ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে দেশীয় কাঠশিল্পীরা খুচ্ছে বিকল্প পেশা


Thumbnail

আধুনিকতার ছোঁয়ায় লক্ষ্মীপুরে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফার্নিচার ব্যবসা। ফলে নানা শঙ্কায় রয়েছেন এ পেশায় জড়িত কাঠশিল্পীরা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিদেশী ফার্নিচারের চাকচিক্য আর নানান রঙ্গ, ডিজাইনের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছেন দেশীয় ফার্নিচারের কারিগররা। এদিকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় টিকতে না পেরে পেশা বদলাচ্ছেন অনেক কাঠশিল্পী।

জেলা শহর লক্ষ্মীপুরে গত ২ বছর আগেও শহরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র উত্তর তেহমুহনী থেকে ইলিশাকেন্দ্র ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত এ আধা কিলোমিটার এলাকায় ছিল মাত্র ৭টি দেশীয় কাঠের ফার্নিচার দোকান। এখন সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০টি। সংখ্যার হিসেবে ফার্নিচারের দোকান বাড়লেও বাস্তবে দেশীয় কাঠের ফার্নিচারের দোকান উল্টো কমেছে ৪টি। এখন সবগুলোই দেশের বড় বড় এবং বহুজাতিক কোম্পানির ফার্নিচার শো রুম। দেশীয় ফার্নিচারের যে ৩টি দোকান রয়েছে সেগুলো নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পণ্যরাখছেন সাথে। ফলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে দেশীয় ফার্নিচারের পাশাপাশি দোকানিরা রাখছেন বহুজাতিক কোম্পানির পণ্যও।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, কারুকাজ আর সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে মেশিনে তৈরি এবং প্রসেস কাঠের ফার্নিচারের কদর বাড়ছে। সে কদর বুঝে বড় ব্যবসা শুরু করেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। বড় কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে সার্টিফাইড উড আমদানি করছে। এসব আমদানি করা কাঠের মধ্যে ওক, বিচ এবং পাইন অন্যতম। বিদেশী প্রসেস কাঠের আঁশে নান্দনিক ডিজাইন করা যায়। প্রসেস উডের মধ্যে রয়েছে পার্টিক্যাল বোর্ড, ভিনিয়ার্ড বোর্ড, এমঅডিএফ বোর্ড, প্লাই বোর্ড। এই প্রসেস উডের ফার্নিচার বেশ চলছে। এ কাঠে আসবাব তৈরি করছে দেশের বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। সেগুলোর মধ্যে অটোবি, নাভানা, হাতিল, প্যাসিফিক, পারটেক্স, নাদিয়া, ব্রাদার্স ও আকতারের দখলে পুরো জেলার বাজার।

লক্ষ্মীপুর শহরের মের্সাস চট্টগ্রাম ফার্ণিচারের মালিক মহিন উদ্দিন। তিনি জানান, যারা ঐতিহ্য আর গুণগত মান চায় শুধু তারাই এখন দেশীয় কাঠের ফার্নিচারের ক্রেতা। বড় বড় ফার্নিচার কোম্পানীর চাপে দেশীয় কাঠ শিল্পী ও মিস্ত্রিরা এখন পেশা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। শহর থেকে একেবারে গ্রাম পর্যন্ত তাদের শো রুম বা ডিলার রয়েছে। সহজ কিস্তিতে গ্রাহকের কাছে এসব পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ি দেশীয় ফার্নিচারের পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানির পণ্যও রাখতে হয় দোকানে।

কয়েকজন ফার্নিচার ক্রেতা-বিক্রেতা, কাঠ শিল্পী ও মেস্ত্রিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলার পাঁচ উপজেলার সবগুলো ছোট বড় হাটবাজারে দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ফার্নিচারের চাকচিক্য আর নানান রঙ্গ, ডিজাইনের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছেন দেশীয় ফার্নিচারের কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরে রয়েছে অটোবি, নাভানা, হাতিল, পারটেক্স, প্যাসিফিক এবং আক্তার ফার্ণিচারসহ নানা বড় বড় কোম্পানির বিক্রয় কেন্দ্র। বড় ব্র্যান্ডের কোম্পানি ছাড়াও নন ব্র্যান্ডের আরো বহু ফার্নিচার দোকান রয়েছে যেগুলো দেশীয় কাঠের ফার্নিচারের পুরো বাজার প্রায় ঘিলে ফেলেছে। জেলা ও উপজেলা শহর ছাড়াও বড় হাট বাজারেও ব্র্যান্ডের কোম্পানির শো রুম রয়েছে। আবার স্থানীয় অনেকে মেশিনে তৈরি নন ব্র্যান্ডের ফার্নিচারের দোকানও খুলেছেন। এতে প্রতারিতও হচ্ছেন গ্রাহকরা।

লক্ষ্মীপুর দক্ষিণ তেহমুনীর মদিনা স’মিলের মালিক আবদুল মালেক জানান, দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের সাথে স’মিল শ্রমিক, কাঠ মেস্ত্রি, নকশা শিল্পী, খোদাই শিল্পী এবং রং, বার্নিশ মেস্ত্রীসহ অন্তত ৫-৬ রকমের মানুষের কর্মসংস্থান ছিল। তিনি আরো জানান, লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কাঠ শিল্প ও মেস্ত্রি শ্রমিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে। এদের প্রত্যেকেরই দৈনিক আয় কমপক্ষে ৩শ-৫শ টাকা। বড় বড় কোম্পানির ফার্নিচারের দাপটে এ বিশাল শ্রমজীবি মানুষের পেশা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকার শিক্ষকপতœী ফাতেমা আক্তার জানান, তিনি বাড়ি থেকে পরিকল্পনা করে এসেছেন সেগুন কাঠের একটি খাট কিনবেন। লক্ষ্মীপুর শহরে কয়েকটি দোকানে কাঠের খাটও দেখেছেন। কিন্ত একটি বড় কোম্পানির শো রুমে ঢুকামাত্র ডিজাইন ও ফিনিশিং দেখে খাট পছন্দ হয়। তিনি আর সেগুনের খাট কিনেননি। দোকানদার বলেছে সেটা নাকি ওক গাছের খাট। ডিজাইন ও ফিনিশিং এর কারণে তার কাছে দামও কম মনে হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র কামরুল হাসান হৃদয় জানান, আগে কলেজ ম্যাসের ছাত্ররা কাঠের চৌকি ব্যবহার করতো। শহরে চৌকির বাজারও ছিল। এখন ছাত্ররা চৌকির পরিবর্তে খুব কম দামে কেরোসিন কাঠের খাট কিনছে। ছাত্রদের ছোট এ খাটগুলো বড় কোম্পানিগুলো বানিয়ে দিচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের রহিম ফার্নিচারের আবদুর রহিম জানান, তার দোকানে আগে ২০জন শ্রমিক দিয়ে শুধুমাত্র দরজার চৌকাঠ তৈরি করতেন। সে ব্যবসায়ও হাত বাড়িয়েছে বড় কোম্পানিগুলো। বড় বড় কোম্পানিগুলো এখন কাঠের চৌকাট বিক্রি করে। ফলে তাদের বিক্রিও শূন্যের কোটায় নেমে গেছে। তিনি ব্যবসা ছোট করে দোকানে শ্রমিক রেখেছে ৩ জন।

রামগতির আলেকজান্ডার বাজারের ইউছুফ মিস্ত্রী জানান, তিনি তার কারখানায় খাট, শো-কেস, ওয়ারড্রপ, ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং টেবিল, চেয়ার-টেবিল এবং চৌকিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরী করতেন। গত এক বছর যাবত খাট ছাড়া আর কোন কিছু তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন না।

সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ এলাকার একটি দোকানে কাঠের খোদাই শিল্পী আজগর জানান, তার খোদাই ঘরের বয়স ৫ বছর। প্রথম ৩ বছর ভালোই চলছিল। কিন্ত এখন আর তেমন কাজ নেই। কাজ হলেও দাম কম বলে। মানুষ এখন কাঠের ফার্নিচার তৈরি করতে চাচ্ছে না। বড় বড় কোম্পানিগুলো মেশিনের লেজার লাইট দিয়ে নিখুঁত নকশা করে। মেশিনে তৈরি ফার্নিচারের সাথে পাল্লা দিয়ে শিল্পীদের তৈরি ফার্ণিচার বাজারে টিকতে পারছে না।

বার্নিশ মিস্ত্রি রুবেল জানান, যে লোক মেশিনের বার্নিশ করা ফার্নিচার দেখবেন তার কাছে হাতের বার্নিশ ভালো লাগবে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, পেশা আর বেশি দিন টিকে রাখা যাবে না।

লক্ষ্মীপুর জেলা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতির অর্থ সম্পাদক ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব গিয়াস উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নে বিভিন্ন বাজারে ফার্নিচার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছে এমন ব্যবসার সংখ্যা প্রায় একশ। তিনি ইউনিয়ন সচিবদের সাংগঠনিক তথ্য দিয়ে জানান, লক্ষ্মীপুর জেলায় ফার্নিচার দোকান আছে প্রায় ১৫শ। তাদের হিসেবে পুরো জেলায় কাঠ শিল্পী ও মেস্ত্রি পেশার লোক সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ হাজার।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাইন উদ্দিন পাঠান জানান, বহুজাতিক কোম্পানির চাকচিক্য পণ্যেও ভিড়ে স্থানীয় কাঠ শিল্পীদের কদর কমতে শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্পের ন্যায় স্থানীয় কাঠ শিল্পও হারিয়ে যাবে। স্থানীয় শিল্প রক্ষায় তিনি সরকারের নিকট বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবসার কিছু নীতিমালা তৈরি করে দেয়ার দাবিও জানান।

এদিকে দেশীয় ফার্নিচারের ব্যবহার বাড়াতে ও কাঠমেস্ত্রিদের রক্ষার্থে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এমনটিই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এলপি গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা হবে আজ

প্রকাশ: ০৯:৩৩ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য বাড়ছে নাকি কমছে, তা জানা যাবে আজ বৃহস্পতিবার (০২ মে)। এদিন এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে।

গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সচিব ব্যারিস্টার মো. খলিলুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি আরামকো ঘোষিত মে (২০২৪) মাসের সৌদি সিপি অনুযায়ী এই মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় সম্পর্কে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশনা বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ঘোষণা করা হবে।

এর আগে, টানা ৮ মাস বাড়ার পর গত ৩ এপ্রিল ভোক্তা পর্যায়ে কমানো হয় এলপিজির দাম। মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া গত মার্চ মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৮২ টাকা, ফেব্রুয়ারিতে ৪১ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৭৪ টাকা ও জানুয়ারিতে ২৯ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

একইসঙ্গে এপ্রিল মাসে অটোগ্যাসের দামও কমিয়েছিল বিইআরসি। এপ্রিল মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ২১ পয়সা নির্ধারণ করা করেছিল সংস্থাটি। আর মার্চ মাসে ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৮ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর গত ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারি মাসে যা মূসকসহ নির্ধারণ করা হয়েছিল যথাক্রমে ৬৭ টাকা ৬৮ পয়সা ও ৬৫ টাকা ৬৭ পয়সা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ৫ দফা কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম, আর বেড়েছে ৭ দফা। গত বছরের জানুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল, জুন ও জুলাই মাসে কমেছিল এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম। আর দাম বেড়েছিল ফেব্রুয়ারি, মে, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে।


এলপি গ্যাস   বিইআরসি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ট্রেন লাইনচ্যুত, রাজবাড়ী-খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ

প্রকাশ: ০৮:৪৯ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজবাড়ীতে একটি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ৭টায় ২নং রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় আপাতত রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে রাজবাড়ীর ২নং রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। আপাতত এই রুটে সব রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পোড়াদহগামী লোকাল সাটল ট্রেন পাচুরিয়া রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। রাজবাড়ীতেই উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করা যাবে।


ট্রেন লাইনচ্যুত   রেলপথ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নিজের বাবাকে পিটিয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়েছিল মিল্টন সমাদ্দার

প্রকাশ: ০৮:৪৪ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিজের বাবাকে পেটানোর পর এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়ে ঢাকায় চলে আসেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান বহুল আলোচিত মিল্টন সমাদ্দার। ঢাকায় এসে তিনি একটি ফার্মেসিতে চাকরি শুরু করেন। তবে ফার্মেসি থেকে ওষুধ চুরি করায় তাকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (০১ মে) তাকে গ্রেপ্তারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান বলেন, মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ। তার বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে। বাবাকে পিটানোয় এলাকাবাসী ধরে তাকে এলাকা থেকে বের করে দেয়। পরে ঢাকায় এসে তিনি একটি ফার্মেসিতে কাজ শুরু করেন। ওষুধ চুরি করায় সেখান থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর তিনি কিছু পড়াশোনা করেন। পরে মিঠু হালদার নামে এক নার্সকে বিয়ে করেন।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, এরপর তার চিন্তায় আসল তিনি একটা ওল্ড এজ কেয়ার চালু করবেন। পরে তার স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার নামে একটা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সেখানে বাচ্চা ও বৃদ্ধদের নিয়ে আসেন। আপনারা দেখেছেন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সেখানে অপারেশন থিয়েটার আছে। মানুষ সেখানে বিভিন্ন সেবা নেয়। কিন্তু অপারেশন থিয়েটার থাকতে হলে লাইসেন্স প্রয়োজন, যা তার নেই। এছাড়া তিনি মরদেহ রাতে দাফন করেন এবং চিকিৎসকের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই ডেড সার্টিফিকেট দেন, যা তিনি স্বীকার করেছেন।

তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। লাশগুলো রাতে দাফন করেছেন কেন, ডেড সার্টিফিকেট নিজে কেন তৈরি করেন। এছাড়া তার প্রতিষ্ঠানে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনদের তিনি টর্চারসেলে নিয়ে পিটিয়েছেন। এগুলো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


মিল্টন সমাদ্দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড

প্রকাশ: ০৮:১৬ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রী নিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে এক যুবককে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় দাঁড়িয়ে মেয়েদের উদ্দেশ্যে ইশারা ইঙ্গিত ও অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গি করার দায়ে মো. জাকির হোসেন (২৭) নামে এক যুবককে ১ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

বুধবার (১ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর ইউএনও মুশফিকুল আলম হালিম।

জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত জাকির হোসেন জেলার উলিপুর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজার এলাকার নুর ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় জিয়া পুকুর বিনোদন কেন্দ্রের পাহারাদার।

এর আগে, বুধবার বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রী নিবাসের সামনে ভ্রাম্যমান আদালতটি পরিচালনা করেন কুড়িগ্রাম ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুশফিকুল হালিম।

ভ্রাম্যমান আদালত সুত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রী নিবাসে থাকা ছাত্রীদের দীর্ঘ দিন ধরে নানানভাবে উত্ত্যাক্ত করে আসছিলেন জাকির। পরে ছাত্রীরা বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে কর্তৃপক্ষ পুলিশ প্রশাসনকে অভিহিত করেন। পরে পুলিশ এসে বুধবার বিকেলে জাকির হোসেনকে হাতে নাতে ধরে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করে। জাকির হোসেন দায় স্বীকার করায় ভ্রাম্যমান আদালত এক মাসের কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ডা দেন। তৎক্ষনাৎ জাকির হোসেন ১ হাজার টাকা পরিশোধ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপধ্যাক্ষ মো. আতাউল খান বলেন, আমাদের কলেজের ছাত্রীনিবাসের এক ছাত্রী ওই যুবকের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ করেন। সেটি প্রমাণ হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই যুবক এর আগেও ছাত্রীনিবাসের সামনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করেছে বলে অভিযোগ ছিল। এজন্য বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে।


ছাত্রীনিবাস   অশ্লীল ভিডিও   কারাদণ্ড  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দাবদাহ মোকাবিলায় সরকার, জনসচেতনতা কোথায়?

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র দাবদাহে অসহনীয় গরমে পুড়ছে পুরো দেশ। কখনও তীব্র আবার কখনো অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে। এই গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন পার করছে জনগণ। নাভিশ্বাস হয়ে পড়েছে জীবনব্যবস্থা। এপ্রিলের পুরো মাস জুড়েই ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ, যা ৭৬ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। এবংকি চলতি মে মাসেও দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অফিস।

দেশের তাপমাত্রায় যখন এমন দূর্বিসহ দিন যাচ্ছে তখন বসে নেই সরকার। জনগণকে এই তীব্র গরম থেকে স্বস্তি দিতে সরকার নিচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ, করছে কার্যকর। শুধু সরকারের পদক্ষেপেই কি মিলবে স্বস্তি নাকি দেশের জনগণকে নিজেদেরে সচেতন হয়ে দাবদাহ মোকাবিলা নিতে হবে নানান ব্যবস্থা। দেশপ্রেমের স্থান থেকেও সরকারকে সহযোগিতা করে তীব্রগরমেও আনতে হবে স্বস্তি।

সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পানি ছিটানো হচ্ছে ফুটপাত ও সড়ক বিভাজকে থাকা গাছপালাতেও। তপ্ত গরমের মধ্যেও যারা জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে সরকারের পক্ষ থেকে এ উদ্যেগ নেওয়া হয়ে।

বসে নেই আবহওয়া অধদপ্তরও। স্বস্তিবোধের খবর দিতে কাজ করে যাচ্ছে অনায়েসে। ক্রমাগত ভাবে আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে খবর দিয়ে যাচ্ছে দেশবাসিকে। দফায় দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করে জনগণকে সচেতন করছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রনালয় তৎপরতার সহিত তীব্র তাপদাহের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করছে। শিক্ষার্থীদের কল্যানে যাতে করে এই তাপপ্রবাহ শিক্ষাখাতে কোন প্রভাব না আনতে পারে সে জন্য নিচ্ছেন নানান ব্যবস্থা।

তবে কি শুধু সরকার এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলেই মিলবে গরমের স্বস্তি? নাকি জনগেণেরও নিজেরা উদ্যেগ গ্রহন করে সামাজি ও পারিবারিকভাবে সচেতন হওয়া উচিৎ?

বসতবাড়িতে তীব্র তাপপ্রবাহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যক্তিগত এয়ার কন্ডিশনার, ফ্যান, বা অন্যান্য কুলিং সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের নকশা যত্ন যাথে করে তাপমাত্রা কমানো যায়। যা কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। অতিরিক্ত গরমে দেহ থেকে পানি হারিয়ে যায়। তাপমাত্রা কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে পানিশূণ্যতাযনিত রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যাবে তেমনি গরমে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে। শুধু পানি পান করা নয় , তীব্র গরমে জীবন চলার পথে উষ্ণতাও বন্ধ করা উচিত। অতিরিক্ত গরমে সারি, জামা, ও অন্যান্য সংগ্রহশালা এবং কুলিং বাস্ত্র পরিহার করা উচিত যাতে দেহ ঠাণ্ডা রাখা জরুরী।

আর এতে করে মিলতে পারে ব্যক্তিগত স্বস্তি। যা নিজের অবস্থান সুস্থ্যতাকে ভালো ফলশ্রুত দিতে পারে। দাবদাহে চলার পথে শুষ্ক এবং শীতল স্থানে সময় ব্যয় করা উচিত। যেমন বাড়ির ভিতর থাকা, জলস্থল বা বারি পর্যবেক্ষণ করা। গাছের ছায়ার নিচে থাকা। এক কথায় শরীরের জন্য যত্ন নেওয়া জরুরি যেন হার্মনিক হয়। এটি উষ্ণতা রেগুলেশন, উষ্ণতা ব্যবহার এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করে। সরকারের নির্দেশনা মানতে হবে। চলমান দাবদাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জণগনের কল্যানে বিভিন্নভাবে সতর্ক করছে। এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিজেই গ্রামীন পরিবেশে গিয়ে জণগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছে।

এই তীব্র গরমের মধ্যেও বিভিন্ন গ্রামে তৃণমূল গ্রামে ঘুরে হাসপাতালগুলোর সার্বিক অবস্থা ও জণগনের স্বাস্থ সংক্রান্ত বিষয়ে খবর নিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেনে, ‘আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করতেছি। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করে দেশের সব প্রাইভেট হাসপাতালে রোগনির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হবে’।

এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্ত দিয়েছে ৪ নির্দেশনা..

১। তীব্র গরম থেকে দূরে থাকুন, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।

২। প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন। হেপাটাইটিস এ, ই, ডায়রিয়াসহ প্রাণঘাতি পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে রাস্তায় তৈরি পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল করুন।

৩। গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন, সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলুন।

৪। গরম আবহাওয়ায় যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শের জন্য প্রয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও, সরকারের সকল নির্দেশ মেনে চলা এবং নির্দেশাবলী মানতে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব স্থান থেকে একে অপরে পাশে থেকে সহযোগিতা করা উচিৎ। কেননা প্রতিটি সামাজ দেশ ও জাতির প্রতিটি মানুষই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিটি জনগণকে সচেতন হয়ে দাবদাহ মোকাবিলা করতে হবে।


তীব্র তাপপ্রবাহ   ডিএনসিসি   জনসচেতনতা   আবহাওয়া অধিদপ্তর  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন