ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তালেবান শাসনে ফুলে উঠছে আফগানিস্তানের আফিম অর্থনীতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০২ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১


Thumbnail

কাবুলিওয়ালার দেশ আফগানিস্তান এক রহস্য ঘেরা দুরূহ প্রাচীর। এখানকার মানুষ কখনই বাহিরের কারো কথা শোনার জন্য প্রস্তুত নয়। তালেবানের আবারো নতুন করে ক্ষমতার শিখরে চলে আসা তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। আর এই তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসার পর যে জিনিসটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা বিষয় তা হল আফগান অর্থনীতি। ২০ বছর ধরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি তার সামনের দিনগুলো কীভাবে অর্থনীতির চাকা সচল রাখবে সেই প্রশ্ন এখন সবার মাঝে। অতীত ইতিহাস থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আফগান অর্থনীতির প্রসঙ্গ সামনে এলে যে জিনিসটি সবার মাঝে সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠে তা হল আফিম বাণিজ্য।

ইসলামে আফিম বা যে কোনও ধরনের মাদক সেবন ‘হারাম’ বা নিষিদ্ধ। সেখানে পরিসংখ্যান বলছে মুসলিম শাসিত আফগানিস্তান হচ্ছে পৃথিবীর সবথেকে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ। জাতিসংঘের এক হিসাব মতে আফিম চাষের থেকে প্রতিবছর ১২০ কোটি ডলার থেকে ২১০ কোটি ডলার পর্যন্ত আয় করে আফগানিস্তান। যা সে দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৬-১১ শতাংশ।

আফগানিস্তানের অর্থনীতিতে আফিমের অবদান সংখ্যার হিসেবে দশ ভাগের এক ভাগ হলেও এর প্রভাব এইটাই বেশি যে কট্টরপন্থী ইসলামী শাসক দল তালেবানও আফিম চাষে কোন বাঁধা দেয় না। এর পেছনে আরো বড় কারণ হল তালেবানের আয়ের সব থেকে বড় অংশটিও আসে এই আফিম থেকেই। দুই দশক আগে তালেবান শাসন আমলে হু করে বেড়েছে আফিমের ব্যবসা। গত বিশ বছর ধরে মার্কিন প্রশাসনের ব্যাপক প্রচার ও অভিযানেও যা এক বিন্দু পরিমাণ পরিবর্তন হয় নি বরং তা আরো বেড়েছে কয়েক গুণ।

মার্কিন বাহিনী গত বিশ বছরে আফিম চাষে উৎসাহ হ্রাসে দেশটির আফিম চাষিদের মাঝে কোটি কোটি ডলারের প্রণোদনা প্রদান করেছে। তাদেরকে গম উৎপাদনে উৎসাহিত করে গেছে প্রতিমুহূর্তে। আফিম কালোবাজারিদের উপর আকাশ পথে হামলাও পরিচালনা করে গেছে অনেক। এর পরেও দেশটিতে আফিম চাষে কোন পরিবর্তন হয় নি। আমেরিকার আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ ইনস্পেক্টর জেনারেলের ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটিতে আফিম চাষ বন্ধ করার জন্য ৮৬০ কোটি ডলার খরচ করেছে মার্কিন প্রশাসন। এই এই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্থ দিন শেষে শুধু অশ্বডিম্বই উপহার দিয়েছে। আফগানিস্তান এখন সারা বিশ্বের মোট আফিমের ৮০ শতাংশ একাই উৎপাদন করে।

আমেরিকার এই সকল প্রচেষ্টা কতটা করুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে তা একটি পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হয়ে উঠে। আফগানিস্তানে ২০০১ সালে যেখানে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আফিম চাষ হত সেখানে ২০২০ সালে এসে সে জমির পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর। 

জাতিসংঘ বলছে আফগানিস্তানের যে এলাকাগুলোতে আফিম চাষ হয় তার বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছিলো তালেবান গোষ্ঠীর কাছে। যার ফলে চাঁদাবাজির মাধ্যমে এ থেকে এক বিশাল অংকের মুনাফা অর্জন করতো তালেবান। আফগানিস্তানের কৃষক এবং সাধারণ জনগণ আফিমের উপর এত বেশি পরিমাণ নির্ভরশীল যে গত ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দেশটিতে আফিমের চাষ বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। এছাড়া দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলে এখন আফেড্রা নামক এক গুল্মজাতীয় গাছের চাষ হচ্ছে যেখান থেকে ক্রিস্টাল মেথ নামে এক ধরনের মাদক তৈরি হচ্ছে। আর এর পুরোটাই তালেবানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তালেবানের পক্ষে আফিম চাষ বন্ধ করতে তেমন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি কোনদিন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে আফগানিস্তানের অর্থনীতি আফিমের উপর কতটা নির্ভরশীল। আর বিশেষ করে তালেবানরা যখন মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল, তখন তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থের মূল যোগান আসতো এই আফিম থেকেই। তালেবানের মোট আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে মাদক ব্যবসা থেকেই। বিবিসির এক রিপোর্ট বলছে, ২০১১ সালে আফিম চাষ থেকে বছরে ৪০ কোটি ডলার মুনাফা কামাত তালিবান। আর ২০১৮ সালের শেষে সেই মুনাফার ঝুলি বড় হতে হতে পৌঁছেছে ১৫০ কোটি ডলারে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যেসব এলাকা তালিবানের দখলে ছিল, সেই সব এলাকায় আফিম চাষিদের থেকে ১০ শতাংশ করও কাটা হত।

আফিম চাষের সঙ্গে তালেবানের যোগের কথা কোনওদিনই প্রকাশ্যে স্বীকার করে না তালেবান নেতারা। বরং বারবার আফগানিস্তানকে আফিম মুক্ত করার কথাই বলে এসেছে তারা। আর কথায় কথায় ২০০০ সালে আফিম নিষিদ্ধ করার আইনের প্রসঙ্গ টেনে আনে। প্রথম পর্বের তালেবান রাজ শেষ হওয়ার ঠিক আগে আগে ২০০০ সালে আফিম চাষ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

মোল্লা ওমরের আমলে আফিম চাষ নিষিদ্ধ করতে কড়া আইন আনা হয়েছিল। এই আইনের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিলো আন্তর্জাতিক চাপ। তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা আফিম চাষ বন্ধ করে দিবে এবং যারা পরবর্তীতে আফিম চাষ করবে তাদের বিরুদ্ধে শরিয়া মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদতে যা ছিলো মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া। তালেবান শাসনের সূচনা লগ্নে যেখানে আফিমের উৎপাদন ছিলো ২ হাজার ২৫০ টন সেখানে তা ১৯৯৯ সালে এসে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৮০ টনে। এ থেকেই বোঝা যায় আসলে তালেবান কতটা সরল ছিলো তাদের কথার উপর। যদিও ২০০০ সালে তারা নতুন করে আইন প্রণয়ন করে যা আরো কঠোর ছিল। তবে বেশিরভাগ কূটনৈতিকদের বিশ্বাস ছিলো তারা এই আইন প্রণয়ন করেছিলো আন্তর্জাতিক মহলের স্বীকৃতি আদায় করার জন্য।

তবে একটি বড় অংশের মতে, সেই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে আফিমের দাম কমতে শুরু করেছিল। আর তালেবানের মুনাফাও কমে যাচ্ছিল। সেই দাম বাড়াতেই আফিম চাষের উপর কিছুটা লাগাম টানতে চেয়েছিল তালেবান। আফিম মজুত করার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা এবং তারপর চাষের পরিমাণ কমিয়ে নেওয়া — এই দুইয়ের উপর ভর করেই আবার আফিমের দাম বাড়াতে চেয়েছিল মোল্লা ওমরের সরকার।

তালেবানের ডেরা কান্দাহার প্রদেশ আফগানিস্তানের আফিম চাষের সবথেকে বড় কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। সংবাদসংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কান্দাহারে বছর পঁয়ত্রিশের এক আফিম চাষি মহম্মদ নাদিরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল মার্কিন প্রশাসন গম চাষের জন্য অনুদান দিলেও কেন তাঁরা আফিম চাষ চালিয়ে যাচ্ছেন। জবাবে ওই চাষি জানান, গম বা অন্যান্য ফসল চাষ করে তেমন লাভ হয় না। আফিমের চাষ থেকে তার আয় হবে ৩ হাজার ডলার। অথচ ওই জমিতেই গম চাষ করা হলে, আয় খুব বেশি হলে ১ হাজার ডলার। তবে এই আফিম চাষের টাকা তিনি একা ভোগ করতে পারবেন না। তালেবান ও চোরাচালানকারীদের ভাগ দিতে হবে।

দুই দশক পর ফের একবার আফগানিস্তানের তখতে তালেবান। তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সাংবাদিক বৈঠক করে দায়িছেন, নতুন সরকার আফিম চাষ শূন্য করে দেবে। আফিম চাষ বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলতেই বিশ্ব বাজারে তড়তড়িয়ে বেড়েছে আফিমের দাম। সূত্রের খবর, তালিব সরকার আসার পর থেকে বিশ্ব বাজারে আফিমের কেজি প্রতি দর ৭০ ডলার থেকে বেড়ে ২০০ ডলার পার করে গিয়েছে। আর এই অতিরিক্ত মুনাফা তালিবানের হাতে যে যাচ্ছে না, তা হলফ করে বলা যায় না।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন আত্মহত্যা করতে গেছেন বাইডেন?

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জীবনে আত্মহত্যা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেকেই হয়েছেন হতাশা, ব্যর্থতা কিংবা গ্লানির তিক্ততায়ও আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এমন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকটা নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। যা অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার।

জো বাইডেন ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম নিয়েছেন। শুরুতে আইনজীবী হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল নেইলিয়া হান্টার। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল জোসেফ, রবার্ট হান্টার এবং নাওমি ক্রিস্টিনা অ্যামি।

এরপর ১৯৭২ সালে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাইডেনের স্ত্রী এবং কন্যা নিহত হন। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে বিউ এবং হান্টারও ছিলেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় বেঁচে যান তারা। কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনই সবচেয়ে কম বয়সে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়েন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেট সদস্য হন তিনি।

তবে পৃথিবীর অন্য অনেক সাধারণ মানুষের মতো জো বাইডেনও ওই সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। সম্প্রতি বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হাওয়ার্ড স্টার্নকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই।

বাইডেন বলেন, তার প্রথম স্ত্রী নিহত হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সারাক্ষণ বিষণ্ন থাকতেন। এক রাতে মদ্যপ অবস্থায় তার মনে হয়েছিল এই জীবনের কোনো অর্থ নেই। এ কথা মনে হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ডেলাওয়্যার মেমোরিয়াল ব্রিজের উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়েন বাইডেন। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চান।

‘কিন্তু ব্রিজে পৌঁছানোর পর হঠাৎ তার মনে হলো, তার আরও দুটি ছোট সন্তান আছে। যদি তিনি আত্মহত্যা করেন, তাহলে তাদের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠামাত্র বাইডেন গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন। ফিরে আসেন বাড়িতে। এরপর ১৯৭৮ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম হয় জিল বাইডেন।

বাইডেন বলেন, ‘আসলে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন তার আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে। কিন্তু ওই সময়টায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং বলতে হয়, আত্মহত্যা হলো সবচেয়ে বোকামি কাজ।

সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দুই ছেলে বিউ এবং হান্টারকে একাই বড় করেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেটর হিসেবে রাজনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন।


জো বাইডেন   আত্মহত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরও এক ব্যাংকের পতন যুক্তরাষ্ট্রে

প্রকাশ: ০৬:৫১ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এবার আরেকটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ‘রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক করপোরেশন’ নামক ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তারা। ইতিমধ্যে এ ব্যাংকটি তারা ফুলটন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতেও রাজি হয়েছে।

ফিলাডেলফিয়া-ভিত্তিক রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংকটি নতুন বিনিয়োগ নিয়ে বেশ কিছু বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলোচনায় ছিল। কিন্তু এসব আলোচনা শেষ পর্যন্ত কোনো ফল আনতে না পারায় পেনসিলভানিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড সিকিউরিটিজ এ ব্যাংকটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের চারটি আঞ্চলিক ব্যাংকের পতনের পর আরও একটি আঞ্চলিক ব্যাংকের এই পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, দেশটির আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর কী অবস্থা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন রিসিভার হিসেবে কাজ করবে। গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) তারা বলেছে, আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে ফুলটন ব্যাংক রিপাবলিক ব্যাংকের সব আমানত অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি সব সম্পদ কিনে নেবে।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিপাবলিক ব্যাংকের মোট সম্পদমূল্য ছিল ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলার; তাদের আমানত ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলার। এফডিআইসির আনুমানিক হিসাব, এই ব্যাংকের ব্যর্থতায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৭ মিলিয়ন বা ৬৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।

এদিকে আমানত ছাড়াও রিপাবলিকের ঋণ ও অন্যান্য দায়ের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি ডলার, এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে ফুলটন। তারা আরও বলেছে, এই রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক কেনার মধ্য দিয়ে ফিলাডেলফিয়া অঞ্চলে তাদের প্রভাব আরও বাড়বে। দুই ব্যাংকের সম্মিলিত আমানতের পরিমাণ ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৮৬০ কোটি ডলারে উঠতে পারে।

গত বছর যেভাবে ব্যাংক কেনাবেচা হয়েছিল, এবারও সেই পদ্ধতিতে হবে। এমনভাবে তা করা হচ্ছে যাতে গ্রাহকদের গায়ে বিশেষ আঁচড় না লাগে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ওইদিন স্থানীয় সময় সকালে নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া ও নিউইয়র্কে রিপাবলিক ব্যাংকের ৩২টি শাখা ফুলটন ব্যাংকের শাখা হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে। দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত বছর বিনিয়োগকারী জর্জ নরক্রস এবং ফিলপ নরক্রসের সঙ্গে চুক্তি করে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

ওয়াল স্ট্রিটের সূত্রে রয়টার্স বলেছে, সেই চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর এফডিআইসি যথারীতি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে এটি বিক্রি করার চেষ্টা করে। মুনাফা বাড়াতে না পেরে ও উচ্চ ব্যয়ের চাপে ২০২৩ সালে কর্মী ছাঁটাই করার পাশাপাশি মর্টগেজ ব্যবসা থেকে সরে আসে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক।

এই পরিস্থিতিতে রিপাবলিক ফার্স্টের শেয়ারের দামেও পতন ঘটে। বছরের শুরুতে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল দুই ডলারের কিছুটা ওপরে, এখন তা দাঁড়িয়েছে এক সেন্টের সামান্য বেশি। ব্যাংকটির বাজার মূলধন কমে ২০ লাখ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ফলে এই ব্যাংক কোম্পানিটির শেয়ার নাসডাকের লেনদেন থেকে বাদ পড়েছে। এখন শুধু ওটিসিতে লেনদেন হয় তাদের শেয়ার।

২০২৩ সালে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের ব্যাংক খাত চাপের মুখেই ছিল। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে চারটি ব্যাংকের পতন হয়, আর সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় ব্যাংক ক্রেডিট সুইসও বিক্রি হয়ে যায়। বছরের প্রথম ভাগে যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দুটি ব্যাংকের পতনের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রে তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংকের পতন হলে অনেকের মনেই এমন শঙ্কা তৈরি হয় যে ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না। তবে শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি। বছরের শেষ ভাগে এসে অবশ্য আর্থিক খাতে তেমন সংকট দেখা যায়নি। তবে এবার ২০২৪ সালের এপ্রিলে মাসে এসে আবার আরেকটি ব্যাংকের পতন হলো।

ব্যাংকের এই পতনে অবশ্য গ্রাহকদের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শুরু থেকেই সোচ্চার থাকায় তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।


ব্যাংক   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফেসিয়াল থেকে এইডসে আক্রান্ত

প্রকাশ: ০৩:৪০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

অনেকেই দীর্ঘ সময়ের জন্য তরুণ দেখাতে কসমেটিক সার্জারি এবং মুখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর ও টানটান রাখতে 'ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল' করেন। সম্প্রতি এই ফেসিয়াল সংক্রান্ত ভীতিকর তথ্য সামনে এসেছে। ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন নারী। 

বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের একটি স্পা'তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করার কারণে সম্ভবত নারীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। 

সিডিসি বলেছে, কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তাদের জানা নেই। আক্রান্ত মহিলারা লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ২০১৮ সালে।

সিডিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন মহিলা মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন। তারপরে তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এরপরে 'সিডিসি' নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণ ঘটেছে তা তদন্ত করে। 

সিডিসি জানিয়েছে, যে মহিলাটি ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করেননি, তাকে সংক্রামিত রক্ত সঞ্চালনও দেওয়া হয়নি বা এইচআইভি সংক্রামিত কোনও সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কও হয়নি। তিনি শুধু একটি ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করেছেন এবং এরপরে তার এইচআইভি পরীক্ষা পজিটিভ পাওয়া গেছে।

২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকো হেলথ ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল গ্রহণের ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছিল। স্পাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, যারা স্পাটিতে ফেসিয়াল করেছেন তাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে।

সিডিসি বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষসহ পাঁচজন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরুষটি সেই চারজন নারীর একজনের স্বামী।

সিডিসি জানিয়েছে, দুইজন এইচআইভি-আক্রান্ত রোগী বলেছেন, তারা কসমেটিক ইনজেকশন নেওয়ার আগে কোনোভাবে সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন। তবে তিনজন রোগী স্পা থেকে এই সংক্রমণ পেয়েছেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি জানিয়েছে, ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পদ্ধতিতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে।

বার্ধক্যের লক্ষণ লুকানোর জন্য মানুষ ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে৷ এতে হাত থেকে রক্ত বের করে একই ব্যক্তির মুখে ইনজেকশন দেওয়া হ


ফেসিয়াল   এইডস   আক্রান্ত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মাঝরাতে আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ইতালি

প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ করে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে ইতালির মিলানে। বাসিন্দাদের প্রশান্তির স্বার্থে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে মিলানের স্থানীয় সরকার। 

ইতালির সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে আইসক্রিম। অনেকেই গভীর রাতে আইসক্রিম খেয়ে থাকেন। প্রস্তাবিত নতুন আইনের অধীন এভাবে আইসক্রিম খাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

মিলান শহরের স্থানীয় সরকার ইতিমধ্যে আইনের খসড়া তৈরি করে আইনসভায় জমা দিয়েছে। যদি প্রস্তাবিত আইনটি পাস হয়ে যায়, তাহলে আগামী মাস থেকে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।

মিলানের ১২টি এলাকায় আইনটি কার্যকর হবে। এই আইনের অধীনে মধ্যরাতের পর পিৎজা, পানীয়সহ সব ধরনের খাবার বাড়িতে সরবরাহ করা নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। শহরের সড়কে রাতের বেলায় যাতে হইচই না হয় এবং বাসিন্দারা প্রশান্তিতে থাকতে পারেন, সে জন্য এই আইন করা হচ্ছে।

মিলানের ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্র্যানেলি বলেন, সামাজিকতা ও বিনোদনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে এই আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই আইন 'মধ্য মে' থেকে কার্যকর এবং নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। 

সপ্তাহের কর্মদিবসে রাত সাড়ে ১২টা এবং সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটির দিনে রাত দেড়টা থেকে আইনটির প্রয়োগ শুরু হবে। সড়ককে কোলাহলমুক্ত রাখতে খোলা আকাশের নিচে বসানো খাবার টেবিলে এই আইনের প্রয়োগ করা হবে।

নাগরিকেরা চাইলে মে মাসের গোড়ার দিকে প্রস্তাবিত আইনের কোনো ধারার পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মধ্যরাতে আইসক্রিম খাওয়া বন্ধে মিলানের স্থানীয় সরকার এবারই যে প্রথম উদ্যোগ নিচ্ছে, তা নয়। এর আগে ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র জুইলিয়ানো পিসাপিয়া মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তুমুল সমালোচনার মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হন।


আইসক্রিম   নিষিদ্ধ   ইতালি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জার্মানির বিরুদ্ধে মামলার রায় ৩০ এপ্রিল

প্রকাশ: ১১:৫৩ এএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল চলমান যুদ্ধে গণগত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের এই অমানবিক কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ এনে জার্মানির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া।

আগামী ৩০ এপ্রিল সেই মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করেছে আইসিজে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিজে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে- ইসরায়েলকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে গণহত্যা ‘সহজতর’ করার দায়ে জার্মানিকে অভিযুক্ত করে ১ মার্চ নিকারাগুয়া যে মামলা করে তার রায় ৩০ এপ্রিল ঘোষণা করা হবে।

বিবৃতি অনুসারে, দ্য হেগের পিস প্যালেসে ওই দিন স্থানীয় সময় বিকাল তিনটায় আদালতের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম মামলার রায় পাঠ করবেন।

নিকারাগুয়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে ‘জার্মানিকে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ এবং গাজা উপত্যকায় আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য বিধিনিষেধের বিষয়ে’ জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা জারি করার অনুরোধ জানিয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪,৩৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়াও আহত হয়েছে ৭৭,৩৬৮ ফিলিস্তিনি।


জার্মান   বিরুদ্ধে   মামলা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন