পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালীতে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খালিদ বিন ওয়ালিদের বিরুদ্ধে এই প্রতারণার অভিযোগ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগে জানান, কম্বল দেয়ার নাম করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি সংক্রান্ত ঘটনায় অভিযুক্ত সদ্য বিদায়ী ইউএনও মাশফাকুর রহমানের পক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিতে তাদের বাধ্য করানো হয়েছে। আবার অনেককে কম্বল না দিয়ে শূন্য হাতে বিদায় দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খালিদ বিন ওয়ালিদ স্থানীয় যুবলীগ নেতা।
অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা গেছে, র্দীঘ সাড়ে চার বছর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ইউএনও ও অ্যাসিল্যান্ডের দায়িত্ব পালন করেন মাশফাকুর রহমান। দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনকালে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন ইউএনও মাশফাকুর রহমান। এ সকল অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনায় ইউএনও মাশফাকুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি শীর্ষ গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা নিয়ে দফায় দফায় তদন্ত করেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন। তদন্তে সত্যতা পেয়ে ইউএনও’র বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঢাকায় চিঠি লেখেন পটুয়াখালী থেকে সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। গত ১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন ইউএনও’কে অবমুক্ত করলে পুলিশ পাহাড়ায় পুলিশের গাড়ীতে রাঙ্গাবালী ত্যাগ করেন ইউএনও মাশফাকুর রহমান।
জানা গেছে, নানা ঘটনায় আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে জনরোষ এড়াতে ইউএনও পুলিশের গাড়ীতে করে রাঙ্গাবালী ত্যাগ করেছেন। এ সংক্রান্ত ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ সকল ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইউএনও’র অনুসারীরা গত ৮ ডিসেম্বর তার পক্ষে মানববন্ধনের আয়োজন করেন, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খালিন বিন ওয়ালিদ।
গত ৮ ডিসেম্বর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয়া বাহেরচর সরকারি আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা পাশা তালুকদার ও তার স্ত্রী অমলা বেগম বলেন, ‘গত ৮ ডিসেম্বর কম্বল দেয়ার কথা বলে আমাদের ডেকে নেয়া হয়। আমরা বঙ্গবাজারে গেলে ইউএনও স্যারের মানববন্ধনের লাইনে দাঁড়াতে বলা হয়। এ সময় তাদের কথা মত প্রায় এক ঘন্টা রোদে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের শেখানো কথা গুলো বলি। অথচ আমাদের কম্বল না দিয়ে বিদায় করা হয়েছে।’
আশ্রয়ণের বাসিন্দা পিয়ারা বেগম ও মিনারা বেগম জানান, কম্বল দেয়ার কথা বলে তাদের ডাকা হয়। পরে তাদের ইউএনও’র পক্ষে আয়োজিত মানবনন্ধনে দাঁড়াতে বলা হয়। অথচ মানববন্ধন শেষে তাদেরকে কম্বল না দিয়ে বিদায় করেন তারা (ভাইস চেয়ারম্যান)।
বাহেরচর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা জেলে ইলিয়াসের স্ত্রী শিরিন বেগম জানান, গত ৮ ডিসেম্বর আশ্রয়ণের বাসিন্দা নুরু কম্বল দেয়ার কথা বলে তাকে ডেকে নেয়। এরপর অন্যদের সাথে তিনি বঙ্গবাজারে গেলে, তারা (ভাইস চেয়ারম্যান) তাদেরকে রোদের মধ্যে এক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখেন, কিন্তু কোন কম্বল দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, ‘রাঙ্গাবালীতে কোন অফিসার আসলে, একটি স্বার্থন্বেষী মহল তাদের কাছাকাছি থেকে সুবিদা নিতে লিপ্ত হয়। স্বার্থ ফুরালে সুবিদাবাদীরা ওই অফিসারকে বির্তকিত করেন। যে কারণে এখানে কোন অফিসার আসতে চান না। ইউএনও যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন, তাই মানবতার জায়গা থেকে তাকে সমর্থন করেছি। তাছাড়া কম্বল বিতরণ ও মানবন্ধন হয়েছে আলাদা স্থানে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কেউ হয়তো এমন অভিযোগ করেছে।’
ভাইস চেয়ারম্যান রাঙ্গাবালী উপজেলা পটুয়াখালী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।