বিদায়ি
২০২২ সালে ৬ হাজার
সাতশ ৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায়
৯ হাজার ৯৫১ জন নিহত
এবং ১২ হাজার ৩৫৬
জন আহত হয়েছেন। যা গত ৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে
রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি
সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ
যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক
চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে
ধরেন।
দেশের
জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে
প্রকাশিত সড়ক, রেল ও
নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ
মনিটরিং করে প্রতি বছরের
ধারাবাহিকতায় এই প্রতিবেদন তৈরি
করা হয়েছে।
এতে
দেখা গেছে, বিদায়ী ২০২২ সালে ৬৭৪৯টি
সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৯৫১ জন নিহত
এবং আহত হয়েছেন ১২৩৫৬
জন। ২০২১ সালের চেয়ে
২০২২ সালে সড়কে দুর্ঘটনা
১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও
প্রাণহানি ২৭ দশমিক ৪৩
শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ৮ বছরে নিবন্ধিত
যানবাহনের পাশাপাশি ছোট যানবাহন বিশেষ
করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংখ্যা
৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার
সরকারি আদেশ অমান্য করে
জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে
অবাধে চলাচল করেছে। এসব কারণে গত
৮ বছরের মধ্যে ২০২২ সালে সড়কে
সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে
বলে পর্যবেক্ষণে ওঠে এসেছে।
সড়কে দুর্ঘটনায়
আক্রান্ত ৩০৯০ জন চালক, ১৫০৩ জন পথচারী, ৭৪২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮৮৫ জন শিক্ষার্থী,
১৩২ জন শিক্ষক, ২৮৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫০ জন নারী, ৭৯৪ জন শিশু, ৪৪ জন
সাংবাদিক, ৩১ জন চিকিৎসক, ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ০৫ জন শিল্পী, ৯ জন আইনজীবী ও ২৯
জন প্রকৌশলী এবং ১৬৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এ উৎসব উদযাপন করবেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার (২২ মে) বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, হিংসায় উন্মত্ত পাশবিক শক্তিকে দমন, মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আজকের পৃথিবীতে বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। সব শ্রেণিপেশা, সম্প্রদায়ের জনগণের উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধ লোভ, দ্বেষ, লালসাকে অতিক্রম করে জীবন ও কর্মের মাধ্যমে মানবজাতিকে আলোকিত করেছেন। তিনি ছিলেন সত্য ও সুন্দরের আদর্শে উজ্জীবিত।
তিনি বলেন, আমরা সব সম্প্রদায়ের মানুষের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীগণ যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমানভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। আমি আশা করি, গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ ও লালন করে সকলে বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবেন।
গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিজ্ঞান ও নির্বাণ লাভ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম দেওয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।
মন্তব্য করুন
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৭ সালে। প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পার হলেও ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা ঠিক করতে পারেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা । এতে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ গলাচিপা পৌরবাসী ।
সরেজমিনে দেখা গেছে,গলাচিপা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শান্তিবাগ এলাকার গলাচিপা ও ডাকুয়া ইউনিয়ন যাওয়ার প্রধান সড়কের ওপরে ফেলা ময়লা ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। ভাগারটিতে জ্বলছে আগুন । ময়লা- আবর্জনায় ঢেকে গেছে পুরো এলাকা । সড়কের যাতায়াত করা লোকজন এবং এলাকাবাসী সকলে নাক চেপে চলাচল করে ।ভাগারটির ঠিক পাশে রয়েছে একটি পুকুর যে পুকুরটির পানি ব্যাবহার করে ওই এলাকার অসংখ্য মানুষ ।
রাস্তার উপরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন হসপিটাল ক্লিনিকে ব্যবহার করা সিরিঞ্জ শুই স্যালাইন ও কাচের বোতল এতে বিভিন্ন সময় ক্ষতির সম্মুখীন হয় এলাকার চলাচল করা এলাকাবাসী । এই ময়লার ভাগারটি দ্রুত অপসরন ও শহরের বাহিরে কোথাও স্থায়ী করার দাবী জানান এলাকাবাসী ।
শান্তিবাগ এলাকার মোঃ রাসেল বলেন, ‘এই ময়লার গন্ধে বসবাস করা অসম্ভব এই এলাকায় এখন থাকাই বড় দায়, স্থায়ী বাসিন্দা না হলে এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতাম। এইখানে বাসা থাকায় আত্মীয় স্বজনরা ও আসতে চায় না ।’
আরেক ভুক্তভোগী ডলি বেগম বলেন, ‘এই ময়লা গুলো পৌরসভার লোকজন গাড়িতে নিয়ে এসে ফেলে চলে যায় এই ময়লার গন্ধে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায় । এমন চলতে থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের অসুখ হইয়া যাইবে । দ্রুত এই ময়লা সরানোর জন্য পৌরসভাকে বারবার বল্লেও তারা কোনো কিছু করে না।’
এবিষয়ে গলাচিপা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুনীল বিশ্বাস জানান, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জায়গা ইতোমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার থেকে বরাদ্দ আসলেই ময়লা স্থানান্তর করা হবে।
গলাচিপা পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক তুহিনের সাথে এই বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন
আজ (২২ মে) বুদ্ধ পূর্ণিমা। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এটি। এই দিনে ভগবান বুদ্ধ আবির্ভূত বা বৌধি প্রাপ্তি হন আর তাই তার এই মহা নির্বাণের স্মৃতিকে স্মরণ করতেই মূলত আজকের
দিনটিকে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ হিসেবে পালন করেন বুদ্ধ ভক্তবৃন্দরা।
পৃথিবীতে যখন অস্থিরতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়, যখন সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকা মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই বুদ্ধ আমাদেরকে শিক্ষা দেয় পঞ্চশীলের। প্রাণী হত্যা না করা, ব্যভিচার থেকে বিরত থাকা, চুরি না করা, মিথ্যাকে প্রশ্রয় না দেয়া, মাদক গ্রহণ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদির মাধ্যমে সৎ জীবন যাপনের শিক্ষা দেয় বুদ্ধ। বুদ্ধ শব্দের অর্থ যিনি পরম শাশ্বত জ্ঞান লাভ করেছেন। অর্থাৎ যিনি নিজের জ্ঞানের ঊর্ধ্বে। বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে এমন ২৮ জন বুদ্ধের উল্লেখ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গৌতম বুদ্ধ ২৮তম।
ধারণা করা হয় গৌতম বুদ্ধের জন্ম আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে। ৬২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নেপালের কপিলাবস্তুর লুম্বিনী নামক স্থানে তার জন্ম হয়। তার পিতার নাম উদ্বোধন। যিনি ছিলেন শাক্যগণের রাজা। মাতা ছিলেন মায়া দেবী। গৌতম বুদ্ধের জন্মগত নাম অবশ্য সিদ্ধার্থ গৌতম। সিদ্ধার্থের জন্মের ৭ দিনের মাথায় তার মায়ের মৃত্যু হয়। এরপর ভগবান বুদ্ধ তার বিমাতা গৌতমীর কাছে লালিত পালিত হয়। সে কারণে তিনি তার নামের সাথে গৌতম নামটি ধারণ করেন।
কথিত আছে, সিদ্ধার্থের জন্মের পর তার পিতা সিদ্ধার্থের ভবিষ্যৎ গণনার জন্য আট জন জ্ঞানী লোককে ডাকেন। এদের মধ্যে একজন ভবিষ্যদ্বাণী করেন, রাজপুত্র হয় বিরাট সম্রাট হবেন নয়তো মহাজ্ঞানী সন্ন্যাস হবে। রাজা উদ্বোধন সবসময় চাইতেন তার ছেলে যেন সম্রাট হন। তিনি মনে করতেন সিদ্ধান্ত যদি কোন দুঃখ বা কষ্ট পান তবে সে বৈরাগ্য জীবনে উৎসাহিত হবেন। তাই রাজা সবসময়ই সিদ্ধার্থকে আনন্দে আর আভিজাত্যে রাখার চেষ্টা করতেন। এই উদ্দেশ্যে সিদ্ধার্থের ১৮ কিংবা ১৯ বছর বয়সে তাকে বিবাহ দেন সিদ্ধার্থের পিতা। কিন্তু যার অদৃষ্টে আছে মহাজ্ঞান, জীবের উদ্ধার তাকে আটকানো কার সাধ্য!
জনশ্রুতি আছে, একদিন সিদ্ধার্থ বাগানে হাট ছিলেন। এ সময় তিনি প্রথমে একজন বৃদ্ধকে দেখতে পান, এরপর এক অসুস্থ, এবং পরে একজন মৃতকে দেখতে পান যাকে ঘিরে আত্মীয়-স্বজনরা বিলাপ করছিল। এই ঘটনার বৃত্তান্ত তিনি তার সাহচর্য চণ্যকে কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এসবই নিয়তি। আবার, এমনই একদিন বাগানে হাঁটার সময় সিদ্ধার্থ দেখতে পাই একজন সাধু জীর্ণ বস্ত্র পরে হাঁটছে। এ বিষয়ে তিনি চণ্যকে জিজ্ঞেস করলে চণ্য বলেন, এই সাধু নিজের জীবন ত্যাগ করেছে মানুষের সুখের জন্য।ধারণা করা হয়, সেদিন রাতেই সিদ্ধার্থ তার স্ত্রী সন্তানকে রেখে বেরিয়ে পড়েন জ্ঞানের সন্ধানে। মানুষের দুঃখ ও দুঃখের কারণ জানার উদ্দেশ্যে।
এরপর দীর্ঘ ৮০ বছর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে তিনি তার কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্যে সফল হন। সিদ্ধার্থ গৌতম থেকে হয়ে যান গৌতম বুদ্ধ। কথিত আছে, বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তার বোধ প্রাপ্তি বা মহানির্বাণ হয়। তাই এই তিথিকে 'বুদ্ধ পূর্ণিমা' বলা হয়।
গৌতম বুদ্ধ আমাদের শিক্ষা দেয় অহিংসার, ত্যাগের এবং সুন্দর ও সৎ জীবন যাপনের। গৌতম বুদ্ধের জীবনী বা শিক্ষা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সম্রাট অশোক যদি কঠিন যুদ্ধবাজ থেকে একজন আগাগোড়া অহিংস মানুষের পরিণত হতে পারে তাহলে আমরাও গৌতম বুদ্ধের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনের কাঙ্ক্ষিত সৎ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। হয়ত বৌদ্ধ ধর্ম দর্শন অনুসারে ৫০০০ বছর পর অন্য কোন বুদ্ধ আসবেন, কিন্তু গৌতম বুদ্ধ যে শিক্ষা মানুষের মাঝে রেখে গেছেন তার স্থায়ী হয়ে থাকবে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগ
মন্তব্য করুন