ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাতের মধ্যেই পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতভর সীমান্ত এলাকায় ভারত ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কাশ্মীরের পুঞ্চ এলাকার নিয়ন্ত্রণ রেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) দু’পক্ষ মর্টারের গোলা ও গুলিবিনিময় করে। সন্ধ্যায় পুঞ্চের সাউজিয়ান সেক্টরে প্রায় ৮ মিনিট ধরে এ গোলাগুলি চলে। এতে ভারতীয় অংশে বিএসএফ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে একবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করার অভিযোগ করেছে বিএসএফ। জম্মু ও কাশ্মীরের আর্নিয়া এবং সুচেতগড় সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাঁচটি ভারতীয় সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে, বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা। রাতভর গোলাগুলিতে বিএসএফ-এর দুই সদস্য এবং একজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
বিএসএফ জানিয়েছে, রাত ৮টা নাগাদ আর্নিয়া সেক্টরে আচমকা গুলি ছোড়া শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনারা। বিনা উস্কানিতে গুলি ছোড়ার পর, বিএসএফ-ও উপযুক্ত জবাব দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে টানা তিন ঘণ্টা বিরতিহীনভাবে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল বলেও জানিয়েছে বিএসএফ।
পাকিস্তানের সামরিক সূত্রের মতে, বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় একটি ড্রোন পাকিস্তানি ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার পর গোলাগুলি শুরু হয়। যদিও পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করে ওই ড্রোনটি ভূপাতিত করে। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী - দৃশ্যত অনুপ্রবেশের ওই ব্যর্থ প্রচেষ্টা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য - ওয়ার্কিং বাউন্ডারি বরাবর পাকিস্তানি পোস্টে নির্বিচারে গুলি চালায়।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডন বলছে, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের পাঞ্জাবের শিয়ালকোটের কাছে ওয়ার্কিং বাউন্ডারি বরাবর পাকিস্তানি পোস্টগুলোতে গুলিবর্ষণ করেছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির সামরিক সূত্র জানিয়েছে। মূলত ওয়ার্কিং বাউন্ডারি হচ্ছে সীমান্তের সেই রেখা যার একদিকে থাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভূমি অন্যদিকে বিরোধপূর্ণ এলাকা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) বা স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বিভিন্ন প্রতিবেদনে জাফরওয়াল সেক্টরে ভারতের সাথে সীমান্তের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভারী গোলাগুলি এবং কামানের গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বেশ কিছু পাকিস্তানি ব্যবহারকারী রাতের শেষের দিকে সীমান্তে ভারী বন্দুক এবং কামানের গোলাগুলির শব্দ সম্বলিত ভিডিও পোস্ট করেছেন। কিন্তু এসব ভিডিও স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে ডন জানিয়েছে।
এ ঘটনায় আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন ভারতের পাকিস্তান-সীমান্তবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দা। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারত পাকিস্তান সীমান্ত গোলাগুলি কাশ্মীর বিশ্ব সংবাদ
মন্তব্য করুন
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাবেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোয় কয়েক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের টানা বিক্ষোভ চলছে। আটক করা হয়েছে কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে। এতেও তাঁদের দমানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ক্যাম্পাসগুলোয় চলমান বিক্ষোভ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে।
১৯৬০–এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পর যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইসরায়েলবিরোধী এই আন্দোলন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সেই বিক্ষোভে ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল।
এবারও বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছেন, তাঁদের এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিক্ষোভকে তাদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত বলে মনে করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশের হাতে শিক্ষার্থীদের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। সর্বশেষ গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
গত সপ্তাহে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের অভিযোগে ১০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
গার্ডিয়ান–এর খবরে বলা হয়, গতকাল সোমবার নিউইয়র্কের ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কের ওপরে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের বিশেষ বাহিনী স্ট্র্যাটেজিক রেসপন্স গ্রুপকে (এসআরজি) ড্রোন নিয়ে সতর্ক টহল দিতে দেখা যায়। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘ইসরায়েলের বোমা, অর্থ দিচ্ছে এনওয়াইইউ, আজ কত শিশু হত্যা করেছ’, এমন প্রচারপত্র বিলির সময় ১২০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত শনিবার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবশ্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেনি। তবে অন্য কয়েকটি ক্যাম্পাসে নতুন করে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখান থেকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বিভিন্ন সংগঠন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে।
সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহ থেকে চলমান এই বিক্ষোভে ৯০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশকে ব্যবহার করা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা হচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। হোয়াইট হাউস থেকে বলা হচ্ছে, ক্যাম্পাসগুলোয় চলমান বিক্ষোভ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে। বিক্ষোভের বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, ‘সব মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের প্রতি আমরা (মার্কিন প্রশাসন) শ্রদ্ধাশীল। তবে বিক্ষোভ থেকে ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক যেসব ভাষা আমরা শুনতে পেয়েছি, তা নিন্দনীয়। ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য ও সহিংসতার হুমকির নিন্দা জানাই।’
জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে শনিবার আটক হন গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জিল স্টেইন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের মারমুখী আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি। আটক হওয়ার আগে তিনি সিএনএনকে বলেন, এটা বাক্স্বাধীনতার বিষয়। খুবই জটিল একটি বিষয়। কিন্তু দাঙ্গা পুলিশ এনে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বিক্ষোভের মুখে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির হামবোল্ডট ক্যাম্পাসসহ কয়েকটি ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চলছে অনলাইন ক্লাস।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হবে।
গত রোববার ইয়েল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যাঁরা ক্যাম্পাসে তাঁবু গেড়েছেন এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র উৎপাদনে সহযোগিতা থেকে সরে আসতে বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ করাসহ গ্রেপ্তার করতে বলা হবে। ইয়েল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমর্থন করলেও নীতিমালা ভঙ্গের বিষয়টি সহ্য করবে না।
গত রোববার পুলিশ ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার পর সেখানকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে বলে দাবি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এই বিক্ষোভের বিষয়টিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নজর রাখছেন। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবি রোববার এবিসি নিউজকে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যুদ্ধ নিয়ে শিক্ষার্থীদের গভীর অনুভূতির কথা জানেন। তিনি এটা বোঝেন। একে সম্মান করার কথা তিনি অনেকবার বলেছেন।
জন কারবি বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারকে তিনি সম্মান করেন। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানানোর ও জনগণের সঙ্গে তা ভাগাভাগি করার অধিকার সবার আছে। তবে তা হতে হবে শান্তিপূর্ণ।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র শিক্ষার্থী বিক্ষোভ
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র মন্তব্য করেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫টি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বাইরে ইসরায়েলি সেনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনা ঘটেছে এবং এর সবগুলোই ঘটেছে গাজায় চলমান যুদ্ধের আগে।
এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরও মার্কিন সামরিক সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথক ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে তারা বলেছে, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে মার্কিন সামরিক সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই সমস্ত ঘটনা বর্তমান যুদ্ধের আগে গাজার বাইরে সংঘটিত হয়েছিল।
ইসরায়েল চারটি ইউনিটে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে এবং পঞ্চমটির বিষয়ে 'অতিরিক্ত তথ্য' দিয়েছে বলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে। এর অর্থ হচ্ছে- সমস্ত ইউনিটই মার্কিন সামরিক সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর ইসরায়েলকে ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করে থাকে।
বিবিসি বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে কোনও ইউনিটের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের এই ধরনের ঘোষণা এটিই প্রথম। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করেছে।
তিনি বলেছেন, 'এই ইউনিটগুলোর মধ্যে চারটি কার্যকরভাবে এই লঙ্ঘনের প্রতিকার করেছে, যা আমরা অংশীদারদের কাছ থেকে আশা করি। বাকি একটি ইউনিটের বিষয়ে আমরা ইসরায়েল সরকারের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি; তারা সেই ইউনিটের সাথে সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য জমা দিয়েছে।'
অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনায় কোনো জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে কি না তা বলতে না পারলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এসব ইউনিটে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা তথা রাজনৈতিক চাপে (কঠোর অবস্থান নেওয়া থেকে) যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে গেছে বলে ওঠা দাবিকে অস্বীকার করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।
বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, 'আমরা এখন একটি প্রক্রিয়ায় তাদের সাথে জড়িত আছি, এবং যখন সেই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে তখন আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।'
বিবিসি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সরকার বলেছে, তারা নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম এবং ধর্ষণকে এই ধরনের লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।
এমনকি যখন এমন একটি সন্ধান পাওয়া যায়, রাষ্ট্র বিভাগ সন্তুষ্ট হলে সামরিক সহায়তা কমানোর একটি ব্যতিক্রম রয়েছে যদি মামলাগুলি মোকাবেলা করা হয়েছে এবং সরকার জড়িতদের দ্বারা ন্যায়বিচার অনুসরণ করে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী হলেও অভিযুক্ত ইউনিটগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে দ্বিচারিতা আছে কিনা জানতে চাইলে প্যাটেল বলেন, ইসরায়েলকে 'বিশেষ সুবিধা' বা নীতি নিয়ে 'দ্বিচারিতা' বলে কিছু নেই এবং তাদের এসব স্ট্যান্ডার্ড 'সমস্ত দেশে সমানভাবে' প্রয়োগ করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে মধ্যেই পররষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি অভ্যন্তরীণ মেমো পর্যালোচনা করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে ব্যবহার করার বিষয়ে যে আশ্বাস ইসরায়েল দিয়েছে, সেটিকে 'বিশ্বাসযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য' বলে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন।
ইসরায়েল সেনাবাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে বন্দুকধারীদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন কর্মকর্তা ও আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। বন্দুক হামলার ঘটনার পর সন্দেহভাজন একজন হামলাকারীর মরদেহ উদ্ধার করে তারা।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের শার্লট শহরে বন্দুক হামলা ও প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে এক ব্যক্তিকে আটক করতে হতাহত এসব পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের শার্লটে ওয়ারেন্ট বাস্তবায়নের সময় তিনজন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় অন্য আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত একজন সন্দেহভাজন হামলাকারীকে একটি ব্যারিকেডেড বাড়ির সামনের উঠানে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। গোলাগুলি ও বন্দুক হামলার এই ঘটনা প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় দুই বন্দুকধারী জড়িত ছিল। আহত অফিসাররা ইউএস মার্শাল সার্ভিসের নেতৃত্বাধীন টাস্ক ফোর্সের অংশ।
বিবিসি বলছে, শার্লটের শহরতলীর রাস্তায় যখন বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয় তখন এসব পুলিশ কর্মকর্তা আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে এক অপরাধীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিলেন।
শার্লট-মেকলেনবার্গ পুলিশ প্রধান জনি জেনিংস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অফিসাররা সামনের উঠানে একজন আততায়ীর দিকে গুলি চালায়, তারপর বাড়ির ভেতরে থেকে তাদের ওপর আরও গুলি চালানো হয়।
সোমবার শহরের পূর্বের একটি আবাসিক এলাকায় হামলা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টারও বেশি সময় পরও গোলাগুলি চলছিল। পরে গালওয়ে ড্রাইভে পুলিশ বাড়িতে হামলা চালালে ঘটনাটি শেষ হয়।
সন্দেহভাজন ব্যক্তির সাথে বাড়ির ভেতরে থাকা আরও দু'জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে মার্কিন মার্শাল সার্ভিস এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, অভিযানে তাদের একজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর রয় কুপার বলেছেন, নিহত দুই কর্মকর্তা অঙ্গরাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক সংশোধন বিভাগের সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, 'আজকের নৃশংস হামলায় নিহত অফিসারদের পরিবার এবং সহকর্মীদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে।'
এদিকে শহরের এক পুলিশ অফিসার আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ এখনও এই ঘটনায় হতাহত কোনো কর্মকর্তার নাম বা জড়িত সন্দেহভাজনদের নাম প্রকাশ করেনি।
মন্তব্য করুন
লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। দেশটিতে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পড়ে গেলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। খবর এএফপি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেরুর উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ি রাস্তা থেকে একটি বাস খাদে পড়ে যাওয়ার পর কমপক্ষে ২৫ জন মারা গেছেন এবং আরও এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার জানিয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তা ওলগা বোবাডিলা আরপিপি রেডিওকে বলেছেন, গত রোববার গভীর রাতে কাজামার্কার আন্দিয়ান অঞ্চলে গর্তযুক্ত ময়লা রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে এবং বাসটি প্রায় ২০০ মিটার (প্রায় ৬৫০ ফুট) গভীরে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ২৩ জনের নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে এই তথ্য হালনাগাদ করে ২৫ জন বলে জানানো হয়।
পৌরসভার কর্মকর্তা জেইম হেরেরা বলেন, ৫০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে বাসটি একটি নদীর ধারে পড়ে যায় এবং আরোহীদের কয়েকজন পানিতে ভেসে গেছে।
উদ্ধারকর্মীরা এবং দমকলকর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং সেখান থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পর সেলেনডিন পৌরসভা ৪৮ ঘণ্টার শোক ঘোষণা করেছে। বাসটি রাস্তায় চলাচলের উপযোগী ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ।
এএফপি বলছে, পেরুতে বাস দুর্ঘটনা খুবই সাধারণ বিষয়। বিশেষ করে রাতে এবং পাহাড়ের হাইওয়েতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এছাড়া দ্রুত গতি, রাস্তার খারাপ অবস্থা, রোড সাইনের অভাব এবং ট্রাফিক নিয়ম-কানুনের দুর্বল প্রয়োগের কারণে পেরুর রাস্তায় প্রায়ই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
মন্তব্য করুন
ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত প্রকাশ করেছে। আগামী মে মাসের শেষ দিকে জোটের অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিভাগের প্রধান জোসেপ বরেল গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
সৌদি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক আরবি সংবাদ টেলিভিশন চ্যানেল আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক জোট ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলন চলছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে। বিশেষ এই সম্মেলনে ইইউ’র প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন বরেল।
সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বরেল বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ইইউর সদস্য স্পেন, আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্রোভেনিয়া সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
এর আগে গত মার্চে দেশ তিনটি জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য যৌথভাবে কাজ করবে তারা।
এদিকে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ইইউর চারটি দেশকে বলে, তাদের এই উদ্যোগ 'সন্ত্রাসবাদের জন্য পুরস্কার' হিসেবে গণ্য হবে এবং যা প্রজন্মের পুরনো দ্বন্দ্বের আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সম্ভাবনা ক্রমশ হ্রাস করবে।
এর আগে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ জানিয়েছিলেন, জুলাইয়ের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের স্বীকৃতি বাড়ানোর প্রত্যাশা করেন তিনি এবং বিশ্বাস করেন, ইইউ’র মধ্যে শিগগিরই সমালোচনা হবে, যা একই অবস্থানে পৌঁছাতে কয়েকটি সদস্যকে সহায়তা করবে।
মন্তব্য করুন
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি। ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
যুক্তরাষ্ট্র মন্তব্য করেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫টি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বাইরে ইসরায়েলি সেনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনা ঘটেছে এবং এর সবগুলোই ঘটেছে গাজায় চলমান যুদ্ধের আগে। এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরও মার্কিন সামরিক সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত প্রকাশ করেছে। আগামী মে মাসের শেষ দিকে জোটের অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিভাগের প্রধান জোসেপ বরেল গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানিয়েছেন।