দিগন্ত জুড়ে চির সবুজের বুকে কাঁচা হলুদের প্রলেপ। এ যেন প্রকৃতির ক্যানভাসে অপরূপ রূপে আঁকা হলুদের আলপনায় চোখ জুড়ানো দৃশ্য। ফুলে ফুলে ভরে গেছে ক্ষেত। মাঠে মাঠে হলুদ বরণ সরিষা ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। হাসি ফুটেছে চাষির মুখে। ভাল ফলনের আশায় দিন কাটছে তাঁদের। সরিষা ফুলের মধু আহরণে নেমেছেন অনেকেই। অনেকেই সরিষা ক্ষেতে স্থাপন করেছেন মৌবাক্স। এতে পরাগায়ন ভাল হয়, ফলনও বৃদ্ধি পায়। বাড়তি মধু পাওয়া যায়। বাজারে সরিষা ফুলের মধুর চাহিদাও রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমি। এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৪শ’ ৭০ হেক্টর জমি। এবার ৪ হাজার ৩শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮০ হেক্টর, নাচোলে ৬ হাজার ৫শ’হেক্টর, শিবগঞ্জে ৪ হাজার ২শ’ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ৩ হাজার ৩শ’ ২০ হেক্টর ও ভোলাহাটে ১ হাজার ৩শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরাঞ্চল, বরেন্দ্র অঞ্চল আর নদীর ধারে সরিষার আবাদ। সামান্য পরিচর্যা আর অল্প খরচে সরিষা চাষে লাভের আশা করছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, সরিষা চাষে খরচ ও পরিশ্রম দু’টোই কম হওয়ায় চাষীদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল খালেক জানান, ‘আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পতিত পড়ে থাকে। আর সেই সুযোগেই অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ শুরু করি। আবহাওয়া অনুকূলে এবং রোগ-বালাই না হলে ভালো ফলনের আশা রয়েছে।’
সাইদুর রহমান নামের অপর এক চাষি জানান, ‘বিঘা প্রতি সরিষা চাষে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। শুধুমাত্র বীজ ও আর সামান্য সার দিলেই সরিষা আবাদ করা যায়।’
শিবগঞ্জের চাষি ফারুক আহাম্মদ বলেন, ‘সরিষা চাষে খরচ খুবই কম ও পরিশ্রমও কম লাগে। যার কারণে চরাঞ্চলে সরিষা চাষাবাদ বাড়ছে। বিঘায় ৫ থেকে সাড়ে ৬ মণ সরিষা পাওয়া যায়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কানিজ তাসনোভা জানান, সরিষা চাষে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। উপসহকারী কর্মকর্তারা নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। এ বছর সরিষার ভালো ফলনের হাতছানি দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তা খুবই ইতিবাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে আরেকটি সাফল্য। চাষাবাদে খরচের পরিমাণ কম ও পানি ২ থেকে ৩ বার দিলেই হয়। বারি ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ জাতের এবং বিনা ৪ ও ৯ জাতের সরিষা জেলায় আবাদ হয়েছে। দেশি জাতের সরিষার ৭০ থেকে ৭৫ দিনে ফসল উৎপাদন এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের ফলন হয়ে থাকে।
সরিষার ফুল কৃষকের স্বপ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।