবং বেশি মানুষ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিমানবন্দর টার্মিনাল।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দুবাইয়ের প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম রোববার জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনালটি বর্তমান দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আকারের পাঁচগুণ হবে এবং বছরে ২৬ কোটি যাত্রী পরিচালনা করবে। আগামী বছরগুলোতে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যকলাপ নতুন আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানান্তরিত হবে বলেও জানান তিনি। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় শেখ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ দুবাইয়ের এই বিমানবন্দরের চারপাশে একটি সম্পূর্ণ শহর তৈরি করেছি, যা ১০ লাখ মানুষের আবাসন চাহিদা পূরণ করবে। এটি লজিস্টিক এবং এয়ার ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলোকে হোস্ট করবে।’

দুবাইয়ের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নতুন প্রকল্প তৈরি করছি। আমাদের সন্তানদের এবং তাদের সন্তানদের জন্য ক্রমাগত এবং স্থিতিশীল বিকাশ নিশ্চিত করছি। দুবাই হবে বিশ্বের বিমানবন্দর, বন্দর, শহুরে হাব এবং এগুলোর নতুন বৈশ্বিক কেন্দ্র।’

আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সম্পন্ন হলে এটি হবে ফ্ল্যাগশিপ ক্যারিয়ার এমিরেটসের নতুন ঠিকানা এবং এতে থাকবে ৫টি সমান্তরাল রানওয়ে এবং ৪০০টি বিমানের গেট। এটি একটি নেতৃস্থানীয় বিমান চলাচল কেন্দ্র হিসেবে দুবাইয়ের অবস্থানকে মজবুত করবে বলেই জানিয়েছেন দুবাই এয়ারপোর্টের সিইও পল গ্রিফিথস।

এক বিবৃতিতে গ্রিফিথস বলেন, ‘দুবাইয়ের সমৃদ্ধি সবসময়ই এর বিমান পরিকাঠামো বৃদ্ধির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে এবং আজ আমরা সেই যাত্রায় আরেকটি সাহসী পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি।’

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট টানা ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে, যা এখন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ধারণক্ষমতাকে চাপের মধ্যে ফেলেছে। 

জানা যায়, গত বছর প্রায় ৮৭ মিলিয়ন যাত্রী এই ট্রানজিট হাব ব্যবহার করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ ২০২৩ সালে রেকর্ড ১৭ দশমিক ১৫ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক যাত্রীর ট্রানজিট ঘোষণা করে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।


বিমানবন্দর   দুবাই  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন