ইনসাইড বাংলাদেশ

কেন রাশিয়া-চীনমুখী বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৬:০২ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail কেন রাশিয়া-চীনমুখী বাংলাদেশ

ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর জন্য চুক্তি করলো রাশিয়ার সাথে। এর আগে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যে সময় চীন-রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধের যুগ আবার ফিরে এসেছে, সেই সময় বাংলাদেশে কেন রাশির সাথে নতুন করে চুক্তি করল এই নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন উত্থাপন হয়েছে। বাংলাদেশ এর মাধ্যমে কি বার্তা দিলো? সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কূটনীতি যদি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশ অনেকটাই রাশিয়া এবং চীনমুখী কূটনীতির দিকে এগুচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই দুটি দেশ ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। আর এটির ফলেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশের উপর নানারকম চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাশিয়া এবং চীনকে পশ্চিমা বিশ্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে। পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে যে, এই দুটি দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন রয়েছে, গণতন্ত্র নেই। চীনের সঙ্গে মার্কিন বিরোধী নতুন বিষয় নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুটি দেশের মধ্যে থেমে থেমে অর্থনৈতিক স্নায়ুযুদ্ধ চলে। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার সঙ্গেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ইউক্রেনে কথিত রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নানা রকম প্রশ্ন উত্থাপন করছে এবং ইউরোপের দেশগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের যুদ্ধাবস্থা তৈরি করেছে। ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন জো বাইডেন। এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কেন রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করলো এ ব্যাপারে সরকারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। সরকার মনে করছে যে, তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে এবং এই কাজটি সঠিক মূল্যে এবং ভালোভাবে যারা করতে পারবে তাদের সঙ্গেই বাংলাদেশ চুক্তি করেছে।

১৯৭১ এ রাশিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। ভারতের পরই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অবদান অনস্বীকার্য। আবার ১৯৭১ এ চীনের ভূমিকা সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ছিল। চীন ছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের পক্ষে। কিন্তু বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এখন চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈরীভাবাপন্ন দুটি দেশ হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশ রাশিয়া-চীনের সঙ্গে সম্পর্ক করে কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটা বার্তা দিতে চেয়েছে? বাংলাদেশ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের উপর আর নির্ভরশীল নয়, বরং বাংলাদেশের নতুন অর্থনৈতিক নীতিও রয়েছে এবং বিশ্ব রাজনৈতিক বলয়ে যে মেরুকরণ হচ্ছে সেই মেরুকরণেও বাংলাদেশ চীন-রাশিয়ার পক্ষে এরকম একটি অবস্থান ঘোষণা করে বাংলাদেশ কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর পাল্টা চাপ ফেলতে চেয়েছে ? এই প্রশ্নগুলি কূটনৈতিক অঙ্গণে আলোচিত হচ্ছে। 

একটি দেশের উপর যদি চাপ সৃষ্টি করতে হয়, তাহলে সেই দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মার্কিন ভূমিকা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের বর্তমান এবং সাবেক সাত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। কিন্তু এসব নিয়ে সুধীসমাজের যত না উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আলাপ-আলোচনা, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সেটির কোনো প্রভাব পড়েনি। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অত্যন্ত সংহত অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের অভিবাসীদের রেমিটেন্স এবং পোশাক শিল্পে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশের একটি বড় বাজার রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে। সেই বাজারের উপর কি রাশিয়া-চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কোনো প্রভাব ফেলবে?

কূটনীতিকরা মনে করছে, সেটি করবেন না। কারণ বাংলাদেশ থেকে পোশাক ইউরোপে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যায় এর গুণগত মান এবং মূল্যের কারণে। বাংলাদেশকে রপ্তানি দিয়ে চাপে ফেলা খুব কঠিন হবে। তবে বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এখনো প্রভাবশালী এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটলে তারা বড় ধরনের চাপ দিতে পারে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে যে ভারসাম্যের কূটনীতি অনুসরণ করছে সেই ভারসাম্যের কূটনীতির ধারায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর অবস্থানে যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া এবং চীনমুখী বাংলাদেশের কূটনীতি সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে একটা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন। 

রাশিয়া   চীন   বাংলাদেশ   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা গেছে

প্রকাশ: ১০:১০ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে শুক্রবার (১০ মে) থেকে পবিত্র জিলকদ মাস গণনা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র জিলকদ মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেছে।

জিলকদ মাস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর জয়: কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শামসুল আলম চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ইমান আলীর বিজয় উপলক্ষে ভোটারদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

বৃহষ্পতিবার (৯ মে) ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো ইশতিয়াক আরিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শামসুল আলম চৌধুরীর ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমান আলীকে নির্বাচিত করায় ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

উল্লেখ,  এবারের স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতিক দেয়া থেকে বিরত রয়েছে আওয়ামী লীগে।

যদিও ফরিদপুরের স্থানীয় অনেকে প্রশ্ন করছেন আওয়ামী লীগ যেখানে দলীয় প্রতিক দেয়নি সেখানে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ কিভাবে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সমর্থন দিল।

ফরিদপুর   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ০৯:১৬ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিদ্যুৎ সংকটের এই সময়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বাসভবন এলাকায় লোডশেডিংয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদে চলমান দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গেল কিছুদিন তীব্র গরমে কিছুটা লোডশেডিং হয়েছে। আমরা তা স্বীকার করি। আমি নির্দেশ দিয়েছি লোডশেডিং গ্রামে নয়, এখন থেকে বিদ্যুৎ সংকটে লোডশেডিং হবে গুলশান-বনানীতে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায়ও লোডশেডিংয়ের নির্দেশ দিয়েছি।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশেষ আইন নিয়ে সমালোচনা কেন? পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই, যারা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। কিন্তু প্রতিদিন এটা নিয়ে চিল্লাচিল্লি শুনি। ওই আইনে কাউকে দায়মুক্তি দেয়া হয়নি। 
  
সামিটের বিলম্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জরিমানা আদায় হয়েছে বলেও জানান এই সংসদ নেতা। তিনি বলেন, বিশেষ আইন নিয়ে যারা কথা বলছেন, সমালোচনা করছেন তারা অর্বাচীন।
 
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা হয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অথচ সেটাই সবচেয়ে ক্লিন বিদ্যুতের সোর্স। রূপপুরে আরও একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী   লোডশেডিং  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নতুন সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণা ৬ জুন

প্রকাশ: ০৮:৩৮ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদের সরকারের প্রথম বাজেট ঘোষণা করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ জুন)। নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীরও এটি প্রথম বাজেট।

তাকে সহায়তা করবেন দেশের প্রথম নারী অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। এদিন উত্থাপিত হবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৬ জুন। বাজেট পেশের দিনক্ষণ ঠিক করে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হবে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার। যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট। এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের এবারের বাজেট হবে ব্যয় সংকোচনমূলক। এটি তৈরি হচ্ছে অত্যন্ত সুকৌশলে। প্রতি বছর বাজেটের প্রবৃদ্ধি সংকোচনমূলক ধরেই এবারের হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে। ফলে বাজেটের আকার এবার খুব বেশি বাড়ছে না।


নতুন সরকার   বাজেট ঘোষণা   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ওয়াজেদ মিয়া ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর কাছাকাছি থেকেও ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি: নানক

প্রকাশ: ০৮:০২ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী। যদিও বৈবাহিক সম্পর্ক বাদেই বাঙালি জাতির এক গর্বিত ও আলোকিত মানুষের নাম ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। এক বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী ছিলেন এই পরমাণু বিজ্ঞানী। ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে থেকেও তার নির্মোহ জীবনযাপন তাকে জাতির কাছে করেছে চির অমর। ব্যক্তিজীবনে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে অভ্যস্থ এই বিজ্ঞানীর দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা হোসেন পুতুল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়েও, রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর সবচেয়ে কাছাকাছি থেকেও কোনোদিন তিনি ক্ষমতাচর্চায় আগ্রহী হননি। ক্ষমতার উত্তাপের বিপরীতে তিনি ছিলেন স্থির, অচঞ্চল, নিভৃতচারী ও নিষ্কলুষ একজন। নিজের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতায় তিনি ক্রমে ক্রমে হয়ে উঠেছেন সত্যিকার আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষের প্রতিচ্ছবি। 

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী নানক বলেন, তিনি আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। যে মানুষটি আমাকে এত পছন্দ করতেন তার শেষ যাত্রায় আমি রংপুর গিয়েছিলাম।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) মোহাম্মদপুর টাউন হলে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগারে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্ডল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুন্নাহার লাইলী, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোঃ শৌকত আকবর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।

মন্ত্রী নানক বলেন, ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। শুধু পড়াশোনা নয় রাজনীতিতেও ছিলেন সক্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়ার সময় থেকেই ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট হতে শুরু করেন রাজনীতির সাথে। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদশের্র প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন । ১৯৬২ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে এবং ওই বছরেই জেনারেল আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেপ্তারও হন তিনি। 

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সময়টা ১৯৬৭ সাল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ। ছয় দফা আন্দোলনের কারণে গোটা দেশে তখন বিরাজ করছে ভীতিকর পরিস্থিতি। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৭ নভেম্বর পবিত্র শবেবরাতের রাতে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের পছন্দের পাত্র, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেধাবী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা। বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাবা শেখ মুজিব জেলে থাকায় তাদের বিয়ের আয়োজনটি ছিল খুব সাদামাটা। বিয়ের পরদিন জেলগেটে ওয়াজেদ-হাসিনা নবদম্পতিকে দোয়া করেন বঙ্গবন্ধু। নতুন জামাইকে সে সময় তিনি একটি রোলেক্স ঘড়ি উপহার দেন। এই উপহার আজীবন সযত্নে রেখেছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। 

মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর আগে-পরের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে তার উপস্থিতি ছিল। তিনি সর্বদা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ড. ওয়াজেদ মিয়াকে বিজ্ঞানী হিসেবেই তাকে দেখতে চেয়েছেন। রাজনীতিতে তাকে কখনোই জড়ানোর চেষ্টা করেননি। ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। ৪০ বছরের বিবাহিত জীবনে ড. এম এ ওয়াজেদের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি তার পরিবারের পাশে থেকে যে ধৈর্য, সাহস ও সেবার পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন, তা অসাধারণ।

নানক বলেন, বিজ্ঞান নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন ওয়াজেদ। প্রথিতযশা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশের রূপপুরে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপিত হবে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, বিশ্বমাঝে বাংলাদেশ বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার নিরলস পরিশ্রম অব্যাহত রেখেছিলেন আমৃত্যু। তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য সামনে রেখে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। বাংলাদেশকে বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক ডিজিটাল রাষ্ট্রে পরিণত করাই আমাদের উদ্দেশ্য। 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড ও তৎপরবর্তীকালের ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে মন্ত্রী নানক বলেন, আজকে যারা প্রতিনিয়ত সরকারের সমালোচনা করেন তাদের কাছে প্রশ্ন কোন সময়টা আমাদের চেয়ে ভালো ছিলো। আমি বলব তারা ভুল পথে আছে। লন্ডন থেকে নির্দেশনা নিয়ে চলা দলটি রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্ত নিতেই থাকবে।

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন