ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন ভারতে আলাদা রাষ্ট্র চাইছেন শিখ সম্প্রদায়?

প্রকাশ: ০৯:০৯ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে চরম বৈরী আকার ধারণ করেছে। উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশ দুটি। আর এ উত্তেজনার সূত্রপাত কানাডায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এ শিখ নেতা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত জড়িত বলে মন্তব্য করেছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তবে এ অভিযোগ একদম উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।

‘খালিস্তান আন্দোলন’ ঘিরেই সমস্ত টানাপোড়েনের সূত্রপাত। হরদীপ সিংয়ের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিখদের এই আন্দোলন। তিনি এই আন্দোলনের পক্ষে প্রচার–প্রচারণা চালাতেন। এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল, শিখদের জন্য ভারতের পাঞ্জাবে ‘খালিস্তান’ নামের স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। কিন্তু কেন ভারতে এই আলাদা রাষ্ট্র চাইছেন শিখরা?

সারা বিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি শিখ রয়েছেন। শিখ ধর্ম অনুসারীদের সংখ্যাটা বেশ বড়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ হয়ে যায় পাঞ্জাব। শিখদের বেশির ভাগই ভারতে বসবাস করেন। দেশটির ১৪০ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশই তাঁরা।

ভারতের বাইরে সবচেয়ে বেশি শিখধর্মাবলম্বীর বসবাস কানাডায়, কমবেশি ৭ লাখ ৮০ হাজার। এই সংখ্যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশের বেশি। কানাডা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে প্রায় পাঁচ লাখ শিখ বাস করেন। আর অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন প্রায় দুই লাখ শিখ।

শিখদের খালিস্তান আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল, ভারতে শিখদের জন্য স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। গত শতকের আশির দশকে দেশটির পাঞ্জাব রাজ্যে এই আন্দোলন চরমে পৌঁছায়। সে সময় রাজ্যটিতে এ আন্দোলনের জেরে ব্যাপক সংঘাত ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ আন্দোলন থামাতে মাঠে নামে ভারতের সামরিক বাহিনী। বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আন্দোলনের গতি থমকে দেওয়া হয়।

যদিও স্বাধীন রাষ্ট্র বর্তমানে বেশির ভাগ শিখের চাওয়াপাওয়া নয় বলেও রাজনীতিবিদেরা দাবি করছেন। তবে আন্দোলন নিয়ে এখনো বিদেশে অবস্থানকারী শিখদের অবস্থান ভিন্ন। তাঁরা আন্দোলনের পক্ষে প্রচার–প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে বিগত কয়েক বছরে তাঁদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি জোরদার হয়েছে।

বরাবরই খালিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করে আসছে ভারত। ভারতের মূল ধারার সব রাজনৈতিক দল, এমনকি পাঞ্জাবের দলগুলোও বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে আসছে। কিন্তু খালিস্তান নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা উত্তেজনা আধুনিক ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত দুটি ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি পাঞ্জাবে শিখদের পবিত্র তীর্থস্থান স্বর্ণমন্দিরে চালানো অভিযান এবং ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড।

১৯৮৪ সালের জুন মাসে ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে অভিযান চালায় ভারতের সামরিক বাহিনী। অভিযানে ওই মন্দিরে অবস্থানকারী সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎখাত করা হয়। এ সময় নিহত হন অনেকে। মন্দিরেরও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়।

অভিযানের কয়েক মাস পরে দুই শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন ইন্দিরা গান্ধী। এর জেরে চার দিন ধরে চলে দাঙ্গা ও সাম্প্রদায়িক সংঘাত। মারা যান হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন শিখ। ধারণা করা হয়, দাঙ্গা–সংঘাতে নিহতের সংখ্যাটা ছিল ৩ থেকে ১৭ হাজার পর্যন্ত।

একারণেই খালিস্তান ইস্যু ভারতের জন্য এখনো স্পর্শকাতর। কারণ, আশির দশকের সেই ক্ষত এখনো তাজা। শিখদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ভারতের সব রাজনৈতিক দলের অবস্থান একই ছাতার নিচে। তাই দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বার্থে কোনো সরকারেরই খালিস্তান ইস্যুতে ছাড় দেওয়ার উপায় নেই।

যে হরদীপ সিংয়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বর্তমানে কানাডার সাথে কুটনৈতিক উত্তেজনা চলছে তিনি ১৯৯৭ সালে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। পরে দেশটির নাগরিকত্ব পান তিনি। গত ১৮ জুন দেশটিতে একটি শিখ মন্দিরের বাইরে হরদীপকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।

কানাডায় যাওয়ার পর মিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করেন হরদীপ সিং। পরে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে শিখ নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পান তিনি। ২০২০ সালে তাঁকে সন্ত্রাসীর তালিকায় ফেলে ভারত সরকার। ভারতের অভিযোগ, খালিস্তানের পক্ষে প্রচার–প্রচারণা চালানো ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ নামের একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল হরদীপের।

তবে ভারত সরকারের এ অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন হরদীপ সিংয়ের সমর্থকেরা। তাঁদের ভাষ্য, ভারতে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে সক্রিয় থাকার কারণে আগেও তাঁকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। হরদীপকে নিয়ে বিগত কয়েক মাসে তিনজন খ্যাতনামা শিখ নেতার মৃত্যু হয়।

 

কিন্তু বর্তমানে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার পেছনে রয়েছে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য সরকারের ওপর ভারত সরকারের ক্রমবর্ধমান চাপ। তিন দেশেই বহু শিখের বসবাস রয়েছে। ভারত সরকার খোলাখুলিভাবে বলেছে, এই তিন দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ‘শিখ চরমপন্থা’ দমাতে তাদের ব্যর্থতা।

তবে অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খালিস্তানপন্থীদের হাতে হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র নিয়ে মত প্রকাশে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী শিখদের কোনো বাধা দেওয়া হবে না।

তবে এই প্রবাসী শিখদের নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে কানাডা। দেশটি খালিস্তানপন্থীদের সক্রিয়তা রুখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে ভারত সরকার। যদিও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, চলমান সংঘাতে লাগাম টানবেন তিনি। কিন্তু কানাডায় বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন তিনি।


ভারত   খালিস্তান ইস্যু   শিখ   কানাডা   ট্রুডো   মোদি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় দখলদার ইসরায়েলের ৪ সেনা নিহত

প্রকাশ: ১১:৩৩ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজায় বিস্ফোরণে দখলদার ইসরায়েলের আরও ৪ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ মে) সকালে গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, একটি স্কুলে হামলা চালাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ইসরায়েলি সেনারা। খবর  টাইমস অব ইসরায়েলের।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী জানিয়েছে, জেইতুনের একটি সরু গলিতে বিস্ফোরিত হয়ে তাদের চার সেনা নিহত হয়েছে। নিহত সেনাদের কাছে তথ্য ছিল হামাস সেখানে নিজেদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। যেখানে স্কুলটি অবস্থিত, সেটির পাশে একটি সুড়ঙ্গ ও অস্ত্র পাওয়ার দাবি করেছিল ইসরায়েল।

এদিকে আলাদা একটি ঘটনায় দক্ষিণ গাজার রাফাতে দুই সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন। এদিকে শুক্রবার ৪ জনের মৃত্যুর মাধ্যমে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলিদের সেনাদের মৃতের সংখ্যা ২৭১ জনে পৌঁছেছে। তবে এ ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের।


গাজা   ইসরায়েল   সেনা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আফগানিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় নিহত অন্তত ৬০, নিখোঁজ শতাধিক

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আফগানিস্তানে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলের বাঘলান প্রদেশের আকস্মিক এই বন্যায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। শুধু তাই নয়, ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্ট এই বন্যায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ। শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ৬০ জন মারা গেছেন এবং আরও ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে তালেবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বিবিসি বলছে, দেশটি উত্তরাঞ্চলীয় বাঘলান প্রদেশের পাঁচটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পর আরও কয়েক ডজন লোক নিখোঁজ রয়েছেন। শুক্রবার রাতে এই অঞ্চলে আরও দুটি ঝড়ের পূর্বাভাসের দেওয়া হয়েছিল। এতে করে সেখানে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ভয়াবহ এই বন্যা দেশটির এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

মূলত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে বন্যায় দেশটিতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি বিবিসিকে বলেছেন, যারা মারা গেছেন তারা বাঘলান প্রদেশের বোরকা জেলার মানুষ। সেখানে দুই শতাধিক মানুষ তাদের ঘরের মধ্যে আটকা পড়েছেন।

আফগান সরকারের এই কর্মকর্তা এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টারগুলোকে বাঘলানে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকাটি রাজধানী কাবুলের সরাসরি উত্তরে অবস্থিত। তবে রাতে দৃষ্টিশক্তির ঘাটতির কারণে ‘অপারেশন সফল নাও হতে পারে’ বলে জানান তিনি।

এদিকে, স্থানীয় কর্মকর্তা হেদায়তুল্লাহ হামদর্দ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীসহ জরুরি কর্মীরা ‘কাদা ও ধ্বংসস্তূপের নিচে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্তদের সন্ধান করছেন’। এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ঘরবাড়ি হারিয়েছে এমন কিছু পরিবারকে তাঁবু, কম্বল এবং খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার জেরে কাবুলের সাথে উত্তর আফগানিস্তানের সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও বন্ধ রয়েছে।


আফগানিস্তান   বন্যা   বৃষ্টিপাত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ায় সেতু ভেঙে নদীতে বাস, নিহত ৭

প্রকাশ: ১০:১৭ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি সেতু থেকে রেলিং ভেঙে বাস নদীতে পড়ে ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। শুক্রবার (১০ মে) জরুরি মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

রুশ তদন্তকারী কমিটি জানিয়েছে, বাস দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছে ছয় জন। ওই বাসে ২০ জনের মতো যাত্রী ছিল।

সেতু ভেঙে বাসটি নদীতে পড়ে যাওয়ার পরই ডুবে যায়। এরপরই উদ্ধারকর্মীরা এটিকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালায়। ওই সেতুর পাশে উদ্ধারকারীদের নৌকা এবং অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে স্থানীয়রা ওই নদীতে নেমে উদ্ধার কাছে অংশ নেয়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ বাস দুর্ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে এতে দেখা যাচ্ছে সেতুর রেলিং ভেঙে বাসটি নদীতে পড়েই ডুবে যায়। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা রিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বাসের চালককে আটক করা হয়েছে।


রাশিয়া   বাস দুর্ঘটনা   সেন্ট পিটার্সবার্গ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১০:১৭ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে  বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ।

এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গাজায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল হয়তো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধের সময় কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকার সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এটি ‘মূল্যায়ন করা যুক্তিসঙ্গত’ যে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্রগুলো ব্যবহারের বিষয়ে ইসরায়েলের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেগুলো ‘অসঙ্গতিপূর্ণ’ উপায়ে ব্যবহার করা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, বিলম্বের পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়। হোয়াইট হাউসের নির্দেশিত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশটি কীভাবে গত বছর সংঘর্ষের শুরু থেকে মার্কিন সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

যদিও এই প্রতিবেদনটিতে গাজায় কিছু ইসরায়েলি অভিযানের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবেই তিরস্কার করা হয়েছে, তারপরও ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে এটিতে নিশ্চিতভাবে বলা হয়নি।

ইসরায়েলকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘অসাধারণ সামরিক চ্যালেঞ্জ’ মোকাবিলা করতে হয়েছিল বলেও এতে বলা হয়েছে। এমনকি এতে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন অস্ত্রের আইনি ব্যবহার মেনে চলার বিষয়ে ইসরায়েলের কাছ থেকে পাওয়া আশ্বাস ছিল ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য’ এবং তাই (ইসরায়েলে) অস্ত্রের চালান অব্যাহত রাখা যেতে পারে।

নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু হামাস ‘সামরিক উদ্দেশ্যে বেসামরিক অবকাঠামো এবং বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে’, তাই সক্রিয় যুদ্ধের মধ্যে বৈধ লক্ষ্যবস্তুগুলো ঠিক কী তা নির্ধারণ করা প্রায়শই কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য ইসরায়েলের প্রচেষ্টাকে ‘অসঙ্গত, অকার্যকর এবং অপর্যাপ্ত’ বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ এবং মানবিক সংস্থাগুলো।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট দেখতে পেয়েছে, সংঘাতের প্রথম মাসগুলোতে গাজায় মানবিক সহায়তা ‘বাড়ানোর’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার সাথে পুরোপুরি সহযোগিতা করেনি ইসরায়েল। তবে এতে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সরকার গাজায় মার্কিন মানবিক সহায়তা পরিবহন বা বিতরণ নিষিদ্ধ বা অন্য কোনোভাবে সীমাবদ্ধ করছে বলে আমরা এখন মূল্যায়ন করছি না।’

বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যার কয়েকদিন আগেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, রাফাহতে হামলা করলে ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার যে হুমকি প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। প্রতিবেদন প্রকাশের কিছুক্ষণ আগে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যদি আমাদের প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের নখ দিয়ে লড়াই করব। কিন্তু আমাদের নখের চেয়ে অনেক বেশি আছে।’ এমনকি প্রয়োজনে ইসরায়েল ‘একাই লড়াই করবে’ বলেও দাবি করেন তিনি।


ইসরায়েল   গাজা   আন্তর্জাতিক   আইন   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পৃথিবীতে দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ শক্তিশালী সৌরঝড়ের আঘাত

প্রকাশ: ০৯:৪৩ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড়। এর ফলে শুক্রবার (১০ মে) তাসমানিয়া থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যের আকাশে আকর্ষনীয় মহাকাশীয় আলো বা অরোরা দেখা দিয়েছে। বিরল এই সৌরঝড় আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং এর কারণে বিভিন্ন উপগ্রহ ও বৈদ্যুতিক গ্রিডের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটতে পারে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)-এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মতে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১০টার পর থেকে বেশ কয়েকটি করোনাল ম্যাস ইজেকশনের (সিএমই)-এর ঘটনা ঘটেছে। সূর্য থেকে প্লাজমা এবং চৌম্বক ক্ষেত্র বেরিয়ে আসার ঘটনাকে সিএমই বলা হয়ে থাকে।

পরে এটি ‘মারাত্মক’ ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ে পরিণত হয়। ২০০৩ সালের অক্টোবরে তথাকথিত ‘হ্যালোইন স্টর্মস’-এর পর এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। ২১ বছর আগের ওই সৌর ঝড়ে সুইডেনে ব্ল্যাকআউট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুৎ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

আগামী দিনগুলোতে আরও সিএমই পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিরল এই সৌরঝড় যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয়ের শঙ্কা আনলেও একইসঙ্গে তৈরি করেছে মনোমুগ্ধকর দৃশ্যও।

সৌরঝড়ের কারণে বর্তমানে উত্তর ইউরোপ থেকে করে অস্ট্রেলেশিয়া পর্যন্ত অরোরা বা নর্দার্ন লাইট দেখা যাচ্ছে আকাশে। সেই দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের জন্য স্যাটেলাইট অপারেটর, এয়ারলাইনস এবং পাওয়ার গ্রিডগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সোলার ফ্লেয়ার বা সৌর অগ্নিশিখা সাধারণত আলোর গতিতে ভ্রমণ করে এবং প্রায় আট মিনিটের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। সেই তুলনায় সিএমইর গতি অনেকটাই ধীর। এর গড় গতি প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।


সৌরঝড়   যুক্তরাষ্ট্র   নাসা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন