ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সু’চি এবং কারাগার: এক লাটাই সুতোর গল্প

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২১


Thumbnail সু’চি এবং কারাগার: এক লাটাই সুতোর গল্প

সালটা ১৯৮৮। অসুস্থ মৃতপ্রায় মায়ের সেবার জন্য ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড থেকে দেশে ফিরে আসেন অং সান সু চি। মিয়ানমারের স্বাধীনতার জনক ও তুমুল জনপ্রিয় নেতা অং সানের কন্যা তিনি। তুমুল জনপ্রিয় এই সামরিক নেতা দেশকে ব্রিটিশ বাহিনীর হাত থেকে রক্ষার পথ তৈরি করে গিয়ে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু নিজে সেই স্বাদ গ্রহণ করতে পারেননি। ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সদ্য জন্ম নেওয়া দেশটি বেশিদিন গণতন্ত্রর স্বাদ উপভোগ করতে পারেনি, তার আগেই ১৯৬২ সালের ২ মার্চ দেশটিতে প্রথম সামরিক শাসনের শুরু হয়। সেই থেকেই অপার সম্ভাবনার দেশটি জ্বলছে বিদ্রোহের আগুনে। সেই আগুনে যেনো এক চামচ ঘি নয়, বরং আস্ত আগ্নেয়গিরি মতো বিস্ফোরণ ঘটান অং সান সু’চি দেশে ফিরে এসে। অসুস্থ মায়ের সেবা করতে এসে এক ছাত্র বিক্ষোভে অংশ নিলে সেখানে তার বাবার প্রতি মানুষের অপার ভালবাসা তাকে বিমোহিত করে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নিজ দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে বিদেশের সুখের জীবন, স্বামী, দুই সন্তান ছেড়ে মিয়ানমারেই অবস্থান করবেন। 

১৯৮৮ সালের সেই ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর পরই তিনি সামরিক জান্তার রোষানলে পড়ে যান। ১৯৮৯ সালে প্রথম তাকে বন্দি করে সামরিক সরকার। তার দেশের মানুষের প্রতি নিষ্ঠা আর একাগ্রতা তাকে বিশ্ব দরবারেও তুমুল জনপ্রিয় করে তুলে। গৃহবন্দী থাকা অবস্থাতেই ১৯৯১ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। তাকে অনেকেই এশিয়ার নেলসন মেন্ডেলার সাথে তুলনা করতে শুরু করে। মিয়ানমারে প্রবেশে পর তিনি বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় ২১ বছর গৃহবন্দী হিসেবে থেকে দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ২০১০ সালে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হন। এর পর তিনি তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসিকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে সচেষ্ট হন এবং ২০১৫ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিপুলভাবে জয় লাভ করে মিয়ানমারের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে সক্ষম হন।  

তবে তার সকল সংগ্রাম যেনো তিনি নিজ হাতে বাতাসে উড়িয়ে দেন, যখন ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির আরাকান অঞ্চলে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর বর্বর গণহত্যা পরিচালনা করে। সেই সময় তিনি অনেককে অবাক করে দিয়ে একেবারে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেন এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে এই অন্যায়কে সমর্থন যোগান। তার এই মনোভাবের আরো প্রকোপ বোঝা যায়, যখন তিনি রোহিঙ্গা হত্যা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে ২০১৯ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে দাড়িয়ে যুক্তি প্রদর্শন করেন এবং কোন প্রকার গণহত্যা আরাকানে যে সংগঠিত হয়নি, তার ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তার এমন আচরণে বিশ্ববাসী বেশ বিস্ময় প্রকাশ করে কিন্তু তিনি তার মতের পক্ষে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যুক্তি প্রদর্শন করে যান। আরাকানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর এমন নির্যাতনে সেনাবাহিনীর পক্ষে কথা বলায় তিনি নিজ দেশের মানুষের কাছেই বেশ সমালোচিত হন। বিশ্ববাসীর কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকে। 

২০২০ সালের নভেম্বর মাস। সাধারণ নির্বাচনে ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়ে তার দলে তখন সাজ সাজ রব। আবারও সরকার গঠনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঠিক এমন সময় দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষার মতো করেই যেন আচমকা বিপর্যয় নেমে এলো সুচির জীবনে। যে সেনাবাহিনীকে বাঁচাবার জন্য সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে নিজের অধ্যায়কে তিনি করেছিলেন প্রশ্নবিদ্ধ ও কালিমাময়, ঠিক এই সেনাবাহিনীই তাকে ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক আগমুহূর্তে গ্রেপ্তার করে। সু’চিকে বন্দী করার পিছনে সেনাবাহিনীর যুক্তি ছিলো ২০২০ সালের নির্বাচনে তার দল ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। এজন্য তারা সে নির্বাচনের ফলকে অবৈধ বলে সারা দেশব্যাপী সু’চির দলের লোকদের ধরপাকড় শুরু করেন। এসময় সু’চির বিরুদ্ধে ১১ মামলা দায়ের করে সেনাবাহিনী। এই সবগুলো মামলার শুনানি চলছে সামরিক আদালতে। 

সু’চির বিরুদ্ধে আনিত মামলাগুলোর মাঝে আছে নির্বাচনে কারচুপি, জনসাধারণকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া, কোভিড নিয়ম ভঙ্গ করা, দুর্নীতি, গোপনীয়তা লঙ্ঘন সহ আরো অনেক।

আজ (৬ ডিসেম্বর) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উস্কে দেওয়া এবং কোভিড নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে সামরিক আদালত। সু’চির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সবগুলো প্রমাণিত হলে তার কমপক্ষে যাবত জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে। 

একপলকে দেখে নেয়া যাক সু’চির জেল জীবন: 

২০ জুলাই, ১৯৮৯: বিরোধী এনএলডির সাধারণ সম্পাদক অং সান সু চিকে রাজ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে আটক করা হয় এবং রেঙ্গুনের ৫৪ ইউনিভার্সিটি অ্যাভিনিউতে তার মায়ের বাড়িতে গৃহবন্দী করা হয়।

২৭ মে, ১৯৯০: গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় এনএলডি নব্বইয়ের সাধারণ নির্বাচনে ৮২ শতাংশের মত আসনে জয় লাভ করে। তবে নির্বাচনের সে ফলাফল সামরিক বাহিনী অস্বীকৃতি জানায়। 

১০ জুলাই, ১৯৯৫: ছয় বছর গৃহবন্দী থাকার পর ৯৫ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। 

৯ নভেম্বর, ১৯৯৬: রেঙ্গুনে অং সান সু চি এবং এনএলডি নেতা ইউ টিন উর সাথে একটি এনএলডি মোটর শোভাযাত্রায় প্রায় ২০০ জন লোকের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন। বিশ্বাস করা হয় আক্রমণকারীরা সামরিক বাহিনীর সমর্থক ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ইউএসডিএ) সদস্য। এই গোষ্ঠীটি সু’চির গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে। সামনে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা থাকার পরও তারা এই আক্রমণ প্রতিহত করতে কোন প্রচেষ্টা গ্রহণ করেনি। 

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০০: অং সান সু চিকে আবারো গৃহবন্দী করা হয়। যদিও তার কার্যক্রম ১৯৯৭ সালের শুরু থেকে কঠোরভাবে সীমিত করে দেওয়া হয়। 

৬ মে, ২০০২: সু’চিকে আবারো গৃহবন্দিত্ব থেকে পুনরায় মুক্তি প্রদান করে সামরিক জান্তা বাহিনী। এদিন তার বাড়ির সামনে হাজারো মানুষ ভিড় জমায় সমর্থন জানানোর জন্য। 

৩০ মে, ২০০৩: সরকার সমর্থিত একটি গোষ্ঠী আবারো সুচির উপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে চারজন এনএলডি সমর্থক বডিগার্ড নিহত হন। এরপর পরই সেনাবাহিনী তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে ইনসেইন কারাগারে বন্দী করা হয়। আক্রমণের তিন মাস পর তাকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। 

২৫ মে, ২০০৭: সামরিক জান্তা অং সান সু’চির গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়ায়।

২৮ মে, ২০০৮: ১৯৭৫ সালের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আইন মোতাবেক, "তার মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আদেশ" এর অধীনে অং সান সু চি'র আটকের আদেশ ২৭ মে, ২০০৯ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। 

১০ আগস্ট, ২০০৯: সামরিক জান্তার প্রধান, প্রেসিডেন্ট সিনিয়র জেনারেল থান শোয়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে একটি নির্দেশনা জারি করেন যে আদালতের রায় যাই হোক না কেন, সু চির সাজা অর্ধেক হবে এবং তাকে গৃহবন্দী অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

৪ ডিসেম্বর ২০০৯: সুপ্রিম কোর্ট অং সান সু চির গৃহবন্দি আদেশের আপিল বিবেচনা করতে সম্মত হয়।

১৮ জানুয়ারি, ২০১০: সুপ্রিম কোর্ট সু চির আইনজীবীদের বর্ধিত গৃহবন্দিত্বের আপিলের চূড়ান্ত যুক্তি বিবেচনা করে। আদালত ঘোষণা করে এটির বিষয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত রায় প্রদান করবে।

১৩ নভেম্বর, ২০১০: গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান অং সান সু’চি।

অং সান সু চি   মিয়ানমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইমরান খানের স্ত্রীকে কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৪:২৫ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিকে গৃহবন্দী অবস্থা থেকে কারাগারে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। বুশরা বিবির পক্ষ থেকে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রীয় উপহারসামগ্রী অবৈধভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে ইমরান-বুশরা দম্পতির ১৪ বছর করে কারাদণ্ড হয়। ইমরান কারাগারে থাকলেও বুশরাকে ইসলামাবাদের বাড়িতে গৃহবন্দী রাখা হয়েছিল। নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কথা বলে তাকে বাড়িতেই বন্দী রাখার আদেশ দিয়েছিল দেশটির সরকার।

গৃহবন্দী রাখার এ আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন বুশরা বিবি। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তার আইনজীবী নাঈম পানজুথা এ কথা বলেছেন।

বুশরা বিবির আইনজীবীরা তাকে কারাগারে স্থানান্তরের জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। আজ আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করেন।

ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক বিবৃতিতে বলা হয়, বুশরা বিবিকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই কারাগারেই আছেন ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান।

ইমরানের ইসলামাবাদের বাড়িটিকে সাব কারাগার ঘোষণা করা হয়েছিল। ইমরানের দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, গৃহবন্দী অবস্থায় কর্তৃপক্ষ তাকে বিষ মেশানো খাবার দিচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন বুশরা। তবে কর্তৃপক্ষ সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


ইমরান খান   কারাগার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিঙ্গাপুরে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

প্রকাশ: ০৪:০৭ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিঙ্গাপুরের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক বিমানঘাঁটিতে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।  

বুধবার (০৮ মে) সিঙ্গাপুরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এক বিবৃতিতে জানায়, সিঙ্গাপুরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তেনগাহ বিমানঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমানটি উড্ডয়নের পরপরই সেটি বিধ্বস্ত হয়। তবে বিমানের পাইলট সফলভাবে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। বিমানের পাইলটের সুস্থ আছেন এবং তিনি হাঁটতে পারছেন। বর্তমানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এই দুর্ঘটনায় অন্য কোনও কর্মকর্তা আহত হননি।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে গণমাধ্যমটি বলছে, উড্ডয়নের সময় বিমানটি সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন পাইলট জরুরি প্রক্রিয়া মেনে পদক্ষেপ নেন। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অত্যাধুনিক বিমানবাহিনী রয়েছে সিঙ্গাপুরের। নগর রাষ্ট্রটিতে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রায় বিরল। এর আগে, ২০১০ সালে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয়ায় দেশটির সামরিক বাহিনীর একটি উড়োজাহাজ উন্মুক্ত মাঠে জরুরি অবতরণ করে।


সিঙ্গাপুর   যুদ্ধবিমান   বিধ্বস্ত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গণহারে অসুস্থতার ছুটি ক্রুদের, ৭৯ ফ্লাইট বাতিল

প্রকাশ: ০৩:৪৯ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অন্তত ৭৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কারণ ক্রুরা হঠাৎ গণহারে অসুস্থতার ছুটি নিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রায় ৩০০ সিনিয়র কেবিন ক্রু শেষ মুহূর্তে অসুস্থতার কথা জানিয়ে ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ারলাইনটির চাকরির নতুন নিয়ম নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রুরা এবং এর প্রতিবাদ করছে তারা। তবে এয়ারলাইনটির কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে।

এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বেশ কিছু কেবিন ক্রু শেষ মুহূর্তে অসুস্থতার কথা জানায়। এতে ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বের ঘটনা ঘটছে। আমরা ক্রুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করছি।

মুখপাত্র বলেন, এমন ঘটনার জন্য আমরা যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। কারণ এটা আমাদের সার্ভিসের প্রতিফলন নয়।

এয়ারলাইনটি জানায়, ভুক্তভোগীদের পুরো টাকা ফেরত দেওয়া হবে অথবা নতুন করে শিডিউল দেওয়া হবে।


অসুস্থ   ছুটি   ক্রু   ফ্লাইট   বাতিল   এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

স্লোভাকিয়ায় একদিনে ১১০০ এর বেশি বোমা হামলার হুমকি

প্রকাশ: ০৩:৩৮ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্লোভাকিয়ায় একদিনে ১১০০টিরও বেশি বোমা হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। ব্যাংক ও স্কুলের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এই হামলার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনায় দেশজুড়ে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়। এছাড়া হুমকির বিষয়ে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। খবর এএফপি।

মঙ্গলবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্লোভাকিয়ায় মঙ্গলবার স্কুল ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ১১০০টিরও বেশি বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মূলত ইমেইলে করে এসব হুমকি দেওয়া হয় এবং এতে দেশজুড়ে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হুমকির ঘটনায় তদন্ত শুরুর ঘোষণাও দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ডেপুটি চিফ রাস্তিসলাভ পোলাকোভিচ বলেছেন, 'সন্ত্রাসী হামলার মতো বিশেষ গুরুতর অপরাধ হিসেবে এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।'  

রাস্তিসলাভ পোলাকোভিচ বলেন, 'মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা বা ছয়টা থেকে স্কুলগুলোতে ইমেইল আসতে শুরু করে। এর মধ্যে বোমা হামলার প্রায় ১ হাজার হুমকি স্কুলগুলোতে এসেছে এবং ১০০টিরও বেশি ব্যাংক এই ধরনের হুমকি পেয়েছে।'

দেশটির পুলিশ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে লিখেছে, 'পুলিশ সম্পূর্ণ গতিতে কাজ করছে, স্কুলগুলোর নিরাপত্তা পরীক্ষা করছে এবং অপরাধীকে শনাক্ত করতে কাজ করছে।'

এএফপি বলছে, অপরাধীদের সম্ভাব্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে।

ব্রাতিস্লাভা স্ব-শাসিত অঞ্চলের মুখপাত্র লুসিয়া ফরম্যান এএফপিকে বলেছেন, দেশটি পরিচালিত কয়েক ডজন স্কুলে বোমা হামলার হুমকি নথিভুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, 'আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি, শিশুদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ এখন বিষয়টি দেখছে।'


স্লোভাকিয়া   বোমা হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা যাওয়া ২১ ভাগই বাংলাদেশি

প্রকাশ: ০২:২৩ পিএম, ০৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

সবচেয়ে বেশি অভিবাসী হচ্ছে যেসব দেশের নাগরিকরা সেই বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ঝুঁকি নিয়ে যত মানুষ ইউরোপে ঢুকেছে, তার মধ্যে ২১ শতাংশ বাংলাদেশি। 

এই তথ্য জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপ। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন ও সংঘাতের কারণে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সংখ্যায় অভিবাসী হয়েছেন। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ অভিবাসী হচ্ছেন কি না, সেটা বোঝার জন্য তথ্য-উপাত্ত ও গবেষণার প্রয়োজন। 

বাংলাদেশ সফরে আসা আইওএমের এই শীর্ষ কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপের সময় এসব কথা বলেন। তিনি এর আগে ওই হোটেলে 'আন্তর্জাতিক অভিবাসন প্রতিবেদন-২০২৪' প্রকাশ করেন।  

আইওএমের চলতি বছরের বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, গত বছর বিশ্বজুড়ে জলবায়ুর প্রভাব ও সংঘাতের কারণে নতুন বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা বেশি হয়েছে। এটা চমকে দেওয়ার মতো। তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষ এখন জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বাস করেন।

অ্যামি পোপের মতে, কোন কোন উপাদান মানুষকে অভিবাসনে বাধ্য করে, তার যথাযথ চিত্র নেই। তাই সঠিক চিত্র বোঝার জন্য সরকারগুলোকে বিনিয়োগ করতে হবে।

২১% বাংলাদেশি

বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে অভিবাসন বাড়ছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, এসব অভিবাসীর অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন। ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপ পাড়ির প্রবণতা ২০১৫ সাল থেকে বেড়েছে। ২০২৩ সালে ৫ হাজার অভিবাসী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৫২৪ জন মারা গেছেন ভূমধ্যসাগরে, যে রুট (পথ) দিয়ে সাধারণত বাংলাদেশের মানুষেরা ইতালিতে যান।

বাংলাদেশি কতজন মারা গেছেন জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি মারা গেছেন ২৮৩ জন (ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়ার পথে)।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের ১৬ হাজার ২০০ নাগরিক এই পথ দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন উল্লেখ করে অ্যামি পোপ বলেন, এর মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক ৩ হাজার ৪২৫ জন। ২০২৩ সালে ভূমধ্যসাগর হয়ে অনিয়মিত অভিবাসনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল বাংলাদেশের মানুষ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অপতথ্য অভিবাসনের ক্ষেত্রে কতটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে জানতে চাইলে অ্যামি পোপ বলেন, মানব পাচারকারীরা পরিশীলিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে থাকে। কারণ, তারা সারা বিশ্বের পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রাখে। কাজেই অভিবাসী হতে আগ্রহী লোকজনের জন্য যে পর্যাপ্ত বৈধ পথ নেই, শুধু সেটিই নয়, অভিবাসনের বৈধ উপায় সম্পর্কে জানার বিষয়ে যথেষ্ট অর্থ বিনিয়োগ করা হয় না। এমনকি বৈধ পথে অভিবাসনের জন্য তাদের কী ধরনের দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং এর উপায় কী সে সম্পর্কে তথ্য তাঁরা যথাযথভাবে জানতে পারেন না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা ডিজিটাল মাধ্যমে মানব পাচারকারীদের প্রতিহত করতে হলে মানুষকে বৈধ অভিবাসনের পথ সম্পর্কে যথাযথভাবে জানাতে হবে বলে উল্লেখ করেন অ্যামি পোপ।


আইওএম   অ্যামি পোপ   ভূমধ্যসাগর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন