ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’- ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

প্রকাশ: ০৮:৪৪ এএম, ২৮ জুন, ২০২৩


Thumbnail ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’- ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান।

পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন লাখো মুসলমান। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের পরপরই লাখো হাজি মিনা থেকে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের দিকে। ট্রেন, বাসে বা হেঁটে তাঁরা জড়ো হন সেখানে। লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্‌ক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।

প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত লাখো হাজি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে মহান আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আল্লাহর প্রতি আত্মসমপর্ণের পবিত্র বাণী উচ্চারণ করেন।

তিন দিকে পাহাড়বেষ্টিত বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত বা আরাফাহ। এই ময়দান দৈর্ঘ্যে দুই মাইল, প্রস্থেও দুই মাইল। আরাফাতে রয়েছে জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমতের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

গতকাল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাত ময়াদানের পাশে কেউ পাহাড়ের কাছে, কেউ সুবিধাজনক জায়গায় বসে ইবাদত করেন। কেউ যান জাবালে রহমতের (রহমতের পাহাড়) কাছে। আরাফাত ময়দান মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। এই ময়দানে অবস্থিত মসজিদের নাম মসজিদে নামিরাহ। এই মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণকারী হজযাত্রীরা জোহরের ওয়াক্তে এক আজান ও দুই ইকামতের সঙ্গে একই সময়ে পরপর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন গতকাল। নামাজের আগে ইমাম সাহেব খুতবা দেন। এবার খুতবা দিয়েছেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য ও মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সায়িদ। খুতবায় তিনি মুসলিম উম্মার পরস্পরের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান। কারণ, শয়তান মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, যাতে ঐক্য নষ্ট হয়। ঐক্যের মধ্যেই দুনিয়া ও আখিরাতের সব বিষয়ের সাফল্য নিহিত। মুসলমানদের পরস্পর মিলেমিশে থাকা জরুরি। 

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরাফাত ময়দানে অবস্থানের যে দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, তাতে খুতবা এবং নামাজ দেখানো হয়।

নিয়ম হচ্ছে, কেউ আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরাহর জামাতে শামিল হতে না পারলে নিজ নিজ তাঁবুতেই জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। তবে সে ক্ষেত্রে জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে না পড়ে জোহর ও আসরের ওয়াক্তে আলাদাভাবে পড়তে হয়।

ভাষা, বর্ণ ও লিঙ্গের ভেদাভেদ ভুলে বিশ্বের ১৬০টি দেশের ২৫ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার সৌদি আরবে গিয়ে হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকে হজ করতে গেছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন।

আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়া হজের অন্যতম ফরজ। ফলে যাঁরা সৌদি আরবে হজ পালনের উদ্দেশ্যে গিয়ে অসুস্থতার কারণে সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে গতকাল আরাফাতের ময়দানে স্বল্প সময়ের জন্য আনা হয়।

সূর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান থেকে আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। অনেকে হেঁটে সেখানে যান। এজদালিফা শব্দ থেকে মুজদালিফা শব্দের উৎপত্তি। এজদালিফা মানে হলো নিকটবর্তী হওয়া বা মিলিত হওয়া। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হাজিরা একে অপরের কাছাকাছি হন। তাই এমন নামকরণ বলে অনেকে মনে করেন। নামকরণের আরেকটি ঘটনার কথা শোনা যায়, সেটি হলো হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আসার বহু বছর পর আরাফাতে মিলিত হন। সেখান থেকে এসে মুজদালিফায় একত্রে রাত যাপন করেন। সে কারণে মুজদালিফার আরেক অর্থ নৈকট্য লাভ করা।

সূর্যাস্তের আগে যাতে কেউ ভুল করে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য ময়দানের ফটক বন্ধ করা থাকে। সূর্যাস্তের পর যখন এই ফটক খুলে দেওয়া হয়, তখন রাস্তায় লাখো হাজির ঢল নামে। সূর্যাস্তের কিছু সময় পর হাজিদের একটি দলের সঙ্গে আরাফাতের ময়দান থেকে আমরা বাসে করে রওনা দিলাম। ঘণ্টা দুয়েক পর আমরা পৌঁছালাম মুজদালিফায়। পুরো পথের দুই পাশে এবং পাহাড়ে তখন লাখো হাজি মুজদালিফায় যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। তাঁদের অনেকেই রাস্তায় শুয়ে ছিলেন। মূল সড়ক থেকে কিছুটা নিচে পিচঢালা সড়কের ওপর কাছাকাছি বিশ্রামাগার দেখে মক্কা থেকে কেনা প্লাস্টিকের পাটি বিছালাম। পাটির ওপর চাদর বিছিয়ে, পাটির সঙ্গে থাকা বালিশ ফুঁ দিয়ে ফোলালাম। তখন রাত প্রায় নয়টা। আবার অজু করে মাগরিব ও এশার নামাজ আমরা একসঙ্গে আদায় করলাম। এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন। আরাফাতের ময়দানে অথবা আরাফাত থেকে মুজদালিফা যাওয়ার পথে মাগরিবের নামাজের সময় হলেও নামাজ পড়া নিষেধ। মুজদালিফায় পৌঁছার পর মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে পড়তে হয়। এরপর মুজদালিফার খোলা প্রান্তরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়। এই মাঠেও কিছু দূর পরপর বিশ্রামাগার রয়েছে।

নামাজ শেষে আমরা আশপাশ থেকে ছোট ছোট ৭০টি পাথর সংগ্রহ করলাম। জামারায় শয়তানের উদ্দেশে পরপর তিন দিন ছোড়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাথরের টুকরা এখান থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। পাথর সংগ্রহ করার পর আমরা শুয়ে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করলাম। ইহরাম পরা অবস্থায় মুখ ও মাথা ঢাকা নিষেধ। আমাদের আশপাশে যাঁরা অবস্থান করছিলেন, তাঁরা কেউ বাংলায়, কেউ আরবিতে, কেউ ইংরেজিসহ নানা ভাষায় কথা বলছিলেন। সবাই খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন—কেউ শুয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিচ্ছেন, কেউ নামাজ পড়ছেন। অচেনা অনেকে পাশাপাশি নামাজ আদায় করছেন। মুজদালিফায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্ষণিকের জন্য হলেও অবস্থান করা ওয়াজিব।

হাজিরা আজ বুধবার মিনার তাঁবুতে ফিরে যাবেন, বড় শয়তানকে সাতটি পাথর মারবেন। এরপর কোরবানি শেষে হাজিরা মাথার চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাক পরে মক্কায় ফিরে কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ (কাবা শরিফ সাত চক্কর দেওয়াকে তাওয়াফ বলে) করবেন। জমজমের পানি পান করবেন। সাফা-মারওয়া পাহাড় সাতবার প্রদক্ষিণ করে হজের অত্যাবশ্যকীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। এরপর তাঁরা আবার মিনায় ফিরে পরবর্তী দুই দিন সেখানে তিনটি শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছুড়বেন। এভাবে হজের আনুষ্ঠানিকতা পুরোপুরি শেষ হবে।

মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর হাজিরা যাঁর যাঁর দেশে ফিরে যাবেন। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে যাঁরা মদিনায় যাননি, তাঁরা হজ পালন শেষে মদিনায় যাবেন। তবে মদিনায় যাওয়া হজের অংশ নয়।


লাব্বাইক   আল্লাহুম্মা   লাব্বাইক   হজ   আরাফাত   ময়দান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে চীনে মহাসড়ক ধস, নিহত ২৪

প্রকাশ: ০৯:৪৫ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail চীনে বৃষ্টিপাতে মহাসড়কে ধস

চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে একটি মহাসড়কের অংশ ধসে অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩০ জন।

কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের পর গুয়াংডংয়ের মেইঝো শহর এবং ডাবু কাউন্টির মধ্যকার ওই মহাসড়কের ১৭ দশমিক ৯ মিটার (৫৮.৭ ফুট) অংশ ধসে পড়ে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১৯ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পরে জানায় ২৪ জন নিহত হয়েছে।

বিবিসি জানায়, মহাসড়কের ধসে পড়া অংশে ২০টি গাড়ি আটকে পড়ে। পরে উদ্ধারকারীরা গাড়িতে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আহত ৩০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের অবস্থা গুরতর নয় বলে জানানো হয়েছে গণমাধ্যমের খবরে।

সংবাদমাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, বিধ্বস্ত যানবাহনগুলো একটি গভীর গর্তে পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা সেখানে পড়ে থাকা গাড়িগুলোকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন মহাসড়কটি বন্ধ করে দিয়েছে। গত মাসেও গুয়াংডং প্রদেশে প্রবল বর্ষণের কারণে বন্যা হয়েছিল। সে সময় লক্ষাধিক মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।


চীন   মহাসড়ক   ধস  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

প্রকাশ: ০৯:২৮ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় হামলার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। বুধবার এ ঘোষণা দেন তিনি।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জড়ো হওয়া মানুষের সামনে পেত্রো বলেন, তাঁর দেশ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে যাচ্ছে।

গাজায় হামলার শুরু থেকেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কঠোর সমালোচনা করে আসছেন পেত্রো। তিনি অন্যান্য দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।

লোকভর্তি জনসমাগমস্থলে পেত্রো তাঁর ঘোষণায় বলেন, ‘আপনাদের সামনে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিচ্ছেন যে, আগামীকাল আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কগুলো ছিন্ন করব...’। পেত্রো তাঁর বক্তব্যে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপ্রধানকে গণহত্যাকারী বলে আখ্যা দেন।

পেত্রো আরও বলেন, গাজার এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের কোনো দেশ নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে না।

গত বছরের অক্টোবরে গাজায় হামলার পরপরই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দক্ষিণ আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়া। সেসময় কলম্বিয়া, চিলি ও হন্ডুরাসসহ দক্ষিণ আমেরিকার আরও কয়েকটি দেশ ইসরায়েল থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।

এদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ অভিযোগ করে বলেছেন, পেত্রোর এই ঘোষণা ‘ইহুদিবিদ্বেষী ও ঘৃণায় পরিপূর্ণ’। তাঁর এই পদক্ষেপ হামাসের জন্য পুরস্কার।


ইসরায়েল   কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউরোপ যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণকারী ৮ মরদেহ দুপুরের পৌঁছবে বাংলাদেশে

প্রকাশ: ০৯:১৫ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকালে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণকারী আট বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুরের মধ্যে দেশে পৌঁছানোর কথা।

লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের দেওয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলা হয়েছে, লাশবাহী কফিনগুলো সৌদিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইটযোগে ২ মে দুপুর সোয়া বারোটায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার লিবিয়ায় নিযুক্ত ও তিউনিসিয়ার অনাবাসিক দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশারের উপস্থিতিতে মিশনের কর্মকর্তারা মরদেহগুলো তিউনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষরাতের দিকে এ দুর্ঘটনার পরপরই ত্রিপোলিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে মরদেহের সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু এবং মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করেন।

পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং মরদেহ ফিরিয়ে আনতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে। স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় আট বাংলাদেশির কফিন বন্দি মরদেহ। ছবি : সংগৃহীত

৮ নিহতের মধ্যে সজল, নয়ন বিশ্বাস, মামুন শেখ, কাজী সজীব ও কায়সার খলিফা মাদারীপুর জেলার এবং রিফাত, রাসেল ও ইমরুল কায়েস আপন গোপালগঞ্জ জেলার অধিবাসী ছিলেন।

জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসিয়া উপকূলে ডুবে গেলে জীবিত উদ্ধার ৪৪ জনের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের ৪ জন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অপরজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছেন


ইউরোপ   লিবিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে শতাধিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে মার্কিন পুলিশ প্রশাসন। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্কের সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয়েছে পুলিশি অভিযান। এ অভিযানে ক্যাম্পাস দুটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিন সমর্থকারীকে।

বুধবার (১ মে) মার্কিন এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাতে তাদের সরাতে ভবনে প্রবেশ করে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টারও কম সময়ের এ অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় কেউ আহত হয়নি বলেও দাবি পুলিশের।

এর আগে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের বড় একটি দল।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ওই অভিযানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র   কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন