ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ৬ মাসে পুলিশের হাতে হত্যার শিকার বাংলাদেশিসহ ৬০২ জন

প্রকাশ: ০২:৪১ পিএম, ২৩ জুলাই, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের বোস্টন ক্যাম্পাসের সৈয়দ ফয়সাল আরিফ গত জানুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়নের কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ফয়সালকে হত্যার পর থেকেই তার পরিবার পুলিশকে অভিযুক্ত দাবি করে তদন্ত চেয়ে আসছে। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও বিচার নিয়ে কোনো কিছুই দেখতে পায়নি পরিবারটি।

সন্ত্রাসীদের গুলিতে চলতি বছর আরেক বাংলাদেশি রমিম উদ্দিন আহম্মেদ প্রাণ হারিয়েছেন। রমিমের বাড়িও চট্টগ্রামে; মিরসরাই করেরহাট ইউনিয়নে। ২০২১ সালেও গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপের দাবিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে বিক্ষোভ। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তাদের শোক প্রকাশ করেছে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস সম্প্রতি মিসৌরি রাজ্যে এক বাংলাদেশি যুবকের হত্যার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে।

শুক্রবার দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, "আমরা বাংলাদেশের ২২ বছর বয়সী এক ছাত্রের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাতে চাই, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লুইস, মিসৌরিতে একটি আপাত ডাকাতির ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মারা গেছেন"।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন অন্তত তিনজনকে প্রাণ হারাতে হচ্ছে পুলিশের হাতে। চলতি জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ছয় মাসেই দেশটিতে দুই বাংলাদেশিসহ অন্তত ৬০২ জন পুলিশি সহিংসতায় নিহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি সহিংসতা নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স ২০১৩ সাল থেকে দেশটিতে পুলিশের হাতে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করে আসছে। সংস্থাটির প্রতিবেদনের দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, দেশটিতে ২০১৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি পুলিশের হাতে প্রাণ হারিয়েছে গত বছর। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে প্রতি মাসে প্রায় ১০০ জন করে প্রাণ হারিয়েছে। আর বছর শেষে সে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৬ জনে।ইতালির  'শ্রীলঙ্কার 'শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান' ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সংবাদপত্র সেন্টিনেল আসাম পত্রিকার   ২৩ জুলাই, ২০২৩ প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণমূলক নিবন্ধে এই তথ্য জানানো হয়েছে। শ্রীলঙ্কার 'শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান' পত্রিকার শিরোনাম 'মার্কিন পুলিশ কর্তৃক 6 মাসে ছয় শতাধিক নিহত হয়েছে' ও সংবাদপত্র সেন্টিনেল আসামের ' যুক্তরাষ্ট্রে ছয় মাসে বাংলাদেশিসহ ৬০২ জন পুলিশ নিহত হয়েছেন' নামে শিরোনামে বলা হচ্ছে যে এ বছর সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারান আরেক বাংলাদেশি, রমিম উদ্দিন আহমেদ। রামিমের বাড়িও চট্টগ্রামে; করেরহাট ইউনিয়নের মিরসরাই।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে নিহতদের অধিকাংশই পুলিশের বাধা, বৈদ্যুতি শক, গুলি ও মারধরের কারণে প্রাণ হারিয়েছে বলে উঠে এসেছে।

ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্সের দেওয়া তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে পুলিশের হাতে ২০২১ সালের চেয়ে অন্তত ৩১ জন বেশি প্রাণ হারিয়েছে। ২০২১ সালে পুলিশের হাতে নিহত হয়েছিল ১ হাজার ১৪৫ জন। ২০২২ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১৭৬ জনে।

তার আগে, ২০২০ সালে পুলিশের হাতে প্রাণ হারিয়েছিল ১ হাজার ১৫২ জন, ২০১৯ সালে ১ হাজার ৯৭ জন, ২০১৮ সালে ১ হাজার ১৪০ জন এবং ২০১৭ সালে প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজার ৮৯ জন। সুতরাং বিগত পাঁচ বছরের ইতিহাসে ২০২২ সালেই সর্বোচ্চ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে পুলিশের হাতে।

২০১৩ সালের পর থেকে দেওয়া প্রতিবছরের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে নিহত হয়েছে অন্তত ১১ হাজার ৬৮৪ জন।

দেশটিতে বিচারবহির্ভূতভাবে পুলিশের হাতে এত মৃত্যু হলেও কখনও প্রশ্ন তোলেনি দেশটি। এমনকি একবার কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েড হত্যার পর ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে জড়িত কর্মকর্তার বিচার হলেও অন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিচারের কোনো কথা কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয় না। অথচ সেই যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের এলিট বাহিনী র‍্যাবের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে।

এত হত্যার পেছনে ‘রুটিন এনকাউন্টার’

যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রতিদিন পুলিশের হাতে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, এটি করা হয় ‘রুটিন এনকাউন্টার’ হিসেবে বলে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। দেশটিতে ২০২২ সালে পুলিশের হাতে নিহত মোট সংখ্যার ১৩২ জনকে কোনো কারণ ছাড়াই হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স।

এ ছাড়া ১০৪ জনের ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, ৯৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে স্রেফ ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ২০৭ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো সহিংসতার অভিযোগ ছিল না। নিহতদের মধ্যে ১২৮ জনের ক্ষেত্রে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র থাকার কারণে ঝুঁকিতে পড়েছিল। ৩৭০ জনের বিরুদ্ধে এর চেয়েও ভয়াবহ অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। অন্য ১২৮ জন যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে পারিবারিক ঝামেলার অভিযোগ ছিল।

ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্সের প্রতিষ্ঠাতা স্যামুয়েল সিনিয়াংওয়ে বলেন, ’এগুলো নিয়মিত পুলিশের এনকাউন্টার হলেও এটি আসলে হত্যাকেই নির্দেশ করে।’

তিনি বলেন, ‘চারপাশে পুলিশের এই সহিংসতা কমানোর কথা হলেও এই সহিংসতা আসলে শেষ হচ্ছে না। এটা পরিষ্কার যে হত্যার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সত্যি বলতে এটা গভীরভাবেই একটা সিস্টেমেটিক হত্যাকাণ্ড।’

৩২ শতাংশ পুলিশি হত্যার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, নিহত ব্যক্তিরা সাধারণভাবে দৌড়ে কিংবা গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। অবশ্য এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এসব ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ অযৌক্তিক, এগুলো জনসাধারণকে বিপন্ন করে তোলে।

গত বছরের জুনে ওহিও পুলিশ কর্মকর্তারা জেল্যান্ড ওয়াকার নামের এক ব্যক্তির ওপর কয়েক ডজন গুলি চালায়। ওয়াকার নিরস্ত্র ছিলেন এবং তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তার এক মাস পরই ক্যালিফোর্নিয়ায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি গাড়ি থেকে বের হয়ে রবার্ট অ্যাডামস নামের এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি করে হত্যা করেন। সেখানেও দেখা গেছে, নিরস্ত্র অ্যাডামস বিপরীতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।

ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স তাদের তথ্য জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৩ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হত্যার শিকার হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গরা। দেশটিতে মোট হত্যার ২৪ শতাংশই শিকার কৃষ্ণাঙ্গরা। অথচ তারা দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৩ শতাংশ।

দেশটির কেনোশা পুলিশের গুলিতে ২০২০ সালে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়া এক যুবকের বাবা জ্যাকব ব্লেক সিনিয়র বলেন, ‘বিচারক, জুরি কিংবা জল্লাদের মতো পুলিশের ক্ষমতাকে অন্য স্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা যতই জোর দিই না কেন এটা ভুল, তারপরও সমাজ এটা ঘটতে দিচ্ছে।’


যুক্তরাষ্ট্র   পুলিশ   হত্যা   বাংলাদেশি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: রাহুল-রাজনাথদের ভাগ্য নির্ধারণের দিন আজ

প্রকাশ: ০১:৪৬ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ দফায়। নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। 

সোমবার (২০ মে) পঞ্চম পর্বে দেশটির ৬টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯ টি আসনে ভোট হচ্ছে।

নির্বাচনের এই দফায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জম্মু-কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাহ, নরেন্দ্র মোদি সরকারের আরও দুজন শীর্ষ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও পিযূষ গয়ালের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটারা।

লোকসভার সাত দফার ভোট পর্ব শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। ২৮ রাজ্য ও ৮ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৭ কোটি ভোটারের কাছ থেকে সুষ্টু ভোট নিতে সাত দফায় ভোটের আয়োজন করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

ক্ষমতাসীন দল বিজেপি, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও বামপন্থি দলসহ ৬টি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল এবং তৃণমূল কংগ্রেস, আরজেডি, জেডিইউ-এর মতো প্রাদেশিক শক্তিশালী রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

এরই মধ্যে চার দফার ভোট শেষ হয়েছে। আজ ৬টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৪৯ সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত।

পঞ্চম দফায় ভোট গ্রহণ চলছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট হবে ৭ আসনে। যার মধ্যে ৩টি বিজেপির বাকি সবগুলোই তৃণমূলের দখলে। 

এদিকে, মমতা বাংলায় বিজেপি আসন বাড়ানোর ডাক দিয়েছে। আর আসন বাড়াতে হলে এই দফা থেকেই বিজেপির আসন বাড়াতে হবে।

এই পঞ্চম দফার ভোটে সবার বিশেষ নজর এখন উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলির দিকে। সেখান থেকে লড়ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এদিকে, লখনৌতে ভাগ্য পরীক্ষা হবে রাজনাথ সিংয়ের, আমেথিতে অভিনেত্রী মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির আর জম্মু-কাশ্মীরে বারামুল্লায় ওমর আবদুল্লার।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের সীমানা ঘেষা বনগাঁ আসনে জাহাজমন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুরের, হুগলিতে দুই অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটাররা।

উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের ১৯  ও ২৬ এপ্রিল প্রথম ও দ্বিতীয় দফা এবং ৭ ও ১৩ মে যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোট হয়। চার দফায় ভোটের হার ছিল যথাক্রমে ৬৬.১, ৬৬.৭, ৬১ ও ৬৭.৩ শতাংশ। 

লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে চার দফায় ভোট নেয়া হয়েছে ৩৭৯ আসনে। বাকি ১৬৪ আসনের মধ্যে আজ ৪৯ আসনের ভোট শেষ হলে বাকি থাকবে ১১৫টি আসন যা পরবর্তী দুই দফায় সম্পন্ন হবে।


লোকসভা নির্বাচন   রাহুল গান্ধী   রাজনাথ সিং   রচনা ব্যানার্জি   নরেন্দ্র মোদি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যুতে সিআইএ-মোসাদ’র হাত আছে কি?

প্রকাশ: ১২:৫৮ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এরপরই দুর্ঘটনার খবর আসে। যদিও দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, হেলিকপ্টারটি গন্তব্যে পৌঁছার আগেই অবতরণে বাধ্য হয়েছে। রাইসির এই হেলিকপ্টার দূর্ঘটনার মৃত্যুতে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ এর কোন হাত আছে নাকি সিআইএর কোন ষড়যন্ত্র রয়েছে এ নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

তবে ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের আরোহীদের কেউই বেঁচে নেই । এমন তথ্যই জানিয়েছে ইরানি রেড ক্রিসেন্ট। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন এটি নেহাত দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

দূর্যোগপূর্ণ বৈরি আহহাওয়ার মধ্যেও প্রেসিডেন্ট রাইসি প্রকল্প উদ্বোধন করতে গেলেন, সেখানে বাঁধ উদ্বোধন করার পর এক ভাষণে রাইসি ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইরানের সমর্থনের উপর জোর দেন। এটাই কি রাইসির জন্য কাল হয়ে দাড়াঁল। নাকি পরিকল্পিত ভাবে রাইসির মৃত্য নিশ্চিত করলো ষড়যন্ত্রকারিরা। এর জন্য কি তবে ইসরায়েল দায়ি এমনটাই মনে করছেন অনেকে।

সন্দেহের আঙুল যাচ্ছে আমেরিকার দিকেও। কারণ একমাত্র ইরানের কারণেই মধ্যেপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রভাব কমেছে ওয়াশিংটনের। সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে আমেরিকার চরম শত্রু চীন। এ ছাড়া কাশেম সোলাইমানির মতো প্রভাবশালী জাঁদরেল নেতাকে হত্যা করতে একটুও বুক কাঁপেনি আমেরিকার।

অনেকেই মনে করছেন রাইসির এই আকস্মিক মৃত্যর পিছনে রহস্য রয়েছে। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইরান একটি সামাজিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল রাইসি এমন সময়ে প্রেসিডেন্ট হন। এবং পারমানবিক কর্মসূচির কারণে দেশের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চাপে কঠিন সময় পার করছে। গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় যে যুদ্ধ শুরু হয়, তা আঞ্চলিক উত্তেজনা আবার তুঙ্গে নিয়ে যায়। কয়েক দফা পাল্টা-পালটি ঘটনার পর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ইরান সরাসরি ইসরায়েলের উপর শত শত ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন নিক্ষেপ করে। তাহলে কি সুস্পষ্ট হচ্ছে রাইসির মৃত্যর কারণ রহস্যে ঘেরা? কিছু কারণ উল্লেখ করা যাক..

১। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করতে যাবেন। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে তাকে হেলিকপ্টারেই কেন যেতে হবে।

২। যেহতেু সিমান্তবর্তি এলাকায় ইব্রাহিম রাইসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যাবেন সেহেুত দেশটির আবহাওয়া দপ্তর কেন আগে সতর্ক করলেন না।

৩। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাধারনত আকাশপথে কোন যানবাহন চলাচল করেনা। করলেও তা আবহাওয়া বিশ্লেষনের মাধ্যমে যাতে কোন ঝুঁকি না থাকে তা নিশ্চিত হয়ে হেলিকপ্টার বা বিমান চলাচল করে। সেখানে এই ঝুঁকি নিয়ে কেন উদ্বোধন করতে গেলেন রাইসি।

৪। যেহেতু হেলিকপ্টার একটি সাধারন হালকা আকাশপথের চলাচলের মাধ্যম সেহেতু একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট কেন হেলিকপ্টারেই যাবে। দেশটিতে আবহাওয়ার দূর্যোগ চলা সর্তেও এরকম পরিস্থিতিতে কেন হেলিকপ্টারটি চালান হলো।

৫। আকাশপথের হালকা বাহন হচ্ছে হেলিকপ্টার। পাইলট বা চালক যেহেতু দেখছে আবহাওয়া যাতায়াতের অনুকূলে সেহেতু পাইলট কেন যাত্রা শুরু করে।

৬। সাধারণত যে কোন দেশের রীতি হলো প্রেসিডেন্ট, ফরেন মিনিষ্টার ভিন্ন ভিন্ন হেলিকপ্টারে যাতায়ত করে। তাহলে তারা সবাই একই হেলিকপ্টারে কেন উঠলো? এমনকি হেলিকপ্টারের পাইলট কে ছিল। তাহলে কি হেলিকপ্টারের পাইলটকে নিজের আয়েত্বে নিয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তৈরি হচ্ছে সংশয়।

৭। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হেলিকপ্টারে করে কেন সফরে গেলেন ইব্রাহিম রাইসি।

পাকিস্তানের তৎকালিন জেনারেল জিয়াউল হক বাওয়ালপুর গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিনের তৈরি এম-৩১ ট্যাংকের মহড়া দেখতে, রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ৩৩০ মাইল দক্ষিণে বাহওয়ালপুর টেস্ট ফিল্ডে যান। ট্যাংকের মহড়া দেখে ফেরার পথে বিধ্বস্ত হয় লকহিড মার্টিনের তৈরি সি-১৩০বি বিমানটি, উড্ডয়নের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মাটিতে আছড়ে পড়ে ৬০-৭০ ডিগ্রি কোণে। আর এতেই মারা গেছেন জেনারেল জিয়াউল হক। একইভাবে সিআইএর কোন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হয়েছে। নাকি হেলিকপ্টার দূর্ঘটনার মৃত্যুতে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ এর কোন হাত রয়েছে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।।


ইরানের প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   সিআইএ   মোসাদ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যু: এশিয়া ও ইউরোপীয় ভূরাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে

প্রকাশ: ১২:৫৪ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত খবরের মধ্যে গাজা যুদ্ধের পর যুক্ত হল রহস্যজনক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু। রোববার (১৯ মে) ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রেসিডেন্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন ভূরাজনীতির প্রভাবশালী দুই কর্তা ব্যক্তির মৃত্যুতে অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ। তবে কি মৃত্যু থেকে সবচেয়ে লাভবান হবে ইসরায়েল? এমন প্রশ্ন ও উঠে আসছে।  

রাইসির মৃত্যু শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বরং প্রভাব ফেলবে মধ্য এশিয়া ইউরোপীয় ভূরাজনীতিতেও। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে যে বিপুল পরিমাণ ড্রোন সমরাস্ত্র সরবরাহ করেছিল তেহরান এখন সেই পদক্ষেপ কতটা ধারাবাহিক থাকবে সে প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে অনেক মহলে। এছাড়াও রাইসির নেতৃত্বে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তেহরান।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে ইব্রাহিম রাইসি হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু। গেল কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছিল তেহরান। বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, বাহরাইন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থ সমরাস্ত্রের অন্যতম যোগানদাতা ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী। নতুন প্রেসিডেন্ট এতটা আগ্রাসী হয়ে উঠবেন কিনা সেটা এখন বড় প্রশ্ন এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে।

এসব গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা ইসরায়েলের স্বার্থের জন্য ক্রামাগত হুমকি তৈরি করে আসছিল। এর মধ্যেই গত মাসে ইব্রাহিম রাইসির সরকার সরাসরি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও ইরানের ইস্ফাহান শহরে ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই ঘটনার আগে কেউ কখনো কল্পনাই করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ ইসরায়েলের হামলার সাহস করতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন ইব্রাহিম রাইসি।

শুধু হামলা নয় কয়েক দশক ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট ইসরায়েল পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পালিত কুকুর হিসেবে পরিচিত সুন্নি প্রধান দেশ সৌদি আরবও। আর পশ্চিমা এসব শক্তির কোনো তোয়াক্কা না করে পরমাণু কর্মসূচি আরও জোরদার করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। এমনকি বেশ কয়েকবার ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন সদ্য নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট। বলা হচ্ছে রাইসির মৃত্যু প্রভাব ফেলতে পারে দেশটির পরমাণু কর্মসূচিতেও।


রাইসি   মৃত্যু   এশিয়া   ইউরোপী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি কী হত্যাকাণ্ডের শিকার

প্রকাশ: ১২:২২ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

চিরশত্রু ইসরায়েলসহ পশ্চিমাদের চক্ষু শূল ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের জাঁদরেল নেতা ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি । আমেরিকার কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরও কখনো মাথা নত করেননি। রাজি হননি আপোষেও।

তাইতো হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন মার্কিন সিনেটর রিক স্কট। এই উচ্ছ্বাস শুধু মার্কিন সিনেটরেরই নয়, যেন ইসরায়েল-আমেরিকার প্রতিচ্ছবি। তাই অনেকে প্রশ্ন তুলছেন এটি নেহাত দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বুকে কাঁপন ধরানো একমাত্র প্লেয়ার ছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। তাকে শেষ করতে পারলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইসরায়েলের দিকে মিসাইল তাক করার মতো আর কেউ নেই তা ভালো করেই জানেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

সন্দেহের আঙুল যাচ্ছে আমেরিকার দিকেও। কারণ একমাত্র ইরানের কারণেই মধ্যেপ্রাচ্যের রাজনীতিতে প্রভাব কমেছে ওয়াশিংটনের। সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে আমেরিকার চরম শত্রু চীন। ছাড়া কাশেম সোলাইমানির মতো প্রভাবশালী জাঁদরেল নেতাকে হত্যা করতে একটুও বুক কাঁপেনি আমেরিকার। এমনকি বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েও ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে ফেরাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। ফলে রাইসিকে টার্গেট করতে পারে বাইডেন প্রশাসন সেই শঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।


ইরান   প্রেসিডেন্ট   রাইসি হত্যাকাণ্ড  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে উচ্ছ্বসিত মার্কিন সিনেটর

প্রকাশ: ১২:০১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ান। তাদের শোকে পাথর হয়ে গেছে ইরানিরা। তবে এই দুর্ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একধরনের উচ্ছ্বাস করতে দেখা গেছে একজন মার্কিন সিনেটরকে।সোমবার (২০ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আলজাজিরার প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর সোমবার রিক স্কট নামে এক রিপাবলিকান আইন প্রণেতা ইরানের প্রেসিডেন্টের দুর্ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।পোস্টে তিনি বলেন, ‌‘তাকে (রাইসি) ভালোবাসা বা সম্মান নয়, এমনকি কেউ তাকে মিসও করবে না। যদি তিনি মারা যান, আমি সত্যিই আশা করি ইরানি জনগণ তাদের দেশকে খুনি স্বৈরশাসকের হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে।


ইরানি   প্রেসিডেন্ট   মার্কিন সিনেটর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন