ইনসাইড বাংলাদেশ

কেরানীগঞ্জে মাটিদস্যুতা

প্রকাশ: ১২:৪৪ পিএম, ০৯ জানুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

ঝুঁকিতে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ লাইন বুড়িগঙ্গা নদীর কোলঘেঁষা কেরানীগঞ্জের কোণ্ডা ইউনিয়নে প্রধান সমস্যা মাটিদস্যুতা। এক দশক ধরে মাটিখেকোদের থাবায় প্রায় সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার বেশির ভাগ বসতভিটা ও ফসলি জমি পরিণত হয়েছে বিরানভূমিতে। আইনের তোয়াক্কা না করে মাটিখেকোদের খননযন্ত্র পৌঁছে গেছে পদ্মা রেলপথের খুব কাছে। খুঁটির দুই পাশে ২০-৩০ ফুট গভীর খাদ সৃষ্টি হওয়ায় ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পদ্মা সেতু ঘিরে চলছে ঢাকা-যশোর রেলপথ নির্মাণকাজ। বিভিন্ন এলাকায় এর নির্মাণশৈলীও দৃষ্টি কাড়ছে। এমন সুখবরের মধ্যেই কেরানীগঞ্জ অংশে প্রায় চার কিলোমিটার রেলপথের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর পারে বন্যাপ্রবণ কোণ্ডা ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে রেলপথের উভয় প্রান্তে মাটি সরিয়ে নিচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। উভয় দিক থেকে গভীর খাদ সৃষ্টি হওয়ায় রেলপথটি ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদী পেরিয়ে ঢাকা-মাওয়া রেলপথটি পড়েছে কেরানীগঞ্জের কান্দাপাড়া গ্রামে। নদীর কোলঘেঁষা এলাকাটি নিচু হওয়ায় রেলপথ বানানো হয়েছে পিলার দিয়ে মাটি থেকে কিছুটা ওপরে। কান্দাপাড়ার অদূরেই ব্রাহ্মণপাড়া গ্রাম। ব্রাহ্মণপাড়া স্কুল পেরিয়ে মসজিদের ঢাল হয়ে একটু এগোলেই বড় বড় খাদ। খাদগুলো ২০ থেকে ৩০ ফুট গভীর। মাটিদস্যুদের খননযন্ত্র পৌঁছে গেছে রেলপথের ৫০ গজের মধ্যে। রেলপথের অন্য প্রান্তেও দেখা গেছে একই চিত্র। এভাবে দুই ধারের মাটি সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা কান্দাপাড়া থেকে সিরাজদিখানের সীমানা পর্যন্ত।

জানতে চাইলে রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, রেলপথের পাশ থেকে মাটি কেটে নিলে অবশ্যই ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। তবে আমরা এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। কারা এটি করছে অবশ্যই খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পদ্মা সেতু ঘিরে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণ চলছে। ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মাণ রেলপথটি ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। আগামী জুনে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে রেল চলাচল শুরুর কথাও বলছেন রেলমন্ত্রী। এ অবস্থায় রেলপথের কাছাকাছি খনন চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক (পিবিআরএলপি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘রেলপথটি টেকসই করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবু কেউ যদি খুঁটির একেবারে কাছাকাছি থেকে মাটি খনন করে সেটি চিন্তার বিষয়। আমরা সরেজমিনে পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, মাটিখেকোরা কাউকে তোয়াক্কা করে না। তারা প্রকাশ্যেই অন্যের জমি থেকে মাটি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁরা রেলপথের উভয় পাশে মাটি কাটা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। কোণ্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক দশক ধরে দিন-রাত সমান তালে মাটি লুট করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। ফলে এখানে আবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের হুমকি-ধমকিতে অনেক মানুষ এলাকা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। নিঃস্ব হলেও মাটিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার সাহস নেই ভুক্তভোগীদের। এই পরিস্থিতিতেও গত তিন বছরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ২০টির বেশি জিডি করেছেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয়রা বলছেন, সব জেনেও নির্লিপ্ত স্থানীয় প্রশাসন। পুরো এলাকা বিরানভূমি হয়ে পড়ায় পরিবেশও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ আইনে কৃষিজমির মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি নিজের মালিকানাধীন কৃষিজমি থেকে মাটি কাটতে চায়, তারও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সামগ্রিকভাবে মাটি কাটার ঘটনা পরিবেশের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এ জন্য আমরা ইটভাটা বন্ধের দিকে জোর দিচ্ছি।’ কেরানীগঞ্জে কৃষিজমির মাটি লুটের ঘটনা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

কৃষিজমির উর্বর মাটি কাটার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অন্যের জমিতে মাটি কাটা এমনিতেই অপরাধ। সেটি যদি ফসলি জমি হয়ে থাকে, তা আরো বড় দণ্ডনীয় অপরাধ। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি ইঞ্চি জমিতে চাষাবাদের প্রতি জোর দিচ্ছেন, সেখানে কেরানীগঞ্জের উর্বর জমি লুট করে নেওয়ার ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। আমরা অবশ্যই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেব।’

বুড়িগঙ্গা নদীর কোলঘেঁষা সাত হাজার বর্গকিলোমিটারের এই ইউনিয়নে প্রধান সমস্যা এখন মাটিদস্যুতা। সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু পার হলে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ মোড়। এখান থেকে একটু বাঁ দিকে এগিয়ে কোণ্ডায় ঢুকলেই মনে হবে সমতল ভূমি কিংবা কৃষিজমি আর বাকি নেই। ফসলি জমি, বসতভিটা হয়ে গেছে পুকুর, ডোবা কিংবা বড় আকৃতির দিঘি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্রাহ্মণগাঁও, নোয়ার্দা ও কান্দাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, রেললাইনের খুব কাছে চলে গেছে সন্ত্রাসীদের খননযন্ত্র। রেললাইনের খুব কাছে ২০ থেকে ৩০ ফুট গভীরতার খানাখন্দ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য বসতভিটা ও স্থাপনাও ঝুঁকিতে রয়েছে। পারজোয়ার ব্রাহ্মণগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি পাঁচতলা ভবনসহ ছয়টি ভবনেরও খুব কাছাকাছি মাটি কাটার ঘটনা ঘটছে।

বছরে অর্ধশত কোটি টাকার মাটি লুট: বর্তমানে কান্দাপাড়া, ব্রাহ্মণগাঁও, পূর্ব বাঘৈর, বীর বাঘৈর ও আড়াকুল—এই পাঁচটি স্পট থেকে মাটি চুরি হচ্ছে। মাটি কাটা হচ্ছে ১০ থেকে ১২টি এক্সকাভেটরে। মাটি সরবরাহে চলাচল করছে ৬০ থেকে ৭০টি ট্রাক্টর ও মিনি ডাম্পার। এখান থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই হাজার গাড়ি মাটি যায়। এ মাটির মূল গন্তব্য স্থানীয় ইটভাটা। বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং জমি ভরাটেও লাগে মাটি। এক গাড়ি মাটির দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। সেই হিসাবে পাঁচটি স্পট থেকে দিনে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাটি চুরি হচ্ছে, বছরের হিসাবে যা অর্ধশত কোটি টাকার বেশি।

স্থানীয়দের দাবি, গত ১০ বছরে কোণ্ডাসহ এর আশপাশের এলাকা থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার মাটি লুট হয়ে গেছে। বীর বাঘৈর এলাকার একটি স্পট থেকে লুট করা মাটি সরবরাহের সময় একটি ট্রাক্টরের পিছু নিয়ে খোঁজ মিলল একটি ইটভাটার। মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মোখলেস। সেখানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে সদ্য কেটে আনা মাটি।

ব্রাহ্মণগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেললাইন থেকে মাত্র ৫০ গজের মধ্যেই বেশ গভীর করে মাটি কেটে নিয়েছে চক্রটি। সমতল ভূমি থেকে অন্তত ২০-৩০ ফুট গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে, যা রেললাইনটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সংঘবদ্ধ চক্রের দৌরাত্ম্য: এলাকাবাসী বলছেন, সব জেনেও কেউ ভয়ে থানায় যায় না। গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের সরেজমিন উপস্থিতি টের পেয়ে প্রায় সব স্থান থেকেই লুটেরারা সটকে পড়ে। আগের দিন কাউটাইলে দেখা গিয়েছিল মাটি লুটের দৃশ্য।

স্থানীয় এক চা দোকানি কথায় কথায় বলেন, ‘সুজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই উত্তর পাবেন। তাঁর খবর দিতে পারবে তাঁর ভাতিজা রবিন।’ একটু খুঁজতেই পাওয়া গেল রবিনকে। তাঁর কথায়ও বোঝা গেল মাটি লুটের সঙ্গে সুজন জড়িত!

অনুসন্ধানে মেলে আরো অনেক নাম। একজনের নেতৃত্বে কাজ করে ১০ থেকে ১৫ জন। এমন চক্রের মূল হোতা হিসেবে পাঁচজনের নাম উঠে এসেছে। তাঁদেরই একজন কাউটাইল মৌজার সুজন মিয়া ওরফে সুজন মাঝি। তাঁর নেতৃত্বে কাজ করছেন সাদ্দাম, মামুন, কামাল মেম্বার, কাশেম বেপারীসহ বেশ কয়েকজন। সুজন একই সঙ্গে ব্রাহ্মণগাঁও এলাকাও নিয়ন্ত্রণ করেন। ওখানে তাঁর নেতৃত্বে আছেন বাবু, শহীদ, পারভেজ। পূর্ব বাঘৈরে জাফর ইকবাল বাপ্পীর নেতৃত্বে আছেন জুয়েল আহাম্মেদ ডন, কাওছার, পলাশ, মোয়াজ্জেম, বাবু, রাহাত, আবজাল সিকদার, মাসুম। বীর বাঘৈরে রোমান আহমেদের নেতৃত্বে চলেন অন্তর, হিমেল ও ভেলু। আড়াকুলে সোহাগ মিয়ার নেতৃত্বে আছেন পারভেজ, টিক্কা মিয়া, জয়নালসহ অনেকে। চক্রের আরেকজন হোতা জরিপ উদ্দিন।

গত ২ ডিসেম্বর আড়াকুলে গিয়ে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা জমির মাটি উধাও। একটি এক্সকাভেটর পড়ে আছে। স্থানীয়রা বলছেন, আগের দিন মাটি চুরির সময় জমির মালিক বাধা দেওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তাই আপাতত মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা আঙুল উঁচিয়ে পাশের একটি তিনতলা ভবন দেখিয়ে বলেন, মানুষের জমি থেকে মাটি চুরি করে এই দালান তুলেছেন সোহাগ মিয়া।

বীর বাঘৈর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি এক্সকাভেটর দিয়ে নদীর পাশের মাটি কাটা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন এখানে মাটি কাটা চলে। কথা বলার জন্য এগিয়ে গেলে সাংবাদিক বুঝেই সটকে পড়েন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

৩ ডিসেম্বর দুপুরে পূর্ব বীর বাঘৈরেও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে সটকে পড়েন মাটিদস্যুরা। দেখা যায়, দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিল। রাখা ছিল মাটিভর্তি চারটি গাড়ি। পাশেই ঘুমাচ্ছিলেন মনির হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক। ১০ মিটার দূরে ৩ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। এখানকার মাটি দিয়ে তাঁর জমিটিও ভরাট করা হচ্ছিল। মনির জানান, তাঁর জমি ভরাটের জন্য ৬৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেছেন মোয়াজ্জেমের সঙ্গে। কাজটি দেখাশোনা করছেন ডন, পলাশ ও কাউসার।

নিঃস্ব, উদ্বাস্তু অনেক মানুষ: আড়াকুলের নোয়ার্দা এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, ধলেশ্বরী নদীর একটি শাখা গ্রামের পাশ দিয়ে গেছে। এর দুই পাশের মাটি লুট চলছেই। এর আগে লুট হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জমির মাটি। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার।

পূর্ব বীর বাঘৈরের ভুক্তভোগী হাওয়া বেগম বড় আকৃতির এক গর্ত দেখিয়ে বলেন, ‘ওইখানে আমার স্বামীর বাড়ি ছিল। মাটিদস্যুরা আমাদের উচ্ছেদ করে মাটি নিয়ে গেছে। এখন বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এখন ওরা মাটি কাটতে কাটতে এই বাড়ির পাশে চলে এসেছে। জানি না, এখানে কত দিন টিকতে পারব।’

হাওয়া বেগমের বড় ভাই তসলিমও (৫৯) জানান একই কথা। তিনি বলেন, মাটিদস্যুদের কারণে বহু মানুষকে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারাতে হয়েছে। বিভিন্ন ইটভাটায় এই মাটি সরবরাহ করা হয়।

ব্রাহ্মণগাঁও গিয়ে দেখা যায়, গ্রামটির অবস্থা সবচেয়ে করুণ। যত্রতত্র মাটি লুটের দৃশ্য। মসজিদের পাশে বিলটির যেন অস্তিত্বই নেই। আছে বিশাল আকৃতির চারটি গর্ত। গভীরতা হবে ৫০ থেকে ৬০ ফুট। আর একেকটির আয়তন হবে কমপক্ষে ২০ হাজার বর্গফুট। মাটি লুট করতে গিয়ে ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে রেললাইনটিও। পাশে স্কুল ভবনও ঝুঁকিতে।

স্থানীয় এক গৃহবধূ (নাম প্রকাশ করতে চাননি) সাংবাদিকদের একটি গর্তের পাশে নিয়ে গিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে বিলাপ শুরু করেন। তিনি বলেন, এখানে তাঁদের বসতভিটা ছিল। কিছু জমিতে চাষাবাদও করতেন। কয়েক মাস আগে দস্যুরা মাটি কেটে এতটাই গভীর করেছে যে ভরাট করাও দুঃসাধ্য। অন্যের জমিতে পরিবার নিয়ে তাঁর উদ্বাস্তুজীবন কাটছে। তিনি বলেন, মাটি লুটেরারা এতটাই শক্তিশালী যে থানায় গেলেও কোনো প্রতিকার মেলে না।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক সাইনবোর্ড পড়ে রয়েছে। একটি সাইনবোর্ডে লেখা—এই জমির মালিক ড. মো. হুমায়ুন কবির, জমির পরিমাণ ৪.৫ শতাংশ। সাইনবোর্ডে উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে কল দিলে কথা হয় হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। সাইনবোর্ড ভেঙে পড়ে রয়েছে—এ খবর শুনেই বিচলিত হয়ে পড়েন তিনি। পেশায় চিকিৎসক হুমায়ুন জানান, কয়েক মাস আগে সাড়ে ৪ শতাংশ জমিটি কিনে বাউন্ডারি দিয়ে রেখেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় মানুষের জমি থেকে মাটি লুট হয় বলে এলাকায় সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাতারাতি তাঁর জমির মাটিও যে লুট হয়ে গেছে, সে খবর জানতেন না।

প্রশাসনের ভাষ্য: কেরানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘শুনেছি যে সেখানে কিছু ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। জমির মাটি লুটের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ তিনি জানান, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ফসলি জমির মাটি কাটার কোনো নিয়ম নেই।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান বলেন, ‘ওসব এলাকায় এর আগেও মাটি কাটার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সময় প্রশাসন ব্যবস্থাও নিয়েছে। এবার কেউ অভিযোগ দেয়নি। আমরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেব।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমানও বলেন, ‘এর আগেও মাটি লুটের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভূমি অফিস থেকে কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে আমরা তাঁদের সহযোগিতা করে থাকি। তবে সম্প্রতি কেউ মাটি লুটের বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি। তবু আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’


কেরানীগঞ্জ   মাটিদস্যু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম। প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে বেড়েছে এক টাকা। পেট্রল ও অকটেনের দাম বেড়েছে লিটারে দুই টাকা ৫০ পয়সা। 

জ্বালানি তেলের নতুন দাম মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা থেকে কার্যকর হচ্ছে। 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের বিদ্যমান মূল্য লিটার প্রতি ১০৬ টাকা থেকে এক টাকা বৃদ্ধি করে ১০৭ টাকা, পেট্রোলের বিদ্যমান মূল্য লিটার প্রতি ১২২ টাকা থেকে ২.৫০ টাকা বেড়ে ১২৪.৫০ টাকা এবং অকটেনের বিদ্যমান মূল্য ১২৬.০০ টাকা থেকে ২.৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ১২৮.৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পুন:নির্ধারিত এ মূল্য আজ রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হযেছে।

পুন:নির্ধারিত এ মূল্য বুধবার (১ মে) থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

জ্বালানি তেল   বিশ্ববাজার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

অতি বাম-অতি ডানরা মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে: শেখ হাসিনা

প্রকাশ: ০৮:২০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে যারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া তারা, আর কিছু বুদ্ধিজীবী অনবরত গিবত গাইছে। অতি বাম আর অতি ডান মিলে সরকার উৎখাতে কাজ করছে। তাদের মূল লক্ষ্য সরকার উৎখাত।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই পথ চলতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের ওপর আস্থা রেখেই দেশ চালায়৷ কিছু রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী অনবরত দেশবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না৷ বাংলাদেশ তো পেছাচ্ছে না৷ এগিয়ে যাচ্ছে৷ তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে লুটপাট করতে পারছে না বলেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছে বিএনপি৷ বিএনপি এমন একটি দল, যাদের কোনো মাথামুণ্ডু নেই৷ তারা শুধু পারে অনলাইনে নির্দেশনা দিতে৷ ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে অপকর্ম করেছে, তা মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত না৷ 
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় না দেখে, মানবাধিকার নিয়ে বাংলাদেশকে সবক দেয়৷ মার্কিন কোনো পুলিশের গায়ে কোনো রাজনৈতিক দল হাত তুললে, কী করতো সেখানকার পুলিশ? কদিন আগে যুদ্ধের বিরোধীতা করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে কি জুলুমটাই না করলো আমেরিকার পুলিশ। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন৷ এর জবাব কী? 
 
প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় গরম ছড়িয়ে পড়ছে৷ শিগগিরই বৃষ্টি হবে বলে আশা করছি৷ পহেলা আষাড় থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ চালিয়ে যেতে হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা৷ 

শেখ হাসিনা   কার্যনির্বাহী সংসদ   গণভবন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুদকে প্রথম নারী ডিজি শিরীন

প্রকাশ: ০৭:৫১ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পেয়েছেন শিরীন পারভীন। তিনি সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক ছিলেন। নিজস্ব জনবল কিংবা প্রেষণ- যেকোনো পর্যায় থেকে দুদকের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী ডিজি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ পদোন্নতির কথা জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর তৃতীয় গ্রেডে শিরীন পারভীনকে মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি দিয়ে এ আদেশ জারি করা হলো।

দুদক   দুদক মহাপরিচালক   শিরীন পারভীন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ

প্রকাশ: ০৭:১৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। 

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী চিঠিতে সরকারি চাকরিতে আবেদনের সময়সীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে এটা মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি এই সুপারিশ করেছেন। সিদ্ধান্ত নেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা ৩০ বছর মানদণ্ড হিসেবে অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পাতা নম্বর ৩৩-এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তারা বলে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ বয়স নয়, যোগ্যতাই একজন প্রার্থীর একমাত্র মাপকাঠি। ওই দেশের আলোকে বাংলাদেশেও চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করা দাবি করে আসছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই সব শিক্ষার্থী দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করে এলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন শিক্ষামন্ত্রীও একই ধরনের সুপারিশ করলেন।

সরকারি চাকরি   শিক্ষামন্ত্রী   মহিবুল হাসান চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী কী তালগোল পাকাচ্ছেন?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

করোনাকালে প্রায় দুই বছর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। শিক্ষার ক্ষতি নিয়ে সে সময় অনেকে কথা বলেছেন, অনেকেই আহাজারি করছেন। কিন্তু তৎকালীন সময়ে শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তারা বলেছেন, জীবন সবচেয়ে মূল্যবান। জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। তাই তারা অনলাইন এ ক্লাস চালু রাখেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও সেই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরও বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে গড়িমসি করা হয়েছিল। এবং নজিরবিহীন ধীর নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এটি নিয়ে তৎকালীন সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সমালোচিত হয়েছিল।

এবার আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মরিয়া দেখা যাচ্ছে। এখন আগের শিক্ষামন্ত্রী নেই। ডা. দীপু মনি এখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু মহিবুল হাসান চৌধুরী, যিনি ডা. দীপু মনির সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি এখন শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য মরিয়া তৎপরতা চালাচ্ছেন।

কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হবে? কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কেন পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে হবে এনিয়ে বিশিষ্টজনদের মধ্যে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে আবহাওয়া পরিস্থিতি যখন একের পর এক হিট অ্যালার্ট দিচ্ছে, তাপমাত্রার পারদ যখন দিনদিন চড়ছে। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একগুঁয়েমি করছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের অবস্থান গ্রহণ করেছেন।

সকলেই দাবি করেন যে এখন বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। সেখানে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা সহজে যেতে পারে। এবং করোনার সময় শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তাছাড়া এবার যে গরম পড়েছে, যে কয়দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছিল তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক স্বাস্থ্যহানির ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি রুটিনের দ্বারা পরিচালিত হয়। যেমনটি শিক্ষা শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন। সেই রুটিনে অনেকগুলো বন্ধ থাকে। বিভিন্ন কারণে বন্ধ রাখতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেমন গ্রীষ্মের ছুটি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে, যেটি জুনে হওয়ার কথা। এছাড়াও ঈদুল আজহা উপলক্ষেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে গ্রীষ্মের ছুটি এবং অন্যান্য ছুটিগুলো কমিয়ে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাই যৌক্তিক। কারণ শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং কোন দুর্ঘটনার মধ্যে পতিত হয়, তাহলে এটির দায় দায়িত্ব শুধু একা শিক্ষামন্ত্রীর ওপর বর্তাবে না, পুরো সরকারের ওপর বর্তাবে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারা মনে করেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জোর করে এই তীব্র দাবদাহের মধ্যে নেয়ার ফলে একটি অবিশ্বাসের সম্পর্ক হচ্ছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে একটি সুসম্পর্কের মেলবন্ধনই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞান চর্চার জন্য জরুরী। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি কর্তৃপক্ষ জোর করে খোলা রাখে, তাহলে স্বাভাবিক পরিবেশটি নষ্ট হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করে যে, অস্থিরতা না করে, একগুঁয়িমে না করে শিক্ষামন্ত্রী একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করেবেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ব্যাপারে তার অবস্থান পুর্নবিবেচনা করবেন।


শিক্ষা প্রতিষ্ঠান   শিক্ষা মন্ত্রণালয়   তীব্র তাপদাহ   মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন