যে কোন যুদ্ধে বা সহিংসতায় হাসপাতালে হামলা চালানো যুদ্ধনীতির পরিপন্থী। যে কোন সহিংসতার ঘটনায় হাসপাতালগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া হয় যুদ্ধের নীতি দ্বারা। আর সেই নীতি হলো হাসপাতাল কখনোই হামলার লক্ষবস্তু হবেনা। যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোন হাসপাতালকে সুরক্ষা দেয় জেনেভা কনভেনশন। যুদ্ধকালে জেনেভা কনভেনশন কার্যকর থাকে। এই আইনে যুদ্ধের নিয়মকানুন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল জেনেভা কনভেনশনে সই করা একটি দেশ। তাই আন্তর্জাতিক এই আইন মানতে বাধ্য দেশটি।
১৮৬৪ থেকে ১৯৪৯ সালের
মধ্যে চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ধারাবাহিক রূপ জেনেভা কনভেনশন। ১৯৪৯ সালে চতুর্থ
কনভেনশন গৃহীত হয়। এতে যাঁরা সরাসরি যুদ্ধে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ, বিশেষ করে শিশু,
অসুস্থ ব্যক্তি এবং প্রাপ্তবয়স্ক বেসামরিক মানুষের সুরক্ষার কথা বলা হয়।
এই জেনেভা কনভেনশনের
১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে হাসপাতালকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে বলা অছে
চিকিৎসা সংক্রান্ত সবকিছুর মর্যাদা দিতে হবে। এবং সবসময় রক্ষা করতে হবে। আর এটি কখনোই
আক্রমনের লক্ষবস্তু হবেনা।
১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে
বলা হয়েছে, বেসামরিক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ,
যুদ্ধের সময় হাসপাতালে হামলা করা, স্বাস্থ্যকর্মী ও হাসপাতালে অবস্থানরত বেসামরিক মানুষদের
হত্যা করা জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন।
জেনেভা কনভেনশনে বলা আছে,‘ তবে কখনো কখনো হাসপাতালও সে সুরক্ষা বলয় হারাতে পারে। যদি সেটি মানবিক কাজের বাইরে শত্রুর ক্ষতি করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।’ ইসরায়েল বলছে, ‘গাজার সবচেয়ে বড় আল শিফার ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে।’
ইসরায়েলের দাবি,
আল-শিফা হাসপাতাল হামাসের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হতো যা হামাস এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
অস্বীকার করেছে। তবে এর পক্ষে এখনো তারা যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।
সম্প্রতি, আল-শিফা
হাসপাতালের গোপন সুরঙ্গের যে ভিডিও প্রকাশ করেছে তাকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে হামাস।
এর বিপক্ষে এক বিবৃতিতে
হামাস বলেছে, ইসরায়েলি সেনারা টানেল খুঁজে পাওয়ার যে দাবি করেছে সেটি হাসপাতালের ভেতরে
নয়, হাসপাতাল থেকে বেশ খানিকটা দূরের একটি গর্ত। একটি পানির কূপ ও আরেকটি টানেলের ভিডিও
জোড়া লাগিয়ে প্রচার করা হয়েছে ।
ইসরায়েলের একজন কূটনৈতিক
‘মার্ক রেগেভ’ বলেন, হাসপাতালকে যুদ্ধক্ষেত্রে
পরিণত করেছে হামাস। তারা পরিকল্পিতভাবে তাদের ঘাঁটি করেছে হাসপাতালে।
আন্তর্জাতিক আদালতের
প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান বলেন, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ হওয়াটা খুব জরুরি।
এদিকে, আল-শিফা হাসপাতালের
নিচে সুরঙ্গে যে দাবি করেছে ইসরায়েলের তাতে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্টের ডেপুটি
পেন্টাগন প্রেস সেক্রেটারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে হামাস এবং ফিলিস্তিনি
ইসলামিক জিহাদ বন্দিদের আটকে রাখা এবং মিলিটারি অপারেশনে সহায়তা করার জন্য আল-শিফা
সহ গাজার কিছু হাসপাতাল ব্যবহার করছে। তবে হামাস এটি শুরু থেকেই অস্বিকার করে আসছে।’
জেনেভা কনভেনশনে
হাসপাতালে হামলার বিষয়ে বলা আছে, একটি হাসপাতাল কেবল তখনই তাদের নিরাপত্তা স্ট্যাটাস
হারাবে যখন সেখানে একটা সতর্কবার্তা দেওয়া হবে এবং হাসপাতালটি খালি করার জন্য পর্যাপ্ত
সময় দেওয়া হবে।
ইসরায়েল বলছে, ‘তারা
হামলা চালানোর পূর্বে সতর্কবার্তা দিয়েছে এবং হাসপাতালটিকে খালি করার জন্য যথেষ্ট সময়
দিয়েছে।’
জাতিসংঘের মতে,
‘আন্তর্জাতিক আইনের কোনো একক নথি দিয়ে সব ধরনের যুদ্ধাপরাধের ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
এ জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক মানবিক, ফৌজদারি ও প্রথাগত আইনের বিভিন্ন শাখার শরণাপন্ন
হতে হবে।’
সংস্থাটি বলছে,
“সশস্ত্র সংঘাতের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের সময় জেনেভা কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক
মানবিক আইন কার্যকর থাকে, যা ‘ল অব ওয়ার’ নামে পরিচিত। যুদ্ধাপরাধের ক্ষেত্রে এ দুই আইনের লঙ্ঘন ঘটে।”
জাতিসংঘ মনে করে,
‘যদি হাসপাতাল যুদ্ধে শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে এই প্রমাণ থাকে এবং সতর্কবাণী
আগে থেকে দেওয়া হয় তারপরও যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নীতির কাছে ইসরায়েলের কিছু দায়বদ্ধতা
আছে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার
বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে হামলার
ক্ষেত্রে পূর্বসতর্কতা এবং সম্ভাবনার বিষয়গুলোও ভেবে দেখতে হবে। আর সেটা করতে ব্যর্থ
হওয়াটাও যুদ্ধের নীতি লঙ্ঘন যার মারাত্বক প্রভাব পড়ে বেসামরিক নাগরিকদের উপর।
তবে ইসরায়েল সচরাচরই
এ হামলা বন্ধ করার কোন আভাস দেয়নি এখনো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ইসরায়েলকে
যুদ্ধবন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এ হামলার নিন্দা
করেছে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েল গাজায় অনেক সহিংসতা চালিয়েছে যা যুদ্ধপরাধের সামিল। তাই যুদ্ধ
বন্ধ হলে ইসরায়েলকে নিশ্চতই এর জন্য আন্তর্জাতিক মহলে জবাবদিহিতা করতে হবে।
যুদ্ধ হাসপাতাল হামলা আন্তর্জাতিক নীতি
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরায়েলের পক্ষে তার অবস্থান পূনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা করছে না এবং গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়।
সোমবার (২১ মে) হোয়াইট হাউসে ইহুদিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।রয়টার্সের খবর
হোয়াইট হাউসে ইহুদি আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, 'আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিপরীতে আমি বলতে চাই, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করি।'
এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আরও দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যান করেন।
এদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।
গাজা ইসরায়েল গণহত্যা জো বাইডেন
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তার নিজের শহর মাশহাদের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি এই মাশহাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন। তার আগে বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তাকে চিরবিদায় জানাবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান।
নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ এখনো দেশটির রাজধানী তেহরানে নেওয়া হয়নি। রাইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরেই রাখা হয়েছে। তাবরিজ শহরেই প্রথম জানাজা হবে। এরপর রাইসির মরদেহ নেওয়া হবে তেহরান শহরে।
ইরানের ইসলামিক প্রোপাগেশন অর্গানাইজেশনের তাবরিজ দপ্তরের পরিচালক হোজ্জাতোলেসলাম মাহমুদ হোসেইনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাবরিজের কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ বাকিদের মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার সেখানে জানাজা হবে। এরপর তাবরিজের মানুষ প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাবেন। তার মরদেহ তেহরানের উদ্দেশে স্থানীয় বিমানবন্দরে নেওয়া হবে।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার তেহরানে রাইসির জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি তাতে অংশ নেবেন। এর একদিন পর জন্মশহর মাশাহাদে রাইসিকে দাফন করা হতে পারে।
এদিকে তেহরানের শহরতলিতে রাইসির স্মরণে একটি আয়োজন চলছে। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে স্মরণ করছেন, শোক জানাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি শহীদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ বাকিরাও নিহত হয়েছেন।
তাবরিজ ইব্রাহিম রাইসি মরদেহ দাফন মাশাহাদ নিহত ইরান
মন্তব্য করুন
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন।
সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা।
দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে; আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।
রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানে একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে সোমবার তাদের হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধার দল। তবে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন।
ইরানের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান মোহাম্মদ নামি বলেছেন, নিহত আরোহীদের শনাক্ত করার জন্য কোনো ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ফ্লাইট ক্রুসহ মোট ৯ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দেশের তালিকায় ইরান যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাকিস্তানের মতো দেশ। এ ছাড়া রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা শোক প্রকাশ করেছেন। ইরানের এই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এ ছাড়া ইরানের প্রিয় জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাইসির মৃত্যুতে ইরাক, লেবানন, সিরিয়া, পাকিস্তানও রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
ইরান প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ইব্রাহিম রাইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মৃত্যু
মন্তব্য করুন
ইরান ইসলামি বিপ্লব ইব্রাহিম রাইসি
মন্তব্য করুন
ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্ট
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরায়েলের পক্ষে তার অবস্থান পূনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা করছে না এবং গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়। সোমবার (২১ মে) হোয়াইট হাউসে ইহুদিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।রয়টার্সের খবর
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তার নিজের শহর মাশহাদের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি এই মাশহাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন। তার আগে বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তাকে চিরবিদায় জানাবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান। নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ এখনো দেশটির রাজধানী তেহরানে নেওয়া হয়নি। রাইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরেই রাখা হয়েছে। তাবরিজ শহরেই প্রথম জানাজা হবে। এরপর রাইসির মরদেহ নেওয়া হবে তেহরান শহরে।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন। সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা। দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
১৯৭৯ সালে ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ সংঘটিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে যে ‘ইসলামি বিপ্লব’ ঘটানো হয়েছিল, সেটিকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহা জাগরণ, যেখানে জনগণ এককাট্টা হয়ে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। এই সময় নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং খোমেনির নেতৃত্বে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপ গ্রহণ করে। কঠোর শরিয়া আইন অনুসারে ইরান পরিচালিত হতে থাকে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে পড়বে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে আজ বলা হয়েছে যে, ইরানের এই ঘটনাটিকে ইরানবাসী কোনভাবেই স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছে না। তারা মনে করছেন, এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো ঘটছে। এটির পেছনে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জড়িত বলেও তারা ধারণা করছে। আর এই ধারণাকে পুঁজি করে রাইসির মৃত্যুর পরে যে আবেগ এবং ক্ষোভ সেটাকে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উস্কানি এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে বলে আল জাজিরায় কয়েকজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন যে, ইরান যদি মনে করে এই ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এই ঘটনা ঘটিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল, তাহলে তারা অবশ্যই পাল্টা প্রতিশোধ নেবে।