ইনসাইড বাংলাদেশ

‘দাদা ভাই’ চলে গেলেন ওপারের অন্ধকারে


Thumbnail ‘দাদা ভাই’ চলে গেলেন ওপারের অন্ধকারে।

শেষবার যখন দেখা, সেটাই প্রথমবার। উদ্দেশ্য ছিল একটি বেসরকাররি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য সাংবাদিক হিসেবে তার একটা সাক্ষাৎকার নিবো। টেলিভিশনটির প্ল্যানিং এন্ড কন্টেন্ট এডিটরের সঙ্গে কথা বলেই গিয়েছিলাম। তিনি যদি রাজি থাকেন তাহলে গাড়িসহ ক্যামেরা পাঠাবেন তিনি। তিনি এটাও বলেছিলেন, তিনি-তো (সিরাজুল আলম খান) সাক্ষাৎকার দেন না। দেখেন, যদি আপনি রাজি করাতে পারেন, তাহলে ক্যামেরা পাঠানো যাবে। সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট থেকে পাশ করা একজন বড় আপার মাধ্যমে। আপার লেক সার্কাস কলাবাগানের বাসার যে বিল্ডিংটা, সেই বিল্ডিংয়েই থাকতেন দাদা ভাই।

আপার সাথে কথা বলে একদিন গিয়ে হাজির হলাম। সময় তখন ঠিক সন্ধ্যা। প্রথমে আপার বাসার ড্রইং রুম। পরে আপাই নিয়ে গেলেন দাদা ভাই সিরাজুল আলম খানের ফ্ল্যাটে। তিনি সেখানে একাই থাকেন, দুই জন ব্যক্তিগত সহকারী রাসেল এবং জুলেয়, তার সেবা-শুশ্রূষা করে থাকেন বলেই জানতে পারলাম। জীবনে বিয়ে করেননি দাদা ভাই সিরাজুল আলম খান। তার একজন বড় ভাইয়ের মেয়ে আছেন, পেশায় ডাক্তার। তিনি ওই বাসাতেই থাকেন এবং তাকে (সিরাজুল আলম খান) দেখাশোনা করেন। আমার সাথে যখন দেখা হয়, তখন তিনি অনেক অসুস্থ, জীবন সায়াহ্ন লগ্নে তিনি। যতটুকু মনে পরে, এক সাথে ১৫কি ১৬টি ওষুধ খেয়েছিলেন তিনি। মানে ওষুধ খেয়েই বেঁচে থাকতে হতো তাকে। 

যাক, সময়টা সন্ধ্যা গড়িয়ে যাচ্ছে। আমি আপার সাথে গিয়ে উপস্থিত হলাম দাদা ভাই সিরাজুল আলম খানের ফ্ল্যাটে। ঠিক তখন দাদা ভাইয়ের রাতের খাবার শেষ করে ওষুধ খাবার সময় হয়েছে। আমাকে ডাইনিং টেবিলের পাশের একটা চেয়ারে বসিয়ে আপা বললেন, তুমি বসো, আমি আসছি। এই বলে আপা বেড়িয়ে গেলেন। আমাকে চা-বিস্কুট দেওয়া হলো। দাদা ভাইয়ের সহকারী ছেলেটা রাসেল। সে এসে চা-বিস্কুট দিয়ে গেলো। ডাইনিং টেবিলের ঠিক মাথার চেয়ারটাতে আমি বসে চা-বিস্কুট খাচ্ছিলাম। দাদা ভাই এলেন, তিনি ঠিক উল্টো পাশের মাথার চেয়ারটাতে বসলেন। সহকারী রাসেল উনাকে রাতের খাবার খেতে দিলো- মাছ, ভাত, ডাল, সবজি। দাদা ভাই খেতে খেতেই আমার সাথে কিছু কথা বললেন। জানালেন তার শারীরিক অসুস্থতার কথা। আমি চুপচাপ সময় কাটালাম। তখনও ঠিক সাক্ষাৎকার নেওয়ার বিষয়টি সাহস করে বলিনি।

দাদা ভাইয়ের খাওয়া শেষ হতে না হতেই আপা আবার এলেন। খাবার শেষ হলে দাদা ভাই গেলেন নিজের শোবার ঘরে। আপা আমাকে সাথে নিয়ে সে ঘরে গেলেন। দেখলাম, প্লাস্টিকের বক্স ভর্তি করা ওষুধ। একবেলায় ১৫/১৬ টা ওষুধ খেতে হয়। দাদা ভাই জানালেন অসহায়ত্বের কথা। কথায় কথায় অনেকটা মিশে গেলাম আমি। দাদা ভাই আমাকে আপন করে নিলেন। জিজ্ঞেস করলেন বিয়ে করেছি কি না। আপাকে আমি ইশারা করে সাক্ষাৎকার নেওয়ার বিষয়টা বলতে বললাম। আপা অবশ্য আমাকে আগেই বলেছিলেন, তিনি সাক্ষাৎকার দেন না। তারপরও আপা বললেন, দাদা ভাই, ও আপনার একটা সাক্ষাৎকার করতে চায়। তখন প্রশ্ন ওঠলো আমি কি করি। মানে কি আমার পেশা? 

জিজ্ঞেস করলেন কোথায় কাজ করি? যথারীতি বলালাম। তিনি জানালেন, তিনি কাউকে সাক্ষাৎকার দেন না। অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তার সাক্ষাৎকার নিতে চাইছে। কিন্তু তিনি দিচ্ছেন না। তিনি বললেন, ‘আমার সম্পর্কে যদি জানতে চাও, তাহলে তুমি আমার লেখা দুইটি বই আছে পড়ে নিতে পারো। এই বই পড়লে তুমি আমার বক্তব্য পাবে। বাংলাদেশের রাজনীতির সঠিক ইতিহাস জানতে পাবে। এখনতো ইতিহাস অনেক বিকৃত হয়ে গেছে।’ 

অনেক অনুরোধ করলাম, কিন্তু তিনি সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হলেন না। তিনি জানালেন তার দুইটি বই সরকার নিষিদ্ধ করেছে। ওই বইগুলো মুদ্রিত এবং প্রকাশিত হয় না। জীবনের অর্ধ যুগেরও বেশি সময় তিনি জেল খেটেছেন। যে কারণে তার সংসার করা হয়ে ওঠেনি। কাজ করেছেন দেশের জন্য, দেশের রাজনীতির জন্য।   

তিনি বললেন, ‘তুমি তো সাংবাদিক। তুমি তো বেশ্যা। এই পেশাটা আমার পছন্দ নয়।’ 

মনে মনে অপমানিত বোধ করলেও আমি চুপ হয়ে রইলাম। আবার তিনি বললেন, ‘তুমি কখনও নিউ ইয়র্ক টাইমসে কাজ করতে পারবে কি না জানি না, যদি কখনও করার সুযোগ হয়, তাহলে চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে যে রিভ্যুলুশন হয়েছিল, সেই রিভ্যুলুশনকে তোমার একটা পুর (ছোট/গরীব) রিভ্যুলুশন বলতে হবে। আবার যদি তুমি কোনো চায়না দৈনিকে কাজ কর, তাহলে চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের রিভ্যুলুশনকে তোমার বিশ্বের সেরা রিভ্যুলুশন বলতে হবে বা লিখতে হবে। এটাই তোমার পেশা। তুমি যখন যার হয়ে কাজ করবে। তখন তুমি তারই পক্ষে লিখবে।’

ওই দিন দাদা ভাই সিরাজুল আলম খানের সাথে অনেক কথা হয়। তার অভিযোগ, তার অর্জন অনেক কথাই বলেন তিনি। অনেকক্ষণ আড্ডা হয়। কিন্তু তার সবগুলো কথা আমার মনে না থাকলেও সাংবাদিকতা নিয়ে, আমাকে নিয়ে বলা তার কথাগুলো এখনও আমার মনের মধ্যে গেঁথে আছে। হয়তো মনে থাকবে আজীবন। 

আজ শুক্রবার (৯ জুন) বাংলাদেশের রাজনীতির সেই ‘রহস্য পুরুষ’ সিরাজুল আলম খান (দাদা ভাই) মারা গেলেন। আর কোনো দিনও তার সাক্ষাৎকার নেওয়া আমার হবে না। কিন্তু সেদিন তিনি কথায় কথায় অনেক বড় একটা সাক্ষাৎকার আমাকে দিয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারটি হয়তো তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য দেননি, কিন্তু তিনি আমার নিজের জীবনের জন্য সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন।

আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের চতুর্থ তলার আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান দাদা ভাই সিরাজুল আলম খান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ সূত্রমতে, অসুস্থ সিরাজুল আলম খানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ১ জুন আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে দেওয়া হয়।

সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক। মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন, গৃহিণী। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হয় তার উদ্যোগেই। স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা। 

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনও নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকেন। সিরাজুল আলম খান কখনও জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে তিনি পরিচিত।   

মহিউদ্দিন আহমদ রচিত ‘প্রতিনায়ক সিরাজুল আলম খান’ বইটিতেই সিরাজুল আলম খান তার জীবনের শেষ ইচ্ছার কথা বলেছিলেন। সেটি হলো, ‘আমার মৃত্যুর পর কোনো শোকসভা হবে না। শহীদ মিনারে ডিসপ্লে হবে না লাশ। যত দ্রুত সম্ভব নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হবে মরদেহ, যা ঢাকা থাকবে একটা কাঠের কফিনে। মায়ের একটা শাড়ি রেখে দিয়েছি। কফিনটা শাড়িতে মুড়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে, মায়ের কবরে।’

দাদা ভাই সিরাজুল আলম খানের সাথে ওই দিনের সাক্ষাৎকারেও তিনি আমাকে তার মায়ের শাড়ির কথাটি বলেছিলেন। বলেছিলেন জীবনের অর্ধযুগেরও বেশি সময় জেলহাজতে অতিবাহিত হওয়ার কথা। বলেছিলেন, যৌবনের সুবর্ণ সময়টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে উৎসর্গ করে নিজের জীবনের সংসার না হওয়ার কথা। বলেছিলেন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কথা। প্রচারবিমুখ মানুষ হিসেবে হয়তো তিনি ক্যামেরার সামনে আমাকে সেদিন সাক্ষাৎকার দেননি। কিন্তু তিনি সেদিনই জানিয়েছিলেন তার জীবনের অনেক অজানা কাহিনী, অনেক অভিযোগ, অনুযোগ। সেই দাদা ভাই আজ চলে গেলেন ওপারের অন্ধকারে।

সিরাজুল আলম খান   রহস্য পুরুষ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

অবশেষে ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি

প্রকাশ: ০৯:০৯ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

একমাস তাপদাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজেছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট, ইসলামপুর, সূত্রাপুর, রায় সাহেব বাজার, রায়েরবাগসহ একাধিক এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে।

এদিন সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেঘের দেখা মেলে। অবশেষে রাত ৯টার দিকে সদরঘাট, ইসলামপুর, সূত্রাপুর, রায় সাহেব বাজার, রায়েরবাগসহ একাধিক এলাকায় বিদ্যুতও চমকানোর সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর ক্রমে বাড়তে থাকে বৃষ্টির তীব্রতা। অবশ্য ১৫ মিনিট পর বৃষ্টি অনেকটা থেমেও যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। স্বস্তির বৃষ্টি দেখে অনেকেই উচ্ছ্বাসে ভিজতে নেমে যান। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ায় এসব এলাকায় শীতল অনুভব হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিত বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

স্বস্তির বৃষ্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এবার উপজেলায় ওবায়দুল কাদেরের ভাই-ভাগ্নের মনোনয়ন দাখিল

প্রকাশ: ১০:২৫ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও ভাগনে। ছোট ভাই শাহদাত হোসেন প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। আর ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু প্রার্থী হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ৪র্থ ধাপের নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২ মে) তারা মনোনয়ন দাখিল করেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন।

চেয়রাম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ গোলাম শরীফ চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, আমেরিকা প্রবাসী ওমর আলী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রশীদ মঞ্জু, মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী মামুন হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী পারভীন আক্তার, ফাতেমা বেগম, রেহানা আক্তার। 

এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যকোন রাজনৈতিক দলের কেউ প্রার্থী হয়নি।

৪র্থ ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২ মে, মনোনয়নপত্র বাছাই ৫ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে।

উপজেলা নির্বাচন   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মুক্তি পাচ্ছেন মামুনুল হক

প্রকাশ: ১০:১৭ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতেই মুক্তি পাচ্ছেন।

তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন এমন খবরে সেখানে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন।

এর আগে গত ১১ মার্চ মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। 

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান দাবি করেন, ‘মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’

এদিকে, গত ২৪ এপ্রিল তিন মামলায় জামিন পান মামুনুল হক। এ বিষয়ে মামুনুল হকের আইনজীবী আব্দুস সালাম হিমেল বলেন, ২০১৩ সালের মতিঝিল থানার এক মামলায় ও ২০২১ সালের পল্টন থানার দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন মামুনুল হক। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে একাধিক মামলা রয়েছে। ওইসব মামলায় জামিন পেলে তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন।

এর আগে গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় জামিন পান মামুনুল হক। এ ছাড়া গত ৫ ফেব্রুয়ারিতে আরও দুই মামলায় জামিন পান তিনি। তার আগে ২০২৩ সালের ৩ মে পাঁচ মামলায় হাইকোর্ট থেকে স্থায়ী জামিন পান মামুনুল হক। গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে সব মিলিয়ে বর্তমানে অন্তত ১১টি মামলায় জামিনে আছে হেফাজতের এ নেতা।

হেফাজতে ইসলাম   মাওলানা মামুনুল হক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশে হচ্ছে উন্মুক্ত কারাগার

প্রকাশ: ০৯:৫৭ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শিগগিরই শুরু করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এদিন প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার কমিউনিটি রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামের (সিআরপি) আদলে এই উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ১৬০ একর জমি বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। সেখানে শিগগিরই উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমান সরকারের বিগত তিন মেয়াদে ৮৩ হাজার ৫৭৭টি পদ বাড়ানো হয়েছে। স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব পদে জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ও অভিযান পরিচালনার জন্য এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরের জন্য দুটি অত্যাধুনিক হ্যালিকপ্টার সংযোজনের কার্যক্রম চলমান আছে।

পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে বিভিন্ন ধরনের যুগোপযোগী আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। আগে ব্যবহৃত পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেলের পরিবর্তে বর্তমানে ৭ পয়েন্ট ৬২ মিলিমিটার রাইফেল ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের ৭ পয়েন্ট ৬২ অথবা ৯ এমএম পিস্তল ছাড়াও ৯ এমএম এসএমজি, পয়েন্ট ৪৫ ইঞ্চি এসএমজি, ১২ বোর শটগান, ৩৮ মিলিমিটার টিয়ারগ্যাস, গ্যাস গান/লঞ্চারসহ প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্তে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) অত্যাধুনিক অস্ত্র, যানবাহন, আকাশযান ও জলযান দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়েছে।

উন্মুক্ত কারাগার   স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী   আসাদুজ্জামান খান কামাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে

প্রকাশ: ০৮:০২ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

টানা খরতাপ থেকে স্বস্তি পেতে বৃষ্টির আশায় রাজশাহীতে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১ মে) থেকে প্রতীকী এই বিয়ের আয়োজন করা হয় রাজশাহীর পবা উপজেলার ভুগরইল পশ্চিম আদিবাসীপাড়ায়। এ গ্রামের বাসিন্দারা সাঁওতাল। তবে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী। সাঁওতালি রীতিনীতি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যাঙের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

গ্রামের একমাত্র চার্চের শিক্ষক অঞ্জলী বিশ্বাসসহ কয়েকজন ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেন। এ জন্য বুধবার বিকেলে তারা গ্রামের এক শুকনো পুকুরপাড় থেকে একটি ছেলে ব্যাঙ ও একটি মেয়ে ব্যাঙ ধরে আনেন। তারপর সন্ধ্যায় গ্রামের চার্চে সাজানো ছাতনাতলায় বর ও কনের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিয়েতে বরের নাম রাখা হয় শিমুল। আর কনের নাম মেঘলা বিশ্বাস। গায়ে হলুদের পর কনেকে রাখা হয়েছিল গ্রামের আলফন্স বিশ্বাসের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামের নারী ও শিশু-কিশোরীরা নেচে-গেয়ে নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন। এরপর সবাই লাইন ধরে গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ নারীদের আশীর্বাদ নিয়ে বরযাত্রী হিসেবে বর নিয়ে রওনা দেয়। সঙ্গে যান বরের প্রতীকী বাবা সৈকত বিশ্বাস আর প্রতীকী মা ভাবনা বিশ্বাস নামের দুই শিশু।

আলফন্স বিশ্বাসের বাড়ি গেলে বরের বাবা-মায়ের পা ধুইয়ে দেওয়া হয় পানি দিয়ে। তারপর সবাই বাড়িতে কনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কনে সাজানো শেষ হলে অঞ্জলী বিশ্বাস পুরোহিত সেজে বর-কনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এরপর বর শিমুলের হাত দিয়ে কনে মেঘলার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হয়। খাওয়া-দাওয়ার পর শেষ হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। পরে বর-কনেকে একটি পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিয়ের আয়োজক অঞ্জলী বিশ্বাস বলেন, ‘টানা খরায় পথঘাট পুড়ে যাচ্ছে। সব ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। পশুপাখি ও অন্যান্য প্রাণি কষ্ট পাচ্ছে পানির অভাবে। আমরা বিশ্বাস করি ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে। তাই আমাদের সামাজিক রীতিনীতি অনুযায়ী দুই কোলা ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হলো।’

বৃষ্টি   ব্যাঙের বিয়ে  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন