হামাস ও ইসরাইলের মধ্যকার সংঘাত ধীরে ধীরে শাখা প্রশাখা মেলে ধরেছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই আলোচনায় চলে এসেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। যুদ্ধের ঢেউ চলে গেছে লোহিত সাগর অবধি। গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে হামাসের প্রতি সমর্থন জানায় হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের সমর্থনের অংশ হিসেবে নভেম্বর থেকেই লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাহাজে ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের এই সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই ধারাবাহিক হামলার জবাবে গত বৃহস্পতিবার হুথিদের অন্তত ৩০টি অবস্থানকে লক্ষ্য করে ইয়েমেনে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হুথিরা এ হামলাকে 'বর্বরোচিত' বলে উল্লেখ করেছে।
কিন্তু কারও কারও মনে প্রশ্ন এসেছে কারা এই হুথিরা? আর কেনই বা গাজার পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে নেমেছে তারা? তাদের লক্ষ্য আসলে কি?
ইয়েমেনে গত এক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের একটি
পক্ষ হুথি, যারা আনসারুল্লাহ নামেও পরিচিত, যার অর্থ- আল্লাহর
সমর্থক। এটি একটি শিয়া ইসলামপন্থী রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন। নব্বই দশকে ইয়েমেনে এই
সংগঠনের জন্ম হয়েছিল। এটি প্রধানত জাইদি শিয়াদের নিয়ে গঠিত, সংগঠনটির নাম মূলত নেতৃত্বদানকারী
হুথি গোত্রদের থেকে এসেছে। তাদের নেতা হুসেইন আল-হুথি শিয়া
ইসলামের জাইদি ধারার অনুসরণে ধর্মীয় পুনর্জাগরণমূলক আন্দোলন শুরু করেন।
জাইদিরা কয়েক শতাব্দী ধরে ইয়েমেন শাসন করলেও
১৯৬২ সালে গৃহযুদ্ধের পর সুন্নিরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। সুন্নি
মৌলবাদ মোকাবিলা, বিশেষ করে সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া ওয়াহাবি মতবাদ মোকাবিলায়
আল-হুথি এই আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনই ক্রমে সশস্ত্র রূপ নেয়। ২০০৩ সালে ইয়েমেন
ইরাকে মার্কিন হামলাকে সমর্থন দিলে সুযোগটি কাজে লাগায় হুথিরা।
জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তাদের রাস্তায় নামিয়ে আনে হুথিরা। যার প্রতিক্রিয়ায় সালেহ সরকার প্রথমে হুসেইন আল-হুথির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আল-হুথিকে গ্রেপ্তারের আদেশ জারি করার কারণে ইয়েমেনে শুরু হয় হুথি বিদ্রোহ। ২০০৪ সালে সাদায় ইয়েমেনের সামরিক বাহিনীর হাতে কয়েকজন দেহরক্ষীসহ নিহত হন আল-হুথি। তারপর থেকে আন্দোলনটি বেশিরভাগ সময়েই তার ভাই আব্দুল মালিক আল-হুথির নেতৃত্বে সক্রিয় রয়েছে।
অস্ত্রের জোগানদাতা?
জানা গেছে, হুথিরা বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্র
পেয়েছে সৌদি আরবের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘাতের সময়। মার্কিনিদের দাবি, হুথি বাহিনী
ইরানের কাছ থেকে বিপুলসংখ্যক জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পেয়েছে। এছাড়া ইয়েমেনের
সেনাবাহিনীর কাছ থেকে তারা বেশ কিছু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে সেগুলো নিজেদের
মতো করে পরিবর্তন করেছে। এছাড়া তাদের কাছে আরও উন্নত অস্ত্র আছে। রাশিয়া ও চীনের ডিজাইন
করা অস্ত্রও তাদের কাছে আছে।
যেভাবে আক্রমণ চালায়:
হেলিকপ্টার ছাড়াও হুথিরা তাদের সাম্প্রতিক
হামলাগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক জাহাজে মনুষ্যবিহীন
উড়ন্ত যান বা কথিত ‘কামিকাজে ড্রোন’ ব্যবহার করে হামলা করেছে তারা। এর আগে তারা কাসেফ
ড্রোন ব্যবহার করতো। এছাড়া ভি-আকৃতির এয়ারক্রাফটের সাথে দূরপাল্লার সামাদ।
হুথিরা কতটা ক্ষমতাধর:
হুথিদের তৈরি মিসাইলের পরিসর, লক্ষ্যভেদী নিশানা ও মারণঘাতী সামর্থ্য সম্পর্কে ধারণা পেতে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সিএনএনকে আগে জানিয়েছিলেন, প্রথমদিকে ইরান থেকে আলাদা আলাদা সরঞ্জাম চোরাপথে ইয়েমেনে এনে স্থানীয়ভাবে অস্ত্র তৈরি করতো হুথিরা।
তিনি জানান, হুথিরা বেশ কার্যকর মডিফিকেশন ঘটিয়েছে, যার ফলে তাদের যুদ্ধাস্ত্রের বেশ উন্নতি ঘটেছে। এর ফলে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তারা দক্ষিণ ইসরায়েলের এইলাতে মধ্যম পরিসরের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে, যা পরে ভূপাতিতের কথা জানায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের জন্য হুথিরা এখনো তেমন বড় কোনো হুমকি না হলেও তাদের প্রযুক্তি লোহিত সাগরে বিপর্যয় ঘটাতে সক্ষম।
হুথির হামলায় যেভাবে অর্থনীতিতে নেমেছে ধস:
গত ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রায় প্রতিদিনই লোহিত
সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ টার্গেট করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে হুথিরা। এতে
নতুন করে বিশ্ব অর্থনীতির আকাশে ঘনঘটা তৈরি হয়েছে। হুথিদের হামলার এরইমধ্যে বিশ্বের
বৃহত্তম পাঁচটি শিপিং ফার্মের মধ্যে চারটি মায়েরস্ক, হাপাগ-লয়েড, সিএমএ সিজিএম গ্রুপ
ও এভারগ্রিন লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে। যার প্রভাবে বিশ্ব বাজারে বেড়েছে
তেলের দাম। গ্যাসের মূল্যও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বলে রাখা ভালো, হুথিদের হামলা এড়াতে চাইলে জাহাজগুলোকে আফ্রিকা হয়ে অধিকতর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। এতে খরচ বাড়বে বহুগুণে। বিমা খরচও বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে পণ্য পরিবহনের খরচও যদি বাড়ে তবে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের দামও বাড়িয়ে দেবে। এতে করোনা মহামারি পরবর্তী মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকারকে আরেকটি নতুন ধাক্কা সামলাতে হবে।
ইসরায়েলের অর্থনীতিতে প্রভাব:
ইসরায়েলের বেশিরভাগ বাণিজ্য হয় ভূমধ্যসাগরের মাধ্যমে, তবে হুথিদের হামলার প্রভাব এখনো সেভাবে পড়েনি। তবুও, ইসরায়েলের অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি বাড়ছে বলেই জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা একমত হয়েছেন যে, ইসরায়েলের অর্থনীতিতে হুথি বিদ্রোহীদের আক্রমণের প্রত্যক্ষ প্রভাব সীমিত হয়েছে, যত বেশি সময় ধরে ব্যাঘাত চলতে থাকবে, তার প্রতিক্রিয়া তত বেশি হতে পারে।
হুথিরা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে কয়েক ডজন হামলা চালিয়েছে যেগুলো তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করে। হুথিরা বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে আক্রমণে পর থেকেই লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে জাহাজ চলাচল ৪০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন ব্যাহত করছে। বিশ্বের কিছু বড় শিপিং অপারেটর আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্তের কেপ অফ গুড হোপের চারপাশে তাদের জাহাজগুলোকে পুনঃনির্দেশিত করেছে, ডেলিভারির সময়ও বিলম্বিত করেছে এবং তাদের নিয়মিত রুটে আরও ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার নটিক্যাল মাইল বা ৬ হাজার কিলোমিটার যোগ করেছে করেছে। যার প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্য পড়তে পারে বলেই মত দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
ইয়েমেনের অবস্থান এবং কৌশলগতভাবে এর গুরুত্ব:
হুথিরা যে সাগরে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে উঠেছে, এর পেছনে তাদের বড় শক্তি হল তারা যে অঞ্চলটা নিয়ন্ত্রণ করে সেটার অবস্থান। ইরান সমর্থিত হুথিরা ২০১৪ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে ইয়েমেনের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। যার মধ্যে আছে রাজধানী সানা, দেশটির উত্তর অংশ এবং লোহিত সাগরের উপকূল অঞ্চল। আর এটাই তাদের লোহিত সাগরের প্রবেশপথ হিসেবে খ্যাত বাব আল-মানদাব প্রণালির নিয়ন্ত্রণ দেয়, যা ইউরোপের সাথে এশিয়ার যোগাযোগের সংক্ষিপ্ততম পথ এবং এটি তাদের অস্ত্রের আওতার ভেতরে।
হুথিদের ভবিষ্যৎ:
অস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের প্রক্সি হিসেবে কাজ করতে পারে হুথিরা। হরমুজ প্রণালিতে ইরান যা করার হুমকি দিয়েছে, বাব আল-মান্দাব প্রণালিতে তারা ঠিক তা-ই করার সক্ষমতা রাখে। এই প্রণালি ইয়েমেনের একদম কোল ঘেঁষে চলে গেছে। এই প্রণালি আটকে দিলে লোহিত সাগরের মুখে ফাঁদ তৈরি করা সম্ভব। সেখান থেকে ইসরায়েলে হামলা করে তেমন একটা ফায়দা হবে না, তবে লোহিত সাগরে চলাচলরত জাহাজের ওপর হামলা করার জন্য এ অবস্থান যথাযথ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক মস্তিষ্কের ক্যানসার
মন্তব্য করুন
ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর পরিচালনার জন্য ভারত ১০ বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বিষয়ে বিবেচনা করছে, এমন যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
পাকিস্তান লাগোয়া ইরানের সীমান্তের কাছের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দরের উন্নয়নের জন্য তেহরান-নয়াদিল্লির মাঝে ২০১৬ সালে একটি প্রাথমিক চুক্তি হয়। সোমবার এই বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য ইরানের সাথে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রী এই চুক্তিকে ‘‘ভারত-ইরান সম্পর্কের ঐতিহাসিক মুহূর্ত’’ বলে অভিহিত করেছেন।
তবে ইরানের সাথে ভারতের চুক্তির বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ইরান-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত তিন বছরে ছয় শতাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে এবং ওয়াশিংটন সেগুলোর প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘‘যেকোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান— যারাই ইরানের সাথে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে; তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে যে, তারা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকির মাঝে নিজেদেরই উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।’’
তবে ওয়াশিংটনের এই বিবৃতির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
২০১৮ সালের শেষের দিকে ইরানের চাবাহার বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ভারত। বন্দরটি পাকিস্তানের স্থলপথ এড়িয়ে আফগানিস্তান এবং মধ্য-এশিয়ায় ভারতীয় পণ্য পরিবহন ও সরবরাহের একটি নতুন ট্রানজিট রুট খুলে দেয়। কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে আফগানিস্তানে ২৫ লাখ টন গম ও ২ হাজার টন ডাল পাঠানো হয়েছে।
ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) এবং ইরানের পোর্ট অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশন চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বলে সোমবার ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী— চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে আইপিজিএল অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের পাশাপাশি আরও প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এর ফলে এই বন্দরে ভারতের মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ৩৭০ মিলিয়ন ডলারে।
আর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, চুক্তিটি চাবাহার বন্দরে বড় বিনিয়োগের পথ পরিষ্কার করবে।
ভারত ইরান তেহরান চাবাহার বন্দর
মন্তব্য করুন
সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের নির্দেশেই পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দিয়েছেন বলে হাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় মাইকেল কোহেন এ কথা বলেন।
জবানবন্দি দেওয়ার সময় কৌঁসুলি সুসান হফিংগারের প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, “আমি যা করেছি, ট্রাম্পের নির্দেশনায় এবং তার লাভের জন্যই করেছি।'
কোহেনের এই বক্তব্য ঘুষের অর্থ প্রদানের নেপথ্যে যে ট্রাম্প ছিলেন, সে বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে কৌঁসুলিদের সুবিধা হবে।
একপর্যায়ে ফোন রেকর্ড বের করেন কৌঁসুলিরা। তারা দেখান যে, ঘুষ দেওয়ার ওই সময় ফোনে কথা বলেছিলেন ট্রাম্প ও কোহেন। কোহেন ২০১৬ সালের ২৮ অক্টোবর ট্রাম্পকে কল দিয়ে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেন। আর ওই দিনই স্টর্মির সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছিল।
কোহেন আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি স্টর্মির আইনজীবীর কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার হস্তান্তর করেছিলেন। স্টর্মি সমঝোতা চুক্তি এবং অতিরিক্ত নথিতে স্বাক্ষর করেছিলেন যা তাকে নীরব হতে বাধ্য করেছিল।
বিষয়টি ট্রাম্প জানতেন কি না- কৌঁসুলি সুসানের এমন প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, 'তাৎক্ষণিকই' জেনেছেন। তিনি বিষয়টি ট্রাম্পকে জানিয়েছেন। তাকে দেওয়া কাজটি যে সম্পন্ন হয়েছে তিনি তা জানতেন।
মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন আদালত। এ দিনও জবানবন্দি দেবেন কোহেন। সোমবার যখন কোহেন জবানবন্দি এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন, তখন আদালত কক্ষে বসা ট্রাম্পকে চোখ বন্ধ করে সেসব শুনতে দেখা যায়।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল স্টর্মিকে। ব্যবসায়িক রেকর্ডে এ তথ্য গোপন করেছিলেন ট্রাম্প।
মাইকেল কোহেন পর্ন তারকা ট্রাম্প
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তিনি।
সোমবার (১৩ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) প্লাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেলিন্ডা নিজেই। খবর রয়টার্সের।
ওই পোস্টে মেলিন্ডা গেটস লিখেছেন, বিল ও আমি একসঙ্গে যে ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছিলাম, তার জন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত। তবে বিল গেটসের সঙ্গে একটি চুক্তি মোতাবেক আমি ফাউন্ডেশন থেকে সরে যাচ্ছি। আমার হাতে বাড়তি ১২.৫ বিলিয় ডলার থাকবে নারী ও অসহায় পরিবারগুলোকে সহায়তায় কাজ করার জন্য।
মেলিন্ডার এ ঘোষণার পরপরই এক্স পোস্টে বিল গেটস লেখেন, মেলিন্ডার চলে যাওয়াতে আমি দুঃখিত। তবে আমি নিশ্চিত, ভবিষ্যতে সে তার জনহিতকর কাজে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।
আগামী ৭ জুন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে শেষ কর্মদিবস কাটাবেন মেলিন্ডা। মেলিন্ডা গেটস ২০০০ সালে তার তখনকার স্বামী বিশ্বের অতি ধনী বিল গেটসকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন গঠন করেছিলেন। এ ফাউন্ডেশন থেকে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। বিশ্বে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনাকারী সবচেয়ে বড় সংস্থা এই ফাউন্ডেশন।
২৭ বছরের সংসার জীবনের ইতি টেনে ২০২১ সালে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন বিল ও মেলিন্ডা গেটস। তবে দুজনই তাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন।
বর্তমানে বিশ্বে জনস্বাস্থ্য নিয়ে যেসব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কাজ করে, সেগুলোর অন্যতম বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এই ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিবছর শত শত কোটি ডলার ব্যয় করা হয়ে থাকে।
ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, বিল ও মেলিন্ডা গেটস দম্পতি নিজেদের অর্থ থেকে এই ফাউন্ডেশনে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছেন।
গেটস ফাউন্ডেশন মেলিন্ডা গেটস বিল গেটস
মন্তব্য করুন
ইরানের সঙ্গে চাবাহার বন্দর পরিচালনার জন্য ভারত ১০ বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বিষয়ে বিবেচনা করছে, এমন যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের নির্দেশেই পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দিয়েছেন বলে হাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন। সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় মাইকেল কোহেন এ কথা বলেন। জবানবন্দি দেওয়ার সময় কৌঁসুলি সুসান হফিংগারের প্রশ্নের জবাবে কোহেন বলেন, “আমি যা করেছি, ট্রাম্পের নির্দেশনায় এবং তার লাভের জন্যই করেছি।'