ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট মাওলানা ফজলুর রেহমান?

প্রকাশ: ০৮:৫৬ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) বা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করুক বা না করুক, দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের (জেইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান। এমনটা মনে করেন দলটির নেতারা। রোববার (৩ ডিসেম্বর) এমন দাবি করেছেন জেইউআই-এফের এক মুখপাত্র। 

সম্প্রতি স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেইউআই-এফ নেতা হাফিজ হামদুল্লাহ বলেছেন, মাওলানা ফজলুর রেহমানকে যদি বহুদলীয় জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) প্রধান করা যায়, তবে তাকে দেশটির প্রেসিডেন্টও করা যেতে পারে।

পাকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৮ সেপ্টেম্বর। এরপরও পাকিস্তানি সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদের অধীনে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছেন তিনি। ৪৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে, প্রাদেশিক এবং জাতীয় পরিষদের অনুপস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট তার পদে বহাল থাকতে পারেন। পাকিস্তানে এ বছরের জানুয়ারিতে প্রাদেশিক এবং গত আগস্টে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সংবিধানের ৪১ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পার্লামেন্ট, সিনেট এবং চারটি প্রাদেশিক পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আরিফ আলভি পাকিস্তানের চতুর্থ রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি তার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করেছেন।

কে এই ফজলুর রেহমান?

মাওলানা ফজলুর রহমান ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ জুন ঈদুল আজহার দিনে ডেরা ঈসমাইল খান জেলার আবদুল খয়ের গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার শুরুর দিকে স্কুলে পড়লেও মেট্রিকের পর মাদরাসায় এসেছেন এবং দারুল উলুম হক্কানিয়া আকুড়াখট মাদরাসা থেকে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন।

দাওরা ফারেগের পর প্রথম বছর শিক্ষকতা পেশায় একাগ্রচিত্তে নিয়োজিত থাকলেও ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ অক্টোবর পিতা মাওলানা মাহমুদ যখন ইন্তেকাল করেন, ইন্তেকালের অব্যাবহিত পরপরই পিতার অসমাপ্ত মিশন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন।

মাওলানা ফজলুর রহমান ১৯৮৮ সাল থেকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। মাওলানা ফজলুর রহমান রাজনৈতিক মামলায় ১০ বার কারাবরণ করেছেন। ১৯৮১ সালে তিনি যখন জেনারেল জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে কারাবন্দি হন, তখন তাকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নির্বাচন করা হয়। ১৯৯৩ সনে বেনজীর ভুট্টো দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলে মাওলানা ফজলুর রহমান জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। 

২০১৮ সালে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে পাঁচটি আসনে লড়ে সব ক’টিতেই জেতেন ইমরান খান, পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীও হন। ওই নির্বাচনে তিনটি আসনে লড়ে সব ক’টিতেই হেরে যান মাওলানা ফজলুর রেহমান। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলোতে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের এই ঝানু রাজনীতিবিদ।

২০১৯ সালে ইমরান খানের পদত্যাগ এবং পুনরায় নির্বাচন দাবিতে মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানজুড়ে আজাদি মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কয়েক লাখ কর্মী-সমর্থক নিয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে কয়েক দিন অবস্থান করেন তিনি।

ইমরানবিরোধী প্রচারণা

২০১৯ সাল থেকে ইমরান খানের বিরুদ্ধে নিরলস প্রচারণা চালিয়ে গেছেন পিডিএম প্রধান। ওই বছরের শেষের দিকে তার সংগঠন জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলুর (জেইউআই-এফ) ইসলামাবাদ অবরোধ করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগ ও নতুন করে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানায়। ফজলুর রেহমানের ওই আন্দোলনে পরে সমর্থন দেয় পিএমএল-এন এবং পিডিপি।

এমন কি ইমরান খান পদচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানে তৎকালীন বিরোধী দলগুলোর জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) প্রধান মাওলানা ফজলুর রেহমান শনিবার বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে কোনো বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়নি। তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য তিনি দায়ী।

তিনি আরও বলেন, ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে যারা ষড়যন্ত্র করেছেন তার অন্যতম আমি। এক্ষেত্রে কোনো বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়নি। এটা হলো ফজলুর রেহমানের ষড়যন্ত্র, যা আপনাকে তল্পিতল্পা সহ বিদায় করেছে।

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন

ইমরান খানের আন্দোলনে নওয়াজ সরকারের পতন না হলেও জনগণের মনে বিশ্বাস জন্মেছিল, ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়া সম্ভব। এর চার বছর পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ইমরান। আর ফজলুর রেহমানের আজাদি মার্চ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে পিডিএম গঠনের ভিত্তি রচনা করেছিল। ওই সময় পাকিস্তানের রাজনীতিতে পরিচিত নাম নওয়াজ শরীফ, প্রয়াত বেনজির ভুট্টো এবং আসিফ আলী জারদারির অনুপস্থিতিতে পার্লামেন্টে দলের নগণ্য অবস্থান সত্ত্বেও ইমরান খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠেন ফজলুর রহমান। 

২০১৯ সালে ইমরান খানের পক্ষে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিরোধ কঠিন হয়ে পড়লে ফজলুর রেহমান তার সমর্থকদের নিয়ে ইসলামাবাদের ডি-চক বা ডেমোক্র্যাসি চক চত্বরে বিশাল সমাবেশের ডাক দেন। ‘আজাদি মার্চ’ নামে পরিচিত তার ওই আন্দোলনকে নওয়াজ শরীফ সরকারের বিরুদ্ধে ইমরান খানের ২০১৪ সালের দুর্নীতিবিরোধী ধর্নার সঙ্গে তুলনা করা হয়।

এ থেকেই স্পষ্ট, ইমরান খান কেন তার চেয়ে বয়সে আট মাসের ছোট, কিন্তু রাজনীতিতে বেশি অভিজ্ঞ ফজলুর রেহমানকে তার সরকারের জন্য হুমকি বলে মেনে নিয়েছিলেন। একসময় তেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় ৬৮ বছর বয়সী এ নেতাকে বহুবার ‘ডিজেল’ নামে উপহাস করেছেন ইমরান খান।

ইমরানের শত্রু

১৯৮০ সালে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন ফজলুর রেহমান।  ইমরান খান যখন তার প্রথম টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ খেলার নয় বছর পূরণ করেন, সেই সময় রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন ফজলুর রেহমান। ১৯৯২ সালে ইমরান যখন পাকিস্তানের হয়ে একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতেন, তখন প্রথমবার পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য হন রেহমান। ১৯৯৬ সালে যখন ইমরান খানের নিজস্ব রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে, ফজলুর রেহমান তখন বেনজির ভুট্টো সরকারের অংশ এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

ফজলুর রেহমানের বাবা ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের নতুন সংবিধানের অন্যতম স্বাক্ষরকারী হলেও নির্বাচনের মাঠে খুব একটা সাফল্য পাননি। কিন্তু তার ছেলে ঠিকই দেশটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান গড়ে নিয়েছেন। আগামী দিনে তিনি আরও বড় কোনো ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন কি না তা সময়ই বলে দেবে।

মাওলানা ফজলুর রহমানের স্মরণশক্তি ও দূরদর্শিতার পর্যালোচনা করতে গিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম বিবিসি তার রির্পোটে বলেছে, মাওলানা একসাথে পাঁচটি কাজ সমাধা করতে পারদর্শী। ২০০৫ সালের এশিয়ান সার্ভে রিপোর্টে মাওলানাকে এশিয়ার ৫ম ও বিশ্বের ঊনিশতম ধীমান রাজনীতিবিদ হিসেবে উল্লেখ করেছে। 

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় মাওলানা ফজলুর রহমানের কোনো জুড়ি নেই। তিনি ডিপ্লোমেটিক ব্যবহারে দারাজ হাতের মালিক। তিনি যদি কোনো ধর্মীয় নেতা না হতেন তাহলে গোটা পাকিস্তান তার পিছে পিছে দৌড়াতো বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হওয়া তার জন্য কোনো কঠিন কাজ না।


পাকিস্তান   প্রেসিডেন্ট   মাওলানা   ফজলুর রেহমান   পিপিপি   ইমরান খান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন ঘাঁটিতে রুশ সেনা নিয়ে মুখ খুললেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার সেনারা আফ্রিকার দেশ নাইজারের একটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন মার্কিন ঘাঁটিতে রুশ সেনা উঠার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নাইজারের একটি বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছে যেখানে অবস্থান করছেন মার্কিন সেনারা। একজন সিনিয়র মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাতে এই তথ্য প্রকাশ করে বার্তা সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইজারের সেনা শাসকরা তাদের দেশ থেকে মার্কিন বাহিনীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর এ ঘটনা ঘটেছে। নাইজারে এক হাজারের মতো মার্কিন সেনা রয়েছেন। গত মার্চ মাসে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকে নাইজারের জান্তা সরকার এসব সেনা প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানিয়েছে দেয়। ইতোমধ্যে নাইজারের নতুন জান্তা সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক গভীর করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মার্কিন বাহিনীর ব্যবহৃত সামরিক ঘাঁটিতে রুশ বাহিনী উঠেছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন বলেছেন, রাশিয়ার সেনারা প্রবেশ করায় বড় ধরনের সমস্যা হবে না। মার্কিন সেনা বা সরঞ্জামের তাদের প্রবেশের অধিকার দেওয়া হয়নি।

গত বছরের জুলাইয়ের সামরিক অভ্যুত্থানের আগে আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠী ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় অংশীদার ছিল নাইজার। তবে সেনা অভ্যুত্থানের পর পশ্চিমাদের সঙ্গে দেশটির জান্তা সরকারের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ইতিমধ্যে দেশটি থেকে ফরাসি সেনাদের বের করে দেওয়া হয়েছে। একই পরিণতি বরণ করতে হতে পারে মার্কিন সেনাদের।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, রুশ সেনারা ওই বিমানঘাঁটিতে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে একত্রে অবস্থান করছেন না। কারণ হিসেবে জানা গেছে, তারা নাইজারের রাজধানী নিয়ামীতে দিওরি হামানি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের পাশে অবস্থিত এয়ারবেস ১০১ নামে পরিচিত সামরিক স্থাপনায় আলাদা হ্যাঙ্গার ব্যবহার করছেন।

মার্কিন ঘাঁটি   রুশ সেনা   মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার অস্ট্রেলিয়াজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ

প্রকাশ: ০৬:০৭ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

এবার অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দেশটির সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউনিভার্সিটি অব সিডনি) তাবু স্থাপন করে অবস্থান নেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেসময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এদিনের আন্দোলন থেকে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিচ্ছিন্ন করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়ান সরকার গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট কাজ করেনি।

ব্রিটিশি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেলবোর্ন, ক্যানবেরাসহ অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ধরনের শিবির গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে পুলিশ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

বিক্ষোভের জায়গাগুলোতে স্বল্পসংখ্যক পুলিশের শান্তিপূর্ণ উপস্থিতিতে ছিল। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়ি পার্ক করা থাকলেও বিক্ষোভে কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না।

এদিকে, এই বিক্ষোভের কারণে অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অধ্যয়নরত ইহুদী শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে এ ধরনের আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে করা উচিত।

ইউনিভার্সিটি অব সিডনির উপাচার্য মার্ক স্কট বলেছেন, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস আংশিকভাবে অবস্থান করতে পারে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কোনো সহিংসতা দেখা যায়নি।

কয়েক দফা দাবি নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে ক্যাম্পাস চত্বরেই তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে মিত্র দেশগুলো থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা।


অস্ট্রেলিয়া   বিশ্ববিদ্যালয়   বিক্ষোভ   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ: গ্রেপ্তার প্রায় ২ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী

প্রকাশ: ০৫:৪৫ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

এপির হিসেব অনুযায়ী, ১৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মোট ৪৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৬ বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেসব অভিযান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের।

সর্বশেষ স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসে (ইউসিএলএ) অভিযান চালিয়ে ২০০ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্লাইউড, মেটাল ফেন্স, প্ল্যাকার্ড দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড এবং ক্যাম্পাস চত্বরের অস্থায়ী তাঁবুগুলো তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। এসব তাঁবুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাতে ঘুমাতেন।

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে গত মার্চের শেষ দিক থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে সেই আন্দোলন দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই আন্দোলন চলার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ১৮ এপ্রিল রাতে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ অভিযানে ১০০ জন ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ এবং তাদের তাঁবু-ব্যারিকেডও তছনছ করে দিয়েছিল পুলিশ।

কিন্তু পরের দিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ফের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। মার্কিন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীরা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে 'ইহুদিবিদ্বেষী' আন্দোলন বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে আন্দোলনের সংগঠকদের (যাদের মধ্যে ইহুধি ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন) দাবি, তারা কেবল ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   বিক্ষোভ   গ্রেপ্তার   শিক্ষার্থী   ইউসিএলএ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মুক্ত গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলল পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ২৭ দশমিক ৬৪ পেয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৫তম। গত বছর অবস্থান ছিল ১৬৩তম।

শুক্রবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকের ২০২৪ সংস্করণ প্রকাশ করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স। প্রকাশিত সূচকে দেখা যায়, ২০২৪ সালে আরও দুইধাপ পিছিয়ে মোট ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ১৬৫তম। এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ২৭ দশমিক ৬৪।

এবারের মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানের পেছনে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার দিক দিয়ে এবার শীর্ষস্থান দখল করেছে নেপাল; ৬০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ৭৪তম অবস্থান দখল করেছে। এর পরের অবস্থানে আছে মালদ্বীপ। ৫২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ১০৬তম অবস্থানে।

এবারের তালিকায় প্রথম অবস্থান থেকে ছিটকে তৃতীয় স্থান পেয়েছে ভুটান। ৩৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট নিয়ে দেশটি ১৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ভারত। এই তিন দেশের বৈশ্বিক অবস্থান যথাক্রমে ১৫০, ১৫২ ও ১৫৯তম। গত বছরের ১৬১ থেকে দুই ধাপ এগিয়ে এবার ১৫৯তম অবস্থান পেয়েছে ভারত।

আফগানিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বশেষ স্থান পেয়েছে। ২৬ ধাপ পিছিয়ে দেশটির বৈশ্বিক অবস্থান ১৭৮তম, পয়েন্ট মাত্র ১৯ দশমিক ০৯। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জের দিক দিয়ে গোটা বিশ্বে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক কর্মস্থল হিসেবে মিয়ানমার, চীন, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

বৈশ্বিক সূচকে শীর্ষস্থান অটুট রেখেছে নরওয়ে। তাদের পয়েন্ট ৯১ দশমিক ৮৯। শীর্ষ দশের বাকি দেশগুলো হলো ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, পর্তুগাল, আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সাংবাদিকরা কতটুকু স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেন, তা যাচাই করা হয়। এই সূচকে পাঁচটি বিষয় আমলে নেওয়া হয়। এগুলো হলো—রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, আইনি অবকাঠামো, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও নিরাপত্তা।

মুক্ত গণমাধ্যম   বাংলাদেশ   পাকিস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চলন্ত ট্রেনে স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী

প্রকাশ: ০৩:৫৬ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলন্ত ট্রেনে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সাক্ষী হলেন যাত্রীরা। স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে পালালেন স্বামী। গত ২৯ এপ্রিল ভারতের জাহাংসি জংশনে এ ঘটনা ঘটে। 

২৮ বছর বয়সি মোহাম্মাদ আরশাদ তার ২৬ বছর বয়সি স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তালাকের এ ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।

পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আরশাদের চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিয়ে হয়েছিল আফসানার সঙ্গে। বিয়ের পর দুজনে ভোপালে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে কানপুরের পুখরায়ানে যান দুজনে। সেখানে আরশাদের পৈতৃক বাড়ি। কিন্তু সেখানে গিয়েই চমকে যান আফসানা। জানতে পারেন আরশাদের আরও এক স্ত্রী রয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে আরশাদ ও তার মা আফসানার কাছে যৌতুকের দাবি করতে থাকে। 

অভিযোগ, মারধরও করা হয় আফসানাকে। এরপর স্ত্রী আফসানাকে নিয়ে ভোপালে ফিরছিলেন আরশাদ। ঝাঁসি স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুখে স্ত্রীকে তিন তালাক দেন আরশাদ। এরপরই ট্রেন থেকে নেমে যান। 

এ ছাড়া স্ত্রীকে চলন্ত ট্রেনে মারধরও করেছিলেন আরশাদ। ট্রেন ঝাঁসিতে থামতেই জিআরপিকে সমস্ত ঘটনা জানান আফসানা। এরপরই আফসানাকে ফেরত পাঠানো হয় আরশাদের পৈতৃক বাড়িতে। ঘটনায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। আরশাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। 

গোটা ঘটনার কথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও জানিয়েছেন আফসানা। স্বামীর কড়া শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। 

পুলিশের সার্কেল অফিসার জানিয়েছেন, আফসানার অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা থেকে রেহাই পাইনি তার বাবা-মাও।


ভারত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন