গত বছর থেকেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জ্বলন্ত উনুন হয়ে আছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। এমন পরিস্থিতিতে একই সঙ্গে কয়েকটি ফ্রন্টে ইরানপন্থিদের হামলার জবাবে ১ এপ্রিল তেহরানকে সতর্ক করতে দামেস্কের ইরানি দূতাবাসে হামলা চালিয়ে বসে তেলআবিব, পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় রোববার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তেহরান। পাল্টা এ হামলার কড়া জাবাব দেওয়ার কথা জানায় ইরাসয়েলি সামরিক বাহিনী। তারপরই বৃহত্তর যুদ্ধ নিয়ে নিজেদের স্পষ্ট অবস্থান জানায় ইরান।
শনিবার রাতে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ইরান। এ প্রতিক্রিয়া সীমিত ও নির্ধারিত হবে বলেও জানায় ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।
তবে বর্তমানে ইরানের হামলার জবাব ইসরায়েল কীভাবে দেবে, সেটার ওপরই নির্ভর করছে চলমান সংঘাত কোন দিকে গড়াবে। বিবিসির নিরাপত্তা সংবাদদাতা ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার জানান, মধ্যপ্রাচ্যে ও বিশ্বের অন্যত্রও বহু দেশ এই পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছে। এর মধ্যে এমন অনেক দেশও আছে, যারা ইরানের সরকারকে ঘোরতর অপছন্দ করে। কিন্তু এখন তারাও চাইছে ইসরায়েল যেন নতুন করে এই হামলার জবাব দিতে না যায়।
অন্যদিকে ইরানের মনোভাবটা অনেকটা এই ধরনের: ‘অ্যাকাউন্ট সেটলড – মানে শোধবোধ হয়ে গেছে। ব্যাস, বিষয়টার এখানেই ইতি টানলেই ভালো।’ ইরানের মানসিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, তবে হ্যাঁ, যদি আবার আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানে ইসরায়েল সেক্ষেত্রে আমরা অনেক শক্তিশালী হামলা চালাব। যেটা প্রতিহত করা তোমাদের সাধ্যে কুলোবে না।
বিবিসির পার্সিয়ান বিভাগও বলছে, গত রাতের হামলার পরিণতিতে ইরানের কর্তৃপক্ষ তো বটেই, দেশের সাধারণ মানুষও বেশ খুশি। তেহরানের রাস্তায় নেমে তারা উল্লাসও করেছেন। ইসরায়েল যদি নতুন করে আর হামলা না-চালায়, তাহলে ব্যাপারটা এখানেই মিটে যাওয়া ভালো। এমন একটা মানসিকতাও তেহরানে কাজ করছে। কিন্তু ইসরায়েল ইতোমধ্যেই ‘রীতিমতো কড়া জবাব’ দেয়ার অঙ্গীকার করে বসে আছে।
ইসরায়েলে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে এই মুহুর্তে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, তাকে অনেকেই সেদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘কট্টরপন্থী’ বা হার্ডলাইন সরকার বলে বর্ণনা করে থাকেন। গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের চালানো অতর্কিত হামলার জবাব দিতে ইসরায়েল সময় নিয়েছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তবু ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা একটানা গাজা ভূখণ্ডে তীব্র অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে গাজাকে যেন তারা প্রায় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চাইছে।
ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার মনে করেন, ইসরায়েলের ‘ওয়ার ক্যাবিনেট’ বা যুদ্ধ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা ইরানের এই প্রত্যক্ষ হামলার কোনও জবাব না-দিয়ে হাত গুটিয়ে থাকবে। এই সম্ভাবনা আসলে খুব ক্ষীণ। তাহলে ইসরায়েলের সামনে এখন কী কী রাস্তা বা ‘অপশন’ খোলা আছে?
প্রথমত, হতে পারে তারা ওই অঞ্চলে তাদের প্রতিবেশীদের কথায় আমল দেবে এবং একটা ‘স্ট্র্যাটেজিক পেশেন্স’ বা ‘কৌশলগত ধৈর্য প্রদর্শনে’র রাস্তায় হাঁটবে। এর অর্থ হলো, সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে কোনও পাল্টা হামলা না-চালিয়ে তারা ওই অঞ্চলে ইরানের যেসব ‘প্রক্সি অ্যালাইজ’ বা শরিকরা আছে, তাদের ওপর অভিযান চালিয়ে যাবে। এর মধ্যে আছে লেবাননের হেজবোল্লাহর মতো গোষ্ঠী কিংবা সিরিয়াতে ইরানের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ কেন্দ্রগুলো।যার বিরুদ্ধে ইসরায়েল বিগত বহু বছর ধরেই হামলা চালিয়ে আসছে।
দ্বিতীয়ত, ইরান যে ধরনের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা ঠিক সেই রকম ‘সাবধানে ও মেপে মেপে’ (‘কেয়ারফুলি ক্যালিব্রেটেড’) হামলা চালাতে পারে। যার নির্দিষ্ট লক্ষ্য হবে ইরানের সেই মিসাইল বেসগুলো, যেখানে থেকে গতরাতের হামলা চালানো হয়েছিল। তবে ইসরায়েল যদি এই অপশনটা বেছে নেয়, তাহলে ইরান সেটাকেও ‘এসক্যালেশন’ বা যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবেই দেখবে। কারণ বহু বছরের বৈরিতা সত্ত্বেও ইসরায়েল ইতিপূর্বে কখনওই সরাসরি ইরানের ভূখণ্ডে কোনও হামলা চালায়নি। বরং তারা ওই অঞ্চলে ইরানের সঙ্গী বা প্রক্সি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আক্রমণেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছে।
তৃতীয় পথ হতে পারে ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টায় আরও একধাপ এগিয়ে গেলো। ইরান যেভাবে হামলা চালিয়েছে তার চেয়ে অনেক শক্তিশালী পাল্টা চালাল। সেক্ষেত্রে তারা শুধু নির্দিষ্ট মিসাইল বেসগুলোই নয়, ইরানের অত্যন্ত শক্তিশালী রিভোলিউশনারি গার্ডসের ঘাঁটি, প্রশিক্ষণ শিবির ও কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারগুলোকেও আক্রমণের নিশানা করবে।
ইসরায়েল যদি এই শেষ দুটো অপশনের কোনোটা বেছে নেয়, তাহলে ইরানকেও অবশ্যই আবারও পাল্টা আঘাত হানার পথে যেতে হবে। আর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, এই সংঘাতে কি আমেরিকাও জড়িয়ে পড়তে পারে? পরিস্থিতি কি এমন দাঁড়াতে পারে, যাতে মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী আর ইরানের মধ্যেও পুরোদস্তুর গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়? মনে রাখতে হবে, উপসাগরীয় (গালফ) আরব অঞ্চলের ছয়টি দেশেই মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আছে। এছাড়া তাদের সামরিক ঘাঁটি আছে সিরিয়া, ইরাক ও জর্ডানেও।
বহু বছরের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান যে ব্যালিস্টিক ও অন্য নানা ধরনের মিসাইলের বিপুল ভাণ্ডার তৈরি করেছে। মার্কিন এই সামরিক ঘাঁটিগুলো সেসব ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানায় পরিণত হতে পারে। ইরান দীর্ঘদিন ধরেই আর একটা হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। তারা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে।
কৌশলগতভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সমুদ্রপথটি যদি ইরান মাইন, ড্রোন ও ফাস্ট অ্যাটাক ক্র্যাফট দিয়ে বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত রুটটি অচল হয়ে পড়বে। বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের এক-চতুর্থাংশ স্তব্ধ হয়ে যাবে। অবধারিতভাবে সেটা হবে একটা দুঃস্বপ্নের মতো পরিস্থিতি। যে কারণেই বিশ্বের প্রায় সব শক্তিধর দেশ সেই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবিসির পার্সিয়ান বিভাগের সাংবাদিক জিয়ার গোল জানান, ইরানের রিভোলিউশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) ইসরায়েলের ওপর ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালানোর পর দেশটিতে সরকারের সমর্থক বহু মানুষ তেহরানের রাজপথে নেমে এসে আনন্দোল্লাস করতে থাকেন।
মধ্যপ্রাচ্যে যেসব দেশ ইরানের মিত্র বা শরিক হিসেবে পরিচিত। তাদের মধ্যে এবং ইরানের ভেতরেও সমর্থকদের মধ্যে আইআরজিসির গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য এই হামলা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইরানের চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি জানান, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে যেসব নিশানাকে লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছেন, এর মধ্যে সেদেশের নোটাম বিমানবাহিনী ঘাঁটিও (এয়ারফোর্স বেস) ছিল।
দু’সপ্তাহ আগে যে ইসরায়েলি এফ-৩৫ বিমানগুলোর চালানো হামলায় দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে সাতজন আইআরজিসি কমান্ডার নিহত হয়েছিলেন। সেই যুদ্ধবিমানগুলো এই ঘাঁটি থেকেই উড়ে গিয়েছিল। মেজর জেনারেল বাঘেরি এটাও জানিয়েছেন, ইরান ‘লক্ষ্য অর্জন করেছে’ এবং অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কোনও অভিপ্রায় তাদের নেই।
তবে ইরানিয়ান প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, নতুন করে (ইরানের বিরুদ্ধে) কোনও হামলা চালানো হলে ইরান অনেক কঠোর প্রত্যুত্তর দেবে। বিবিসির সংবাদদাতা জিয়ার গোল জানান, সার্বিকভাবে মনে হচ্ছে ইরানের ‘মুড’ এখন ডি-এসক্যালেশন বা উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষেই। সেদেশের শীর্ষ সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তাদের কথাবার্তা থেকে মনে হচ্ছে তারা গত রাতের হামলার পরিণামে ‘সন্তুষ্ট’।
তাছাড়া ইরান ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা সংহত করার জন্য প্রচুর সময় দিয়েছে। তাতেও মনে করার যথেষ্ঠ কারণ আছে, তারা নতুন করে আর কোনও হামলা চালাতে ইচ্ছুক নয়। যাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি হতে পারে। কিন্তু ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পরিণতি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যায়, তা যেহেতু কোনও একটি পক্ষের ওপর নির্ভর করছে না।তাই আপাতত সারা দুনিয়াকেই পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখতে হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
মন্তব্য করুন
দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের একটি বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
শহরের আল-জুহুর আশপাশে আঘাত হানা হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ওয়াফা নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফাহ শহরের পশ্চিমে তাল আল সুলতানপাড়ায় একটি বাড়িতে ইসরাইলি বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মধ্য গাজার বুরেজ ক্যাম্প লক্ষ্য করে বোমা হামলায় আরও ৯ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চললেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহ নগরীতে অভিযান চালানো হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চলার মাঝে নেতানিয়াহু এ কথা বলেন।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫৯৬ জনে। এ ছাড়া ইসরাইলি বর্বর আক্রমণে আরও ৭৭ হাজার ৮১৬ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ৫১ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মন্তব্য করুন
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মচারী বলে দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই নারী হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানান। যদিও এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যপাল। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত।
এদিকে এই মুহূর্তে কলকতায় অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার রাত তিনি রাজভবনেই কাটিয়েছেন। মোদী কলকাতায় আসার আগেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ওই নারী।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারী হেয়ার স্ট্রিট থানায় এসেছে। লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারাও রয়েছেন থানায়। রয়েছেন ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।
এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে রাজ্যপালের। তবে জমিজমা সংক্রান্ত কোনো দেওয়ানি মামলা করা যেতেই পারে।
তথাগত আরও বলেন, এই ধরনের অভিযোগ অতীতে উঠেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। ফলে আদালতে বিষয়টি গেলে কী হবে, তা আমার জানা নেই। সুপ্রিম কোর্ট একে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবে, তা তো বোঝা সম্ভব নয়।
ওই নারীর অভিযোগ নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সাগরিকা ঘোষ এরই মধ্যে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ভয়াবহ! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় যাচ্ছেন। রাজভবনে তার রাত্রিবাস করার কথা।
তবে গোটা ঘটনার নেপথ্যে চক্রান্ত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তথাগত। তিনি বলেন, আমি আনন্দ বোসকে অনেক দিন ধরে চিনি। দক্ষ আইএএস অফিসার ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগের পিছনে কোনো চক্রান্ত আছে বলেই মনে হয়। বিভিন্ন দুর্নীতি ও সন্দেশখালিকাণ্ড থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেও এ রকম অভিযোগ তোলা হয়ে থাকতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যপাল যৌন হয়রানি
মন্তব্য করুন
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক
রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ১১২টি দেশ এই রেজ্যুলেশনটিতে কো-স্পন্সর
করেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের
স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজ্যুলেশনটি
উত্থাপন করেন।
স্থায়ী মিশন বলছে, এ বছর আলোচ্য রেজ্যুলেশনটি একটি বিশেষ তাৎপর্য
বহন করে। কেননা এ বছরে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি ২৫তম বর্ষে পদার্পণ
করেছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের
মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়।
এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশনটি জাতিসংঘ
সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে, যা শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতিকে উন্নীত করার জন্য
৮টি বিশেষ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে ‘শান্তির
সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।
প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বিভিন্ন
বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই
ক্রমবর্ধমান সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত
করতে হবে, সমতা ও সব মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে এবং সর্বোপরি যুদ্ধের
চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে।
এবারের রেজ্যুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচির
২৫তম বার্ষিকী যথাযথভাবে পালন ও উদযাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি
উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আহ্বান করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এছাড়া এ রেজ্যুলেশনে সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক
ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়াসহ
অন্যান্য অংশীজনদের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে যথাযথভাবে
এই বার্ষিকীটি পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে
রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি
আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের
একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের
পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।
রেজ্যুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির উপর সাধারণ পরিষদে
একটি সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বহুসংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে ।
এ সময় তারা শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির
কথা পুনর্ব্যক্ত করে। প্রতিনিধি দলগুলো জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত
করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
১১২টি দেশ এ বছর বাংলাদেশের এই রেজুল্যুশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে,
যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত
সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে।
জাতিসংঘ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজ্যুলেশন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সৌদি আরবের দাহরানের কিং ফাহাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবল বৃষ্টিতে একটি মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়েছে। সৌদির বিভিন্ন অঞ্চলে গত দুইদিন ধরে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। তবে মসজিদের ছাদ ভেঙে কেউ আহত হননি। কারণ ওই সময় সেখানে কেউ ছিলেন না।
নেটিজেনরা জানিয়েছেন, মসজিদটির বাইরের অংশের ছাদটি ধসে পড়েছে। মসজিদ সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে মূল ভবনের বাইরে স্টিলের এই ছাদটি স্থাপন করা হয়েছিল।
স্টিলের ছাদটির ওপর এতই পানি জমা হয়েছিল যে এটি আর ভার বহন করতে পারেনি। এরপর একটি পর্যায়ে এটি ভেতরের দিকে ধসে পড়ে। তখন মসজিদের ভেতর বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে এবং মসজিদে যেসব কার্পেট ছিল সেগুলো পানিতে ভিজে যায়।
কেউ একজন মসজিদের মূল ভবনের ভেতর থেকে ছাদ ভেঙে পড়ার মুহূর্তটি নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন।
বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটিতে সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্যাম্পাসে আসার বদলে অনলাইনে পাঠদান কর্মসূচি চলছে।
মন্তব্য করুন
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ১১২টি দেশ এই রেজ্যুলেশনটিতে কো-স্পন্সর করেছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজ্যুলেশনটি উত্থাপন করেন।