মেগা
প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে চট্টগ্রামের
দক্ষিণাঞ্চাল ও কক্সবাজার। সরকারের
শীর্ষ পর্যায়ের সূত্রের বরাত দিয়ে এক
উচ্চ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বানিজ্যিক রাজধানী এবং কক্সবাজার হতে
যাচ্ছে পর্যটন রাজধানী। এ বছরের সেপ্টেম্বরে
চালু হবে বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী
টানেল আর দোহাজারী কক্সবাজার
রেল লাইন। এ দুই প্রকল্পে
দক্ষিণ চট্টগ্রাম আর কক্সবাজারের চিত্র
বদলে যাবে।
সড়ক
ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল
কাদের সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই
দুই প্রকল্প উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন সেপ্টেম্বরে।
কর্ণফুলীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১
মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হচ্ছে।মূল টানেলের
দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২
কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট
দুই টি টিউবের দৈর্ঘ্য
২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এ
ছাড়া মূল টানেলের পশ্চিম
ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫
কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা
প্রান্তে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের
একটি ফ্লাইওভার থাকবে। এই টানেলের ব্যয় ধরা হয়েছে
১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২
কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক দিচ্ছে ২ শতাংশ সুদে
৫ হাজার ৯১০ দশমিক ১৯
কোটি টাকা।বাকী টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ
সরকার। এ পর্যন্ত কাজের
অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ।
এই বঙ্গবন্ধু টানেল চট্টগ্রাম কক্সবাজারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে ৪০ কিলোমিটার। ফলে
২ থেকে আড়াই ঘন্টায়
যাত্রী ও মালামাল পৌঁছবে
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার।
চলতি
বছর সেপ্টেম্বরে স্বপ্নের ট্রেন আসছে কক্সবাজারে এতে
এখন থেকে খুশীতে আত্মহারা
এ অঞ্চলের মানুষ। জানা গেছে কক্সবাজার চট্রগ্রামে নতুন নগরায়ন হচ্ছে
১০/১২ টি। ফলে
যান্ত্রিক জীবনের কোলাহলে বাড়বে ব্যস্থতা। এমনই অভিমত একাধিক নগর বিশেষজ্ঞের। ইতিমধ্যে
রেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। ট্রেন
থামবে দেশের প্রথম বিশ্বমানের ঝিনুক আকৃতির আইকনিক কক্সবাজার রেল স্টেশনে। এর
মধ্যে শুরু হয়েছে রেল
চলাচলের মহড়া। উক্ত রেল চলাচলের মহড়া
ও আইকনিক রেল স্টেশনের সৌন্দর্যবর্ধন
কার্যক্রম দেখতে রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম
(১৬) মে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেল
প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন
শেষে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টশন ভবনে
গনমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সারাদেশের মানুষ ভীষণ আগ্রহের সাথে
অপেক্ষা করছেন, কখন রেলে করে
কক্সবাজার আসা যায়।আগামী আগষ্টের
মধ্যে কাজ শেষ করে
সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা।
এ সময় প্রকল্প পরিচালক
মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, এ প্রক্লপে এখন
কোন চ্যালেঞ্জ নেই। এখন শুধু
ফিটিং এর কাজ চলছে।তিনি
আরো বলেন, এটি ট্রান্স এশিয়ান
রেলওয়ের সাথে যুক্ত হবে।
এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম,
ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ম্যাক্সের চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেনসহ
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া প্রতিদিন শত
শত নারী পুরুষ ও
শিশু জড়ো হচ্ছে রেল
লাইন এবং নির্মাণাধীন রেল
স্টেশনে। কবে আসছে রেল?
সেই অপেক্ষায় কক্সবাজারবাসী।এই রেল স্টেশনের নির্মাণ
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হতে যাচ্ছে
বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে সাজসজ্জার কাজ চলছে।
এই অত্যাধুনিক আইকনিক রেলস্টেশন দেখতে গিয়ে জালাল আহমদ
বলেন, কক্সবাজারের চাঁদের পাড়ায় নির্মিত এই রেল স্টেশন
স্থানীয়রা ছাড়া পর্যটকদের ও
আকর্ষণ করবে।উন্নত বিশ্বের ন্যায় যাবতীয় সুবিধা পাওয়া যাবে এই রেল
স্টেশনে।
স্থপতি
মোঃ ফয়েজ উল্লাহ বলেন,
এই স্টেশনের বিশেষত্ব হচ্ছে দিনের বেলায় পর্যাপ্ত আলো থাকবে তাই
বৈদ্যুতিক বাতি জালাতে হবে
না।উপরের ছাদ খোলা তাই
সূর্যের আলোক রশ্মি ঢুকে
যাবে অনায়াসে।শামুক ঝিনুকের আদলে করা হয়েছে
এটির নির্মাণশৈলী। বলা যেতে পারে
এটি পুরোপুরি গ্রিন বিল্ডিং।
২০১৮
সালে এই মেগা প্রকল্পের
কাজ শুরু হয়। ২৯ একর
জমির উপর ২১৫ কোটি
টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ১
লাখ ৮৭ হাজার ০৭
বর্গফুটের আইকনিক নান্দনিক রেল স্টেশন ভবন।
আর রেল স্টেশন ভবনের
পার্শ্বে নির্মাণ করা হয়েছে ২০
টি পাঁচ তলা ভবন।
এ দিকে যৌথ অর্থায়নে
নির্মাণাধীন বহুল প্রত্যাশিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে
চলছে। গত ১২ মে
পর্যন্ত সার্বিক কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮৪ শতাংশ ছাড়াল। এ দিকে কাজের
অগ্রগতি সন্তোষকজনকভাবে এগিয়ে যাওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগে সেপ্টেম্বরের শেষ
দিকে রাজধানী থেকে স্বপ্নের ট্রেন
কক্সবাজারে যাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত
শুক্রবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো:
হুমায়ুন কবির কালুরঘাট রেল
সেতু সংস্কার ও ফেরি সার্ভিস
চালুর বিষয়ে চট্টগ্রামে এক মতবিনিময়কালে আগামী
সেপ্টেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
এ দিকে পুরনো কালুরঘাট
রেল সেতুটিও আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান লোড ক্যাপাসিটি বর্তমান
প্রতি এক্সেলে ১২ মেট্রিক টন
থেকে প্রায় ১৫ মেট্রিক টনের
কাছাকাছি উন্নীতকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার
প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পিডি
মফিজুর রহমান।
তিনি
বলেন, ইতোমধ্যে বুয়েটের প্রকৌশলীরা সেতু উন্নীতকরণের সমীক্ষা
রিপোর্ট দেয়ার পরে সংস্কার কাজের
জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, যা
এ মাসের ১৮ তারিখ খুলছে
(দরপত্র)। ওই মতবিনিময়কালে
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো:
হুমায়ুন কবির বলেছেন, পুরান
রেল সেতু সম্পূর্ণ সংস্কার
করতে আরো বেশি সময়
লাগবে। তবে আগামী সেপ্টেম্বরের
মধ্যে (রেল ট্র্যাকটি) নতুন
ট্রেন চলাচলের প্রত্যাশা করছেন তিনি। এ দিকে নতুন
স্থাপিত ফেরি সার্ভিস চালুর
বিষয়ে চট্টগ্রাম নওজের নির্বাহী প্রকৌশলী পিংন্টু চাকমা বলেন, প্রথমে একবার দরপত্র আহ্বান ও খোলা হলেও
প্রত্যাশিত না হওয়ার আবার
দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তিনি
বলেন শিগগিরই ফেরি সার্ভিস চালু
করা হবে।
জানা
গেছে, দোহাজারী-কক্সবাজার ভায়া ঘুমধুম পর্যন্ত
১২৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে
১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮
লাখ টাক। দেশের বহুল
প্রত্যাশিত ও অন্যতম
মেগা প্রকল্প সিঙ্গেল ট্র্যাক ডাবলগেজ (মিটারগেজ বা এমজি যার
প্রতি এক্সেলে লোড ক্যাপাসিটি হবে
১৫ মেট্রিক টন আর ব্রডগেজ
বা বিজি যার প্রতি
এক্সেল লোড ক্যাপাসিটি ২৫মেট্রিক
টন)। এ দিকে এ
পর্যন্ত ওই প্রকল্পের বাস্তব
অগ্রগতি ৮৪ ভাগ ছাড়িয়েছে।
এর মধ্যে কক্সবাজার অংশে প্রায় ৫০
কিলোমিটার ও দোহাজারী অংশে
প্রায় ৩০ কিলোমিটার রেলপথ
এখন দৃশ্যমান হয়েছে। রেলপথ নির্মাণের পরে আপাতত পুরনো
কালুরঘাট রেলসেতু দিয়েই ট্রেন যাবে কক্সবাজার। সেই
লক্ষ্যে কালুরঘাট সেতু উন্নীতকরণের কাজ
এগিয়ে চলছে বলে জানা
গেছে। এ দিকে দোহাজারী
থেকে নগরীর ষোলশহর পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটারের মধ্যে
৪০ কিলোমিটার সিঙ্গেল ট্র্যাক মিটার গেজ লাইনটি রূপান্তর
করা হচ্ছে ডাবল গেজ লাইনে
( মিটার গেজ ও ব্রড
গেজে)। কাজও খুব
দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন
রেলওয়ের প্রকৌশলী ও জয়দেবপুর ইশ্বরদী
প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর ও নতুন সেতু
প্রকল্পের ফোকাল পার্সন রেলওয়ের প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা।
তিনি
বলেন, একই সাথে এবার
আলোর মুখ দেখছে যৌথ
অর্থায়নে কালুরঘাটে নতুন রেলওয়ে সেতু
নির্মাণ প্রকল্পটি, এতে ব্যয় হবে
প্রায় ১১ হাজার কোটি
টাকা। এর মধ্যে সরকারের
রয়েছে তিন হাজার কোটি
টাকা। ইতোমধ্যে কোরিয়ার ইউসিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি নতুন সেতু নির্মাণের
জন্য সমীক্ষা শেষে প্রতিবেদন দাখিল
করে ডিসেম্বরে। তবে কারেকশন থাকায়
পুনরায় সমীক্ষার জন্য দেয়া হলে
তার পুনরায় সমীক্ষা শেষে ২৫ এপ্রিল
কোরিয়ার ইডিসিএফের কাছে দাখিল করেন।
শিগগিরই রেলওয়ের নতুন সেতু নির্মাণের
জন্য ডিপিপি প্রস্তুত করা হবে।
তিনি
জানান, বর্তমানে কালুরঘাটের যে পুরনো সেতু
রয়েছে তার ঠিক ৭০
মিটার উজানে এই নতুন সেতু
নির্মিত হবে। মূল সেতুর
দৈর্ঘ্য হবে ৭০০ মিটার
আর এতে নেভিগেশন হাইট
বা উচ্চতা হচ্ছে ১২.২ মিটার
আর এ জন্য দুই
প্রান্তে সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে (স্লোব)
২.৫০ কিলোমিটার করে।
সমীক্ষা অনুযায়ী নতুন সেতুর প্রস্থ
হচ্ছে ৭০ ফুট। এর
মধ্যে ৫০ ফুটে হবে
ডাবলগেজ (এমজি ও বিজি)
ডাবল ট্র্যাক। ২০ ফুটের মধ্যে
দুই লেনের সড়ক পথ তৈরি
করা হবে।বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ
বাহার জানান, কক্সবাজারের সাথে দেশের রেলপথ
যোগাযোগ দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তা ছাড়া কক্সবাজারে
গড়ে উঠছে মাতারবাড়ি গভীর
সমুদ্রবন্দর। ওই বন্দর দিয়ে
প্রতি বছর দেশী-বিদেশী
লাখ লাখ মেট্রিক টন
ভারী মালামাল ওঠানামা করবে। আবার ওই সব
মালামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানো হবে। আবার দেশের
বিভিন্ন স্থান থেকে লাখ লাখ
মেট্রিক টন মালামাল বন্দরে
পৌঁছানো হবে। তা ছাড়া
মহাসড়কের ট্রাফিক ভলিউম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করেই কক্সবাজার চট্টগ্রাম
রেলপথ ডুয়েল গেজ (মিটারগেজ ও
ব্রডগেজ) ব্যবহার করা হবে।
সে কারণেই মূলত নতুন সেতু
নির্মাণ যুক্তিসঙ্গত কারণেই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে
জানান তিনি।
জানা
গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির যৌথ
অর্থায়নে এ বৃহৎ প্রকল্পটি
বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৮
হাজার ৩৪ কোটি ৪৮
লাখ টাকা। ১২৯ কিলোমিটার সিঙ্গেল
ট্র্যাক ডাবলগেজ (একই সাথে মিটার
গেজ বা এমজি ও
ব্রডগেজ বা বিজি) দীর্ঘ
রেলপথটি নির্মিত হচ্ছে দুই ভাগে বিভক্ত
হয়ে প্রথম ভাগে দোহাজারী থেকে
কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার (দুই
লটে) রেলপথ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। প্রথম
অংশের কাজ সমাপ্তের পরেই
শুরু হবে কক্সবাজার-ঘুমধুম
পর্যন্ত অবশিষ্ট ২৮ কিলোমিটার রেলপথ
নির্মাণকাজ।
কক্সবাজার
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন,কক্সবাজারের আইকনিক
রেল স্টেশন, ১০১ কিলোমিটার রেল
লাইন ও বঙ্গবন্ধু
কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ হলে
এ এক অন্য কক্সবাজারকে
দেখবে মানুষ। পাশাপাশি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, মাতারবাড়ি তাপ ভিত্তিক কয়লা
বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর,
মীরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত
মেরিনড্রাইভ সড়কএলএনজি টার্মিনাল, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্টজোন ও অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহসহ
সকল মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত
হলে কক্সবাজার হবে দেশের অর্থনীতির
মূল চালিকা শক্তি। সারা বছর দেশী বিদেশি
পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত থাকবে কক্সবাজার। সম্প্রসারিত হবে কক্সবাজার শহর।
বিশ্বের ব্যয় বহুল পর্যটন
নগরীতে পরিনত হবে পর্যটন রাজধানী
হিসাবে খ্যাত এই কক্সবাজার।
মন্তব্য করুন
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেছেন, ‘একটি ব্যালটের
বিপরীতে একটি বুলেট ব্যবহার করা হবে। বুলেট থাকতে ব্যালটে কেউ হাত দিতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘কেউ ভোট কাটতে একটা ব্যালটে হাত দিতে চাইলে তার জন্য
একটি বুলেট খরচ করা হবে। তাই যারা এই পরিকল্পনায় আছে তারা ভুলে যান, এবার অবাধ নিরপেক্ষ
নির্বাচন হবে, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে সদরপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাচন
অফিসের আয়োজনে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ উপলক্ষে প্রিসাইডিং অফিসারদের
প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) মো. সৈয়দ মোরাদ আলীর সভাপতিত্বে
ওই মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মোর্শেদ আলম,
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহম্মদ, সদরপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা
নির্বাচন ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার
মন্তব্য করুন
কাঁচা মরিচের দাম আরও বেড়েছে।
গত ১০ দিনের ব্যবধানে এই পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে প্রতি কেজি ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। কোথাও
কোথাও আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের এই সময়ে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি থাকে। ফলে আমদানি করে মরিচের প্রয়োজন মেটাতে হয়। তবে এবার দাম বাড়তে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে দাম নিয়ন্ত্রণে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
এবার কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে
ঈদুল আজহার মাসখানেক আগে থেকেই। গত বছর কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০
টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তখন দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছিল।
গত পাঁচ বছরের বাজারের তথ্য
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বছরের এই সময়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা বাড়ে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বৃষ্টিসহিষ্ণু মরিচের জাত কম। ফলে বৃষ্টি বেশি হলে
কাঁচা মরিচের উৎপাদন কমে যায়। তখন আমদানি করে কাঁচা মরিচের চাহিদা মেটানো হয়। সাধারণত
ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়। তবে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকেও কিছু কাঁচা
মরিচ আসে। মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের কারণে কাঁচা মরিচ আমদানিতে ভারতের ওপর নির্ভর করতে
হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
সঙ্গনিরোধ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি
(আইপি) দেওয়া হয়নি। তবে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা
হচ্ছে। চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন
সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন
নারী ক্রীড়াবিদদের ধর্ষণ ও
শারীরিক নিপীড়ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী
হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর কাজও করেছেন তিনি। নারী ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণের ঘটনায়
করা মামলায় প্রধান আসামি বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল
ইসলাম নিউটনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জেনেছে র্যাব।
তার অনৈতিক এ কাজে আরেক নারী
সহযোগী ক্রীড়াবিদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় দ্বিতীয় আসামি ওই নারী ক্রীড়াবিদকে
ইতোমধ্যে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর
কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন
ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
র্যাব কমান্ডার আরাফাত ইসলাম
জানান, ১৮ মে রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রফিকুল ইসলাম নিউটন ও
তার সহযোগী একজন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। জুজুৎসু এসোসিয়েশনের একজন নারী ক্রীড়াবিদদের
করা নারী শিশু নির্যাতন দমন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার
করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন। রফিকুল ইসলাম নিউটন জুজুৎসু (জাপানি মার্শাল আর্ট) খেলার প্রশিক্ষক। অ্যাসোসিয়েশনের অধিকাংশ প্রশিক্ষণার্থী নারী। যেখানে অভিভাবক হিসেবে কোমলমতি মেয়েদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কোমলমতি মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার হীন চরিত্র চরিতার্থ করার প্রয়াস চালান।
কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, রফিকুল ইসলাম নিউটন অ্যাসোসিয়েশনের অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে কেউ গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করাতেন। এছাড়া অনুশীলনের আগে মেয়েদের পোশাক পরিবর্তনের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও নগ্ন ছবি তুলে রাখতেন তিনি। পরে ধারণ করা নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বারবার ধর্ষণ করতেন।
মন্তব্য করুন
আগামী ২১ মে লক্ষ্মীপুর জেলার
রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন
২ জন। এর মধ্যে জনগণের ও সরকার দলীয় কর্মীদের পছন্দের প্রার্থী তালিকায় অধ্যক্ষ মামুনুর
রশীদ অন্যতম। অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদের আনারস প্রতীকে ভোট দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন
ভোটাররা।
অপর প্রার্থী আলতাফ হোসেন মোটরসাইকেল
প্রতীকে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তবে তার বিরুদ্ধে চরের জমি নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে।
অনেকেই অভিযোগ করেছেন, আইন অমান্য করে মাছ শিকারসহ জেলেদেরকে দিয়ে নদী দখল ও বাস্তুচ্যুতদের
মহিষ দিয়ে চর দখলে রেখেছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা
প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের মন জয় করতে নানা কুরুচীপূর্ণ বক্তব্য দিতেও
সংকোচ বোধ করছেন না অনেকে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের
নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন
হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থান করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে। পরে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি ডিবির কার্যালয় ত্যাগ করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নেওয়ার জন্য তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছিলেন।
মামুনুল হক বলেন, আমাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন মামলার আলামত হিসেবে আমার মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছিল। সেই মোবাইল ফোনটি নিতে আমি আজ ডিবি কার্যালয়ে এসেছি।
ডিবি কার্যালয়ে মামলা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে ডিবি ডাকেনি এবং মামলা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই হেফাজতের এই নেতা গাড়িতে উঠে যান।
মন্তব্য করুন
নারী ক্রীড়াবিদদের ধর্ষণ ও শারীরিক নিপীড়ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপের কারণে গর্ভবতী হলে তাদের গর্ভপাত করানোর মতো ভয়ংকর কাজও করেছেন তিনি। নারী ক্রীড়াবিদকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি বাংলাদেশ জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম নিউটনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জেনেছে র্যাব।