ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তালেবানকে কি স্বীকৃতি দেওয়া যৌক্তিক?

প্রকাশ: ০১:২৯ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail

আজ ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের ২ বছর পূর্ণ হচ্ছে। তবে এ পর্যন্ত তারা  আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি কোনো দেশেরই। এমনকি তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার টেবিলেও কেউ বসতে চাচ্ছে না। তাদের সাথে আলোচনায় বসা নিয়ে রয়েছে তীব্র মতবিরোধ। কেউ কেউ মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমে তালেবানকে বদল করা সম্ভব হতে পারে। তবে এর বিপরীতে অন্যদের ভাষ্য, তালেবান কখনো বদলাবে না, সুতরাং তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে কোনো লাভ নেই।

আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর থেকে নারীদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করছে। আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের সঙ্গে কীভাবে, কেমন আচরণ করা উচিত কিংবা তাদের একঘরে করে রাখা নিয়ে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দ্বিধায় ভুগছে, তখন ঘুরেফিরেই সামনে আসছে আফগানিস্তানে নারী অধিকারের বিষয়টিএমনকি নারীদের রূপচর্চাকেন্দ্র (বিউটি পার্লার)।

তবে আফগান রূপবিশেষজ্ঞ সাকিনা মনে করেন, তাঁদের দেশের নারীরা তালেবান ও আন্তর্জাতিক বিশ্বএ দুই পক্ষের দর-কষাকষির ‘বিষয়েপরিণত হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, তালেবান নারীদের চাপে রেখে মূলত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তারা নিজেদের স্বীকৃতি আদায় করতে চায়।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এরপর তারা নারীদের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করে।

সম্প্রতি আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পারলার বন্ধের নির্দেশও দিয়েছে তালেবান সরকার। এ অবস্থায় রূপবিশেষজ্ঞ সাকিনা রাজধানী কাবুলে দুই সপ্তাহ ধরে গোপনে তাঁর পার্লার চালাচ্ছেন।

তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়া বা না দেওয়ার পরিণতি কী হতে পারে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন সাকিনা। তাঁর ভাষায়, ‘তালেবানকে সরকার হিসেবে মেনে নিলে তারা আমাদের ওপর জারি করা বিধিনিষেধগুলো তুলে নিতে পারে। আবার নাও নিতে পারে। এমনকি তারা আরও বেশি করে বিধিনিষেধ চাপিয়েও দিতে পারে।‘

যদিও তালেবানের দাবি, নারী অধিকারের বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের কোনো দেশেরই ‘মাথাব্যথা নেই। তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, এই একটি ইস্যুকে প্রাধান্য দেওয়াটা নিতান্তই অজুহাতমাত্র।

তালেবানের শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বাড়ি আফগানিস্তানের কান্দাহারে। সেখান থেকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। হাইবাতুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে আরও অনেক আগেই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ছিল। কিছু ক্ষেত্রে আমরা এগোতে পেরেছি। এ বিষয়টিকেও আমরা বিবেচনায় রাখব।’

এদিকে, তালেবান সরকারের সঙ্গে আলোচনা হওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে আফগানদের মধ্যেও মতভিন্নতা রয়েছে বলে জানা গেছে। আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন ফাতিমা গাইলানি। আফগানিস্তানের চার সদস্যদের একটি নারী প্রতিনিধি দলের সদস্য তিনি।

ফাতিমা গাইলানি বলেন, ‘আলোচনা করব না বলাটা সহজ ব্যাপার। আলোচনা করবে না তো কী করবে?’

দেশটির সাবেক সামরিক কমান্ডার ও প্রবীণ যোদ্ধারা এখনো আশা করছেন, শক্তি প্রয়োগ করে তালেবান সরকারকে উৎখাত করা যাবে। তবে তাঁদের সঙ্গে একমত নন ফাতিমা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আরেকটি যুদ্ধের দরকার নেই।

ফাতিমা তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় সমাধান খুঁজলেও কেউ কেউ মনে করেন, তালেবানকে আরও বেশি করে চাপ দিতে হবে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।

নারীদের নেতৃত্বে পরিচালিত অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম জেন টাইমসের সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা জাহরা নাদের বলেন, ‘আলোচনা করে কী হবে? তারা কেমন মানুষ আর তারা কী ধরনের সমাজ গঠন করতে চায়, তা তারা দেখিয়ে দিয়েছে।‘

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নারীদের বিরুদ্ধে নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে। পার্কে যাওয়া, জিমে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সর্বশেষ পারলারে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতিসংঘ একে ‘লৈঙ্গিক বর্ণবাদ বলে উল্লেখ করেছে। তালেবানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রস্তুতি চলছে।

 

তালেবানের মধ্যম পর্যায়ের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে সম্প্রতি পশ্চিমা কূটনীতিকদের বৈঠক হয়েছে। তালেবানোর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া কূটনীতিকেরা বলছেন, আলোচনার টেবিলে বসা মানেই স্বীকৃতি নয়।

একজন কূটনীতিক বলেন, আগ্রহী আফগানদের যদি আলোচনার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে শাসনক্ষমতা এমন মানুষদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে, যারা জনগণের একটা বড় অংশকে কার্যত বন্দী করে রাখতে চায়।

 সম্প্রতি তালেবানের শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার সঙ্গে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানির বৈঠক হয়। এটি কোনো বিদেশি কর্মকর্তার সঙ্গে আখুন্দজাদার প্রথম বৈঠক।

এ আলোচনা সম্পর্কে কূটনীতিকেরা বলেছেন, আলোচনায় অনেকখানি ব্যবধান থেকে গেছে, বিশেষ করে শিক্ষা ও নারী অধিকার বিষয়ে। তবে ধীরে হলেও সামনে একটি সমাধানে পৌঁছার ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁরা।

আফগানিস্তান অ্যানালিস্ট নেটওয়ার্কের বিশ্লেষক কেট ক্লার্ক বলেন,

বছরের পর বছর ধরে লড়াইকারী পক্ষগুলোর একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস ও ঘৃণা রয়েছে। তালেবান মনে করে পশ্চিমারা এখনো তাদের দেশকে নীতিভ্রষ্ট করতে চাইছে। নারী অধিকার ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের ক্ষেত্রে তালেবানের যে নীতিমালা রয়েছে, তা পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থন করে না।

তালেবান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভেদ চিহ্নিত করেছেন ক্লার্ক। তিনি বলেন, পশ্চিমারা হয়তো মনে করছে স্বীকৃতির মতো বিষয় তালেবানকে সুবিধা দেবে। আর তালেবান স্বীকৃতিকে তাদের অধিকার মনে করে। তারা মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিকে পরাস্ত করে দ্বিতীয়বার তাদের হাতে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতা তুলে দিয়েছে স্বয়ং ঈশ্বর।

তালেবান সরকার এখনো কোনো স্বীকৃতি না পেলেও তাদের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন দেশ সফরে যাচ্ছেন, সেসব দেশের সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আবার তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি প্রায় প্রতিদিনই কাবুলে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাচ্ছেন। এসব অতিথিকে নিয়মিত প্রটোকলও দেওয়া হচ্ছে। বৈঠকের ছবিও প্রকাশ করা হচ্ছে।

কাবুলে পশ্চিমা দূতাবাসগুলো বন্ধ রয়েছে। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং জাপানি দূতাবাস খোলা আছে। প্রভাব বিস্তার করতে চাইলে কূটনীতিকদের কাতারে না থেকে কাবুলে যাওয়া প্রয়োজন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

চার দশকের যুদ্ধে আরেকটি রক্তক্ষয়ী অধ্যায় যুক্ত করার ইচ্ছে বিশ্বের কোনো দেশেরই নেই। আবার তালেবান নেতাদের মতভেদ যতই থাকুক না কেন, নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের ব্যাপারে তাঁরা সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ। রাতারাতি কিংবা সহজে হওয়ার মতো কোনো সমাধানও সামনে নেই।

রূপবিশেষজ্ঞ সাকিনা আক্ষেপ করে বলেন, ‘মন খুলে একমাত্র যে কথাটি বলতে পারি, তা হলো, সত্যিই আমরা খুব দুর্দশার মধ্যে আছি। আমরা ছাড়া অন্য কেউ হয়তো কষ্টটা বুঝবেন না। তবে এটা সত্যিই যন্ত্রণার।

খবরঃ বিবিসি


তালেবান   স্বীকৃতি   দেওয়া   যৌক্তিক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গুলিবিদ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:০৯ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার একটি সরকারি বৈঠক শেষে ফেরার পথে তিনি তলপেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। স্লোভাক গণমাধ্যমের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স ও বিবিসি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, গুলি লাগার পর ফিকো মাটিতে পড়ে যান এবং তাকে একটি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর হেলিকপ্টারে করে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ আপডেটে বিবিসি জানিয়েছে, ফিকোর শারীরিক অবস্থা ভালো নেই এবং তার গায়ে লাগা গুলির জখম বেশ গুরুতর।

হামলার পরপরই একজনকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

গত সেপ্টেম্বরে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ফিকো। ওই সময় ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান তিনি।

ফিকোর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছোড়া হয়েছে এবং তার জীবন হুমকির মধ্যে রয়েছে। এই মুহূর্তে তাকে হেলিকপ্টারে করে বাঙ্কসা বায়াসত্রিকাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কারণ ব্রাতিসলাভাতে পৌঁছাতে বেশি সময় প্রয়োজন হবে। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ”

দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হ্যান্ডলোভার হাউজ অব কালচারের বাইরে ফিকোর পেটে চারটি গুলি করা হয়। পুলিশ ওই স্থানটি ঘিরে ফেলেছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্লোভাকিয়া   প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের অস্ত্র চোরাচালান আটকে দিল জর্ডান

প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের অস্ত্র চোরাচালান আটকে দেওয়ার দাবি করছে জর্ডান। দেশটির দাবি, এসব অস্ত্র জর্ডানের ক্ষমতাসীন রাজতন্ত্রের বিরোধীদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তার জন্য আনার চেষ্টা করছিল ইরান। 

বুধবার (১৫ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিষয়টি অবগত এমন দুটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অস্ত্র পাচারে সন্দেহভাজন ইরানি নেতৃত্বাধীন চক্রান্তকে জর্ডান ব্যর্থ করে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ত্রগুলো সিরিয়ার ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি সেলের কাছে পাঠিয়েছিল। এ সেলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার সম্পর্ক রয়েছে। মার্চের শেষের দিকে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত জর্ডানিয়ান সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর অস্ত্রের চালানও জব্দ করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মধ্যে প্রথমবারের মতো জর্ডানে অস্ত্রের চালান জব্দের খবর সামনে এসেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জর্ডানের দুটি সূত্র চলমান তদন্ত এবং গোপন অভিযানের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে অস্ত্র দিয়ে কি ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল তা তারা জানাননি। এছাড়া কি ধরনের অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে তাও তারা জানাননি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জর্ডানের নিরাপত্তা পরিষেবাগুলো ইরান এবং তার মিত্রদের কয়েকটি অস্ত্র চালান আটকে দিয়েছে। এসব চালানে ক্লেমোর মাইন, সি৪ এবং সেমটেক্স বিস্ফোরক, কালাশনিকভ রাইফেল এবং ১০৭ মিমি কাতিউশা রকেট ছিল।

জর্ডানের সূত্র অনুসারে, এ সব অস্ত্রের বেশিরভাগ ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরের জন্য নির্ধারিত ছিল। এছাড়া মার্চে জব্দ করা অস্ত্র জর্ডানে ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল।

জর্ডানের মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে, অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের কয়েকজন কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে এর সঙ্গে দলের কোনো নীতিগত সমর্থন নেই বলে জানিয়েছে তারা।


ইরান   অস্ত্র   চোরাচালান   জর্ডান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সব সফর স্থগিত করলেন জেলেনস্কি

প্রকাশ: ০৭:৪৮ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের খারকিভে শুক্রবার ভোরে হঠাৎ করে ঢুকে পড়ে রাশিয়ার সেনারা। এরপর সেখান দিয়ে একের পর এক অঞ্চল দখল করে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে তারা।

এরমধ্যেই নিজের সব আন্তর্জাতিক সফর স্থগিত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। 

বুধবার (১৫ মে) তার দপ্তর থেকে একটি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, 'আগামী কয়েকদিনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ অন্যান্যদের যেসব আন্তর্জাতিক সফর ছিল সেগুলো স্থগিত এবং সফরগুলোর সময় পুনরায় নির্ধারিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কায়রাইলো বুদানোভ সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানান, খারকিভের সম্মুখভাগের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়েছে। এরপরই জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রুশ সেনাদের হামলার তীব্রতায় টিকতে না পেরে খারকিভের রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে সেনাদের সরিয়ে নিয়েছে ইউক্রেন।

দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, 'সেনারা তীব্র হামলার মুখে পড়েছে এবং তাদের আরও সুবিধাজনক স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।'

ইউক্রেন সাধারণত সেনাদের প্রত্যাহার করার সরাসরি ঘোষণা দেয় না। এর বদলে তারা প্রত্যাহারের বিষয়টিকে 'সেনাদের সুবিধাজনক স্থানে' নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে।

সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র আরও বলেছেন, সেখানকার পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। তবে তিনি দাবি করেছেন রুশ সেনাদের তারা শক্ত অবস্থান নিতে দিচ্ছেন না।

এদিকে ইউক্রেনের পুলিশ প্রধান খারকিভের ভোভচানস্ক এবং লুকিয়ান্তসি থেকে সব মানুষকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তার এমন আহ্বানের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, সেদিকটায় তড়িৎ গতিতে এগিয়ে আসছে রাশিয়ার সেনারা।

রুশ বাহিনী খারকিভে কী লক্ষ্য নিয়ে প্রবেশ করছে এ বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কয়েকদিন আগে বলেছিলেন তারা রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে একটি বাফার জোন তৈরি করতে চান। যেন ইউক্রেন রাশিয়ার ভেতর কোনো ধরনের হামলা না চালাতে পারে।


সফর   স্থগিত   জেলেনস্কি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

২০ বছর পর ক্ষমতা ছাড়ছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং। 

টানা ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তার এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে আক্ষরিক অর্থে শেষ হতে চলেছে 'লি সেইন যুগ'।

বুধবার রাতে সব ঠিক থাকলে, উপপ্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী লরেন্স ওয়ংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারপ্রধানের পদ থেকে বিদায় নেবেন তিনি।

১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র তিনজন প্রধানমন্ত্রী দেখেছে সিঙ্গাপুর। এরা সবাই দেশটির ক্ষমতাসীন দল পিপল'স অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) সদস্য। প্রথমজন লি কিউয়ান ইয়িউকে বলা হয় সিঙ্গাপুরের স্থপতি। বর্তমান বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুংয়ের পিতা লি কিউয়ান ইয়িউ টানা ২৫ বছর দেশটির সরকারপ্রধান ছিলেন। সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম গোহ চোক তং।

৭২ বছর বয়সী লি সেইন লুং অবশ্য এখনই রাজনীতি পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতির পর একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় মন্ত্রিসভার সদস্য থাকবেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত শনিবার সিঙ্গাপুরের সাংবাদিকদের শেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন লি সেইন। সেই সাক্ষাৎকারে এত বছর ধরে তাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কখনও অন্যদের চেয়ে বেশি গতিতে দৌড়ানোর চেষ্টা করিনি; বরং চেষ্টা করেছি, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একসাথে চলতে।’

‘এবং আমি মনে করি, গত ২০ বছরে জাতিগতভাবে আমরা কিছু সাফল্য অর্জন করেছি। তবে এটা আমি স্বীকার করব যে, দুই পূর্বসূরি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে আমার কাজের ধরন কিছুটা ভিন্ন ছিল।’

১৯৮৪ সালে তরুণ বয়সে সাধারণ কর্মী হিসেবে পিএপিতে যোগ দেন তিনি। সে সময় তার বাবা লি কিউয়ান ইয়িউ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তবে বাবা প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকলেও সে সময় দল থেকে তেমন কোনো আনুকূল্য পাননি তিনি। আর দশজন সাধারণ কর্মীর মতোই ছিলেন।

লি সেইনের উত্থান ঘটা শুরু হয় দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক তং’য়ের সময়। গোহ চোক তং’য়ের একজন বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে নিজেকে দলের ভেতর প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন তিনি এবং তার ধারবাহিকতাতেই ২০০৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন।

প্রথম দিকে অবশ্য লি সেইনকে ব্যাপক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। এসব সমালোচনার প্রায় সবই ছিল স্বজনপ্রীতিমূলক (নেপোটিজম)। বলা হতো, সিঙ্গাপুর লি পরিবারের সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে আর সেই পরিবারের সংরক্ষক হলেন গোহ চোক তং।  

তবে পরবর্তী ২০ বছরে বহুবার নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছেন তিনি। তার নেতৃত্ব সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি বহুমুখী এবং বিকশিত হয়েছে, একটি সাধারণ দ্বীপরাষ্ট্র থেকে দেশটি পরিণত হয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র এবং ট্যুরিস্টদের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে; মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া তার শাসনামলের ২০ বছরে কখনও মূল্যস্ফীতি বা অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়নি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে। এমনকি করোনা মহামারির মধ্যেও নয়।

ভূরাজনীতিতেও সাফল্য দেখিয়েছেন লি সেইন। পরস্পরের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন দুই শক্তিমান দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সঙ্গে সবসময় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে গেছেন। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতেও নিজ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছেন তিনি।

তবে অন্য সব রাজনীতিবিদের মতো লি সেইনও সমালোচনার ঊর্ধে নন। বিভিন্ন আইনী প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের বাক স্বাধীনতা সীমিত রাখার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া দেশের শ্রমিক সংকট লাঘবের জন্য বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। এ কারণেও তিনি বিরোধীদের চক্ষুশূল। মূলত তার শাসনামলেই ২০১১ এবং ২০২০ সালের ভোটে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছিল পিএপি।

সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ ডোনাল্ড ল’ বিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু সমস্যা থাকলেও লি সেইনই আসলে সিঙ্গাপুরের জনগণের প্রকৃত নেতা। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো এই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।’


ক্ষমতা   সিঙ্গাপুর   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় ৫৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশ: ০৫:২৩ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইন্দোনেশিয়ায় সপ্তাহব্যাপী চলা ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে একটি আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা এবং আকস্মিক বন্যার কারণে এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার অভিযান এখনও চলমান। বন্যার কারণে রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, মসজিদ প্লাবিত হয়েছে। খবর এএফপির।

স্থানীয় সময় শনিবার মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি থেকে শীতল লাভা নির্গত হয়েছে। ফলে এর কাছাকাছি অবস্থিত বিভিন্ন জেলার বাড়ি-ঘর, রাস্তা এবং মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা লাহার নামেও পরিচিত। আগ্নেয়গিরির প্রধান উপাদান যেমন ছাই, বালি এবং নুড়ি পাথর বৃষ্টির কারণে আগ্নেয়গিরির ঢালে নেমে আসে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।

বুধবার এক বিবৃতিতে জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার প্রধান সুহরিয়ানতো বলেন, সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে মৃতের সংখ্যা ৫৮ জন। তিনি জানিয়েছেন, এখনো ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া আরও ৩৩ জন বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকার ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করতে ইতোমধ্যেই ভারী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ৩ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।


ইন্দোনেশিয়া   ভারী বৃষ্টি   বন্যা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন