ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো দেশগুলো

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

কোনো দেশের ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপ সমস্যাকে আরো জটিল করে, সমাধান করে না। অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন দেশ, দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে। বিভিন্ন দেশের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ অবরোধ নতুন কিছু নয়। এই অবরোধের মাধ্যমে একটি দেশকে কীভাবে কোণঠাসা করা যেতে পারে বা অর্থনৈতিক কঠিন অবস্থার মাঝে ফেলা যেতে পারে সেই কৌশল যুক্তরাষ্ট্র ভালো করেই জানে।

বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্র দেশ হিসাবে ইরান, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া, কিউবা, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলার ওপর ব্যাপক আকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে দেশ ভেদে এসব নিষেধাজ্ঞার প্রকৃতি আলাদা। এসব দেশের সরকার বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোন মার্কিন প্রতিষ্ঠান কোনরকম লেনদেন বা বাণিজ্য করে না। এমনকি অন্য দেশগুলো যাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এ দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য করতে পারে না।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব দেশ বিশেষ করে ইরান বা ভেনেজুয়েলার অর্থনীতি একপ্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কেমন আছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সেসব দেশ? অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বলয় থেকে বের হয়ে দেশগুলো কি ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে?

ইরান যেভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে নিজের দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলছে:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমাতে ইরান সব সময় চেষ্টা করেছে বাণিজ্যিক সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নতুন একটি বলয় তৈরি করতে। আর এই উদ্যোগে ইরান সবসময় পাশে পেয়েছে চীন এবং রাশিয়াকে। এছাড়াও আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমেও চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। ইরানের তেল আয়ের সিংহভাগ চীন থেকে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র চীনকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার পরিকল্পনা করে। কিন্তু চীন আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ইরানি অপরিশোধিত তেল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে।

নিজ দেশেই অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করছে ইরান। এর ফলে অন্যান্য দেশের উপর তাদের পরনির্ভরশীলতা কমে গেছে। অন্যদিকে আমদানিকৃত পণ্যের ঘাটতি থাকায় দেশীয় উৎপাদন বেড়েছে। আর এভাবেই ইরানিদের জন্য আরও কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছে দেশটি। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এত অবরোধের পরেও অনেক ক্ষেত্রেই এই সকল অবরোধের প্রভাব কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়া ডলার সংকট এড়াতে ইরান নিজেদের বাণিজ্যিক রপ্তানি খাতসহ পর্যটন শিল্প এবং শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ইরানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে বিদেশি পর্যটকদের কীভাবে আকৃষ্ট করা যায় তা নিয়ে ইরানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সচেষ্ট ভূমিকা পালন করছেন। এছাড়াও ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পড়াশোনার মান বৃদ্ধি করে ওয়ার্ল্ড র‍্যাংকিংয়ে নিয়ে এসে সেখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়তে আগ্রহী করে ডলারের মাধ্যমে টিউশন ফি নিয়ে নিজেদের ডলার সঞ্চয়কে বৃদ্ধি করতে তারা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

এর পাশাপাশি ইরান চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ইরানকে বেঁছে নিচ্ছে। ইরান সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে পৃথিবীর বুকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে, আর এখানে তারা সফলতার মুখও দেখেছে।

নিষেধাজ্ঞার বলয় থেকে বেড়িয়ে কিউবার উন্নতি:

কিউবার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধের ৬ দশক পেড়িয়ে গেছে। এই নিষেধাজ্ঞার সূত্রপাত হয়েছিল মিসাইল সংকটের সময়, যেটিকে যুক্তরাষ্ট্র নিজের ক্ষমতাবলে গণবিধ্বংসী বলে আখ্যা দিয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের নাম-নিশানা নেই এখন। আর এত সময়কাল পর শত আঘাতেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে লাতিন আমেরিকার এই দেশটি।

২০১৫ সালের দিকে আমেরিকা-কিউবা দুই দেশের দূতাবাসের পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়। চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও জটিল রাজনৈতিক ইতিহাসকে সরিয়ে রেখে আগামী দিনে নতুন মৈত্রীর রূপরেখা তৈরির অঙ্গীকারও করে দুই দেশের দুই রাষ্ট্রপ্রধান রাউল কাস্ত্রো ও বারাক ওবামা। এটিও একটি জয় কিউবার মহান বিপ্লবের, কারণ ওবামাও বাধ্য হয়েছিলেন কিউবাকে কুর্নিশ জানাতে।

কিউবা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের শ্বাসরোধকারী নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে। দেশটির খবর জানতে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কিউবার কোনো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পাওয়া কঠিন। বিগত কয়েক দশক ধরেই তাদের প্রধান কাজ হলো কিউবার বিপ্লব, শাসনব্যবস্থার ও ফিদেল ক্যাস্ত্রোর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা ছড়ানো। তাদের দৃষ্টিতে কিউবার কোনো সাফল্য ও অর্জন নেই, কোনো ইতিবাচকতা নেই।

কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা ভিন্ন। ছয় দশক ধরে মার্কিন ও তার মিত্রদের অবরোধের মধ্যে থাকা কিউবার সংকট যতটা বেশি থাকার কথা ততটা কিন্তু নেই। অনেক সংকটের মধ্যেও কিউবা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, মানবিক ও সামাজিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটিয়েছে। বিশ্বের দুইশ দেশের মধ্যে মানবিক উন্নয়নে তাদের অবস্থান ৭০তম।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়লো ভেনেজুয়েলা:

ভেনেজুয়েলার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে মার্কিন সরকার চেয়েছিল ভেনেজুয়েলার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে। কিন্তু প্রায় প্রতিটি আরব বিশ্বের বুকে খনিজ তেলের বড় বড় মজুদ থাকলেও বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেলের মজুদটি ভেনেজুয়েলার। যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানি বিভাগের মতে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেলের মজুদ আছে ভেনেজুয়েলায়। পরিমাণের দিক দিয়ে তা ৩,০০,৮৭৮ মিলিয়ন ব্যারেল।

কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর সংকটপূর্ণ এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই পরবর্তীতে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নটা করতে চায়। তেলসম্পদে সমৃদ্ধ দেশটির উপর বাইডেন প্রশাসন এ কারণে তাদের উপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলিও কিছুটা শিথিল করে। কিন্তু ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের উপরে আস্থা না রাখতে পেরে বন্ধু হিসাবে চীনকেই বেছে নিয়েছে।

ইতোমধ্যেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত দুই দেশ ইরান ও ভেনেজুয়েলা নিজেদের মধ্যে ২০ বছরের একটি সহায়তা চুক্তি করেছে। জ্বালানি তেল, প্রতিরক্ষা, কৃষি, পর্যটন, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি খাতে সহায়তার বিষয় উল্লেখ করা হয় চুক্তিতে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনৈতিক দৈন্যদশা থাকলেও ক্রমেই তা কাটিয়ে উঠছে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব পড়েনি নাইজেরিয়ায়:

নাইজেরিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের ভয় দেখানো, নির্বাচনের ফলাফল কারচুপি ও গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ গত ১৫ মে নাইজেরিয়ার ওপর আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা দেয় আমেরিকা।

২০১৯ সালের নির্বাচনের এক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল নাইজেরিয়ায় নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। ওই বছর সাধারণ ও স্থানীয় দুই নির্বাচনের (২০১৯ ও ২০২০ সালে) পর দুই দফায় কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আমেরিকা।

কয়েকজন ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলেও নাইজেরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি বলে আন্তজার্তিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। কারণ যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ফলে তাদের পরিচয় কেউ জানে না।

২০১৯ সালে ভিসা নিষেধাজ্ঞার পরও ২০২৩ সালে নাইজেরিয়ার নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে, নাগরিকদের ভয় দেখানো ও সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ উঠে প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

রাশিয়া যেভাবে পাত্তাই দেয় না মার্কিনি নিষেধাজ্ঞাকে:

পশ্চিমা বিশ্বের সব রকমের হুমকি-ধমকির কোনোরকম তোয়াক্কা না করে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করেই বসেছে। পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ মোটেই নতুন কোনো পদক্ষেপ নয়। এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে সেসব দেশগুলোর সাময়িক কিছু অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সার্বিক অর্থে সবকিছুই চলছে স্বাভাবিকভাবে। ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া তাদের দখলে নেয় তখনও আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশই রাশিয়ার ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় যদি তেমন কোনো কাজ হতো তাহলে রাশিয়া আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার ভয়ে ইউক্রেন আক্রমণ করার ঝুঁকি নিত না।

পশ্চিমা দেশগুলোর প্রবল নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল বেশ নাটকীয়ভাবে শক্তি ফিরে পেয়েছে। এরই মধ্যে রাশিয়া ডিজিটাল রুবলের মুদ্রার বিকাশকে ত্বরান্বিত করাতে উদ্যোগী হয়েছে। ডিজিটাল মুদ্রার উদ্যোগটি বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ২০টি দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যারা এরই মধ্যে পাইলট ডিজিটাল মুদ্রা প্রোগ্রাম শুরু করেছে। ডিজিটাল রুবল আনার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল রাশিয়ার আর্থিক নমনীয়তা বাড়ানোর পাশাপাশি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাসহ আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের প্রভাব কমানো।

এছাড়া, রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপের দেশগুলো যে গ্যাস ও তেল ক্রয় করে সেটির মূল্য পরিশোধ করা হতো ইউরোতে। রাশিয়ার সাথে এটাই ছিল তাদের চুক্তি। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে রাশিয়া বলেছে যে তাদের কাছ থেকে যারা তেল গ্যাস ক্রয় করবে, সেটির মূল্য পরিশোধ করতে হবে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে। এর ফলে ইউরোকে রুবলে পরিবর্তন করা হয়। ব্লুমবার্গ বলেছে, এ কারণে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল শক্তিশালী হয়েছে। তাছাড়া চীন এবং ভারতের কাছে জ্বালানী বিক্রির মাধ্যমে রাশিয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাও আসছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   মার্কিন নিষেধাজ্ঞা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চার দশকের মধ্যে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কে ফাটল

প্রকাশ: ১০:১৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা কৌশলগত সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইসরায়েল যদি তার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফাহ আক্রমণ করে, তাহলে কী হবে? জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আমি তাদেরকে আর অস্ত্র সরবরাহ করব না।’ 

আমেরিকা ইসরায়েল মৈত্রীর ভিত্তিই হলো অস্ত্রের চালান। গত চার দশকে এই প্রথম এতে ফাটল দেখা যাচ্ছে।  

গাজায় বেসামরিক প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয় রুখতে নিজ দেশে ও দেশের বাহিরে ব্যাপক চাপে আছেন বাইডেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটিই জানালেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল আমেরিকার সবচেয়ে কাছের কৌশলগত মিত্র। ১৯৮০ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের পর এ ধরনের পদক্ষেপ আর দেখা যায়নি। 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক বিশেষজ্ঞ এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অ্যারন ডেভিড মিলারের মতে, এই সংঘাতের শুরু থেকেই বাইডেনকে দ্বিধায় দেখা গেছে। তাঁর একদিকে ইসরায়েলপন্থী রিপাবলিকান পার্টি, অন্যদিকে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এখন পর্যন্ত বাইডেন যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে এমন কিছু দেখা যায়নি যাতে আমেরিকা–ইসরায়েল সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  

কিন্তু ইসরায়েল রাফাহতে স্থল অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন দেখা যায়। 

গত সোমবার ইসরায়েল জানায়, তারা শহরটির পূর্বে হামাসকে লক্ষ্য করে কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্থানীয়রা বিরামহীন বিষ্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রায় অকার্যকর হাসপাতালগুলোতেও আহতদের সংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে। 

জাতিসংঘ বলছে, প্রায় এক লাখ মানুষ ওই এলাকা থেকে পালিয়েছে এবং তারা খাবার, আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশনের ভয়াবহ সংকটে আছে। 

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার শহরটিতে পূর্ণমাত্রায় স্থল অভিযান চালানোর কথা বলছেন, যেখানে প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আছেন। তিনি বলছেন, এখানে লুকিয়ে থাকা হামাসের অবশিষ্ট চার ব্যাটালিয়ন যোদ্ধাকে নিশ্চিহ্ন করতে এই অভিযান জরুরী। যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব সফল হলেও অভিযান চালানো হবে বলে মত তাঁর। 

ওয়াশিংটন নেতানিয়াহুকে রাফাহতে কোনো ধরনের সামরিক অভিযান পরিচালনা না করতে বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। অ্যারন ডেভিড মিলার বলছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন আশঙ্কা করছেন, রাফাহতে অভিযান হলে যুদ্ধ বন্ধ বা জিম্মিদের উদ্ধারের আর কোনো উপায় থাকবে না। 

বাইডেন প্রশাসনে কাজ করা একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান, বাইডেন মিশরের সঙ্গে কোনো সংকট এড়িয়ে চলতে চান। একই সঙ্গে এই অভিযানের ফলে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ক্ষোভ ও বিভাজন আরও বাড়তে পারে। 
 
গত বুধবার বাইডেনের সাক্ষাৎকার প্রচারের পরপর আমেরিকা ইসরায়েলের জন্য বরাদ্দ ২ হাজার ও ৫০০ পাউন্ডের বোমার দুটি চালান স্থগিত করেছে। 
 
মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কমকর্তা বলেন, এই বোমাগুলো ঘনবসতিপূরর্ণ একটি এলাকায় ব্যবহার করলে যে প্রভাব পড়বে তাতে আমেরিকা উদ্বিগ্ন, যা আমরা গাজার অন্য এলাকাগুলোতে দেখেছি। 

ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে থাকা নানা অস্ত্রের মধ্যে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা সবচেয়ে বিধ্বংসী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, হামাসকে নির্মূল করকে এই ধরনের অস্ত্র জরুরী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এ ছাড়া জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন (জেডিএএম) কিটের একটি চালানও বিবেচনায় রয়েছে। এই কিট আনগাইডেড বোমাকে গাইডেডে পরিণত করতে পারে। 
 
গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে আমেরিকার সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করে থাকতে পারে। কিন্তু এতে আরও বলা হয়, এ সংক্রান্ত পূর্ণ তথ্য আমেরিকার কাছে নেই। যার অর্থ সামরিক সহায়তা চালু থাকতে পারে। 
 
মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক গোলন্দাজ কর্নেল জো বুকিনো, যিনি পরে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা কমান্ড সেন্টকমের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েল কাছে এখনো যে পরিমাণ গোলাবারুদ মজুত আছে, তা দিয়ে রাফাহকে ‘মাটিতে মিশিয়ে’ ফেলা সম্ভব।  

ইসরায়েলকে বছরে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি কংগ্রেস অস্ত্র ও প্রতিরোধ সরঞ্জামের জন্য আরও ১৭ বিলিয়ন ডলার এর সঙ্গে যুক্ত করেছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মার্কিন প্রাণঘাতী অস্ত্র সহায়তা পাওয়া দেশ হলো ইসরায়েল। 

কর্নেল জো বুকিনোর মতে, রাফাহতে আক্রমণ ঠেকাতে অস্ত্রের যে চালান স্থগিত করা হয়েছে তা নিতান্তই নগণ্য। তিনি বলেন, ‘এটা মার্কিন জনগনকে একটা বোঝ দিতে একটি ছোটখাট রাজনৈতিক খেলা, যারা পরিস্থিতির জন্য উদ্বিগ্ন।’  

কারণ যাই হোক, এতে বাইডেন যে রাজনৈতিকভাবে চাপে পড়েছেন তাতে সন্দেহ নেই। মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকানরা বাইডেনকে তুলোধুনো করছেন। 
 
মার্কিন সিনেটর পেট রিকেটস বলেন, ‘আমি মনে করি, এই স্থগিতাদেশ ক্ষোভ তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি ডেকে এনেছে। প্রেসিডেন্টের এমন কাজ করার এখতিয়ার নেই।’ 

ইসরায়েল তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফাহতে আক্রমন পরিচালনা করতে চায়, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মিত্র ইসরায়েলকে আমাদের সমর্থন করতে হবে।’ 

আরেক রিপাবলিকান সিনেটর জন বারাসো বলেন, ‘নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসরায়েলের যা খুশি তা করার অধিকার আছে।’ 

বারাসোর মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। তবে বাইডেনের নিজের দলে কিন্তু এ সিদ্ধান্তকে বেশ ভালোভাবেই স্বাগত জানানো হয়েছে। 

ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিশ কুনস দুইমাস আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি নাগরিকদের রক্ষা না করে ইসরায়েল যদি রাফাহতে অভিযান চালায় তাহলে যেন তাদের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘গাজা সংঘাত আমাদের যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে তা অত্যন্ত বেদনার। আমরা যারা ইসরায়েলের তীব্র সমর্থক তারাও মানুষের কষ্ট এবং মানবিক বিপর্যয়ে উদ্বিগ্ন।’  

ক্রিশ কুনস মনে করেন, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্রমাগত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যেহেতু ইসরায়েলি সরকার টিকে আছে কিছু অতিজাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তির ওপরে এবং তারা গাজায় মানবিক সহযোগিতা ঢুকতে দিতে চায় না। পাশাপাশি পশ্চিম তীর থেকেও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করতে চায়। 

কায়রোতে হামাসের সঙ্গে জিম্মি মুক্তির যে আলোচনা চলছিল তা গত সপ্তাহে ভেস্তে যায়। কয়েকজন ইসরায়েলি বিশ্লেষক বাইডেনকে সতর্ক করে বলেছেন যে, তার এ সিদ্ধান্ত জিম্মি মুক্তির মধ্যস্থতায় বাধা তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি রাফাহ আক্রমণ না করতে যে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এতে হামাস লাভবান হবে। 

গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর বাইডেন তেল আবিব সফর করেন এবং নেতানিয়াহুর পাশে নিজের অবস্থানের জানান দেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘৯/১১ এর পর আমরা যে ভুল করেছি তোমরা সেটি থেকে বিরত থাক।’ 

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষরাও অনেক কষ্ট করছে এবং পুরো পৃথিবীর মতো আমরাও নিস্পাপ ফিলিস্তিনি প্রাণহানির জন্য শোক জানাই।’ 

বাইডেন অস্ত্র সরবরাহ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি একলা লড়তে হয়, আমরা তাই করব। আমি আগেই বলেছি, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা আমাদের নখ দিয়েও যুদ্ধ করব।’ 

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিশ কুনস বলেন, ‘তাদের নখ দিয়ে যুদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। তাদের আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র দিয়েও যুদ্ধ করা উচিত, অনেকক্ষেত্রেই যেগুলো মার্কিনিদের সঙ্গে যৌথভাবে বানানো। এর অনেকগুলোই তাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের এমনভাবে যুদ্ধ করতে হবে যাতে বেসামরিক প্রাণহানি বেশি না হয়।’ 

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২.৩৫ কোটি রুপির স্বর্ণ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ২.৩৫ কোটি রুপির বেশি মূল্যের স্বর্ণ বাজেয়াপ্ত করেছে বিএসএফ জওয়ানরা। 

শনিবার দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হালদারপাড়া বর্ডার পোস্টে কর্মরত ৩২ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা সীমান্তে চোরাচালানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে।

চোরাকারবারীরা যখন এই স্বর্ণের বারগুলো বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করার চেষ্টা করছিল, সেসময় ২৬টি স্বর্ণের বার জব্দ করে বিএসএফ। জব্দকৃত স্বর্ণের ওজন ৩.২০৮  কেজি এবং আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৩৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭২০ রুপি।

সোমবার ভারতে লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোট নেওয়া হবে। এই পর্বে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি লোকসভার নির্বাচন কেন্দ্র রয়েছে। স্বাভাবিক কারণে আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিএসএফ। তারই সফলতা পেয়েছে তারা।

বিএসএফের পক্ষে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী, শনিবার হালদারপাড়া বর্ডার পোস্টের বিএসএফ জওয়ানরা স্বর্ণ পাচারের সম্ভাবনার খবর পান। খবর পেয়ে জওয়ানরা সন্দেহভাজন এলাকায় অতর্কিত অভিযান চালায়। জওয়ানদের একটি দল সীমান্তবর্তী একটি কলাবাগানে আত্মগোপন করে, অন্য দলটি স্থানীয় বাঁশবাগানে ওত পেতে নজরদারি চালাতে থাকে। এসময় সন্দেহভাজন দুই চোরাকারবারীকে ধারালো ছুরি এবং হাতে কিছু প্যাকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দিকে এগিয়ে যেতে দেখে এবং কলা বাগান থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দূরত্বে আরও তিন চোরাকারবারীকে দেখতে পান, যারা স্বর্ণ সংগ্রহ করতে এসেছিলেন। যখন চোরাকারবারীরা প্যাকেটটি বেড়ার উপর ফেলে দিতে যাচ্ছিল, তখন জওয়ানরা তাদের চ্যালেঞ্জ জানায়। কিন্তু হঠাৎ করে চোরাকারবারীরা ধারালো ছুরি নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে জওয়ানরাও এক রাউন্ড রাবার গুলি চালায়।

এতে পাচারকারীরা ভয় পেয়ে প্যাকেটটি মাটিতে ফেলে আবার বাংলাদেশের দিকে ছুটে যায়। পরে জওয়ানরা ওই জায়গায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তল্লাশি চালিয়ে দুটি ধারালো ছুরি এবং তিনটি ছোট প্যাকেট উদ্ধার করে। প্যাকেটের ভেতর থেকে ২৬টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। সেই স্বর্ণ জব্দ করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তা নিয়ে আসা হয় সীমান্ত চৌকিতে। জব্দকৃত স্বর্ণ পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য বনপুর কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হয়।


ভারত   বাংলাদেশ   আন্তর্জাতিক সীমান্ত   স্বর্ণ   উদ্ধার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইন্দোনেশিয়ায় স্কুলবাস দুর্ঘটনায় ১১জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইন্দোনেশিয়ায় স্কুলবাস দুর্ঘটনায় বাস দুর্ঘটনায় অন্তত ১১ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। 

দেশটির সবচেয়ে বড় দ্বীপ জাভায় গ্র্যাজুয়েশন ট্রিপের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার সময় বাসটিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ ৬১ জন যাত্রী ছিলেন এবং সেটি জাভার দিপক শহর থেকে লেমবাং নামের একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে যাচ্ছিল। শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, শিক্ষার্থীরা তাদের গ্র্যাজুয়েশন উদযাপন করতে স্কুল ট্রিপে বের হয়েছিল। বাসটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং বিপরীত লেনে চলে যায়। এরপর বাসটি একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা খাওয়ার আগে বেশ কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। জাভা পুলিশের মুখপাত্র জুলস আব্রাহাম আবাস্ত এই তথ্য দিয়েছেন।

আবাস্ত বলেন,'ঘটনাস্থলেই নয়জন মারা গেছেন। একজন শিক্ষক ও স্থানীয় একজন মোটরচালকসহ আরও দু’জন পরে হাসপাতালে মারা গেছেন। ৫৩ জনকে আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।'


ইন্দোনেশিয়া   স্কুলবাস   দুর্ঘটনা   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে ৩৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার ফলে ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এর ফলে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ইন্দোনেশিয়ার প্রাদেশিক উদ্ধারকারী দলের প্রধান আব্দুল মালিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। চারজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

পরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪-এ। এখনো পর্যন্ত ১৬ জনের খোঁজ মেলেনি।

পশ্চিম সুমাত্রার দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার মুখপাত্র ইলহাম ওয়াহাব বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, '৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কমপক্ষে ১৮ জন আহত হয়েছেন। আমরা এখনো ১৬ জনের সন্ধান করছি।' 

দেশের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা বিএনপিবি জানিয়েছে, শনিবার রাত থেকে বন্যার ফলে তানাহ দাতার রিজেন্সির পাঁচটি উপ-জেলা প্রভাবিত হয়েছে। বন্যার সঙ্গে প্রচুর কাদা এসে ব্যাপক এলাকা ঢাকা পড়েছে। তাদের সর্বশেষ মূল্যায়নে ৮৪টি আবাসন, ১৬টি সেতু এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গম এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে ভারী সরঞ্জামের মাধ্যমে দ্রুত রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

শনিবার মাঝরাতে মাউন্ট মেরাপিরনদীর শাখা ভেঙে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। টানা বৃষ্টি ও ভূমিধসের ফলে পশ্চিম সুমাত্রার আগাম এবং তানাহ দাতার জেলার পাহাড়ি গ্রামে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা সংস্থার মুখপাত্র আবদুল মুহারি বলেছেন, কমপক্ষে ১০০টি বাড়িঘর ভেসে গেছে।

বার্তা সংস্থা এপির খবরে বরা হয়, প্রবল বর্ষণ, ঠান্ডা লাভার প্রবাহ এবং কাদার স্রোত আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে নামায় আকস্মিক বন্যার সূত্রপাত ঘটেছে। ঠান্ডা লাভার স্রোত লাহার নামেও পরিচিত। এটি আগ্নেয় পদার্থ এবং নুড়ির মিশ্রণ, যা বৃষ্টির ফলে মাউন্ট মেরাপি আগ্নেয়গিরির ঢালে প্রবাহিত হয়েছিল। 


ইন্দোনেশিয়া   বন্যা   ভূমিধস   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নীল ছবিতে অভিনয়, চাকরি গেল মার্কিন পুলিশ কর্মকর্তার

প্রকাশ: ০৮:৪৬ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

নীল ছবিতে অভিনয় এবং সেটি ছড়িয়ে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে সিন হারম্যান নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, ওই কর্মকর্তাকে বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করা হয়। কারণ তিনি পুলিশের আসল পোশাক পরে নীল ছবির স্থানীয় অভিনেত্রী জর্ডিনের সঙ্গে এতে অভিনয় করেছেন। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ কর্মকর্তা ওই ছবির অভিনেত্রীর গোপন অঙ্গে স্পর্শ করছেন।

ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয়েছে, 'বিশ্বাস করতে পারছি না সে আমাকে গ্রেপ্তার করেনি।' ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, অভিনেত্রী জর্ডিন চালকের আসনে বসে আছেন এবং পুলিশ কর্মকর্তা তার কাছে এসেছেন। তখন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র দেখাতে বলেন। কিন্তু অভিনেত্রী জানান তার কাছে এসব কিছু নেই। এটি বলেই নিজের কাপড় উপরে তুলে ফেলেন তিনি। এরপর ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার দেহের স্পর্শকাতার স্থানে হাত দেন এবং তাকে কোনো সতর্কতা বা জরিমানা না করেই ছেড়ে দেন। 

যদিও ভিডিওটিতে ওই আসল পুলিশ কর্মকর্তার চেহারা দেখানো হয়নি। তবে তার গায়ের পোশাক দেখে অনেকেই বুঝে ফেলেন এটি ন্যাশভিলের পুলিশ বিভাগের কোনো কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে ওই ছবির অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এই দৃশ্যের পুরোটাই একটি শুটিংয়ের অংশ ছিল এবং এটি রাস্তার বদলে ব্যক্তিগত স্থানে করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের বিষয়টিকে বোকামি হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।


মার্কিন পুলিশ   নীল ছবি   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন