ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আলোচিত-সমালোচিত কিসিঞ্জারের পররাষ্ট্রনীতি

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। কিসিঞ্জার ১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন। কিসিঞ্জারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস তার মৃত্যুর সংবাদ গণমাধ্যমকে জানালেও মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বিতর্কিত পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক ব্যক্তি কয়েক দশকের ক্যারিয়ারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কিসিঞ্জার তাঁর পররাষ্ট্রনীতির জন্য কখনো আলোচিত কখনো সমালোচিত এবং বিতর্কিতও হয়েছেন। কিসিঞ্জার তরুণ বয়সে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। তিনি সর্বশেষ নিক্সন ও ফোর্ড প্রশাসনে দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে দায়িত্ব পালনকালে তার আলোচিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা জেনে নেওয়া যাক।

চীন

কমিউনিস্ট চীনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৭১ সালের জুলাইয়ে গোপনে বেইজিংয়ে সফরে গিয়েছিলেন কিসিঞ্জার। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন চীনে একটি যুগান্তকারী সফর করেন। ওই সফরে নিক্সন স্নায়ুযুদ্ধের বিষয়টি তুলেছিলেন এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের সমাপ্তি টানার জন্য চীনের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছিলেন।

নিক্সনের এ সফরের পর যুক্তরাষ্ট্রের দুয়ার চীনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওই সময় অনেকটাই একঘরে বলে বিবেচিত চীনের শিল্পোৎপাদন খাতে উত্থান ঘটাতে থাকে।  ক্রমান্বয়ে এটি বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়।

কিসিঞ্জার যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব ছাড়েন, তত দিনে তিনি চীনের পরামর্শকের খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। দায়িত্ব ছাড়ার সময় কিসিঞ্জার সতর্ক করে বলেছিলেন, মার্কিন নীতিমালায় বড় ধরনের পালাবদল ঘটতে পারে।

১০০ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার কয়েক মাস পর গত জুলাইয়েও কিসিঞ্জার চীন সফর করেছেন। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং অন্য চীনা নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও সমালোচিত নোবেল পুরস্কার

ভিয়েতনামে মার্কিন যুদ্ধের সমাপ্তি টানার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট নিক্সন। এ সময় ভিয়েতনামের সরবরাহ লাইনগুলো বন্ধ করার উদ্দেশ্যে গোপনে কম্বোডিয়া ও লাওসে বোমা হামলা চালানোর নির্দেশ দেন কিসিঞ্জার। কয়েকজন ইতিহাসবিদের হিসাব অনুসারে, ওই হামলায় কয়েক লাখ বেসামরিক মানুষ নিহত হন। ১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে প্যারিসে আলোচনার মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামে যুদ্ধবিরতিতে সক্ষম হন কিসিঞ্জার।

যুদ্ধবিরতির কারণে ওই বছর ভিয়েতনামের বিপ্লবী নেতা লি ডাক থো এবং হেনরি কিসিঞ্জারকে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে লি ডাক থো সে পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানান।

তবে প্যারিস চুক্তির মধ্য দিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতির মাত্রা কমানো যায়নি। এমন অবস্থায় সাইগনে (হো চি মিন সিটি) যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত সরকারের পতন হওয়ার দুই বছরের বেশি সময় পর কিসিঞ্জার বিরতি চেয়েছিলেন বলে মনে করা হয়ে থাকে।

সরকার উৎক্ষাত ও অভ্যুত্থানে সংশ্লিষ্টতা

বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎক্ষাতের জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন কিসিঞ্জার। আর্জেন্টিনা ও চিলিতে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন। কিসিঞ্জার বিভিন্ন দেশে বামপন্থী সরকার উৎখাতে প্ররোচনা দিয়ে থাকতেন। 

হেনরি কিসিঞ্জারের ঠান্ডা মাথায় করা একটি হিসাব–নিকাশের মেমোতে দেখা গেছে, কিসিঞ্জার বলেছিলেন, চিলির সমাজতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট সালভাদর আইয়েন্দে ‘প্রতারণাপূর্ণ’ একটি মডেল প্রস্তাব করেছেন। ওই মডেলে দেখানো হয়েছে, বামপন্থী নির্বাচিত সরকার কাজ করছে।

১৯৭০ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চিলির রাষ্ট্রপতি ছিলেন সালভাদোর আইয়েন্দে। তিনি চিলির প্রথম সমাজতন্ত্রবাদী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। সিআইএ–সমর্থিত এক সেনা অভ্যুত্থানে আইয়েন্দে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর আইয়েন্দে আত্মহত্যা করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্য কূটনীতি

কিসিঞ্জার মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসনে দায়িত্বপালনকালে বেশির ভাগ সময় মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর দিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে ইহুদিদের ইয়ম কিপুর পালিত হওয়ার দিনে আরব রাষ্ট্রগুলোর হামলার পর মিত্রদেশ ইসরায়েলকে অস্ত্র দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর উদ্যোক্তা ছিলেন কিসিঞ্জার।

কিসিঞ্জার পরবর্তী সময়ে ইসরায়েল, মিসর ও সিরিয়ার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ‘মধ্যস্থতার কূটনীতি’।

এ ক্ষেত্রে মস্কোর ভূমিকাকে কার্যকরভাবে উপেক্ষা করে কিসিঞ্জার মিসরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আরব দেশ মিসর পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগী হয়ে ওঠে। মিসরকে সহায়তা দিতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।

হামলায় সায়

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম পাকিস্তানকে সবরকম সমর্থন দিয়েছে। এ পিছনে মূল কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের সংশ্লিষ্টতা। একটি দেশ যখন অন্য কোনো দেশে হামলা চালাত, তখন সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় থাকলে কিসিঞ্জার সে হামলার বিরোধিতা করতেন না। বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চালানো হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনার পরও পশ্চিম পাকিস্তানকে কিসিঞ্জার কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে গেছেন।

স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ ইন্দোনেশিয়া যখন পূর্ব তিমুর দখল করে নিয়েছিল, ২৪ বছরের নৃশংস দখলদারি শুরু করেছিল, তখন কিসিঞ্জার তাতে সবুজসংকেত দিয়েছিলেন।

সাইপ্রাসের এক-তৃতীয়াংশ দখলে তুরস্ককেও কিসিঞ্জার মৌন সমর্থন জুগিয়ে গেছেন। এর মধ্য দিয়ে কৌশলগত অবস্থানে থাকা তুরস্কের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ন্যাটোর সদস্যদেশ গ্রিসের সঙ্গে শত্রুতার ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে চেয়েছিলেন তিনি।

অ্যাঙ্গোলার গৃহযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন যে সম্পৃক্ততা ছিল, তাতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন কিসিঞ্জার। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তাদের কিউবান মিত্রদের মোকাবিলায় ওই গৃহযুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র।


আলোচিত   সমালোচিত   কিসিঞ্জার   পররাষ্ট্রনীতি   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

৩ জিম্মির মরদেহ উদ্ধার, খুশি নন ইসরায়েলিরা

প্রকাশ: ০৯:২৪ এএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া থেকে তিন জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের যে দাবি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু করেছেন, তাতে খুশি নন ইসরায়েলিরা। তারা তাদের স্বজনদের ফিরিয়ে আনতে আরও কিছু করার দাবি করেছে।

ইসরায়েল জানায়, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলার সময় নিহত তিন ব্যক্তির মরদেহ তারা গাজা থেকে উদ্ধার করেছে। ওই তিন ব্যক্তি হলেন আইজ্যাক গেলেরেন্টার, অমিত বুসকিলা এবং শানি লুক। তারা নোভা মিউজিক উৎসবে নিহত হয়েছিলেন এবং হামাস লাশগুলো গাজায় নিয়ে গিয়েছিল বলে ইসরায়েল দাবি করছে।

শুক্রবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এক বিবৃতিতে বলেন, ওই তিন ব্যক্তির লাশ সেনাবাহিনী এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেইতের অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই অভিযানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জীবিত হোক বা মৃত হোক, গাজা থেকে সকল জিম্মিকে মুক্ত করে আনব।

গত সপ্তাহে হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসসাম ব্রিগেড এক ভিডিও প্রকাশ করে জানায়, ব্রিটিশ-ইসরায়েলি বন্দী নাদাভ পপলওয়েল মারা গেছেন। গ্রুপটি জানায়, এক মাস আগে ইসরায়েলি বোমা হামলায় তিনি আহত হয়েছিলেন। ওই ক্ষত থেকেই তিনি মারা গেছেন।

জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ইসরায়েল সরকারের ওপর ঘরোয়া চাপ বাড়ার মধ্যে ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়।

জিম্মিদের স্বজন ও বন্ধুসহ হাজার হাজার ইসরায়েলি তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করার দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছে। জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য আরও কিছু করার জন্য তারা নেতানিয়াহুর প্রতি দাবি জানাচ্ছেন। তাদের অনেকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দিচ্ছেন।

এদিকে শুক্রবার জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা ইমরান খান বলেন, তিন লাশ উদ্ধার নিয়ে নেতানিয়াহু যে দাবি করেছেন, তাতে জিম্মিদের পরিবারগুলো সন্তুষ্ট নয়। উল্লেখ্য, ইসরায়েল সরকার নিষিদ্ধ করায় আল জাজিরাকে এখন বাইরে থেকে সংবাদ সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

ইমরান খান বলেন, জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য গঠিত অ্যাডভোকেসি গ্রুপ দি ব্রিং দেম হোম ক্যাম্পেইন বলেছে, নেতানিয়াহু জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত কিছু করছেন না।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে হামাস। সেসময় নিহতদের মধ্যে ওই তিনজনও ছিল। তখন আরো ২৫২ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।


জিম্মি   মরদেহ   উদ্ধার   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

'শয়তানবাদ' প্রচারের দায়ে ইরানে ২৬০ জন গ্রেফতার

প্রকাশ: ০৮:৪১ এএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

'শয়তানবাদ' প্রচারের দায়ে ২৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে তিন ইউরোপীয় নাগরিকও রয়েছেন।পাশাপাশি ৭৩টি গাড়িও জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে  ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। গ্রেফতারদের মধ্যে ১৪৬ জন পুরুষ ও ১১৫ জন নারী রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে মদ ও নিষিদ্ধ মাদক জব্দ করা হয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে তেহরানের পশ্চিমে অবস্থিত শাহরিয়ার শহরে অভিযান চালিয়ে শয়তানবাদ প্রচারকারীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নারী-পুরুষের পোশাক, মুখ ও চুলে শয়তানবাদের প্রতীক ছিল। 

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তেহরানের কাছাকাছি একটি বাগানে অনুষ্ঠিত অননুমোদিত রক কনসার্ট চলাকালে শয়তানের উপাসনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরান পুলিশ।


শয়তানবাদ   ইরান   গ্রেফতার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস: বিশ্বের শীর্ষ আইকনিক জাদুঘর

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস আজ। দিনটিতে জাদুঘরের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়— যাতে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং নাগরিকরা তার আপন ঐতিহ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখেন। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের আহ্বানে ১৯৭৭ সালে প্রথম বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। সেই থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামস (আইসিওএম)। এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মোট ১৮০টি দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর যুক্ত রয়েছে।

পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যতো ইতিহাস জমা হচ্ছে তারই প্রতিচ্ছবি হলো জাদুঘর। জাদুঘরের ইংরেজি মিউজিয়াম শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ মিউজয়ন থেকে, যার অর্থ কাব্যাদির অধিষ্ঠাত্রী দেবীর মন্দির। বাংলায় জাদুঘর কথাটির অর্থ হলো, যে গৃহে আদ্ভুত পদার্থসমূহ সংরক্ষিত আছে এবং যা দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হতে হয়। চলুন বিশ্বজুড়ে কিছু বিখ্যাত যাদুঘরের ভার্চুয়াল সফর করি।

ল্যুভর মিউজিয়াম, প্যারিস

ফ্রান্সের প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামের উল্লেখ না করে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত জাদুঘরের কোনো তালিকা সম্পূর্ণ হবে না। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মোনা লিসার আইকনিক পেইন্টিংয়ের বাড়ি, দ্য ল্যুভর হল বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প জাদুঘর এবং শিল্প উৎসাহীদের জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য৷ প্রাচীন সভ্যতা থেকে একবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ৩৮,০০০ টিরও বেশি শিল্পকর্মের সাথে, ল্যুভর হল মানুষের সৃজনশীলতা এবং কল্পনার ভান্ডার। 

স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন, ওয়াশিংটন, ডিসি

ওয়াশিংটন, ডিসির স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন হল বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর, শিক্ষা এবং গবেষণা কমপ্লেক্স, যেখানে ১৯ টি জাদুঘর এবং গ্যালারী, ন্যাশনাল জুলজিক্যাল পার্ক এবং নয়টি গবেষণা সুবিধা রয়েছে। ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি থেকে ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়াম পর্যন্ত, স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন বিভিন্ন ধরনের প্রদর্শনী এবং অভিজ্ঞতার অফার করে যা সব বয়সের এবং আগ্রহের দর্শকদের জন্য পূরণ করে। 

ব্রিটিশ মিউজিয়াম, লন্ডন

১৭৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি। যাদুঘরের সংগ্রহটি মানব ইতিহাস এবং সংস্কৃতির দুই মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত, প্রাচীন শিল্পকর্ম থেকে সমসাময়িক শিল্প পর্যন্ত প্রদর্শনী সহ। রোসেটা স্টোন, পার্থেনন ভাস্কর্য এবং মিশরীয় মমি যাদুঘরের সবচেয়ে আইকনিক এবং জনপ্রিয় প্রদর্শনী। 

মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউ ইয়র্ক

মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, যা দ্য মেট নামেও পরিচিত, এটি বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ব্যাপক শিল্প জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি। নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত, দ্য মেটের সংগ্রহটি ৫,০০০ বছরেরও বেশি বিশ্ব সংস্কৃতি এবং শিল্পকে বিস্তৃত করে, যেখানে প্রাচীন মিশরীয় শিল্পকর্ম থেকে সমসাময়িক চিত্রকর্ম এবং ভাস্কর্যের প্রদর্শনী রয়েছে। মেটের ছাদের বাগান এবং কস্টিউম ইনস্টিটিউট হল এর কিছু জনপ্রিয় আকর্ষণ। 

ভ্যাটিকান মিউজিয়াম, ভ্যাটিকান সিটি

ভ্যাটিকান সিটির ভ্যাটিকান মিউজিয়াম হল জাদুঘর এবং গ্যালারির একটি সংগ্রহ যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান এবং উল্লেখযোগ্য শিল্প ও নিদর্শন রয়েছে। জাদুঘরের সংগ্রহে মাইকেলেঞ্জেলো, রাফেল এবং অন্যান্য বিখ্যাত শিল্পীদের কাজ, সেইসাথে প্রাচীন রোমান এবং মিশরীয় শিল্পকর্ম রয়েছে। সিস্টিন চ্যাপেল, মাইকেলেঞ্জেলোর আঁকা তার চমৎকার ছাদ সহ, ভ্যাটিকান যাদুঘরের সবচেয়ে পরিদর্শন করা এবং আইকনিক আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি।

অ্যাক্রোপলিস মিউজিয়াম, এথেন্স

গ্রীসের এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস যাদুঘরটি প্রাচীন দুর্গ এবং এর চারপাশের স্মৃতিস্তম্ভ, পার্থেনন, এথেনা নাইকির মন্দির এবং এরেকথিয়ন সহ নিবেদিত। জাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে ভাস্কর্য, মৃৎশিল্প এবং অন্যান্য নিদর্শন যা অ্যাক্রোপলিস এবং আশেপাশের এলাকা থেকে খনন করা হয়েছিল। যাদুঘরের কাঁচের মেঝে দর্শকদের বিল্ডিংয়ের নীচে প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ দেখতে দেয়, একটি অনন্য এবং নিমগ্ন অভিজ্ঞতা তৈরি করে। 

জাতীয় প্রাসাদ যাদুঘর, তাইপেই

তাইওয়ানের তাইপেই ন্যাশনাল প্যালেস মিউজিয়াম হল চীনের শিল্প ও নিদর্শনগুলির বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি। যাদুঘরের সংগ্রহ ওভার নিয়ে গঠিত প্রাচীন চীনা চিত্রকর্ম, মৃৎশিল্প, ক্যালিগ্রাফি এবং জেড খোদাই সহ ৭০০,০০০ বস্তু। জাদুঘরের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রদর্শনী হল জাদেইট বাঁধাকপি, জেডের একটি ছোট টুকরো যা বাঁধাকপির মাথার মতো খোদাই করা হয়েছে এবং এটি কিং রাজবংশের জেড খোদাইয়ের অন্যতম সেরা উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত হয়। 

হারমিটেজ মিউজিয়াম, সেন্ট পিটার্সবার্গ

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের হারমিটেজ মিউজিয়াম বিশ্বের বৃহত্তম এবং বিখ্যাত শিল্প জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি। যাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে ত্রিশ লাখেরও বেশি আইটেম, যার মধ্যে রয়েছে প্রাচীন শিল্পকর্ম থেকে শুরু করে আধুনিক শিল্প, বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে প্রদর্শনী সহ। শীতকালীন প্রাসাদ, রাশিয়ান রাজাদের প্রাক্তন বাসস্থান, এটিও যাদুঘরের একটি অংশ এবং এটি রাশিয়ান রাজপরিবারের ঐশ্বর্যময় জীবনধারার একটি আভাস দেয়।

ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ নৃবিজ্ঞান, মেক্সিকো সিটি

জাতীয় জাদুঘর মেক্সিকো সিটিতে নৃবিজ্ঞানের একটি বিশ্ব-বিখ্যাত জাদুঘর যা মেক্সিকো এবং মেসোআমেরিকার প্রাচীন সভ্যতার জন্য নিবেদিত। জাদুঘরের সংগ্রহে অ্যাজটেক, মায়া এবং অন্যান্য প্রাচীন সংস্কৃতির শিল্পকর্ম রয়েছে, যেখানে প্রাক-কলম্বিয়ান শিল্প থেকে সমসাময়িক মেক্সিকান লোকশিল্প পর্যন্ত প্রদর্শনী রয়েছে। যাদুঘরের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রদর্শনী হল অ্যাজটেক ক্যালেন্ডার স্টোন, একটি বিশাল পাথরের চাকতি যা অ্যাজটেকরা ক্যালেন্ডার এবং আনুষ্ঠানিক বস্তু হিসেবে ব্যবহার করত। 

উফিজি গ্যালারি, ফ্লোরেন্স

ইতালির ফ্লোরেন্সের উফিজি গ্যালারি হল বিশ্বের প্রাচীনতম এবং বিখ্যাত শিল্প জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি, যেখানে মিকেলেঞ্জেলো, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এবং অন্যান্য ইতালীয় রেনেসাঁর মাস্টারদের কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মধ্যযুগ থেকে রেনেসাঁ পর্যন্ত ইতালীয় শিল্পের বিবর্তন প্রদর্শনের জন্য কালানুক্রমিক ক্রমে সাজানো প্রদর্শনী সহ যাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে পেইন্টিং, ভাস্কর্য এবং অন্যান্য শিল্পকলা। জাদুঘরের ছাদের টেরেস ফ্লোরেন্স এবং আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়।


আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস   বিশ্ব   আইকনিক জাদুঘর  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেনের ১২টি গ্রাম দখলের দাবি রাশিয়ার

প্রকাশ: ০৮:৩২ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে যুদ্ধের সম্মুখসারি থেকে এ অঞ্চলের অন্তত ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে  রুশ বাহিনী। এছাড়া সম্মুখসারিতে ইউক্রেনের কামানগুলোকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কিয়েভ জানিয়েছে, সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে।

চলতি মাস থেকে খারকিভে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। এ অঞ্চলের ১২টি গ্রাম দখলের দাবি করেছে তারা। খারকিভের গভর্নর ওলেগ সিনেগুবোভ বৃহস্পতিবার বলেছেন, খারকিভের সীমান্তবর্তী গ্রাম লিপৎসির কাছে পৌঁছেছেন রুশ সেনারা। ভভেচানস্ক শহর দখলের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এই মুহূর্তে ইউক্রেন বাহিনীর মূল লক্ষ্যটা হলো এ অঞ্চলে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে স্থিতিশীলতা আনা।

তবে খারকিভের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শুক্রবার দেশটির একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, খারকিভের ১০ কিলোমিটার ভেতরে অগ্রসর হয়েছে রুশ বাহিনী। এর বেশি তারা এগোতে পারেনি। ইউক্রেনের সেনাসদস্যরা রুশ বাহিনীকে থামিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে চীন সফরে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খারকিভ প্রসঙ্গ তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, খারকিভ শহর দখল করাটা মস্কোর বর্তমান পরিকল্পনায় নেই। এই অঞ্চলে রুশ সেনারা অভিযান চালিয়ে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য একটি বেসামরিক এলাকা তৈরি করতে চাচ্ছেন। আর তা পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছে।


ইউক্রেন   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রাম্প নাকি বাইডেন, বিশ্বের স্বার্থে কে এগিয়ে

প্রকাশ: ০৮:১৮ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে মনোনয়ন পাওয়া নিশ্চিত করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

মতামত জরিপে জানা গেছে বেশিরভাগ মার্কিন জনগণ উভয় প্রার্থীর কাউকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে তেমন আগ্রহী নন। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প-বাইডেনের মনোনয়ন পাওয়াকেই স্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। তবে এই দুই প্রার্থীর কাকে বিশ্বের স্বার্থে এগিয়ে রাখা যায় এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা শ্রম ও পেনশন কমিটির চেয়ারম্যান বার্নি স্যান্ডার্স 
দ্য গার্ডিয়ানে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। 

বার্নি স্যান্ডার্স দ্য গার্ডিয়ানে লিখেছেন যে,  আমি জানি বাইডেন তেমন জনপ্রিয় নন এবং আমিসহ অনেক প্রগতিশীল চিন্তার মানুষ ইসরায়েলের চলমান বিপর্যয়কর যুদ্ধ–সম্পর্কিত তার অনুসৃত নীতির সঙ্গে একেবারেই একমত নন।

তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, বাইডেন আসন্ন ভোটে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন না। তিনি যার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তিনি আমেরিকান ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ট্রাম্প যদি পুনরায় নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি আগের চেয়ে খারাপ আচরণ করবেন। সেই দিক তুলনা করে বলছি, বাইডেন যেকোনো বিবেচনায় ট্রাম্পের চেয়ে হাজার গুণ ভালো হবেন।

আপনি যদি জলবায়ু সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন, তাহলে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন নিয়ে আপনাকে দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে। কারণ, ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যা আলোচনা হয়ে থাকে, সেটি একটি ‘ফালতু আলাপ’।

অন্যদিকে বাইডেন টেকসই জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতায় ইতিহাসের যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে সহায়তা করেছেন।

ইসরায়েলের বিষয়ে বাইডেনের অবস্থান নিয়ে যদি আপনার নেতিবাচক ধারণা থাকে, তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে, এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের অবস্থান বাইডেনের চেয়ে অনেক বেশি খারাপ।

বাইডেন একজন প্রথাগত আমেরিকান রাজনীতিবিদ, যিনি গণতন্ত্র, অবাধ নির্বাচন এবং ভিন্নমতের অধিকারে বিশ্বাস করেন। আর ট্রাম্প এর কোনোটাতেই বিশ্বাস করেন না। যারা ক্যাপিটল হিলে আক্রমণ করেছিলেন, সেই আট শতাধিক আক্রমণকারীকে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ক্ষমা করে দেবেন বলে ভাবছেন।



জো বাইডেন   ডোনাল্ড ট্রাম্প  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন