ইনসাইড বাংলাদেশ

বেকারত্ব দূরীকরণে চমক দেখাচ্ছে নীলফামারী টিটিসি


Thumbnail

কারিগরি বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলছে নীলফামারী সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)। এখানে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, ড্রাইভিংসহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ-বিদেশে চাকুরির সুযোগ পাচ্ছেন বেকার যুবক-যুবতীরা। এই টিটিসিতে বেকারত্ব দূরীকরণে অসাধারণ সফলতা অর্জন করেছে স্কিলস ফর ইমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ)। নীলফামারী টিটিসি থেকে শুধুমাত্র এই প্রকল্পের আওতায়ই মাত্র ১২মাসে ৭৫০ জন প্রশিক্ষণ নিয়ে এপর্যন্ত ৫১৬জন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন স্থানে চাকরি পেয়েছেন। পর্যায়ক্রমে বাকিরাও পাবে কর্মসংস্থান। শুধুমাত্র দক্ষ জনবল তৈরি করেই নয় বরং তাদের যোগ্য স্থানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে দিয়েছে টিটিসি বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোঃ জিয়াউর রহমান।

জানা যায়, সেইপ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ঢাকার নারায়ণগঞ্জ ইপিজেডের চেক পয়েন্ট সিস্টেম লিমিটেড, উত্তরা ইপিজেডের দেশবন্ধু, মার্জেন, আমিনুল ট্রেড, প্রাণ, আরএফএল সহ দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ বেতনে চাকরি করছেন প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি। শুধুমাত্র দেশেই নয়। দেশের গন্ডি পার হয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে পাঠাচ্ছে রেমিট্যান্স। দেশের দক্ষ জনশক্তি জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, গায়ানা, সৌদি আরব, কম্বোডিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স দিয়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ হচ্ছে দেশের রেমিট্যান্স অর্থনীতি। এতে করে যেমন ধীরে ধীরে দেশের বেকারত্ব হার কমছে তেমনি নি¤œ ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে ফিরছে আর্থিক সচ্ছলতা। যার ফলে উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবনমান।

নীলফামারী সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) সূত্র মতে,‘নীলফামারী টিটিসিতে গেল বছরের জানুয়ারি মাসে স্কিলস ফর ইমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেইপ) প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। এক বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালে এই প্রকল্পের আওতায় ৮টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়েছে ৭৫০জন। এরমধ্যে ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছে ৫১৬ জন। সেইপ প্রকল্পের আওতায় এপর্যন্ত অটোক্যাড ট্রেডে ৮৮জনের মধ্যে ৫৪জন, আইটি সাপোর্ট (কম্পিউটার অপারেটর) ৮৬ জনের মধ্যে ৫৪জন, ইলেকট্রনিক্স ৯০জনের মধ্যে ৫৪জন, ইলেকট্রিক্যাল ৩০জনের মধ্যে ১৮জন, গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং ৮৩ জনের মধ্যে ৫৯জন, মেকানিক্যাল ৮৭ জনের মধ্যে ৫৬জন, হ্যাভি ইকুপম্যান্ট (ফ্রকলিপ,ক্রেইন,রোলার) ১৬৮ জনের মধ্যে ১২৯জন ও ড্রাইভিং ট্রেডে ১২০জনের মধ্যে ৯২ জন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পেয়েছে কর্মসংস্থান।’

‘সেইপ প্রকল্পের ট্রেড ছাড়াও অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আর্কিটেকচার ড্রাফটিং, উইথ অটোক্যাড, ক¤িপউটার অপারেশন, গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং, ইলেকট্রিক্যাল হাউজওয়্যারিং, কনজুমার ইলেকট্রনিক্স, মেশিন টুলস অপারেশন, ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন, মোটর ড্রাইভিং, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, হাউস কিপিং এবং বর্হিগমন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বেকার যুবক-যুবতীরা। এছাড়াও জাপানী, কোরিয়ান, ইংরেজি এবং চাইনিজ ভাষা শেখানো হচ্ছে নীলফামারী টিটিসিতে।’

টিটিসি থেকে প্রশিক্ষন নেওয়া একাধিক প্রশিক্ষনার্থী জানান, ‘প্রশিক্ষণ নেওয়ার আগে প্রশিক্ষনার্থীরা পরিবারের বোঝা হয়ে থাকলেও প্রশিক্ষণের পর তারা চাকরি পেয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে পরিবারের জন্য আশির্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। প্রশিক্ষন নিয়ে খুজতে হয় নি তাদের কর্মসংস্থান। টিটিসি থেকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা করে  দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান। তারা বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।’

কম্পিউটার ট্রেডে প্রশিক্ষন নিয়ে নারায়নগঞ্জ ইপিজেডের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্টে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি পাওয়া কাওসার আলী বলেন,‘নিজের কর্মসংস্থান নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কি করবো না করবো। পরে জানতে পারলাম টিটিসিতে বিভিন্ন ট্রেডে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। তখন সেইপ প্রকল্পের আওতায় কম্পিউটার অপারেশন ট্রেডে চার মাসের কোর্সে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষন নিলাম। প্রশিক্ষন নেওয়ার পর টিটিসি আমার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে দিবে তা ভাবতে পারি নি। আলহামদুলিল্লাহ এখন একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি। ভালো বেতনও পাচ্ছি। দুশ্চিন্তাও দূর হয়েছে। এজন্য টিটিসিকে ধন্যবাদ জানাই।’

গার্মেন্টস ট্রেড থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের সেকশস-৭ এ সুপারভাইজার পদে চাকরি পেয়েছেন রিমা আক্তার। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। যার কারণে পড়াশোনা চালানো খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছিল। কোনো কিছুতে দক্ষতাও ছিল না যে ওই বিষয়ে কোনো একটা চাকরি করবো। এক বন্ধুর মাধ্যমে খবর পাই বিভিন্ন ট্রেডে টিটিসিতে প্রশিক্ষন প্রদান করা হচ্ছে। তখন টিটিসিতে সেইপ প্রকল্পে গার্মেন্টস ম্যানুফেকচারিং ট্রেডে চার মাসের প্রশিক্ষন কোর্সে ভর্তি হলাম। প্রশিক্ষন শেষ করে তখন চিন্তা আসলো চাকরি হবে কোথায়। এরপর হঠাৎ একদিন টিটিসি থেকে স্যার ফোন দিয়ে বললো সুপারভাইজার পদে চাকরি করবা। আমিতো অবাক হয়ে গেছি। যাই হোক আল্লাহর রহমতে আমি চাকরি পাওয়ায় পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে এজন্য টিটিসিকে ধন্যবাদ জানাই।’

ড্রাইভিং ট্রেডে প্রশিক্ষন নিয়ে দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছেন হাফিজ উদ্দিন। মুঠোফোনে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন,‘চার মাসের ড্রাইভিং প্রশিক্ষন নিয়ে এখন আমি বিদেশে প্রতি মাসে লাখ টাকারও বেশি উপার্জন করছি। বিদেশে আসার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই ছিল। কিন্তু কেমনে, কিভাবে যাবো তা নিয়ে অনেক জল্পনা কল্পনা ছিল। চারিদিকে দালালদের এত দৌরাত্ম ছিল বলার বাইরে। নীলফামারী টিটিসিতে মাত্র চার মাস ড্রাইভিং প্রশিক্ষন দিয়ে তারাই আমাকে দুবাই আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’

অটোক্যাড ট্রেডে প্রশিক্ষন নিয়ে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের মার্জেন কোম্পানীতে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি পাওয়া আতাউর রহমান বলেন,‘যখন বেকার ছিলাম তখন ভেবেছিলাম কি কাজ করবো। কিছুইতো পারি না। কিভাবে জীবন চলবে। কিন্তু টিটিসিতে প্রশিক্ষন নেওয়ার পর বুঝতে পারলাম আমাদের কাজের জন্য কারো পিছনে দৌড়াতে হবে না। নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুললে কাজই আমাদের কাছে দৌড় দিয়ে চলে আসবে। তাই আমাদের উচিৎ চাকরির পিছনে না ছুটে নিজেকে দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তোলা। তাহলে অটোম্যাটিক সফলতা আমাদের কাছে চলে আসবে।’

অবকাঠামো, আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটের মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটির আধুনিকায়নে কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকেরা দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে টিটিসিতে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় ড্রাইভিং প্রশিক্ষন, হ্যাভি ইকুপম্যান্ট (ফ্রকলিপ,ক্রেইন,রোলার) সহ বেশ কিছু ট্রেডে প্রশিক্ষন দিতে বেগ পোহাতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। ড্রাইভিং প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় টিটিসি থেকে ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে প্রশিক্ষন দিতে হচ্ছে প্রশিক্ষনার্থীদের। এতে করে কিছুটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রশিক্ষনার্থীরা। তবে ড্রাইভিং প্রশিক্ষন দূরে গিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও ক্রেইন অপারেটর ট্রেডে প্রশিক্ষন প্রদানে প্রশিক্ষকরা খাচ্ছে হিমশিম। টিটিসির ভিতরে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় বিশাল ক্রেইন চালনায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রশিক্ষনার্থীরা।

জানতে চাইলে নীলফামারী সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) এর অধ্যক্ষ মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘২ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় টিটিসি। প্রতিষ্ঠানের ভিতরেই উল্লেখযোগ্য স্থাপনার মধ্যে একাডেমিক ভবন, আবাসিক হোস্টেল ও অধ্যক্ষের বাসভবন রয়েছে। শুরুতে এখানে পাঁচটি  ট্রেডে প্রশিক্ষন শুরু হলেও এখন ১৩টি ট্রেডে প্রশিক্ষন প্রদান কার্যক্রম চলছে। পর্যায়ক্রমে ট্রেডের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যায়গা সংকুলানের কারণে কিছু কিছু ট্রেডের প্রশিক্ষন প্রদানে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে।’

স্বল্প শিক্ষিত কিংবা বেকাররা সমাজের বোঝা নয়, তাদেরকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলে মানব সম্পদে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য বলে জানিয়ে অধ্যক্ষ জিয়াউর রহমান আরও বলেন,‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে টিটিসি। আমাদের প্রধান লক্ষ্য শ্রমবাজারে চাহিদার ভিত্তিতে যথাযথ কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করে তাদের লক্ষ্যে পৌছে দেওয়া। এছাড়াও প্রশিক্ষিত মানুষকে বিদেশগামী করতে ও দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে টিটিসি কার্যকর ভূমিকা পালন করছে টিটিসি। দেশের প্রশিক্ষিত নাগরিকগণ বিদেশে ভালো কাজের নিশ্চিয়তা পেয়েছেন। এতে করে কমছে বেকারত্ব, পরিবারে ফিরছে স্বচ্ছলতা। আশঙ্কাজনক হারে কমেছে দালালদের দৌরাত্ম্য, স্বস্তিতে বিদেশে গমণ করতে পারছেন দক্ষ জনসম্পদ।

টিটিসি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জয়পুরহাটে হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল ভ্যানচালকের

প্রকাশ: ০৬:১৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকে বাবলু খন্দকার (৪৫) নামে এক ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার গোপীনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ভ্যান চালক জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল সরকারপাড়া গ্রামের শুকুর মাহমুদ খন্দকারের ছেলে বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিক্রির জন্য বাবলু খন্দকার ভ্যান যোগে কয়েক বস্তা আলু নিয়ে গোপীনাথপুর হাটে যান। সেখানে আলুর বস্তা নামিয়ে রেখে চা খেতে দোকানে বসেন তিনি। এসময় হঠাৎ করে বুকে ব্যাথা উঠলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্তে কর্মকর্তা নয়ন হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


হিটস্ট্রোক   ভ্যান চালক   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় সেচের অভাবে অনাবাদি ১০০ বিঘা জমি

প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail সেচের অভাবে অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে ১০০ বিঘা জমি

নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষি কাজে ব্যবহৃত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির অভাবে এই সেচযন্ত্রের আশ পাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। সেচ সংকটের কারণে কিছু কৃষক ধানের আবাদ না করে জমিতে তিলের চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টির কারণে তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে।

  

সেচ নিয়ে কৃষকদের এমন দুরাবস্থা নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, সরদার পাড়া, শেখপুরা ও মন্ডলপাড়া এলাকায়।

 

কৃষকদের দাবি, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লা সংলগ্ন মাঠে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। গভীর নলকূপটি মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে নলকূপটির মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য ২ হাজার টাকা করে দাবি করেন। আশপাশের অন্যান্য নলকূপের সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই পরিমান টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রেখেছেন গভীর নলকূপের মালিক মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

 

গত ১৯ মার্চ ৬০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছে। ওই দুটি সেচ যন্ত্রের মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত গভীর নলকূপের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছে।

 

পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া, শেখপুরা এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ খরচ বাবদ যেখানে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, সেখানে সবুজ তার সেচযন্ত্র থেকে সেচ খরচ দাবি করে ২ হাজার টাকা।

 

অধিকাংশ কৃষক এই পরিমাণ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ সেচ যন্ত্রটি থেকে পানি তোলা বন্ধ করে দেন। ধানের বীজ তলায় সেচ দিতে না পারায় কৃষকদের চারা নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে ধান লাগাতে না পেরে অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে এবং সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকায় অধিকাংশ তিল গাছ মরে যেতে বসেছে। এই দূরাবস্থা নিরসনে জেলা ও উপজেলা সেচ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকেরা।

 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) পৌরসভার হাজীপাড়া সংলগ্ন ওই ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ওই মাঠে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। কিছু জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে অনাবাদি জমি ও তিলের খেতের জমি শুকিয়ে আছে। পানির অভাবে শুকনো মাটিতে বপন করা তিল বীজ থেকে চারা গজায়নি। আবার কিছু কিছু জমিতে চারা গজালেও পানির অভাবে তিলের গাছগুলোর পাতা শুকিয়ে লালচে হয়ে মরতে বসেছে।

 

কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচ যন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো বলেন, ‘একটা মৌসুমে একটা ডিপ টিউবওয়েল চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এছাড়া ট্রান্সফরমার বা সেচ যন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। তাই পানি তোলা বন্ধ রেখেছি।’

 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সম্ভবত এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সেচ যন্ত্রটি চালু করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


অনাবাদি   সেচ   সেচযন্ত্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড চুয়াডাঙ্গায়

প্রকাশ: ০৪:২৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় এই জেলায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ।

তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গায় আজ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী দুই দিন এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে।

এ দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দুপুর থেকেই মরুভূমির মতো তাপ অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। অস্বস্তি বাড়ছে জনজীবনে।

চলমান তাপদাহে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন শ্রমজীবীরা। তীব্র তাপদাহে নষ্ট হচ্ছে ধান, ভুট্টা, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমি ফসল।

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা   চুয়াডাঙ্গা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মৃত্যুর ৩ বছর পর রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই

প্রকাশ: ০৪:৩১ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান বছর আগে। সেই মামলার রহস্যের জট খুলেছে বছর পর। আসামী আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই ফিরোজ আহমেদ জানান, বিগত ২০২১ সালের মার্চ ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামে আসছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্য আমির হোসেন তার দলবল কায়দা করে ভিকটিমের সাথে ভাব জমিয়ে তাকে বিস্কুটের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খ্ইায়ে দেয় এবং তার কাছে থাকা মালামাল নিয়ে যায়। এতে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ছাগলছিড়া এলাকায় তাকে বুঝে দিয়ে বরিশালের দিকে বাস চলে যায়।

পরে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চু শেখকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনায় মৃত বাচ্চু শেখের স্ত্রী মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জ পিবিআই মূল অভিযুক্ত আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে এবং সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে গোপালগঞ্জের পিবিআই-এর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।


পিবিআই   মৃত্যু রহস্য   জবানবন্দি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ

প্রকাশ: ০৪:০৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail নওগাঁয় কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ কর্মসূচী

নওগাঁয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ মৌসুমে উফশী আউশ, পাট ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।


সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টায় নওগাঁ সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন।

এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত মেহেদী সেতু’র সভাপতিত্বে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক কমল ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রণোদনার অংশ হিসেবে মোট ৭ হাজার ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতি বিঘা ফসলের জন্য উফশী আউশ ৬ হাজার ৬৭০ জনকে ৫ কেজি বীজ, ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ১০ কেজি। এছাড়া ২৩০ জনের প্রত্যেককে এক কেজি করে পাট বীজ এবং গ্রীষ্মকালিন ২৫০ জন কৃষককে পেয়াঁজ চাষে এক কেজি বীজ, ডিএপি ২০ কেজি এবং এমওপি ২০ কেজি দেয়া হয়।


কৃষি প্রণোদনা   কৃষক   বীজ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন