বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি কারনে শিশুশ্রম অনেকটাই নিন্মমখি।কিন্তু করোনা কালিন পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পর। এই শিশুশ্রম আরো বেড়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে শ্রমে থাকা শিশুদের হয়ত আরও বেশি কর্মঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে বা তাদের আরও খারাপ পরিবেশে কাজ করতে হতে পারে। তাদের মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক শিশুকে হয়ত ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিযুক্ত হতে বাধ্য হবে, যা তাদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির কারণ হচ্ছে । মহামারী পারিবারিক আয়ে বিপর্যয় নিয়ে আসায় কোনো সহায়তা না পেয়ে অনেকেই শিশু শ্রমে নিয়োজিত হতে বাধ্য হবে। সংকটের সময়ে সামাজিক সুরক্ষা অপরিহার্য, যেহেতু তা সবচেয়ে বিপর্যস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দেয়। শিশু শ্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রশমনে শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায়বিচার, শ্রমবাজার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক ও শ্রম অধিকার বিষয়ে সমন্বিতভাবে বৃহত্তর পরিসরে নীতিমালা প্রণয়ন বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
কোভিড-১৯ এর ফলে দারিদ্র্য বেড়ে গিয়ে শিশু শ্রম বাড়াবে। কারণ বেঁচে থাকার জন্য পরিবারগুলো সম্ভাব্য সকল্ভাবে চেষ্টা করবে। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে,নির্দিষ্ট কিছু দেশে দারিদ্র্য ১ শতাংশীয় পয়েন্ট বৃদ্ধিতে শিশু শ্রম অন্তত দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে।
সংকটের সময় অনেক পরিবারই টিকে থাকার কৌশল হিসেবে শিশু শ্রমকে বেছে নেয়।
“দারিদ্র্য বৃদ্ধি, স্কুল বন্ধ ও সামাজিক সেবা প্রাপ্তি কমতে থাকায় অধিক সংখ্যায় শিশুদের কর্মক্ষেত্রে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কোভিড পরবর্তী বিশ্বকে আমরা নতুনভাবে দেখতে চাই বলে আমাদের নিশ্চিত করা দরকার যে, শিশু ও তাদের পরিবারগুলো ভবিষ্যতে একই ধরনের ধাক্কা সামলে নিতে বিকল্প পথ খুঁজে পায়। মানসম্পন্ন শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা সেবাসহ আরও ভালো অর্থনৈতিক সুযোগ ইতিবাচক এই পরিবর্তনের নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে।
অর্থনৈতিক মন্দায় অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে কর্মরত ও অভিবাসী শ্রমিকদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মী ও বেকারত্ব বৃদ্ধি, জীবনমানের পতন, স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার ঘাটতিসহ অন্যান্য চাপ সৃষ্টি হবে। বর্তমান সংকটের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিশু শ্রম হ্রাসে দারুন কাজ করে আসছিল।
চলমান মহামারীর কারণে এই অর্জন যেন নস্যাৎ না হয় তা নিশ্চিত করতে অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন আমাদের আরও বেশি সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সময়োচিত এই প্রতিবেদনটি কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ প্রভাবের ওপর আলো ফেলেছে এবং সরকার, নিয়োগকর্তা, শ্রমিক সংগঠনসমূহ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সামনে বর্তমান সংকট মোকাবেলার সর্বোত্তম পথ খুঁজে পেতে তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরেছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে অসহায় শিশুদের জীবন, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও ভবিষ্যতের ওপর কোভিড-১৯ মহামারী বিশেষ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। স্কুল বন্ধ ও পরিবারের আয় কমে যাওয়ায় অনেক শিশুর জন্য শ্রমে যুক্ত হওয়া এবং বাণিজ্যিকভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। “গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা যত বেশি সময় স্কুলের বাইরে থাকে তাদের আবার স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা ততটাই কমে যায়। আমাদের এখন শিশুদের শিক্ষা ও সুরক্ষার ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত এবং মহামারীর পুরো সময়জুড়েই তা অব্যাহত রাখা উচিত,
মহামারীর এই সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় শিশু শ্রম বৃদ্ধি পাওয়ার প্রমাণ ধারাবাহিকভাবে আসছে। বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে ১০০ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি যখন পুনরায় ক্লাস শুরু হবে তখন অনেক বাবা-মায়ের হয়ত তাদের সন্তানকে স্কুলে দেওয়ার সক্ষমতা থাকবে না।
ফলশ্রুতিতে আরও অনেক শিশু বঞ্চনামূলক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যোগ দিতে বাধ্য হবে। লিঙ্গ বৈষম্য আরও তীব্র হতে পারে। বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের কৃষি ও গৃহকর্মে বঞ্চনার শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কোভিড-১৯ ও শিশু শ্রম: সংকটের সময়, পদক্ষেপের সময়’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত শিশু শ্রম ৯ কোটি ৪০ লাখ কমেছে, কিন্তু এই অর্জন এখন ঝুঁকির মুখে।
ইভান খান হোসাইন
বয়সঃ ১৬
কলেজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কাইসার নিলুফার কলেজ
মন্তব্য করুন
৩৫
দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী। আর
নীতি পরিবর্তন হলেই কেবল ৪৬
দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
বর্তমান
জাতীয় প্রেক্ষাপটে ‘তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফলে
উঠে এসেছে এ তথ্য। এসডিজি
বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আয়োজন শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে
যুব সম্মেলনে এ তথ্য জানানো
হয়।
ফলাফল
উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম
খান।
জরিপের
জন্য চলতি বছরের সেপ্টেম্বর
ও অক্টোবর- এই দুই মাসে
পাঁচ হাজার ৭৫ জনের মতামত
নেওয়া হয়। এরমধ্যে ৫৩
শতাংশ শিক্ষার্থী, ৩৮ দশমিক ৩
শতাংশ চাকরিজীবী ও ২৮ শতাংশ
বেকার। এছাড়া ৭৮ দশমিক ৩
শতাংশ পুরুষ, ২১ দশমিক নারী
ও শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ তৃতীয়
লিঙ্গের জনগোষ্ঠী। এই পাঁচ হাজার
জনের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২
শতাংশের বাস শহরে আর
৪০ দশমিক ৮ শতাংশের বসবাস
গ্রামে।
জরিপের ফলাফলে
জানানো হয়, ৬৭ শতাংশ
তরুণ কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধির
সঙ্গে কথা বলেননি। ৭৯
দশমিক ১ শতাংশ তরুণ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ও রাজনীতি
সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারেন।
৪৮ দশমিক ১ শতাংশ খবরের
কাগজের মাধ্যমে ও রাজনৈতিক আলাপ
সম্পর্কে জানতে পারেন। একইভাবে ৪১ দশমিক ৭
শতাংশ টেলিভিশন ও রেডিওর মাধ্যমে
এবং ৭ দশমিক ৭
দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ
খবর সম্পর্কে জানতে আগ্রহী নন।
জরিপে
উল্লেখ করা হয়, ৫৩
দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ
এখন পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি।
যাদের মধ্যে ১৮-২৫ বয়সীর
সংখ্যা ৭৬ দশমিক ৪
শতাংশ, ২৫-২৯ বয়সীর
সংখ্যা ৩৪ দশমিক ৫
শতাংশ ও ৩০-৩৫
বয়সীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ। ৪৬
শতাংশ তরুণ কোনো স্থানীয়
নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি।
৩৫ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ
রাজনীতি ও ছাত্র রাজনীতিতে
আগ্রহী নন।
জরিপে
অংশ নেওয়া ৮৯ দশমিক ৪
শতাংশ ভোটার হয়েছেন। ৩৬ দশমিক ৪
শতাংশ তরুণ তাদের মতামত
প্রকাশের জন্য নিগ্রহের স্বীকার।
অপরদিকে
৫১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ,
যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তারা মত
প্রকাশের জন্য নিগ্রহের স্বীকার
হয়েছেন। ১৯ দশমিক ৩
শতাংশ তরুণ মনে করেন
সিদ্ধান্ত গ্রহণে তরুণদের মতামত নেওয়া হয় না।
৫৬
দশমিক ২ শতাংশ তরুণ
মনে করেন দুর্নীতি ও
মত প্রকাশের স্বাধীনতার অভাব উন্নয়নে বড়
চ্যালেঞ্জ। ৫৫ দশমিক ৪
শতাংশ তরুণ মনে করেন
মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষতার অভাব
রয়েছে।
এছাড়া
১৮ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ
বিদেশে পুরোপুরিভাবে চলে যেতে চান।
তবে ৫৩ দশমিক ২
শতাংশ তরুণ দেশেই থাকতে
চান। ৩৫ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
আর নীতি পরিবর্তন হলে
৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
সেন্টার
ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক
প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
বলেন, দ্রুততার সঙ্গে আমাদের সমাজে যুবদের সংখ্যা ও অনুপাত বেড়ে
চলেছে। এই যুব সমাজের
আশা আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা কার্যকর
করার ক্ষেত্রে আমরা কতটা সফল।
এই জিজ্ঞাসা বার বার আসছে।
সামনে নির্বাচন। সেখানে আমরা যুব সমাজের
অংশগ্রহণ দেখতে চাই।
তরুণ সিপিডি জরিপ দায়িত্ব নেতৃত্ব দৃষ্টিভঙ্গি
মন্তব্য করুন
দেশের নদী দখলদারদের উচ্ছেদ ও নদীর প্রকৃত সংখ্যা যাচাই করে তালিকা প্রনয়ণের দাবিতে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছেন রাকিব হাসান (২৪)। রাকিব হাসান কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুরের ষাইটমারা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। "দুরত্ব ও সীমাবদ্ধতাকে পরাজিত কর" শিরোনামে গত ২০ এপ্রিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাংলাবান্দা জিরোপয়েন্ট থেকে তিনি এ যাত্রা শুরু করেন। শেষ করবেন টেকনাফ জিরো পয়েন্টে গিয়ে। আগামী ১০ মে তিনি পর্যন নগরী কক্সবাজারে পৌঁছবেন। ১১ মে ভোর ৬ টায় টেকনাফের উদ্দেশ্যে মেরিন ড্রাইভ সড়ক পথে যাত্রা করবেন। ১২ মে অর্থাৎ ২৪ তম দিনে তিনি টেকনাফ গিয়ে যাত্রা বিরতি শেষ করবেন।
এই প্রতিবেদন লেখা অব্দি তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া সীমান্তবর্তী আজিজ নগরে অবস্থান করছেন। পায়ে হেটে এখন পর্যন্ত সে পথ অতিক্রম করেন ৮৪৫ কিলোমিটার। ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ৮/৯টা পর্যন্ত হাঁটেন তিনি। রাতে যেখানে হাঁটা বন্ধ হয়ে যেত, ওই এলাকায় পরিচিত কারও বাসায় পরিচিত না থাকলে হোটেলে, মসজিদে, পেট্রোল পাম্প এর রেস্ট হাউজে রাতযাপন করেন। দূরত্ব ভীতির কারনে কেউ সঙ্গী না হওয়ায় একাকী সে পদযাত্রা শুরু করে বলে জানায় তিনি। রাকিব আরও জানান, এটাই তার প্রথম দীর্ঘ একাকী পদযাত্রা। দুরত্ব ও দিনের হিসেব করে তিনি ২৪ দিনে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করেন। এবং তিনি একাই ১০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাকিব জানান, তিনি একাকী পদযাত্রায় বিচলিত নন। বরং তিনি দেশের নদীর দখল ও নদীর বিলীন হয়ে যাওয়া নিয়ে বিচলিত। তিনি আরও জানান,, নদী আমাদের দেশের রক্তনালীর মত। দেশে প্রবাহমান সমস্ত নদী এখন শুকিয়ে গেছে। আগামি দশকের মধ্যে অনেক নদী হয়তো মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যাবে। যদি এই সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নদী রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে দেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়বে। এতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিপর্যয় নেমে আসবে। যা তাকে উদ্ধিগ্ন করেছে। তাই তিনি সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েই পদযাত্রার পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নদী রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়ানোর ও চেষ্টা করছেন তিনি।
পদযাত্রার সীমাবদ্ধতার প্রশ্নে রাকিব জানান, প্রথম কয়েকদিন হাটার পর পা ব্যথা ও ফুলে গেলেও এখন তা সুস্থ হয়ে গেছে। এবং তিনি মনোবলের উপর জোর দিচ্ছেন। এতে করে তিনি তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
বাঁচতে হলে মহাশয়, রক্ষা করুন জলাশয়। বাঁচলে নদী বাঁচবে দেশ,আলোর হবে পরিবেশ। দখল দূষণ বন্ধ করি/নদীর মতন জীবন গড়ি। এ স্লোগানকে সামনে রেখে নদী রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান সচেনতন মহলের প্রতি।
বাংলাদেচ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) কক্সবাজার শাখার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, নদী, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য বাঁচাতে রাকিবের একক আন্দোলন ও প্রতিবাদ অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য যে বার্তা দিচ্ছেন এতে নদী ও পরিবেশ বাঁচাতে নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবেন।তার এই কাজে সবার সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। সেই সাথে নদী রক্ষায় দেশবাসীকে সচেতন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, নদী,পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারীদের কঠোর আইনের আওতায় আনতে তাঁর এ পদ যাত্রা যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ২৪ বছরের এ যুবক একজন শিক্ষার্থী। তাঁর দেশপ্রেম, অদম্য সাহস ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে।
মন্তব্য করুন
(পর্ব-১)
স্বপ্নের নেপাল। হিমালয়ের কন্যা সে। সাদা সুউচ্চ পর্বত একে তুষারের শুভ্রতা দিয়ে আচ্ছন্ন করে রাখে গভীর আর মৌন সৌন্দর্যে। আর তাই যারা পাহাড় ভালোবাসেন, উচ্চতাকে ভালোবাসেন তাদের কাছে হিমালয় হলো স্বর্গ
এক একটা পাহাড় জয় করা যেনো পাহাড়প্রেমীদের কাছেও স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্নপূরণ করতে বাংলাদেশের থেকে যাত্রা করেন মোহাম্মদ তানভীর আলম। ছুয়ে আসেন ইয়ালা পিকের শিখর। ল্যাংটাং রিজিয়নের ইয়ালা পাহাড়ের উচ্চতা ৫৫২০ মিটার বা প্রায় ১৯ হাজার ফুট। সেই গল্প ও নেপাল পৌছানোর পর তার দিনলিপি নিয়ে লিখেছেন আমাদের কাছে। তার গল্প আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো দুইটি ভিন্ন পর্বে। আজকের পর্বে থাকছে সেই গল্পের একাংশ।
৩০.১০.২২, দিন ১
সকাল ৬ টায় বাসা থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার মাধ্যমে অভিযানের যাত্রা শুরু। কোন গাইড ছাড়া নিজের প্রচেষ্টায় নেপালের লাংটাং রিজিওনে ৫,৫০০ মিটার উচ্চতার ট্রেকিং চূড়া ইয়ালা পিক সামিট এই অভিযানের উদ্দেশ্য।
১২:৩০: ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট, কাঠমান্ডু থেকে বের হয়ে হোটেল এর উদ্দেশ্যে ট্যাক্সি নিলাম। হোটেল ফ্লোরিড আজকের অস্থায়ী ঠিকানা। হাতে সময় না থাকায় ঢাকা থেকেই হোটেল বুকিং করে এসেছিলাম।যদিও রূম পছন্দ হয়নি কিন্তু ওদের নীচতলায় যে রেষ্টুরেন্ট তার জন্য হোটেল এর পিছনে খোলা উঠানে বসার ব্যবস্থাটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ওদের রিসেপশনে ছোট্ট একটা লাইব্রেরী বা বইয়ের সংগ্রহ আছে। হোটেল এর লোকেশনটা অবশ্য অনেক ভালো, কাঠমান্ডুর প্রাণকেন্দ্র থামেলের জেড স্ট্রীটে এটির অবস্থান। এবং হোটেল মালিক মিঃ দিপক খুবই আন্তরিক। বাজেট হোটেল হিসেবে হোটেলটি ভালো।
সন্ধ্যায় কিছু প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ করে ও স্লিপিং ব্যাগ ভাড়া নিয়ে রূমে ফিরে ব্যাকপ্যাক গোছানো শুরু করলাম। কালকে সকালে বাস ধরতে হবে।
৩১.১০.২২, ২য় দিন
গন্তব্য সায়াব্রুবেসি
৭ টায় মাছাপোখারি বাস-স্ট্যান্ড এ এসে কয়েকজনকে সায়াব্রুবেসির কথা জিজ্ঞেস করলে লাল একটি বাস দেখিয়ে দিল (আসলে হেলপার এসে ডেকে নিল), বাসটির সামনে শুধু ডিলাক্স লেখা ছাড়া আর কিছু পড়তে পারলাম না। কারণ শুধু এটুকুই ইংরেজী শব্দ এবং বাসটি যাত্রীতে পরিপূর্ণ।
তবে, বাসে যেহেতু আরো কয়েকজন ট্যুরিস্ট (ইউরোপীয়ান) আছে তাই নিশ্চিন্তে উঠে পরলাম। তবে সিট একবারে পিছনের সারির বাম পাশে কোণায় । যদিও অনেক দীর্ঘ রাস্তা তবু অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই সিটেই বসে পরলাম কারণ পরের বাসের জন্য আবার ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে যেটার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই।
৩১.১০.২২, ২য় দিন- গন্তব্য সায়াব্রুবেসি
৭ টায় মাছাপোখারি বাস-স্ট্যান্ড এ এসে কয়েকজনকে সায়াব্রুবেসির কথা জিজ্ঞেস করলে লাল একটি বাস দেখিয়ে দিল (আসলে হেলপার এসে ডেকে নিল), বাসটির সামনে শুধু ডিলাক্স লেখা ছাড়া আর কিছু পড়তে পারলাম না। কারণ শুধু এটুকুই ইংরেজী শব্দ এবং বাসটি যাত্রীতে পরিপূর্ণ।
তবে, বাসে যেহেতু আরো কয়েকজন ট্যুরিস্ট (ইউরোপীয়ান) আছে তাই নিশ্চিন্তে উঠে পরলাম। তবে সিট একবারে পিছনের সারির বাম পাশে কোণায় । যদিও অনেক দীর্ঘ রাস্তা তবু অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই সিটেই বসে পরলাম কারণ পরের বাসের জন্য আবার ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে যেটার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই।
ড্রাইভার এবং হেলপার খুবই প্রফেশনাল; বাসের এক ইঞ্চিও ফাঁকা রাখে নাই। সিট পরিপূর্ণ হওয়ার পর মাঝখানের জায়গা বস্তা দিয়ে পরিপূর্ণ করেছে এবং মাল বোঝাই সেই বস্তাগুলোকে আবার সিটে রূপান্তরিত করে তার উপর যাত্রীও বসাইছে । বাসটি লোকাল হলেও এসি ও টিভি আছে, এবং সবার বিনোদনের জন্য হেলপার প্রায় পুরো রাস্তা টিভিতে নেপালি ও হিন্দি মিউজিক ভিডিও চালু রেখেছে।
গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে দুই জায়গায় পুলিশ চেক পোস্টে এন্ট্রি করতে হয়েছে এবং ধুনচেতে আর্মি চেক পোস্টে ব্যাগ চেকিং করাতে হয়েছে। বাংলাদেশ এর কথা শুনে ব্যাগ খুলে নাই। চেকপোস্ট এর পাশেই ট্রেকিং পারমিশন সেন্টার, ওখান থেকে ১৫০০ রূপি (সার্ক কান্ট্রি না হলে ৩০০০ রুপি) দিয়ে পারমিশন নিয়ে নিলাম।
সন্ধ্যা ৫:৩০ এ সায়াব্রুবেসিতে এসে পৌঁছালাম, ১০:৩০ ঘন্টার বাস জার্নি। বাস জার্নিটা প্রথমে উপভোগ্য থাকে, ভ্রমন শুরুর উত্তেজনা এবং চারপাশে মনোরম দৃশ্য। কিন্তু যত সময় গড়ায় তত বিরক্ত লাগে, কখন জার্নি শেষ হবে শুধু এই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। পিছনের সিটে যতটা ঝাঁকির আশা করেছিলাম অল্প কিছু জায়গা ছাড়া সেটা পাইনি।
হোটেল গার্ডেন ইন আজকের ঠিকানা। হোটেলের পিছনের উঠানটি একেবারে নদীর কোল ঘেঁষে। উঠানে বসলে ত্রিশুলি নদীর তীব্র স্রোতের অনবরত শব্দ একধরনের ঘোর তৈরি করে, সাথে ঠান্ডা বাতাস আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক সেই ঘোরের মাত্রা বাড়িয়ে মোহাবিষ্ট করে কল্পনার কোন এক জগৎ এ নিয়ে আছড়ে ফেলে।
১.১১.২২, ৩য় দিন
আজকে ট্রেকিং শুরু, মানে ট্রেকিং এর প্রথম দিন। আজকে গন্তব্য লামা হোটেল, দূরত্ব ১১ কিঃমিঃ।
২৫+ কেজি ব্যাকপ্যাক এর জন্য একবার পোর্টার নেয়ার চিন্তা করেও পরে নিজেই বহন করার সিদ্ধান্ত নেই।
সকাল ৭টায় হাঁটা শুরু করলাম। ট্রেইলের শুরুতে একটা চেকপোস্ট পরে, ডাকল না দেখে নিজে গিয়ে পারমিশন দেখাতে চাইলাম তাও দেখল না। হাঁটা শুরু করার একটু পরেই একটা Y জাংশনে এসে দ্বিধায় পরে গেলাম। আমিতো লামা হোটেল যাব, কিন্তু সাইনবোর্ডে লামা বা লাংটাং এর কোন নাম নেই। ডানদিকে দেখাচ্ছে কিওয়াহারি আর বাম দিকের নামটা ঠিক মনে নেই। রাস্তাটা উপরের দিকে লুপের মত উঠে গেছে তাই ম্যাপ দেখেও ১০০% বুঝতেছিনা কোন দিকে যাব। পরে ডানে বামে দুই দিক দিয়ে উঠানামা করে বুঝলাম রাস্তা ডানদিকের টা এবং একজন স্থানীয় বাসিন্দা ঐখান দিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিলাম যে রাস্তা ডানদিকেরটা। এখান থেকে ট্রেলটি লাংটাং খোলার (নদী) পাশ দিয়ে চলে গেছে।
রাতে ব্যাগের ওজন নিয়ে যে একটু চিন্তা ছিল হাঁটা শুরু করার পরে সেটি চলে গেছে। খুব সহজেই এই ওজন নিয়ে একটানা ২ ঘন্টা হেটে ডোমেন চলে আসলাম এবং প্রথম বিরতি নিলাম। ট্রেলটি এখানে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলে গেছে। ডোমেন থেকে বেম্বো পর্যন্ত পরের ২ ঘন্টা একটু কষ্ট হয়েছে কারণ রাস্তাটা উপরের দিকে উঠে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে শেষের ৩ ঘন্টা বেম্বো থেকে রিমচে পর্যন্ত। এই রাস্তাটা ৬০০ মিটার উপরের দিকে উঠে গেছে এবং শেষ ৫০০ মিটার খাড়া।তারউপর ৯০% রাস্তা উঁচু সিঁড়ি। এই সিঁড়ি গুলো উঁচু হওয়ার কারণে আমি হাতের পোল থেকে তেমন একটা সাপোর্ট নিতে পারছিলাম না। যে কারণে পুরো ভর আমার উরুর সামনের মাংসপেশীতে এসে পরে। একপর্যায়ে এমন একটা অবস্থা দাঁড়ায় যে আমার পেশীগুলো ক্লান্ত হওয়া সত্ত্বেও দাঁড়াতে পারছিনা, কারণ দাঁড়ালেই পায়ের মাংসপেশি ক্রাম্প করছে। ভাবছি কোন ভাবে রিমচে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলে আজকে আর সামনে আগাবো না, তবে নেপালি একটি যুগল সাহস দিল এবং ঠিক করলাম লামাতেই যাব। রিমচে থেকে লামা পর্যন্ত রাস্তা কিছুটা সমতল ও কিছুটা ডাউনহিল। সিঁড়ির পুরো রাস্তাটা আমি মনে মনে একটা বাক্যই আওড়াইছি সেটা হল 'আই হেট সিঁড়ি'।
বেম্বোর কিছুদূর পর লাঞ্চের জন্য বিরতি নেই। আমি সাধারণত নিরিবিলি জায়গায় লাঞ্চ করতে পছন্দ করি। যেহেতু প্রায় সবাই বেম্বোতে লাঞ্চ সেরে ফেলে তাই আমি যেখানে বসেছি এখানে তেমন কেউ থামে না। এখান থেকেই রাস্তাটা খাড়া উপরের দিকে উঠে গেছে।
বিকাল ৩:৩০ এ লামা হোটেল এসে পৌঁছালাম। রাতে এবং সকালে খাব এই চুক্তিতে রূম ফ্রীতে নিলাম। এই জায়গাটা নদীর পাড়ে এবং জঙ্গলের ভিতরে। রূমে ব্যাগ রেখে হাতে চা নিয়ে নদীর পাড়ে চলে আসলাম বিকালটা উপভোগ করার জন্যে।
৪র্থ দিন, ০২.১১.২২- গন্তব্য মুন্ডু, দূরত্ব ১৩ কিঃ মিঃ, উচ্চতা ৩৪০০ মিটার
সকাল ৬:৪৫ এ লামা হোটেল থেকে মুন্ডুর উদ্দেশ্যে ট্রেকিং শুরু করলাম। কয়েকবার ভালো করে ম্যাপের কন্টুর লাইনগুলো চেক করলাম, না আজকের রাস্তা ওতো খারা না।
ট্রেক শুরুর ঘন্টাখানেক পরে ঘুমনাচক নামক একটা জায়গায় এসে পৌঁছাই, যার উচ্চতা ২৭০০ মিটার। যদিও এত তাড়াতাড়ি চা পানের বিরতি নেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই তারপরও জায়গাটির আকর্ষণ এড়াতে না পেরে এইখানে অনেকক্ষণ সময় অতিবাহিত করি। এখানে রাস্তাটা নদীর পাশ দিয়ে চলে গেছে এবং রাস্তার পাশে একমাত্র লজটির নাম রিভারসাইড হোটেল। লেমন টি হাতে নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে ইচ্ছে করছে এখানে সারাটা দিন পার করে দেই, অসাধারণ সুন্দর একটি জায়গা। একদিকে নদীর সৌন্দর্য আরেকদিকে লাংটাং লিরুঙের চূড়ার সৌন্দর্য আমাকে বিমোহিত করে ফেলছে।
চা বিরতির পর ট্রেকিং শুরুর কিছুক্ষণ পরে বনের মাঝে ঝিরি বা নদীর উপরে সুন্দর একটি কাঠের ব্রীজের ছবি তোলার সময় হাতের গ্লাভস হারিয়ে ফেলি। পরে গ্লাভসটি উদ্ধার করার জন্য ওই একই রাস্তায় দুইবার পুনরায় উঠা নামা করি কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গ্লাভসটি আর খুঁজে পাই নি। গ্লাভস এর আশা বাদ দিয়ে সামনে আগানো শুরু করি, একটু পরেই জঙ্গলের ভিতর লাঙ্গুর (বানর প্রজাতি) দেখতে পাই। বনের ভিতর বন্য প্রাণী দেখার অনূভুতিই অন্যরকম।
ভিড় এড়িয়ে লাঞ্চ করার জন্য ম্যাপ দেখে চামকি নামক একটা জায়গা ঠিক করে রাখি। কারন আমার হিসাব মতে ওই জায়গায় পৌঁছাতে দুপুর একটা বেজে যাবে এবং সাধারণত অন্যান্য ট্রেকাররা এর আগে লাঞ্চ সেরে ফেলবে। সাধারণত বেশিরভাগ ট্রেকার দুপুর বারোটার দিকে লাঞ্চ করে ফেলে। আমার সৌভাগ্যই বলতে হবে চামকিতে একটি মাত্র বেকারি শপ এবং এটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। কেরট কেক আর হট চকলেট অর্ডার করে বেকারির বাইরের উঠোনে অপেক্ষা করতে লাগলাম। আমার সামনে সাদা শুভ্র ও সবুজে আচ্ছাদিত পাহাড়গুলো মাথা উঁচু করে তার সৌন্দর্য ও বিশালতা জানান দিচ্ছে। আমি অপার নয়নে সেই সৌন্দর্যের দিকে তাকিয়ে আমাকে স্বাগতম জানানো মেয়েটির কথা ভাবছিলাম। কেন যেন মনে হচ্ছে ওর ভিতরে একটা গল্প আছে। এবং চেহারায় অদ্ভূত একধরনের মায়া ফুটে আছে। অর্ডার দেয়ার সময় কোন কথা হয়নি, কারণ ও কথা না বলে ইশারায় এবং লিখে যোগাযোগ করছে। আমার মনে হয় ও ইংরেজী জানে না এবং প্রশ্নগুলো কাউকে দিয়ে আগে থেকে লিখে রাখছে। খাওয়া শেষে বিল দেয়ার সময় আমার ভূল ভাঙ্গে এবং অবাক হয়ে দেখি ও ইংরেজী কমিকস বই পড়ছে। তারমানে ও ইংরেজী জানে, তাহলে কথা বলল না কেন? যখন নিজেই প্রশ্নের উত্তরটা পেলাম তখন মনটা বিষন্ন হয়ে গেল, বুঝতে পারলাম ও কথা বলতে পারে না। গল্প করার ইচ্ছেটা দমন করে রওনা দিলাম, কারণ সন্ধ্যার আগে মুন্ডু পৌঁছাতে হবে। মনে মনে ঠিক করে রাখলাম যদি এই রাস্তা দিয়ে ফিরি তবে ওর গল্প শুনব।
একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে রাস্তায় বেশিরভাগ নেপালিরা প্রথমে ওদের ভাষায় কথা শুরু করে, পরে যখন শুনে বাংলাদেশী তখন অনেক উচ্ছাস প্রকাশ করে।
লাংটাং গ্রামের আগে একটি লজে এক ভদ্রমহিলা সিবাকথর্ন জুস খাওয়ার জন্যে ডাক দেয়, প্রথমে দাঁড়ানোর ইচ্ছে না থাকলেও পাহাড়ে এই জুস পানের তীব্র ইচ্ছা আমাকে দাড় করিয়ে দিল। জুস পান করার পর নিজেকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে দিলাম। ভদ্রমহিলা জুসটা সত্যি অনেক ভালো বানিয়েছেন।
লাংটাং ভিলেজ থেকে প্রায় মুন্ডু পর্যন্ত একটি সীমানা প্রাচীর চলে গেছে যেটি প্রায় ৫০০ মিটার লম্বা এবং এটি মানি ওয়াল নামে পরিচিত। ওয়ালটির শেষ ২০০ মিটার অবশ্য বেশি পুরনো না। এখানকার তিব্বতিয়ানরা লামা উপজাতি। এদের পূর্বপুরুষরা একটা কাগজে স্থানের বর্ণনা করে তার উপর এই সীমানা প্রাচীর তৈরি করে।
ঘড়িতে বিকাল ৫ টা, মুন্ডুতে চলে আসছি। 'এভারেস্ট হোটেল' লজটি পছন্দ হয়েছে, অনেক পরিছন্ন এবং রুম থেকে ভিউটা অনেক সুন্দর। এই প্রথম আমি উঁচু উচ্চ স্থানের লজে হাই কোমড পেলাম। আধুনিকতার ছোঁয়া এখানেও চলে আসছে।
পথে ওমর ও চন্দন প্রাসাদ এর সাথে পরিচয় হয়, ওরা নেপালের এটোরাতে থাকে। ওরা মূলত মোটরসাইকেল ভ্রমণ বা এডভেঞ্চার করতে বেশী পছন্দ করে। বছরে একবার ট্রেকিং এ বের হয়। ওঁরাও একই লজে উঠছে। ওরা শুধু কায়ানজি রি পর্যন্ত যাবে। আমার মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ না করায় চন্দন ওর মোবাইলের ইন্টারনেট শেয়ার করে যার মাধ্যমে আমি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই। এই জায়গায় নেপাল টেলিকম এর নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়, কিন্তু আমার সিম এনসেল এর হওয়ায় নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। আজ রাত্রে এখানেই। কাল আবার যাত্রার চিন্তা নিয়ে ঘুমিয়ে পরি।
(চলবে........................)
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ দেশের নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী। আর নীতি পরিবর্তন হলেই কেবল ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান। বর্তমান জাতীয় প্রেক্ষাপটে ‘তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে এ তথ্য। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আয়োজন শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে যুব সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এই প্রতিবেদন লেখা অব্দি তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া সীমান্তবর্তী আজিজ নগরে অবস্থান করছেন। পায়ে হেটে এখন পর্যন্ত সে পথ অতিক্রম করেন ৮৪৫ কিলোমিটার। ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ৮/৯টা পর্যন্ত হাঁটেন তিনি। রাতে যেখানে হাঁটা বন্ধ হয়ে যেত, ওই এলাকায় পরিচিত কারও বাসায় পরিচিত না থাকলে হোটেলে, মসজিদে, পেট্রোল পাম্প এর রেস্ট হাউজে রাতযাপন করেন। দূরত্ব ভীতির কারনে কেউ সঙ্গী না হওয়ায় একাকী সে পদযাত্রা শুরু করে বলে জানায় তিনি। রাকিব আরও জানান, এটাই তার প্রথম দীর্ঘ একাকী পদযাত্রা। দুরত্ব ও দিনের হিসেব করে তিনি ২৪ দিনে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করেন। এবং তিনি একাই ১০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এক একটা পাহাড় জয় করা যেনো পাহাড়প্রেমীদের কাছেও স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্নপূরণ করতে বাংলাদেশের থেকে যাত্রা করেন তানভীর। ছুয়ে আসেন ইয়ালা পিকের শিখর। ল্যাংটাং রিজিয়নের ইয়ালা পাহাড়ের উচ্চতা ৫৫২০ মিটার বা প্রায় ১৯ হাজার ফুট। সেই গল্পে নেপাল পৌছানোর পর তার দিনলিপি নিয়ে লিখেছেন আমাদের কাছে। সেই গল্প আমরা আপনাদের সাথে তুলে ধরবো দুইটি ভিন্ন। আজকের পর্বে থাকছে সেই গল্পের একাংশ।