ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেন যুদ্ধ যেভাবে পুতিনকে আরও বদলে দিল

প্রকাশ: ১১:২২ এএম, ১১ জানুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

ইউক্রেন যুদ্ধের পেরিয়ে গেছে দুই বছর। আর এই দুই বছরে  ভ্লদিমির পুতিন দমে যাওয়ার পরিবর্তে  হয়ে উঠেছেন আরও বেশি পরক্রমাশালী ও আত্মবিশ্বাসী। তিনি এমন একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে ২০২৪ সাল শুরু করেছেন, যাকে দেখে মনেই হয় না এই যুদ্ধ বিগ্রহকে তিনি আর পাত্তা দিচ্ছেন। ইউক্রেনকে তো অবশ্যই নয়।

মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ান বীরদের শিরোপা প্রদান করেন। এই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত পুতিনের নির্বাচনী প্রচারণায় মূল বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে পুতিন বিশ্বাস করেন, তিনিই এ যুদ্ধে বিজয়ী হবেন।

পুতিন ভালো করেই বোঝেন পশ্চিমাদের বাসনা মেটাতে গিয়ে ইউক্রেন তাদের যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই, এ যুদ্ধে পুতিনের অতি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী অবশ্যই ইউক্রেন নয়। বয়ানটি সত্যিকার অর্থে রাশিয়ার নেতারা বিশ্বাস করেন। এই বয়ান তাঁরা খুব সফলভাবে রাশিয়ার জনগণের ওপরও চাপিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে, ২০২৩ সালে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখ করার মতো কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি, তবে কোনো ভূখণ্ডও তারা হারায়নি।

অন্যদিকে উচ্চ প্রত্যাশাজাগানো ইউক্রেনের পাল্টা-আক্রমণের তেমন বড় কোনো অর্জন নেই এবং কোনো কৌশলগত অগ্রগতি ছাড়াই এই আক্রমণ শেষও হয়েছে বলা যায়। ক্রেমলিনের আনন্দের বড় উপলক্ষ এটি।

যারা য্রা আশা করেছিল রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে এবং পুতিনের জমানা অবসান হবে—বাস্তবে তাদের সে আশা ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। বরং সামরিক ব্যয় বাড়ার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতিতে এমন সচলতা তৈরি হয়েছে, যেটা আগে দেখা যায়নি।

বিভিন্ন খাতেই রাশিয়ার অগ্রগতি চোখে পড়ার মত। রাশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৈশ্বিক জিডিপির গড় হারের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে। সময়ে মজুরি বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। রুশ অর্থনীতির এই অতি সচলতা উল্টো ফল বয়ে আনতেও পারে, কিন্তু সেটা খুব শীঘ্রই ঘটবে না এবং উল্টে-পাল্টে দেওয়ার মতো কোনো বিপর্যয়ও এই দেশে হবে না।

তাই, পুতিন সরকার এখন আগের চেয়ে বেশি স্থিতিশীল। এই যুদ্ধ পুতিনকে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের মুখও বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

ওয়াগনার গ্রুপের সশস্ত্র বিদ্রোহ পশ্চিমা বহু বিশ্লেষকদের মনে ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, এবার মনে হয় দমে যাবেন পুতিন। কিন্তু তাদের একদম ভুল প্রমাণিত করে যেন মুখে চুনকালি লেপে দিয়েছেন পুতিন। শেষ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ কোনো ফলই বয়ে আনতে পারেনি।

এই যুদ্ধ পুতিনকে মোটেই দুর্বল করেনি। ব্রং, পুতিন হয়েছেন আগের থেকে আরও বেশি শক্তিশালী। ভবিষ্যতে পুতিন দুর্বল হবেন, সেই আলামতও দেখা যাচ্ছে না।

কিন্তু পশ্চিমা অভিজাতদের পক্ষে এই ব্যাপার হজম করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। যুদ্ধে আনন্দ পান, এমন পশ্চিমা নেতারা সামরিক সমাধানের জন্য চাপ দিয়ে চলেছেন। এতে সংঘাত বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

গত মাসে বেলজিয়াম সেনাবাহিনীর প্রধান মিশেল হফম্যান বলেন, রাশিয়া এখন মালদোভা ও বাল্টিক দেশগুলোকে আক্রমণ করতে চায়। হফম্যানের সুরে সুর মিলিয়ে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দূত ও যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নিক্কি হ্যালি ৫ জানুয়ারি টুইট করেন, রাশিয়া পোল্যান্ডে হামলা করতে চায়।

এখন যুদ্ধ যেখানটাতে দাঁড়িয়ে, সেখানে যদি কোনো বন্দোবস্ত হয়, তাহলেও ইউক্রেনকেই চড়া মূল্য দিতে হবে।

ইউক্রেন তাদের ভূখণ্ড খুইয়েছে, ঘরবসতি ও অবকাঠামো চোখের সামনে ধ্বংস হতে দেখেছে, বিশাল অংশের ভূখণ্ড মাইন ও ক্লাস্টার বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। ইউক্রেনের জনগণ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। তাঁদের হতাহতের সংখ্যাও অনেক, যা কিনা ইউক্রেন সরকার গোপন করে রাখতে চাইছে।

দশকের পর দশক ধরে যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হয়নি, সেই বিতর্কিত প্রশ্নগুলো এখন আবার সামনে চলে এসেছে। যুদ্ধটা কি এড়ানো যেত না? এক বছরের যুদ্ধসজ্জার পর কোনো ঘটনা পুতিনকে সর্বাত্মক আগ্রাসনের পথে ঠেলে দিল? রাশিয়ার চাপের মুখে ভেঙে না পড়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মেরুদণ্ড শক্ত করে দাঁড়িয়ে থাকতে কে সাহস জোগালো?

যুদ্ধের পক্ষের বিশ্লেষকেরা যেমনটা দাবি করেন, ইউক্রেন কি সত্যি সত্যি অস্তিত্ব-সংকটের মুখে পড়েছিল? ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার অলীক বাসনার কারণে অপূরণীয় মূল্য কি ইউক্রেনকে শোধ করতে হবে? জাতিগঠনের অধিকারের কথা বলে ইউক্রেন যেসব কর্মকাণ্ড করে (যেমন রুশ ভাষাকে জনপরিসর থেকে সরিয়ে দেওয়া, রাশিয়ান কবি ও কমিউনিস্ট বীরদের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা) চলেছে, তার খেসারত কতটা মূল্য দিয়ে তাদের শোধ করতে হবে?

রাশিয়ার সর্বাত্মক আগ্রাসন যখন দ্বিতীয় বছরে এসে পড়ছে তখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো তাদের দেশের ভেতরের বিরোধিতার কারণে ইউক্রেনকে সহযোগিতা দিতে সমস্যায় পড়েছে।

এবারের নববর্ষের আগে-পরে রাশিয়া ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। একের পর এক হামলা করে তারা ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ক্রেমলিন মনে করছে, এই হামলার মধ্য দিয়ে তারা ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার দামি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিঃশেষিত করে ফেলতে পারবে।

পরিকল্পনা অনুয়ায়ী, রাশিয়া যদি সেটা করতে পারে, তাহলে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা চালিয়েই ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে ফেলতে পারবে। তাতে অন্যদের কল্পনার চেয়ে দ্রুত ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী একেবারে ভেঙে পড়বে।

সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরুর পর যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ইউক্রেনের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। কয়েক দশক আগে যে শীতল যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ (সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন) সমাধানের হয়েছিল, এত বছর পর আবার সেই শীতলযুদ্ধ ফিরিয়ে এনে কী লাভ অর্জিত হলো পশ্চিমা মিত্রদের তা বলা যাচ্ছে না?

কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে যে নতুন ধরনের যে ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হলো, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলেও এর রেশ থেকেই যাবে। বরং এই শীতল যুদ্ধ আরও বড় আকার ধারণও করতে পারে। আর ইউক্রেন, রাশিয়া ও পুরো ইউরোপের জন্য এ শীতলতা মোটেই ভালো কিছু বয়ে আনবে না।


লেখা: লিওনিদ রাগোজা

সূত্র: আল-জাজিরা, ইংরেজি থেকে অনূদিত


রাশিয়া   ভ্লাদিমির পুতিন   রাশিয়া   রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাত   ইউক্রেন   ন্যাটো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে শতাধিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে মার্কিন পুলিশ প্রশাসন। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্কের সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয়েছে পুলিশি অভিযান। এ অভিযানে ক্যাম্পাস দুটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিন সমর্থকারীকে।

বুধবার (১ মে) মার্কিন এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাতে তাদের সরাতে ভবনে প্রবেশ করে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টারও কম সময়ের এ অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় কেউ আহত হয়নি বলেও দাবি পুলিশের।

এর আগে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের বড় একটি দল।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ওই অভিযানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র   কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রুডোকে ‘উন্মাদ’ বলায় বিরোধী নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কানাডার বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে দিনের বাকি অংশের জন্য পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এই পদক্ষেপের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী দলে থাকা কনজারভেটিভরা জরিপে বেশ এগিয়ে আছে এবং কার্বন ট্যাক্সের জন্য বিরোধী নেতা পিয়েরে পয়লিভের ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। এর ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলেও সমালোচনা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার এই বিরোধী নেতা হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই উন্মাদ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্মাদ নীতির অবসান কবে হবে?’

এই বক্তব্যের পর স্পিকার গ্রেগ ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তার মন্তব্যটি অসংসদীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এরপর তাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চারবার আহ্বান জানান লিবারেল এই স্পিকার।

তবে পয়লিভের প্রতিবারই সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এর পরিবর্তে তিনি চরমপন্থি বা মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করতে চান।

এই পর্যায়ে স্পিকার ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তিনি স্পিকারের কর্তৃত্বকে উপেক্ষা করছেন। এরপর তিনি বলেন: ‘আমি আপনাকে আদেশ দিচ্ছি, আপনি হাউস থেকে চলে যান ... দিনের অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য।’

এরপর পয়লিভের এবং তার বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা তখন চলে যান।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সঙ্গে পয়লিভেরের বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে তিনি (ট্রুডো) একজন চরমপন্থি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন।

কানাডা প্রধানমন্ত্রী   জাস্টিন ট্রুডো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিনেমা নয় বাস্তবে যুদ্ধ করছে রোবট!

প্রকাশ: ০৪:১০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হলিউড সিনেমাতে হরহামেশাই আমরা দেখে থাকি, অস্ত্র চালনা কিংবা হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট, যুদ্ধক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রোবট। কখনো মানুষের পক্ষে কখনো মানুষের বিপক্ষে বিরাট রোবট বাহিনী। এবার সিনেমাতে নয়, বাস্তবেই যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে রোবট। সিনেমায় দেখানো রোবটের মতো এত উন্নত প্রযুক্তির না হলেও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দেখা যাচ্ছে কিলার রোবটের ব্যবহার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অধ্যাপক টোবি ওয়ালশ বলেন, কিলার রোবট শুনলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মুভিতে দেখা রোবটের কথা মনে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলো এখন বাস্তবে হচ্ছে৷ এগুলো টার্মিনেটর রোবট নয়৷ এগুলো একধরনের ড্রোন যার ব্যবহার আমরা ইউক্রেন যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছি৷ এসব ড্রোনকে মানুষের চেয়ে কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পরিমাণ বাড়ছে৷

ট্যাঙ্ক, পরিখায় সৈন্য- ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার শুরুতে আমরা এমনটা দেখেছিলাম৷ কিন্তু পরবর্তীতে দুই পক্ষই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু করে৷ যেমন বায়রাক্তার ড্রোন৷ একেকটির দাম ১১ মিলিয়ন ইউরোর বেশি৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার কাছে থাকা অনেক অস্ত্রকে পরবর্তীতে এআই-সমৃদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে যুদ্ধে পরিবর্তন এসেছে৷ যেমন রাশিয়াকে আমরা এআই-সমৃদ্ধ গ্লাইড বোমা ব্যবহার করতে দেখেছি৷ আর ইউক্রেনের এআই-সমৃদ্ধ অস্ত্রের মধ্যে আছে ড্রোন৷ যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসে ইউক্রেন যে কার্যকর ও সফল ছিল, তার কারণ ছিল তারা পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিল৷

সামরিক সংঘাত মানে হলো, তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলোর অর্থ বুঝতে পারা৷ কত দ্রুত সেটা করা যাচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ৷ এআই সেটা করতে পারে ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷

মিউনিখের বুন্ডেসভেয়ার ইউনিভার্সিটির আক্সেল শুলটে বলেন, এখন অনেক কিছু স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাওয়ায় মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে শ্রম বিভাজন করতে গিয়ে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে হবে৷ মানুষের উদ্দেশ্য আছে, যন্ত্রের নেই৷ আমরা এসব যন্ত্রকে, এসব স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাকে, হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি৷

কিন্তু ড্রোন কি হিউম্যানয়েড কিলার রোবট বা টার্মিনেটর হতে পারে? আক্সেল শুলটে বলেন, টার্মিনেটর? না সেটা সম্ভব না৷ আমরা এখনো প্রযুক্তিগতভাবে অতদূর এগোইনি৷ হ্যাঁ, ইউটিউবে আমরা বস্টন ডাইনামিক্সের দারুন সব ভিডিও দেখি বটে৷ আমরা দেখি, গতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এসব যন্ত্রের দক্ষতা বেশ ভালো৷ তারা ডিগবাজি বা সে রকম কিছু দিতে পারে৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সেগুলো বিপজ্জনক কিলার রোবট হয়ে গেছে৷

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় দুই ট্রিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে- যা একটি রেকর্ড৷ ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে চীনও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ ২০২২ সালে রাশিয়া তার সামরিক বাজেট নয় শতাংশ বাড়িয়েছিল৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, যদি আপনার এমন বাহিনী থাকে যেটা এআই ব্যবহার করে, তাহলে, অন্য যারা এআই ব্যবহার করে না, তাদের চেয়ে আপনার কৌশল ভিন্ন হবে৷ এটা শুধু যন্ত্রের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঢোকানোর বিষয় নয়৷ এটা পুরো ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়: প্রশিক্ষণ, কৌশল, সংগঠন সবক্ষেত্রে৷

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৈরিতে কাজ করছে পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশ। শান্তিপূর্ণ প্রয়োজনে রোবট বানাচ্ছে তারা। তবে এসকল রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকলে নিঃসন্দেহে তা হবে ভয়ংকর।


যুদ্ধ   রোবট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ‘ভণ্ডামি’ করছে: রাশিয়া

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি)তদন্তের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এ আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সমর্থন করেছে। মস্কো ওয়াশিংটনের এই আচরণকে ‘কপট’ উল্লেখ করে বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি।

আইসিসি যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার তদন্ত করতে পারে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও সাত মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার তদন্ত করছে সংস্থাটি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ–পিয়েরে গত সোমবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্ত সমর্থন করে না । এ ছাড়া এই বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়টিতেও বিশ্বাস করে না তারা। তবে এর আগে গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছিল ন্যায়সংগত। ইউক্রেনে কথিত রুশ যুদ্ধাপরাধের বিবরণ আইসিসির কাছে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মস্কো বলেছে, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা পশ্চিমাদের অর্থহীন প্রয়াস। এর মধ্য দিয়ে তারা রাশিয়ার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। তারা ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধাপরাধ করেনি। তবে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করেছে। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন যে অপরাধ করেছে, তা এড়িয়ে গেছে পশ্চিমারা। তবে কিয়েভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইসিসির দেওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পুরোপুরি সমর্থন করে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তের বৈধতা স্বীকার করতে চাইছে না। জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান কপটতার শামিল।

রাশিয়া আইসিসির সদস্যদেশ নয়। ইসরায়েলও এর সদস্য নয়। তবে ২০১৫ সালে ফিলিস্তিন আইসিসির সদস্য হয়। গত শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আইসিসির কোনো সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলবে না; কিন্তু বিপজ্জনক একটি উদাহরণ তৈরি করবে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা অবশ্য আইসিসির আদেশ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তাঁদের ধারণা, আইসিসির পক্ষ থেকে গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলে অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। একই সঙ্গে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।


যুক্তরাষ্ট্র   ভণ্ডামি   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন