ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

৩১ আগস্ট দুর্ঘটনায় প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু; ডায়ানার শেষ কথা কী ছিল?

প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ৩১ অগাস্ট, ২০২৩


Thumbnail ৩১ আগস্ট দুর্ঘটনায় প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু; ডায়ানার শেষ কথা কী ছিল?

দুমড়েমুচড়ে গিয়েছিল কালো মার্সিডিজ গাড়িটি। দুর্ঘটনার পর প্রথম যে কজন ব্যক্তি সবার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন, তাঁদের একজন ফরাসি ফায়ার সার্ভিস কর্মী জেভিয়ের গোরমেলন। তিনি জানতেন না গাড়ির ভেতরে কারা রয়েছেন। শুধু গাড়ির ভেতরে রক্তাক্ত সোনালি চুলের এক নারীকে দেখেছিলেন। তাঁকে টেনে বের করে আনেন জেভিয়ের। তখনো তিনি বেঁচে ছিলেন। অস্ফুট স্বরে তিনি কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলেন।

জেভিয়ের পরে বুঝতে পারেন, ওই নারী সাধারণ কেউ নন। তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা, ‘জনমানুষের রাজকন্যা’। ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট দুর্ঘটনায় ডায়ানার মৃত্যু সংবাদ শুনে শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে বিশ্ববাসী। আর জেভিয়ের হন ইতিহাসের অংশ।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের পন্ত দে ল’আলমা টানেলে মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার পরও ডায়ানা প্রাণে বেঁচে যাবেন, এমনটাই আশা ছিল জেভিয়েরের। কিন্তু তাঁর সেই আশা পূরণ হয়নি। ডায়ানা, তাঁর প্রেমিক দোদি আল-ফায়েদ এবং গাড়িচালক হেনরি পল মারা যান। ডায়ানার দেহরক্ষী ট্রেভর রিস জোনস কেবল বেঁচে গিয়েছিলেন।

দুর্ঘটনার দুই দশক পর জেভিয়ের দ্য সান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান ডায়ানা শেষ কী কথা বলেছিলেন তাঁকে। সেই সাক্ষাৎকারে সেই রাতের অভিজ্ঞতার কথা জানান জেভিয়ের।


যেভাবে দুর্ঘটনা

পাপারাজ্জিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ডায়ানা-দোদিকে বহনকারী গাড়িটি দ্রুতগতিতে চলছিল। তাঁরা রিটজ হোটেল থেকে বেরিয়ে দোদির অ্যাপার্টমেন্টে ফিরছিলেন। টানেলের মধ্যে কংক্রিটের পিলারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় গাড়িটির। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে জেভিয়ের আরও ৯ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর সঙ্গে সেখানে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, মার্সিডিজ-বেঞ্জের ডব্লিউ১৪০ মডেলের একটি প্রাইভেট কারের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে রয়েছে। পেছনের আসনে একজন পুরুষ ছিলেন, সম্ভবত মারা গেছেন। জেভিয়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। পেছনের আসনে এক নারীকে দেখতে পান। তখনো তিনি বেঁচে ছিলেন। খুবই ক্ষীণভাবে শ্বাস নিচ্ছিলেন ওই নারী।

আহত ডায়ানাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। জেভিয়ের জানান, হাসপাতালে পাঠানোর সময় মনে হচ্ছিল, ওই নারী বেঁচে যাবেন। পরে যখন জানতে পারেন, ডায়না মারা গেছেন! ভীষণ অবাক হন জেভিয়ের। মনে পড়ে যায়, ডায়ানা তাঁকে ফিসফিস করে কিছু কথা বলে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন সেসব কথা গোপন রেখেছিলেন জেভিয়ের।


ফিরে দেখা: ডায়ানার বিয়ে

বৈবাহিক সূত্রে প্রিন্সেস হয়েছিলেন ডায়ানা। তাঁর পুরো নাম ডায়ানা স্পেনসার। তাঁর পরিবার নরফকে স্যান্ডরিংহাম প্রাসাদের পাশে বসবাস করত। ডায়ানার জন্ম সেখানেই। পরে লন্ডনে চলে আসেন ডায়ানা। শৈশব থেকেই ডায়ানা অনিন্দ্য সুন্দরী। স্বভাবে বেশ নম্র ও লাজুক। তাঁর এই ব্যক্তিত্ব তখনকার যুবরাজ (বর্তমান ব্রিটিশ রাজা) চার্লসের নজর কেড়েছিল। ডায়ানার প্রেমে পড়েছিলেন চার্লস। যদিও তখন ডায়ানার বড় বোন সারার সঙ্গে প্রেম ছিল চার্লসের।

চার্লস-ডায়ানা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৮১ সালের ২৯ জুলাই সেই শুভদিন। মহাধুমধামে প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লসকে বিয়ে করে ডায়ানা হয়ে যান প্রিন্সেস। তাঁদের বিয়ের আসর বসেছিল সেন্ট পল’স ক্যাথেড্রালে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ কোটি মানুষ রাজকীয় এই বিয়ে টিভির পর্দায় দেখেন। সেই আয়োজন যেন রূপকথার গল্পের মতো। তবে চার্লস ও ডায়নার দাম্পত্য জীবন রূপকথার রাজা–রানির মতো সুখের ছিল না।

বিয়ের পর অথই সাগরে

ব্রিটিশ রাজপরিবারে এসে ডায়ানা যেন অথই সাগরে পড়েন। রাজকর্তব্য আর রাজপরিবারের কঠোর নিয়মনীতির বেড়াজালে অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠেন তিনি। মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়তে চাওয়া ডায়ানা যেন ছোট্ট খাঁচায় আটকা পড়েন। রীতিমতো দম আটকে আসতে চায় তাঁর। রাজরক্ত না হওয়ায় প্রাসাদে তিক্ত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। অন্য নারীর সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক নিয়েও ছিলেন হতাশ।

তত দিনে উইলিয়াম ও হ্যারি নামের দুই ফুটফুটে ছেলের মা ডায়ানা। কিন্তু ডায়ানার শক্তি ছিল সাধারণ মানুষের ভালোবাসা। দেশে-বিদেশে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। অসহায় মানুষের কল্যাণে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছুটেছেন। ডায়ানা মানুষকে ভালোবাসতেন। সাধারণের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করতেন। মানুষও তাঁকে ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছিল। তাই তো তিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘জনমানুষের রাজকন্যা’।

আলোচিত প্রেম, বিয়ে, পরিবার, বিচ্ছেদ, সমাজকর্ম, ব্যক্তিজীবনের কারণে সংবাদমাধ্যমে সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকতেন ডায়ানা। যা করতেন, তাতেই যেন শিরোনামে উঠে যেত তাঁর নাম। পাপারাজ্জিরা হন্যে হয়ে ছুটতেন ডায়ানার একটি ছবি পাওয়ার আশায়। আর এটাই কাল হয় তাঁর জন্য। পাপারাজ্জির ধাওয়া থেকেই গাড়ি দুর্ঘটনা, পরে মারা যান ডায়ানা।

গোপন দুঃখ

রাজপরিবার সব সময় চার্লস-ডায়ানার একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের ছবি মানুষকে দেখাতে চাইত। কিন্তু এ ছবির আড়ালে ছিল তাঁদের দাম্পত্যের তিক্ততা। যার চূড়ান্ত পরিণতি বিচ্ছেদ। ১৯৯২ সাল থেকে চার্লস ও ডায়ানা আলাদা থাকা শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়।

পরে বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা যায়, চার্লস ও ডায়ানা পরস্পরকে ঠকিয়েছেন। বিবাহিত জীবনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। ডায়ানা অবসাদে ভুগেছেন। পরে চার্লস পুরোনো বন্ধু ক্যামিলাকে বিয়ে করেন। ডায়ানা ঝুঁকে পড়েন মানুষের সেবায়।

অনেকের মতে, ক্যামিলার সঙ্গে চার্লসের সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ডায়ানা। দিনের পর দিন নীরবে সহ্য করেছেন। অবসাদে ভুগেছেন। একসময় আর আভিজাত্যের আড়ালে অন্ধকার জীবন এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি, বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন। যদিও বিচ্ছেদে ডায়ানার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি।

ডায়ানার প্রেম

মাত্র ৩৬ বছরের ক্ষণস্থায়ী জীবন ডায়ানার। এমনও শোনা গেছে, বিচ্ছেদের আগে থেকেই ডায়ানা একের পর এক প্রেমে জড়ান। তাঁর প্রেমিকের তালিকায় চার্লসের পাশাপাশি গায়ক ব্রায়ান অ্যাডামস, আর্ট ডিলার অলিভার হোর, ধনকুবের থিওডোর ফোরস্টম্যান, মেজর জেমস হিউইট, দেহরক্ষী পল ম্যানাকি, ব্যবসায়ী দোদি আল ফায়েদ—এমন নানা নাম রয়েছে।

ডায়ানার রূপলাবণ্য ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় সবচেয়ে আলোচিত নাম ব্রিটিশ-পাকিস্তানি চিকিৎসক হাসনাত খান। এই সম্পর্কের খবর মানুষের চোখের আড়ালে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ডায়ানা। তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছে হাসনাতের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলেছিলেন তিনি।

বলা হয়, ডায়ানার কষ্টের জীবনে আলো হয়ে এসেছিলেন হাসনাত। হাসি ফুটিয়েছিলেন তাঁর মুখে। ভ্যানিটি ফেয়ার জানায়, হাসনাত-ডায়ানা গোপনে বিয়ের পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের সম্পর্ক পরিণতি পায়নি। পরবর্তীকালে ডায়ানা ও হাসনাতের প্রেমের কথা সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন ইমরান খান। তখন পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার ইমরান। পরে দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন। ডায়ানার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন তিনি।


আবার নতুন প্রেম

চার্লসের সঙ্গে বিচ্ছেদের বছরখানেক পর দোদি আল-ফায়েদের সঙ্গে প্রেম হয় ডায়ানার। দোদি মিসরের ধনকুবের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আল-ফায়েদের ছেলে। ফ্রান্সের দক্ষিণে অভিজাত ভিলা রয়েছে মোহাম্মদ আল-ফায়েদের। ছুটি কাটাতে সেখানে পূর্বপরিচিত ডায়নাকে আমন্ত্রণ জানান এই ব্যবসায়ী। দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানে যান ডায়ানা।

ভাগ্য যেন ডায়ানাকে সেখানে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। কেননা, সেখানেই দোদির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। এরপর প্রেম। অবকাশ কাটিয়ে ফ্রান্স থেকে লন্ডনে ফেরার মাস দুয়েক পর চিকিৎসক হাসনাত খানের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান ডায়ানা। বলেছিলেন, এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে তাঁর হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু এটাই নিয়তি।

ধনী পরিবারে জন্ম দোদির। তবে বাবার পরিচয়ের বাইরেও একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ডায়ানা-দোদির অবকাশ কাটানোর ছবি তখন সাময়িকীগুলোতে আলোচিত। যদিও দুই পক্ষেই এই প্রেম লুকাতে চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে যেতে হয় দুজনকে।

ওই সময় ভ্যানিটি ফেয়ারে খবর বের হয়, ডায়ানার জন্য দামি আংটি কিনেছিলেন দোদি। পরে ডায়ানা তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু রোসা মঙ্কটনকে বলেছিলেন, তিনি ওই আংটি তাঁর ডান হাতে পরতে চান। এ থেকে ধারণা করা হয়, ডায়ানা আর দোদি তাঁদের প্রণয়ের সম্পর্ককে পরিণয়ে রূপ দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি দোদির বাবাও বিশ্বাস করতেন, ডায়ানার সঙ্গে তাঁর ছেলে বাগ্‌দান সেরেছিলেন।

সুখের দিন

বাস্তব পরিস্থিতি যা–ই হোক না কেন, ডায়ানা-দোদি তাঁদের সময়টা দারুণ উপভোগ করছিলেন। ১৯৯৭ সালের জুলাইয়ে তাঁরা সার্দিনিয়ায় নৌবিহারে যান। দারুণ সময় কাটান দুজনে। সেখানেও পাপারাজ্জিরা তাঁদের পিছু নেন। ইয়টের ওপর তোলা ডায়ানা-দোদির সেই ছবি সংবাদমাধ্যম লুফে নেন। ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।

অবকাশ কাটিয়ে জুলাইয়ের শেষের দিকে ডায়ানা-দোদি ফ্রান্সে যান। রিটজ হোটেলে ওঠেন। এ হোটেলের মালিক ছিলেন দোদির বাবা। খোশমেজাজে ছিলেন এই জুটি। ৩০ আগস্ট রাতে তাঁরা পছন্দের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন। কিন্তু পাপারাজ্জিদের কবলে পড়ে সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হয় তাঁদের। এরপর তাঁরা দোদির অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার জন্য বের হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।

পাপারাজ্জির ধাওয়া

৩০ আগস্টের সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের (ততক্ষণে ক্যালেন্ডারের পাতায় ৩১ আগস্ট) গাড়ি দুর্ঘটনা অবধি পাপারাজ্জিরা ডায়ানা-দোদিকে তাড়া করে ফিরেছিল। রিটজ হোটেল থেকে বের হওয়ার মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে ডায়ানা-দোদির গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। গাড়িটি শুরুতে ওই টানেলের দেয়ালে, পরে একটি কংক্রিটের পিলারের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। তখন মোটরসাইকেলে চেপে পাপারাজ্জিরা ওই গাড়ির পেছনে ছিল।

জেভিয়েরের স্মৃতিতে

লেখাটা শুরু হয়েছিল ফরাসি ফায়ার সার্ভিস কর্মী জেভিয়েরের অভিজ্ঞতার গল্প দিয়ে। ডায়ানার মৃত্যুর ২০ বছর পর দ্য সান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গাড়িটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তবে আমরা এটিকে খুবই সাধারণ সড়ক দুর্ঘটনা ভেবেছিলাম। হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।’

জেভিয়ের বলেন, ‘চালক ঘটনাস্থলে মারা যান। তাঁকে বাঁচানোর কোনো উপায় ছিল না।’ জেভিয়ের জানান, পেছনের আসনে দোদিরও প্রাণবায়ু ততক্ষণে বেরিয়ে গেছে। বেঁচে ছিলেন ডায়ানার দেহরক্ষী রেস-জোনস। গুরুতর আহত হলেও তিনি ডায়ানার নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন ছিলেন। বারবার বলছিলেন, ‘তিনি (ডায়ানা) কোথায়?’

ওই সময় জেভিয়ের ডায়ানার দেহরক্ষীকে চুপ করে থাকতে বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা হতাহত সবাইকে উদ্ধারে কাজ করছি। আমাদের দলের আর কেউ ইংরেজি বোঝেন না। তাই আপনি চুপ করে থাকুন।’ জেভিয়েরের ভাষ্য, ডায়ানার দেহরক্ষী নিজেও গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাঁর মুখের সব হাড় ভেঙে গিয়েছিল। পরে তিনি দিন দশেক কোমাতে ছিলেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাঁকে। এসব ঘটনা তাঁর লেখা বইতেও আছে।

দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির পেছনের আসনের সামনে ছোট্ট মেঝেতে পড়ে ছিলেন রক্তাক্ত ডায়ানা। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন জেভিয়ের। তখন ডায়ানার চোখ খোলা ছিল বলে জানান তিনি। জেভিয়ের ডায়ানাকে অক্সিজেন সরবরাহ করেন। পরে হাত ধরে গাড়িটি থেকে বের করে আনেন। দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। দ্য সানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেভিয়ের বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ার পর একজন প্যারামেডিক আমাকে বলেন, এটা প্রিন্সেস ডায়ানা।’

ডায়ানার শেষ কথা

শেষ সময়টায় পাশে থাকা জেভিয়ের প্রিন্সেস ডায়ানার শেষ কথা শুনেছিলেন। দুই দশক পর দ্য সান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা, রক্ত, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন ডায়ানা। অস্ফুট স্বরে তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল, ‘হায় ঈশ্বর, এটা কী ঘটে গেল!’ সম্ভবত এটাই ছিল জনমানুষের প্রিন্সেসের শেষ কথা। তবে ডায়ানার এ কথার উত্তর দিয়েছিলেন কি না, সাক্ষাৎকারে তা নিশ্চিত করে বলেননি জেভিয়ের।

তবে জেভিয়েরের ভাষ্য, গুরুতর আহত ডায়ানা সম্ভবত হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। পরে ভোর চারটা নাগাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু সংবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে।

দুই দশক পরও পুরো ঘটনা এখনো চোখে ভাসে জেভিয়েরের। দ্য সান পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেভিয়ের বলেন, ‘আমি এখনো পুরো ঘটনা চোখের সামনে দেখতে পাই। আমি কখনো ভুলতে পারব না। প্রতিবছর এই দিন যখন আসে, আমি সেই ভয়াবহ ঘটনা মনে করি।’


৩১ আগস্ট   দুর্ঘটনা   প্রিন্সেস ডায়ানা   মৃত্যু   শেষ কথা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিপজ্জনক হয়ে উঠছে এল নিনো

প্রকাশ: ১০:২৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। গত কয়েকদিন ধরে দেশের তাপমাত্রা এতটাই বাড়ছে যে অনেকে এটি সহ্য করতে পারছেন না। ফলে হিটস্ট্রোকসহ অন্যান্য স্বাস্থগত ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। শুধু বাংলাদেশ নয়, তালিকায় আছে মিয়ানমার, ভারত, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া। সব দেশেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর প্রভাবে তাপপ্রবাহ ধীরে ধীরে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, যা নীরব ঘাতকে পরিণত হচ্ছে।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এল নিনো হলো একটি জলবায়ু প্যাটার্ন। এটির মাধ্যমে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পানি উষ্ণ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, সমুদ্রের তাপমাত্রা, গতি, মহাসাগরীয় স্রোত, উপকূলীয় মৎস্যসম্পদের স্বাস্থ্য এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকার এবং এরও বাইরের অঞ্চলের ওপর প্রভাব পড়ে। এল নিনো দুই থেকে সাত বছরের বিরতি দিয়ে অনিয়মিতভাবে হয়ে থাকে। এটি কোনো নিয়মিত চক্র নয় অথবা এ নিয়ে আগে থেকে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না।

গত বছরের এপ্রিল মাসে জলবায়ুবিদরা এল নিনোর ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ২০২৩ সালে এটির প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি ২০২৩ সালে প্রভাব না পড়ে তাহলে ২০২৪ সালে এটি বেশ ভালোভাবে পরিলক্ষিত হবে।

মিয়ানমারে গতকাল রোববার তাপমাত্রা ওঠে ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলিয়াসে, যা দেশটির ৫৬ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একই দিনে দেশটির বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি আর মান্দালয়ে ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপপ্রবাহের কারণে ইয়াঙ্গুনে মোটরসাইকেল ও স্কুটার চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। চাউক শহরের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে প্রচণ্ড গরম। আমরা ঘর থেকে বের হচ্ছি না। এ অবস্থায় আমাদের আর কিছু করার নেই।’

মিয়ানমারের আবহাওয়া পর্যবেক্ষকদের তথ্যমতে, এপ্রিলে সাধারণত যে গড় তাপমাত্রা থাকে, তার চেয়ে গত বৃহস্পতিবারের তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) এশিয়া ও দক্ষিণ–পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক বেন চার্চিল বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চল সাধারণত এপ্রিল মাসে উষ্ণ থাকে। কিন্তু এল নিনো (আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থা) ও জলবায়ু পরিবর্তন এই অঞ্চলের তাপমাত্রাকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডব্লিউএমওর ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি এ কথা বলেন।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় দেশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে রয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর গত শনিবার জানায়, এই পরিস্থিতিতে কোনো কোনো অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠতে পারে।

তাপপ্রবাহে ভারতের সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বেঙ্গালুরুর একটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন কর্মকর্তা অনন্ত (৩৭) বলেন, ‘জীবনে এত গরমের অভিজ্ঞতা হয়নি। খুবই অস্বস্তিকর। এই গরম আপনার কাজের সমস্ত শক্তি নিংড়ে নেয়।’

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর আগেই পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে তাপপ্রবাহ বেশি দিন থাকতে পারে। দেশটির বেশির ভাগ অঞ্চলে এই তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।

ডব্লিউএমওর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি থাইল্যান্ডের লামপাং প্রদেশে তাপমাত্রা ৪৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বুধবার জানায়, তাপপ্রবাহে দেশটিতে চলতি বছর ইতিমধ্যে ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

ডব্লিউএমওর উপমহাসচিব কো ব্যারেট গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে বলেন, গরমের কারণে যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার পুরো চিত্র উঠে আসে না। এ ছাড়া গরমে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা কমে, কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিদ্যুতের ওপর চাপ পড়ে। পরিসংখ্যানে এসব বিষয়ে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না। প্রচণ্ড গরম ধীরে ধীরে বড় ধরনের নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে।

এল নিনো   তাপপ্রবাহ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

'কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হোক মানুষের কল্যাণে'

প্রকাশ: ০৮:৪৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মানবতার স্বার্থে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ আর নতুন কোনো অস্ত্র গ্রহণ না করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, 'মানবতাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অস্ত্র ব্যবস্থা নয় বরং মানুষের কল্যাণে কৃষি, চিকিৎসা, মহাকাশ অন্বেষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানবজাতির সুবিধার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপকারী প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।'

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ভিয়েনার হফবার্গ প্রাসাদে 'হিউম্যানিটি অ্যাট দ্য ক্রসরোডস: অটোনোমাস উইপনস সিস্টেমস অ্যান্ড দ্য চ্যালেঞ্জ অব রেগুলেশন' শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে উচ্চ-পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান।

মানুষের ওপর অস্ত্রবল প্রয়োগে নিয়ন্ত্রণ রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ প্রশ্ন রাখেন, যদি রাষ্ট্রবহির্ভূত এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ পায় তবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার কী হবে।

স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিশ্বব্যাপী নীতি নির্ধারণের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, প্রাণহানির ক্ষমতাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উভয়ের বিষয়েই উপযুক্ত আন্তর্জাতিক আইন বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় গাজার অনিশ্চিত পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং সংঘাত ও উত্তেজনার নতুন ফ্রন্ট খোলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।

অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ, কোস্টারিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্নল্ডো আন্দ্রে টিনোকো, নরওয়েজিয়ান স্টেট সেক্রেটারি ইভিন্ড ভাদ পিটারসন এবং রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সভাপতি মির্জানা স্পোলজারিক এগার সহ-প্যানেলিস্ট হিসেবে যোগ দেন।

অস্ট্রিয়ার ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই সম্মেলনে ১২০টিরও বেশি দেশ জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা, অধিকার গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার আট শতাধিক  প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। 


কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা   অস্ত্র   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   ড. হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পদত্যাগ করলেন স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম ফার্স্ট মিনিস্টার

প্রকাশ: ০৮:২৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম ফার্স্ট মিনিস্টার ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) নেতা হামজা ইউসুফ পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন। সোমবার (২৯ এপ্রিল) তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। খবর আলজাজিরার।

স্কটিশ গ্রিনস পার্টির সঙ্গে জোট করে স্কটল্যান্ডে সরকার গঠন করেছিল হামজার দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। তবে এই দলের সঙ্গে সম্প্রতি তার দল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির জোট ভেঙে যায়। এরপর তাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে দুটি অনাস্থা ভোটের ডাক দেন বিরোধীরা। একটি ফার্স্ট মিনিস্টার ও আরেকটি স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির সরকারের বিরুদ্ধে। এসব অনাস্থা ভোটে হামজা হেরে যেতে পারেন, এটা অনেকটা নিশ্চিত। তাই অনাস্থা ভোটের আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন তিনি।

সোমবার এক ভাষণে হামজা বলেছেন, আমি আমার মূল্যবোধ ও নীতি নিয়ে ব্যবসা করতে চাই না। অথবা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যার-তার সঙ্গে চুক্তি করতে চাই না।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে হামজা বলেছিলেন, বিরোধীদের ডাকা অনাস্থা ভোটে তিনি জিততে পারবেন বলে বেশ আত্মবিশ্বাসী। তবে সোমবারের মধ্যেই নিজের সংখ্যালঘু সরকারকে শক্তিশালী করতে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

গত বছর স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) নেতা নির্বাচিত হন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হামজা ইউসেফ। এরপর সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জেনের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। স্কটল্যান্ডের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম হিসেবে ফার্স্ট মিনিস্টার নির্বাচিত হয়েছিলেন হামজা।


পদত্যাগ   স্কটল্যান্ড   ফার্স্ট মিনিস্টার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রেকর্ড তাপমাত্রায় মিয়ানমার

প্রকাশ: ০৭:৫৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে মিয়ানমার। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। যা মিয়ানমারের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। খবর এপি ও দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার। 

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার।  সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়  ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৮.৭৬ ফারেনহাইট)। যা মিয়ানমারের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই তথ্যটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের আবহাওয়া বিভাগ।

আবহাওয়া বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোববার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় ম্যাগওয়ে রাজ্যের চাউক শহরে তাপমাত্রা পারদ ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। ৫৬ বছর আগে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু করার পর মিয়ানমারের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

একই দিন দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত ইয়াঙ্গুনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁয়েছে। এছাড়া দেশটির আরেক শহর মান্দালয়ে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের শুষ্ক সমতলে অবস্থিত চাউক শহরের একজন বাসিন্দা বলেছেন, 'এখানে অত্যন্ত গরম এবং আমরা সবাই বাড়িতেই ছিলাম।' নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমরা কিছুই করতে পারছি না।' 

দেশটির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে দিনের তাপমাত্রা এপ্রিলের গড়ের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) বলেছে,  ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে এশিয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পড়েছে বেশি। এ কারণে এই মহাদেশের তাপমাত্রাও বাড়ছে। ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর এশিয়ার গড় তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। 


রেকর্ড   তাপমাত্রা   মিয়ানমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন অমিত শাহ

প্রকাশ: ০৭:৩০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বিহারের বাগুসারাই এলাকায় সোমবার এক নির্বাচনি র‍্যালিতে অংশ নেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা অমিত শাহ (৫৯)। র‍্যালি শেষে সেখানে একটি হেলিকপ্টারে উঠেন তিনি। 

উড্ডয়নের সময় সেই হেলিকপ্টার কিছু সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডান দিকে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছিল। মাটিতে আছাড় খাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন পাইলট।  

নিতীশ কুমারের দল জেডিইউয়ের সঙ্গে মিলে বিহারে ১৭টি আসনে লড়াই করছে বিজেপি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে গত ১৯ এপ্রিল এখানে চার আসনে নির্বাচন হয়। এরপর গত শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হয় আরও ৫ আসনে।


দুর্ঘটনা   অমিত শাহ   বিজেপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন