ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েল বনাম ইরান, কার কত শক্তি

প্রকাশ: ০৮:০৩ এএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভৌগোলিক অবস্থানে ইরান

ইরানের আয়তন ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ১৯৫ কিলোমিটার এবং  ইসরায়েলের আয়তন ২১ হাজার ৯৩৭ বর্গকিলোমিটার। ইরানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ইরাক, তুরস্ক, আরমেনিয়া, আজারবাইজান, তুর্কমেনিস্তান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের।

ভৌগোলিক অবস্থানে ইসরায়েল 

ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে মিসর, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননের। বিশ্বে ১০৮তম অবস্থানে থাকা ইরানের অন্য দেশের সঙ্গে সীমানার পরিমাণ ৫ হাজার ৮৯৪ কিলোমিটার। ইসরায়েলের আছে ১ হাজার ৬৮ কিলোমিটার।

ইরানের প্রাকৃতিক সম্পদ

ইরান প্রতিদিন উত্তোলন করে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল তেল। প্রুভেন অয়েল রিজার্ভের ক্ষেত্রে ইরানের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। তাদের প্রুভেন রিজার্ভ ২১ হাজার কোটি ব্যারেল। আর ইসরায়েল ১ কোটি ২৭ লাখ ব্যারেল প্রুভেন রিজার্ভ নিয়ে বিশ্বে ৭১তম অবস্থানে আছে।

ইসরায়েলের প্রাকৃতিক সম্পদ

ইসরায়েলের কোনো কয়লা খনি নেই। ইরান কয়লা উত্তোলনের দিক থেকে বিশ্বে ৪৩তম। প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে বিশ্বে ইরানের অবস্থান তৃতীয়, যেখানে ইসরায়েলের অবস্থান ৪০তম।

ইসরায়েলের বাজি আয়রন ডোমে

ইসরায়েল বরাবরই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে চমক দেখিয়ে এসেছে। দেশটির রয়েছে কয়েক স্তরের আধুনিক আকাশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত আয়রন ডোম। ইজরায়েলের রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমের তৈরি এটি। এটি নির্মাণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে বলে জানা যায়। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার জন্য ডিজাইন করা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের বিপরীতে আয়রন ডোম কম উচ্চতায় থাকা ওয়ারহেড রকেট আটকানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়রন ডোম হলো অ্যান্টি-রকেট, অ্যান্টি-মর্টার এবং অ্যান্টি আর্টিলারি সিস্টেম। এটা ২.৫ থেকে ৪৩ মাইল বা ৪ থেকে ৭০ কিমি দূর থেকে রকেট বা মিসাইল আটকে দিতে পারে। তারপর কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারে রকেটের পথ সম্পর্কে তথ্য পাঠায়। আয়রন ডোম হলো ব্যাটারির সিরিজ যা রাডারের মাধ্যমে শর্ট-রেঞ্জের রকেট শনাক্ত করে আটকে দেয়। প্রতিটি ব্যাটারিতে তিনটি বা চারটি লঞ্চার, ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং একটি রাডার থাকে।

২০২১ সাল পর্যন্ত ইজরায়েলের অন্তত দশটি আয়রন ডোম ব্যাটারি দেশজুড়ে মোতায়েন রয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিটি ব্যাটারি ৬০ বর্গমাইল জনবহুল এলাকাকে রক্ষা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আয়রন ডোম তার রেঞ্জের মধ্যে আসা রকেটকে প্রথমে শনাক্ত করে, তারপর তার পথ সম্পর্কে তথ্য পাঠায় কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারে। সেখানে দেখা হয় রকেটটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানবে কি না। যদি তাই হয় তখন আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে রকেটটিকে ধ্বংস করে। আর যদি দেখা যায় রকেট খোলা অঞ্চলে বা সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে তাহলে ছেড়ে দেওয়া হয়। তেল আবিবের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ অনুসারে, প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য আনুমানিক ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলার খরচ হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আয়রন ডোমে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এর কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালে। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১১ সালে এগুলো প্রথম মোতায়েন করা হয়। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ইসরায়েল প্রথমবার আয়রন ডোমকে সচল করে।

পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে লুকোচুরি

সামরিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের শক্তি ইসরায়েলকে এগিয়ে রেখেছে। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল তার পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার শক্তিশালী করেছে। যদিও দেশটি সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বা কত সংখ্যক রয়েছে- বিষয়টি স্বীকার করে না। তবে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এমন দেশের তালিকায় ইসরায়েলকে গণ্য করা হয়। ইসরায়েল পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার না করলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের সংগঠন ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের অনুমান, ইসরায়েলের হাতে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। অন্যদিকে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি, গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোর। অনেকেই ধারণা করেন ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। তবে ইরান সব সময়ই দাবি করে আসছে, তাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই এবং তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। এখন পর্যন্ত ইরান এবং ইসরায়েল-কোনো দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।

ভয়ংকর গোয়েন্দা দল ইসরায়েলের

ইসরায়েলের মোসাদকে বিশ্বের অন্যতম দক্ষ গোয়েন্দা বাহিনী ধরা হয়। বিশ্বজুড়ে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। ইরানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে ইসরায়েল বিভিন্ন সময় সফল গুপ্তচরবৃত্তি ও হামলার ইতিহাস রয়েছে মোসাদের। প্রতিশোধ, প্রতিরোধ সবক্ষেত্রেই বাহিনী এগিয়ে। ইরানকে ঠেকাতে গত দুই দশকে ইরানের সাত পরমাণু বিজ্ঞানীকেও গুপ্তহত্যা করেছে। এই সাতজন পরমাণু বিজ্ঞানী ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গুপ্তহত্যার শিকার বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছে কখনো গাড়িবোমা অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোল পরিচালিত মেশিনগানের নির্ভুল নিশানা। বিশ্লেষকরা দাবি করেন, ফিল্মি কায়দায় গুপ্তহত্যায় বিষাক্ত গ্যাস কিংবা ম্যাগনেটাইজ বোমার মতো ভয়ংকর বিস্ফোরক ব্যবহার করে মোসাদ। মোসাদ কর্তৃক ইরানি বিজ্ঞানী হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। ইরানের সবচেয়ে মেধাবী ও চৌকস পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদেহকে তেহরানের জনবহুল রাস্তায় রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগান দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ইরানে মোসাদ সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ও দুঃসাহসিক ঘটনাটি ঘটিয়েছিল ২০১৮’র জানুয়ারিতে। সেদিন ইরানের রাজধানীর প্রায় ৩২ কিমি দূরের একটি গোপন গুদাম থেকে পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক আট টন গোপন দলিল চুরি করে তেলআবিবে নিরাপদে নিয়ে গিয়েছিল!

ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডার

ড্রোন ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিকায়নে ইরানের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে বরাবরই শঙ্কিত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। এর সঙ্গে গত এক দশকে ইরানের মিত্রদেশগুলো আধুনিক যুদ্ধবিমান ও বিভিন্ন অস্ত্রের প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে বলেও পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে খবর প্রচার করেছে। সব মিলিয়ে বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তিধর হয়ে উঠেছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোর চেয়ে ইরানের কাছে সবচেয়ে বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন রয়েছে। দেশটির কাছে এমনো ড্রোন আছে, যেগুলো ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে। এসব ড্রোনের বিশেষত্ব হলো-এগুলো খুবই নিচ দিয়ে উড়তে পারে। ফলে ড্রোনগুলো রাডারে ধরা পড়ে না। এ ছাড়া ইরানের রয়েছে ক্রুজ ও জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ইসরায়েল। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডারকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি বলে উল্লেখ করেছে। ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম ইরানের এমন নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র-

খোররামশহর-৪ ক্ষেপণাস্ত্র (খাইবার)

পাল্লা : ২ হাজার কিমি।

দৈর্ঘ্য : ১৩ মিটার। ব্যাস : ১.৫ মিটার। ওজন : ৩০ টন।

ওয়ারহেড ওজন : ১৫০০ কেজি

গতি : বায়ুমন্ডলের বাইরে ১৬ ম্যাক/ বায়ুমন্ডলের ভিতরে ৮ ম্যাক।

হাজি কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : ১৪০০ কিমি

দৈর্ঘ্য : ১১ মিটার

ব্যাস : ৮৫ থেকে ৯৫ সেমি

ওজন : ৭ টন

ওয়ারহেড ওজন : ৫০০ কেজি

গতি : ৫ ম্যাক

খায়বার শেকান ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : ১৪৫০ কিমি

দৈর্ঘ্য : ১০.৫ মিটার

ব্যাস : ৮০০ মিমি

ওজন : ৪৫০০ কেজি

ওয়ারহেড ওজন : ৫০০ কেজি

গতি : ঘণ্টায় ৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি

সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : ২,০০০-২,৫০০ কিমি

দৈর্ঘ্য : ১৭.৫৭ মিটার

ব্যাস : ১.২৫ মিটার

ওজন : ২৩ টন

ওয়ারহেড ওজন : ৫০০ কেজির বেশি

গতি : ১২-১৪ ম্যাক

পাভে ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : ১,৬৫০ কিমি

উড়ন্ত উচ্চতা : ৫০ মিটারের কম

গতি : ৬০০-৯০০ কিমি/ঘণ্টা

ফাত্তাহ-২ ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : ১,৪০০ কিমির বেশি

দৈর্ঘ্য : ১২ মিটার

ব্যাস : প্রথম অংশ : ৮০ সেমি / দ্বিতীয় অংশ : ৫০ সেমি

ওজন : ৩,৫০০-৪,১০০ কেজি

ওয়ারহেড ওজন : ৫০০ কেজি

গতি : ৫ ম্যাক।

কদর ক্ষেপণাস্ত্র (ট্রিপল)

পাল্লা : ১, ৯৫০ কিমি পর্যন্ত

দৈর্ঘ্য : ১৫.৫-১৬.৫ মিটার

ব্যাস : ১.২৫ মিটার

ওজন : ১৭, ৪৮০ কেজি পর্যন্ত

ওয়ারহেড ওজন : ৭০০ থেকে ১০০০ কেজি

গতি : প্রায় ৯ ম্যাক

এমাদ ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : প্রায় ১,৭০০ কিমি

দৈর্ঘ্য : ১৫.৫ মিটার

ব্যাস : ২.১৮ মিটার

ওজন : ১,৭৫০ কেজি

শাহাব-৩ ক্ষেপণাস্ত্র

পাল্লা : প্রায় ২,০০০ কিলোমিটার

দৈর্ঘ্য : প্রায় ১৬ মিটার

ব্যাস : ১.২ মিটার

ওজন : ১,৭৮০ কেজি

ইরানের তুরুপের তাস হরমুজ প্রণালি

সরাসরি যুদ্ধের ময়দানে নয়, ইরানের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে হরমুজ প্রণালি। আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনের অধীনে হলেও হরমুজ প্রণালিতে ইরানের আধিপত্য রয়েছে। ইরান চাইলে যেকোনো সময় বন্ধ করে দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ এই ট্রান্সজিট। পশ্চিমা বিশ্ব এ নিয়ে সব সময় উদ্বিগ্ন। হরমুজ প্রণালির সবচেয়ে সংকীর্ণ অংশ থেকে ইরান এবং ওমানের দূরত্ব মাত্র ২১ মাইল। একদিকে পারস্য উপসাগর, অন্যদিকে ওমান উপসাগর ও আরব সাগর। এখানে সংযোগ স্থাপন করেছে এই প্রণালি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এশিয়া, ইউরোপসহ পুরো বিশ্বে তেল সরবরাহের একমাত্র পথ এটি। বিশ্বে প্রতিদিন ব্যবহৃত তেলের এক-পঞ্চমাংশ এই প্রণালি দিয়েই আনা-নেওয়া করা হয়। প্রতিদিন চলাচল করে অন্তত ৮৫টি তেলবাহী জাহাজ। শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ আট দেশ- ইরান, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের সঙ্গে পুরো বিশ্বের সমুদ্রপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই প্রণালি। বিশ্লেষকরা বলছেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম হবে আকাশচুম্বী। এর ধারাবাহিকতায় বাড়বে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে শিখ নেতা পান্নুন হত্যাচেষ্টায় ভারতের ‘র’ জড়িত

প্রকাশ: ০৭:৩০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইং’ (র) জড়িত বলে দাবি করেছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম ও হত্যার নির্দেশনার বিষয়ে এক বিশেষ প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে।  

মার্কিন নাগরিক পান্নুনকে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের বিরোধী হিসেবে তুলে ধরে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্রম যাদব নামে ‘র’ কর্মকর্তার ওপর তাকে হত্যার পরিকল্পনা কার্যকর করার দায়িত্ব ছিল। সাবেক ‘র’ প্রধান সামন্ত গোয়েল ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। ঘাতক দলকে বিক্রম ভাড়া করেছিলেন, পান্নুনের যাবতীয় গতিবিধির কথাও তাঁদের জানিয়েছিলেন তিনি। বিক্রম বার্তায় লিখেছিলেন, ‘এই হত্যা আমাদের অগ্রাধিকার।’

এই প্রতিবেদন তৈরিতে সাবেক ও বর্তমান ‘র’ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার দাবি করে ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও বিষয়টি জানতেন। বিদেশে অবস্থানরত ভারতবিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গিদের হত্যা করাই এখন ভারতের কৌশল। 

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, মাদক ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তাকে বিক্রম যাদবই জোগাড় করেছিলেন। দুজন দুজনকে আগে থেকেই চিনতেন। পান্নুন হত্যার দায়িত্ব নিখিলকেই দিয়েছিলেন বিক্রম। কানাডায় নিহত খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের মৃতদেহের ছবিও নিখিলকে পাঠানো হয়েছিল।

পান্নুন হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর বিক্রমকে ভারতের আধা সামরিক বাহিনীতেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ওই ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যে মামলা হয়েছে, তাতে ‘সিসি ওয়ান’ হিসেবে বিক্রমের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।

পান্নুন হত্যার ষড়যন্ত্রে ভারতের যোগসূত্র থাকার সন্দেহের কথা যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম বলেছিল। তার আগে কানাডায় নিহত খালিস্তানি নেতা নিজ্জারের হত্যায় ভারতের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেই অভিযোগের পর থেকে ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতি হয়।


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মোদির পতন ঘটাতে চাওয়া কে এই সুনীল কানুগোলু

প্রকাশ: ০৫:৩৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সুনীল কানুগোলুর নাম খুবই অপরিচিত। বললে কেউ মনে করতে পারবেন কিনা সন্দেহ যে, এই লোকটা কে? হ্যাঁ, এই সেই লোক, যিনি কংগ্রেসের ২০২৪ সালের নির্বাচনী কৌশল তৈরি করেছেন। যে কৌশলের কাছে নরেন্দ্র মোদি ধরা খেলেও খেতে পারেন। তবে বিভিন্ন পূর্বাভাস বলছে, মোদিই আবার জিতবেন। 

এই সুনীল কানুগোলু কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির কোর টিমের সদস্য। এই টিমের প্রধান প্রশান্ত কিশোর মার্কিন কোম্পানি ম্যাকেঞ্জি থেকে সুনীলকে ধরে এনেছিলেন। আর সেই টিমের সুফল নরেন্দ্র মোদি এখনো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোগ করছেন। 

প্রশান্তর মতো সুনীলও নরেন্দ্র মোদির সংস্পর্শ ত্যাগ করেছেন। বন্ধুমহলে তার বক্তব্য, মোদির ধর্ম-কেন্দ্রিক রাজনীতি তাঁর একেবারেই পছন্দ না। এই কারণে হয়তো বনিবনা হয়নি। সেজন্য প্রশান্ত কিশোরের মতো নিজের প্রতিষ্ঠান খুলে ফিরে এসেছেন নিজের রাজ্য কর্ণাটকে। ব্যাঙ্গালুরুর অফিসে বসে তিনি এবার কংগ্রেস দলকে পরামর্শ দিচ্ছেন। রাহুল গান্ধীসহ কংগ্রেসের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সাথে পরামর্শের জন্য তাঁকে নিয়মিত বাঙ্গালুরু-দিল্লি করতে হয়। 

প্রশান্ত কিশোর যেখানে প্রচারভিলাষী, সুনীল কানুগোলু সেখানে পুরোই উল্টো। তাঁর টিকিটিও দেখা যায় না কোথাও, এমনকি ছবিতেও। আল জাজিরার পক্ষ থেকে বারবার তাঁর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে সে চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত তাঁর ঘনিষ্ঠদের সাথে কথা বলে তারা সুনীলকে জেনেছে। 

এদিকে রাহুল গান্ধী তাঁকে রাজ্যসভার এমপি হতে বললে তিনি অবলীলায় তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। অথচ এই সুনীলের কারণে তেলেঙ্গানা উদ্ধার করতে পেরেছে কংগ্রেস। কর্ণাটকে সফল হয়েছে। অথচ সমস্যা হলো কংগ্রেস তাঁর সব পরামর্শ শোনে না। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের কথাই ধরুন। সুনীল কানুগোলু চেয়েছিলেন, কংগ্রেস এই নির্বাচনে একটি মন্ত্রের ভিত্তিতে পরিচালিত হোক। কিন্তু হয়নি। তাঁর বক্তব্য—যুক্তি দিয়ে কোনো নির্বাচনে জেতা যায় না। জিততে হয় আবেগ দিয়ে। সুনীলের কথা, ‘আমি একাধিক বিষয় নিয়ে নির্বাচনে লড়তে বিশ্বাসী নই। একটি একক আখ্যান থাকতে হবে, যেটি আপনি ঠেলে নিতে পারবেন।’ 

সুনীল কানুগোলুর নিজের প্রতিষ্ঠান ইনক্লুসিভ মাইন্ডস। এর সদর দপ্তর বেঙ্গালুরুতে। এক দশক আগেও কানুগোলু ছিলেন ম্যাকেঞ্জির একজন প্রাক্তন পরামর্শদাতা। নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদে তুলে ধরার রূপকার যারা তাদের একজন। এখন তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে কংগ্রেসের সাথে কাজ করছেন, যার মূল প্রধানমন্ত্রী মোদীর পতন। 

২০২২ সালের মে মাসে কানুগোলু আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগ দেন। তখন তাঁকে আট সদস্যের ‘টাস্ক ফোর্স-২০২৪’-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁর দায়িত্ব ছিল নয়টি রাজ্যে কংগ্রেসের প্রচারে নেতৃত্ব দেওয়া, যেখানে ২০২৪ সালে বিধানসভা নির্বাচন হবে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। 

কিন্তু কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি শুরুতেই কানুগোলুর পরিকল্পনা ও কাজকে সংকুচিত করতে বাধ্য করে। এখন তিনি প্ল্যান-বি নিয়ে কাজ করছেন। যেখানে ১০০–১২০টি নির্বাচনী এলাকায় নজর দেওয়া হয়েছে, যেখানে কংগ্রেসের জয়ের সুযোগ রয়েছে বা অন্তত জোর লড়াই করার মতো জায়গায় আছে। মোদির বিজেপির সাথে সমানে সমানে লড়ে যার ক্ষমতায় যাওয়ার লক্ষ্য ছিল, সেই জেনারেলকে অনেকটাই বাঁধা গতে হাঁটতে হচ্ছে। 

সে কারণে দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লোকনীতির সহপরিচালক সঞ্জয় কুমার বলছেন, ‘রাজনৈতিক পরামর্শদাতারা জাদুকর নন। একটি দল ভালো অবস্থায় থাকলে তারা একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সীমিত ভূমিকা পালন করে।’ তাঁর মতে, ‘এমন কোনো জাদুকর আছে, যে কংগ্রেসকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতিয়ে দিতে পারে? এমনকি ৫০ জন জাদুকরও কংগ্রেসকে জেতাতে পারবে না।’

সুনীল কানুগোলুর সাবেক সহকর্মী অভিমন্যু ভারতীর মতে, ‘নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দুটি উপায় আছে—হয় আপনি আপনার লাইন বড় করুন, অথবা আপনি অন্যদের লাইন কেটে ফেলুন।’ অভিমন্যু নিজেই এখন অনলাইনে স্কুল অব পলিটিক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালান। 

বন্ধু ও সহকর্মীদের মতে, কানুগোলু বিজেপির ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরোধী। যদিও ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় তিনি স্বীকার করেছেন যে, মোদির পক্ষ ত্যাগের জন্য আরও কিছু মৌলিক কারণ আছে তাঁর। 

কানুগোলু বিজেপির কোনো কিছুতে কোনো চ্যালেঞ্জ খুঁজে পাচ্ছেন না। কারণ ১০ বছর ধরে দলটি ক্ষমতায়। অন্যদিকে কংগ্রেস লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে আছে। ফলে এর মধ্যে একটা উত্তজনা আছে।

সাধারণ মানুষ জানে সুনীল কানুগোলু মূলত কর্ণাটকের একটি পিছিয়ে পড়া বালিজা সম্প্রদায়ের। কিন্তু তিনি চেন্নাইতে বড় হয়েছেন। সেখানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়েছেন। এরপর ম্যাকেঞ্জিতে যোগ দেওয়ার আগে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। লোকেরা জানে, তিনি তামিল, তেলুগু, কন্নড়, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন। তবে বলেন কম, শোনেন বেশি। 

সুনীল কানুগোলু দেখতে কেমন, তা বিশেষ কেউ জানে না। তিনি হুইস্কি-বিলাসী। গত ২৫ বছরে একবেলাও নিরামিষ খাবার খাননি। তিনি লম্বা, শুশ্রুমণ্ডিত ও সুগঠিত। তবুও তিনি প্রায়শই অদৃশ্য থাকতে পারেন। একবার এক প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সুনীলের ছবি ভেবে ভুল করে তাঁর ভাইয়ের ছবি দিয়েছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এক রাজনৈতিক পরামর্শদাতার অভিযোগ, ম্যাকেঞ্জিতে কাজ করার কারণে তাঁর বড় অহংকার আছে। এমনকি কংগ্রেসের মধ্যেও কানুগোলু নিজের বস। তিনি অন্যদের জন্য লক্ষণ রেখা টেনে দিয়েছেন। 

সুনীল কানুগোলু মনে করেন, নির্বাচনী সাফল্যের প্রধান কৃতিত্ব জনগণের, তারপর প্রার্থী ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের। যেমন ভারত জোড়ো যাত্রার সময় তিনি খুবই পরিকল্পিতভাবে রাহুল গান্ধীর ছবি ও বক্তব্য প্রচারের বিষয়টি সাজান। যে কারণে এরপর থেকে নেতা হিসেবে রাহুলকে অনেক বেশি ম্যাচিওর মনে হয়েছে।

চলতি নির্বাচনে সুনীল কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীসহ সব নেতাকে রামমন্দির নিয়ে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সেজন্য দেখবেন কংগ্রেসের প্রচারে কোথাও রামমন্দির নেই। এমনকি বিজেপিতে দুর্নীতিবাজ বিরোধী নেতাদের স্থান দিয়ে কটাক্ষ করে মোদি ওয়াশিং পাউডার নামে একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে কংগ্রেস। সুনীলের পরামর্শে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে কংগ্রেস।

বরং সুনীল দেশব্যাপী বর্ণ-শুমারির বা গণনার পক্ষে কথা বলে প্রান্তিক মানুষজনের সমর্থন পাওয়ার কথা বলেছেন। মোদি সরকার ১০ বছরের সমৃদ্ধির চিত্র এঁকে যে প্রচার চালাচ্ছে, তার পাল্টা বক্তব্য তুলে ধরতে বলছেন।  এরই প্রভাব দেখা যায় কংগ্রেসের প্রচারে, যেখানে বলা হচ্ছে—মোট সম্পদের ৭০ শতাংশ এখন ভারতের ২২টি পরিবারের হাতে। কেউ যদি গত ১৭ এপ্রিল রাহুল বা প্রিয়াঙ্কার নির্বাচনী প্রচারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার বিষয়টি দেখেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন বিষয়টি। তাঁরা বারবার বলছেন, আসুন বেকারত্ব, জিনিসপত্রের দাম, মানুষের কষ্ট, গণতন্ত্র, সংবিধান—এসব নিয়ে কথা বলুন; উত্তর দেব। কিন্তু এর বাইরে আর কিছু না। কারণ ওগুলোতে মানুষের কিছু যায়–আসে না, বরং দৃষ্টি ঘুরে যায়।

সুনীল কানুগোলু মনে করেন, নির্বাচনে হারলাম মানে এই নয় যে, সব শেষ হয়ে গেল। বরং ওই দিন থেকে কৌশল নির্ধারণ করে পরের লড়াইয়ের জন্য তৈরি হোন। তাঁর কথায়, ভবিষ্যতের কথা ভাবুন এবং এগিয়ে যান। প্রতিপক্ষের ভুল খুঁজতে থাকুন।

লোকসভা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পিছু হটছে ইসরায়েলি সেনারা!

প্রকাশ: ০৪:৫৪ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

৬ মাসের ও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হাসামকে পুরোপুরি নির্মূলের বার্তা দিয়ে আসছে ইসরায়েল। কিন্তু দীর্ঘ সময় যুদ্ধের পরেও নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন ইসরায়েলি সেনারা।

সম্প্রতি আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েলের ৩০ সেনা নিজেদের দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। প্যারাট্রুপার ইউনিটের সেনারা বলছেন, রাফাহ সীমান্তে অভিযানের জন্য ডাকা হলে তারা এতে সাড়া দেবেন না।

বর্তমানে গাজার সর্বশেষ নিরাপদ আশ্রয়স্থল হচ্ছে মিসরের রাফাহ সীমান্ত। এলাকাটিতে ইসরায়েল অভিযানের পরিকল্পনা করছে। এমন সময় দেশটির সেনারা এ মনোভাব জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব রিজার্ভ সেনাদের দায়িত্বে ফেরাতে জোর করবেন না কমান্ডাররা। দীর্ঘ এ যুদ্ধে সেনারা কতটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই বার্তায়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা করে। এতে ১ হাজার ২০০ এর বেশি নিহত হয়। হামাস যোদ্ধারা ধরে নিয়ে যায় কয়েকশ ইসরায়েলিকে। এরপর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নৃশংস আক্রমণ শুরু করে। সর্বাত্মক সামরিক অভিযানে তেলআবিব কোনো মানবিক নিয়ম মানছে না। নির্বিচারে নারী ও শিশুসহ বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছে।


ইসরায়েলি   সেনা   ফিলিস্তিন   যুদ্ধ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১২:১৭ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নাড়ছেন এক ব্যক্তি।  ব্যারিকেডের চারপাশে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। 

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করছে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাঁবু তৈরি করে অবস্থান কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোয় কয়েক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের টানা বিক্ষোভ চলছে। আটক করা হয়েছে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে। এতেও তাঁদের দমানো যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ক্যাম্পাসগুলোয় চলমান বিক্ষোভ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে।

১৯৬০–এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের পর যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ইসরায়েলবিরোধী এই আন্দোলন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সেই বিক্ষোভে ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল।

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছেন, তাঁদের এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিক্ষোভকে তাদের কার্যক্রমে ব্যাঘাত বলে মনে করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশের হাতে শিক্ষার্থীদের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। 

সর্বশেষ গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিদ্যাপীঠ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

এদিকে, গত সপ্তাহে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের অভিযোগে ১০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর এই বিক্ষোভ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

নিউইয়র্কের ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্কের ওপরে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের বিশেষ বাহিনী স্ট্র্যাটেজিক রেসপন্স গ্রুপকে (এসআরজি) ড্রোন নিয়ে সতর্ক টহল দিতে দেখা যায়। 

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘ইসরায়েলের বোমা, অর্থ দিচ্ছে এনওয়াইইউ, আজ কত শিশু হত্যা করেছ’, এমন প্রচারপত্র বিলির সময় ১২০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেন্ট লুইসে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৯০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


শিক্ষার্থী   বিক্ষোভ   যুক্তরাষ্ট্র   জর্জ ওয়াশিংটন   ফিলিস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ, শিক্ষার্থীদের চাপে পিছু হটল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

প্রকাশ: ১১:৩৪ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে টাবু টাঙিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের এ বিক্ষোভ বন্ধে আল্টিমেটাম জারি করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম প্রত্যাখান করায় শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে প্রশাসন।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভে থেকে সড়ে আসার আল্টিমেটাম দেয় প্রশাসন। এতে বলা হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিক্ষোভ থেকে সরে না আসলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তবে সময়সীমা শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা মাস্ক এবং উজ্জল টপস পরিধান করে মানব প্রাচীর তৈরি করেছে। যাতে পুলিশ তাদের তাবু ভেঙে দিতে না পারে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

এদিকে অস্টিনে অবস্থিত টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করায় বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।


ফিলিস্তিন   বিক্ষোভ   শিক্ষার্থী   কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়   প্রশাসন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন