ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতে করোনা কমছে কীভাবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২১


Thumbnail

করোনার ভয়ংকর তাণ্ডব পেরিয়ে কিছুটা ভালো জায়গায় ভারত। করোনার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করছে ভারত?

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। গত ৮ মে ভারতে একদিনে চার লাখ একশর বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত ১৯ এপ্রিল দিল্লিতে একদিনে ২৮ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন। সেই সময় দিল্লি সহ ভারতের অবস্থা শোচনীয় জায়গায় পৌঁছেছিল। হাসপাতালে জায়গা নেই। অক্সিজেন নেই। ওষুধের দাম আকাশ ছোঁয়া। মৃতদের দেহ সৎকার করতে লম্বা লাইন। উত্তর প্রদেশ ও বিহারের গঙ্গায় মৃতদেহের মিছিল। গোটা ভারত জুড়ে ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস আতঙ্ক।

সেখান থেকে ৪ অগাস্টে আসা যাক। সারা ভারতে দিনে এখন গড়ে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ। দিল্লিতে দিনে ৫০ থেকে ৬০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে দিল্লিতে প্রায় সব কিছুই খুলে গেছে। মেট্রো ও বাসেও যাত্রী নেয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো সীমা নেই। ভারতে কেরালা, মহারাষ্ট্র, উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে এখনো করোনায় বহু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গও পুরো স্বাভাবিক হয়নি। এই রাজ্যগুলোকে বাদ দিলে ভারতের অন্যত্র পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই ভালো।

 

অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে

কী করে সম্ভব হলো এইভাবে করোনার নিয়ন্ত্রণ? এমনিতে বিশ্বজুড়ে করোনার প্রবণতাই হলো, এর রেখাচিত্র ক্রমশ উপরে উঠতে থাকে। একেবারে উপরে উঠে তা নীচে নামতে থাকে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু এই প্রবণতার কথা বলে ভারতের করোনা পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। যে দিল্লিতে দিনে ২৮ হাজার মানুষ একদিনে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে সংখ্যাটা ৫০-৬০-এ নেমে আসার কারণ শুধু ভাইরাসের চরিত্র নয়।

দক্ষিণ দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা ফুসফুসের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থপ্রতিম বোস জানিয়েছেন, ``দিল্লিতে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসার কয়েকটি কারণ আছে। প্রথমত, দিল্লিতে টিকা দেওয়ার হার যথেষ্ট ভালো। দ্বিতীয়ত, দিল্লিতে কড়া লকডাউন দীর্ঘদিন চলেছে। ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির স্মৃতি মাথায় থাকার কারণে মানুষ মাস্ক পরছেন, দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। সব চেয়ে বড় কথা, টিকার কারণে ও করোনা হয়ে যাওয়ার ফলে একটা বড় অংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।``

পার্থপ্রতিম বোস মনে করেন, ``করোনার গ্রাফ একবার উপরে উঠবে, তারপর নীচে নামবে এটা ঠিক। এটা সব ভাইরাসের চরিত্র। কিন্তু সে কথা মাথায় রেখেই বলতে হচ্ছে, মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি না হলে, হার্ড ইমিউনিটি তৈরি না হলে করোনাকে ঠেকানো যাবে না। দিল্লি আজ যে অবস্থায় পৌঁছেছে, সেই অবস্থায় পৌঁছনো যাবে না।``

দিল্লিতে দীর্ঘদিন ধরে কড়া লকডাউন চালু ছিল। সেসময় কাছের দোকান-বাজার বা টিকা নিতে যাওয়া এবং খুব জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারতেন না। রাখলে পুলিশের কাছে জবাবদিহি করতে হত।

 

তিন কারণের মিলিত ফল

কলকাতার চিকিৎসক সাত্যকি হালদার মনে করেন, ভারতে যে করোনার বাড়বাড়ন্ত কমেছে, তার পিছনে তিনটি কারণ আছে। তিনি বলেছেন, ``ভারতে স্বাস্থ্য কর্মী, যারা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন, তারা আগে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। তাদের দুই ডোজ  টিকা দেয়ার পর অসুস্থ হওয়ার হার অনেকটাই কমেছে। দ্বিতীয়ত সাধারণ মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছেন। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন। তৃতীয় কারণ হলো, ভাইরাসের এপিডোমিয়োলজিকাল চরিত্র।`` তার ব্যাখ্যা, ``ভাইরাসের উত্থান যেমন থাকে, তেমনই পতন থাকে। ভাইরাস সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছে গেলে, তার সক্রিয়তা কমতে থাকে। তখন গ্রাফ নীচের দিকে নামে। এই সবকটি কারণ মিলেই ভারতের করোনার ভয়ংকর পরিস্থিতি অনেকটা  ভালো হয়েছে।``

সাত্যকি হালদার একটা উদাহরণ দিয়েছেন। বানের সময় সুন্দরবনে বাঁধ ভেঙে জল চলে আসে গ্রামের ভিতর। আবার সেই জল নিজে থেকে পরে চলেও যায়। কিন্তু সরকার বা গ্রামবাসীরা বাঁধ তৈরি করে। তাতে জোয়ারের জল আটকায়। কিন্তু আবার ভয়াবহ বান এলে সেই বাঁধ ভেঙে যায়। তেমনই ভাইরাসের রেখাচিত্র উপরে ওঠে এবং নীচে নামে এটা যেমন ঠিক, তেমনই এটাও ঠিক যে, করোনা প্রতিরোধে টিকা নিতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তাহলেই করোনার জোয়ার আটকানো যাবে।

 

দিল্লির সাফল্যের পিছনে

দ্য প্রিন্টের হেলথ এডিটর অবন্তিকা ঘোষ ভারতে করোনা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। প্রথম ঢেউয়ের সময় ভারতের পরিস্থিতি, কারণ, প্রাসঙ্গিক সব ব্যাখ্যা আছে সেই বইতে। অবন্তিকা বলেছেন, ``একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দিল্লিতে সেরোপজিটিভিটির (অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া)  হার ৮৬ শতাংশ। তার উপর দিল্লিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন। ফলে তাদের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।``

অবন্তিকার মতে, ``বিশ্বের অন্য জায়গায় এখন ডেল্টা, ডেল্টা প্লাসের কারণে করোনা বাড়ছে। কিন্তু দিল্লি তথা ভারতে ডেল্টা ও ডেস্টা প্লাসের তাণ্ডব সহ্য করে নিয়েছে। এখন ভাইরাস আবার কবে মিউটেট করবে, অ্যান্টিবডি কতদিন থাকবে, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে ভাইরাসের নতুন ও ভয়ংকর সংস্করণ যতদিন না আসছে, ততদিন আমরা কিছুটা ভালো সময় কাটাতেই পারি।`` বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মধ্যে টিকাকরণ যতটা সম্ভব বাড়াতে হবে।

 

চিন্তার কারণ

এরপরেও চিন্তা আছে। বেশ ভালোরকমই আছে। সরকার ও বিশেষজ্ঞরা আর ফ্যাক্টর নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত। আর ফ্যাক্টর মানে রিপ্রোডাকশন নম্বর বা আরটি। এর অর্থ হলো একজনের শরীর থেকে কতজনের মধ্যে করোনা ছড়াচ্ছে। ভারতে গড়ে আর ফ্যাক্টর হলো এক দশমিক দুই। তার কারণ, মহারাষ্ট্র, কেরালা সহ আটটি রাজ্যে আর ফ্যাক্টর বেশ বেশি। এখন তো যত মানুষের করোনা হচ্ছে, তার ৪৯ শতাংশই কেরালার।

কেন্দ্রীয় সরকারেরের করোনা টাস্ক ফোর্সের প্রধান ভি কে পল বলেছেন, ``আর ফ্যাক্টর শূন্য দশমিক ছয়ে নামিয়ে আনতে পারলে বলা যাবে করোনাকে বেশ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। কিন্তু দেশের ৪৪টি জেলায় এই হার ১০ শতাংশের বেশি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, "স্বাস্থ্যবিধি পালনের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র শিথিলতা চলবে না। অতিমারির দাপট এখনো আছে।"

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে, মাস্ক পরতে হবে, দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, দুই ডোজ টিকা নিতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাময়িক সাফল্য এসেছে মানে পরিস্থিতি যে আবার খারাপ হবে না, তার কোনো মানে নেই। বিশেষ করে এইমসের ডিরেক্টর গুলেরিয়া সহ অনেকের মতে, এরপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে। তবে তা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো অত ভয়ংকর নাও হতে পারে। তখন দিনে সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় লাখ মানুষ আক্রান্ত হবেন। সেই সংখ্যাটাও তো কম নয়। তাই তারা বারবার সেই প্রবাদটার কথাই শোনাচ্ছেন, সাবধানতার মার নেই। সূত্র: ডয়চে ভেলে



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রেকর্ড তাপমাত্রায় মিয়ানমার

প্রকাশ: ০৭:৫৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে মিয়ানমার। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। যা মিয়ানমারের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। খবর এপি ও দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার। 

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার।  সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়  ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৮.৭৬ ফারেনহাইট)। যা মিয়ানমারের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই তথ্যটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের আবহাওয়া বিভাগ।

আবহাওয়া বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোববার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় ম্যাগওয়ে রাজ্যের চাউক শহরে তাপমাত্রা পারদ ৪৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। ৫৬ বছর আগে রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু করার পর মিয়ানমারের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

একই দিন দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত ইয়াঙ্গুনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ছুঁয়েছে। এছাড়া দেশটির আরেক শহর মান্দালয়ে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের শুষ্ক সমতলে অবস্থিত চাউক শহরের একজন বাসিন্দা বলেছেন, 'এখানে অত্যন্ত গরম এবং আমরা সবাই বাড়িতেই ছিলাম।' নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমরা কিছুই করতে পারছি না।' 

দেশটির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে দিনের তাপমাত্রা এপ্রিলের গড়ের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) বলেছে,  ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে এশিয়ায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পড়েছে বেশি। এ কারণে এই মহাদেশের তাপমাত্রাও বাড়ছে। ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৮৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকি ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর এশিয়ার গড় তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৯১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। 


রেকর্ড   তাপমাত্রা   মিয়ানমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন অমিত শাহ

প্রকাশ: ০৭:৩০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অমিত শাহ অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বিহারের বাগুসারাই এলাকায় সোমবার এক নির্বাচনি র‍্যালিতে অংশ নেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা অমিত শাহ (৫৯)। র‍্যালি শেষে সেখানে একটি হেলিকপ্টারে উঠেন তিনি। 

উড্ডয়নের সময় সেই হেলিকপ্টার কিছু সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডান দিকে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছিল। মাটিতে আছাড় খাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন পাইলট।  

নিতীশ কুমারের দল জেডিইউয়ের সঙ্গে মিলে বিহারে ১৭টি আসনে লড়াই করছে বিজেপি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে গত ১৯ এপ্রিল এখানে চার আসনে নির্বাচন হয়। এরপর গত শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হয় আরও ৫ আসনে।


দুর্ঘটনা   অমিত শাহ   বিজেপি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাজস্থানে মসজিদের ভেতরে ইমামকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০৬:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ রাজস্থানের আজমিরে মসজিদের এক ইমামকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মুখোশ পরা অজ্ঞাত তিন দুর্বৃত্ত।  

শনিবার (২৯ এপ্রিল) আজমিরের একটি মসজিদের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, আজমিরের রামগঞ্জের কাঞ্চননগরে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে ছয় শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন মোহাম্মদ মাহির নামের ওই ইমাম। এ সময় আক্রান্ত হন তিনি। 

এনডিটিভি বলেছে, মুখোশ পরিহিত তিন দুর্বৃত্ত মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে মোহাম্মদ মাহিরের ওপর আক্রমণ চালায়। ওই সময় তাকে বেধড়ক লাঠিপেটা করে তারা। 

৩০ বছর বয়সী ইমাম মোহাম্মদ মাহির উত্তরপ্রদেশের রামপুরা এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মারধরের সময় ইমামের সন্তানরা চিৎকার করলে তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে তার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। শিশুরা যাতে সাহায্যের জন্য কাউকে ফোন না করতে পারে সেজন্য মোবাইল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

অভিযুক্তরা চলে যাওয়ার পর ইমামের শিশুরা মসজিদের বাইরে আসে এবং প্রতিবেশীদের ঘটনার বিষয়ে জানায়। পুলিশ বলেছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবীন্দ্র খিনচি বলেছেন, মসজিদের ভেতরে ওই ইমামকে পিটিয়ে হত্যার কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করছে। ইমামকে হত্যার ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার (হত্যা) আওতায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


রাজস্থান   মসজিদ   হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাতে নিহত ৫

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে কয়েক ডজন টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চার মাসের একটি শিশু আছে। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণ করা হয়েছে। এছাড়া ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে দুর্গত এলাকায় সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া পৃথক টর্নেডোতে কয়েক হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। টর্নেডোর আঘাতে মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মধ্যে ওকলাহোমা, আইওয়া, টেক্সাস, মিসৌরি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, গত শনিবার আঘাত হানা কিছু টর্নেডোয় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৮ কিলোমিটারের বেশি।

টেক্সাস থেকে মিজৌরি পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড়ঝঞ্ঝায় কোথাও কোথায় ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ওকলাহোমার সালফার শহরটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উল্টো গেছে অনেক গাড়ি। ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, এই দুর্যোগে প্রায় ১০০ ব্যক্তির আহত হয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্র   টর্নেডো   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাংলাদেশ কতটা পিছনে ফেলল পাকিস্তানকে?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ। সেই পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন চোখ এড়িয়ে যায় নি পাকিস্তানেরও। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ করাচিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, 'অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই।'

শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, 'যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের ওপর বোঝা হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু শিল্প প্রবৃদ্ধিতে তারা এখন অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করেছে। আর তাদের এ উন্নতির দিকে তাকালে এখন আমাদের লজ্জা লাগে।'

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ(এলডিসি) থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের পথে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এছাড়া, তৈরি পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সামনে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যদা পাবে বাংলাদেশ। তখন বিশ্বদরবারে দেশটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাকিস্তানের রাজনীতিতে কমবেশি সবসময়ই অস্থিরতা ছিল। সেখানে গণতন্ত্র প্রায় অনুপস্থিত থাকায় দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এটি কোনোভাবেই সাহায্য করেনি। যেখানে, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একধরনের স্থিতিশীলতা ছিল, যা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পেরেছে।

সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে সেগুলো হলো- 

১. মাথাপিছু আয়: পরিসংখ্যান অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৮০ টাকা, যা তৎকালীন ৯৪ মার্কিন ডলারের সমান। নব্বইয়ের দশকের পর বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয় এবং মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকে। 

বর্তমানে, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৬৫ ডলার। আর পাকিস্তানে ১ হাজার ৪৭১ ডলার।

২. জিডিপির প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশে এক দশক ধরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ অর্জন। অন্যদিকে, একই সময়ে পাকিস্তানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জিডিপির ৬ থেকে ৭ শতাংশ আসত শিল্প খাত থেকে। তখন পাকিস্তানে শিল্পের অবদান ছিল ২০ শতাংশ। 

বর্তমানে, বাংলাদেশে শিল্প খাতের অবদান জিডিপির ২৯ শতাংশ। বাংলাদেশে জিডিপির আকার ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আর পাকিস্তানের ৩৪৮ বিলিয়ন ডলার।

৩. রপ্তানি আয়: রপ্তানি আয়েও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেকর্ড পরিমাণ ৫ হাজার ৫৫৬ (৫৫.৫৬ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা রপ্তানি করেছে। 

অন্যদিকে, পাকিস্তান গত অর্থবছরে ৩ হাজার ২৫০ (৩২.৫০ বিলিয়ন) কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখন ৬০ শতাংশ বেশি।

৪. মূল্যস্ফীতি: কোভিড মহামারি ও এর পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও উৎপাদনব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান কমে যাওয়ার কারণেও মারাত্মক সমস্যায় পড়ে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ দুই দেশেই আছে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, মার্চ মাসের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি এখন অতিমাত্রায় বেশি। মূল্যস্ফীতির চাপে পাকিস্তানের মানুষ পিষ্ট। শুধু মার্চ মাসেই দেশটিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি।

৫. রির্জাভ: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন বাংলাদেশ- পাকিস্তান দুই দেশেই আলোচিত। ডলারসংকট ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বেশি মূল্যে পণ্য আমদানি করতে গিয়ে রিজার্ভে টান পড়েছে সবার। তবে, পাকিস্তানের রিজার্ভ ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫ কোটি বা ৫.৪৫ বিলিয়ন ডলারে। 

অন্যদিকে, বাংলাদেশের রিজার্ভ আছে পাকিস্তানের প্রায় চার গুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার কোটি বা ২০ বিলিয়ন ডলার।

৬. জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার: স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, যেখানে পাকিস্তানে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। 

৭. শ্রমশক্তিতে নারীদের অবদান: শ্রমশক্তিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অবদানেও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি ৩ জনের ১ জন নারী কাজ করেন। 

অন্যদিকে, পাকিস্তানে প্রতি ৫ জনের ১ জন কর্মক্ষম নারী। অর্থাৎ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের ৩৫ শতাংশ নারী, যা পাকিস্তানে ২০ শতাংশ।

৮. মানব উন্নয়ন সূচক: মানব উন্নয়ন সূচকেও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশে গড় আয়ুও বেশি। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছর। যেখানে পাকিস্তানে মাত্র ৬৯ বছর। 

৯. শিশুমৃত্যু: আবার, শিশুমৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ৩৩। আর, পাকিস্তানে এই সংখ্যা ৭০-এর বেশি। 

১০. প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রেও আমাদের সাফল্য প্রায় শতভাগ। বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার হার ৪২ শতাংশ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে এই হার অর্ধেকেরও কম ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে লম্বা সময় ধরে গণতান্ত্রিক সরকার থাকার কারনে উন্নয়ন এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখাতে সুবিধা হয়েছে। যেখানে, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার কম সময় ছিল। ফলে সেখানে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


বাংলাদেশ   পাকিস্তান   শাহবাজ শরিফ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন