লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপী এবার খুব বড় গরু উৎপাদন অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে খামারিদের খামারে ১ থেকে ২ হাজার কেজি ওজনের বড় বড় গরুর খোঁজ পাচ্ছে ক্রেতারা।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, আসন্ন কোরবানির জন্য লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপি এবার প্রায় ৮শ গরু রয়েছে যেগুলোর ওজন ৫শ থেকে ১ হাজার কেজি। আবার ১ হাজার থেকে ২২শ কেজি ওজনের কিছু গরুও রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ খবরটি অস্বাভাবিক হলেও ভালো খবর বলছে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা।
খামারি ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের ধারণা বাণিজ্যিক ভাবে খামার স্থাপন ও কৃত্রিম প্রজণন বৃদ্ধির কারণেই জেলাব্যাপী পশু উৎপাদনে এমন ব্যতিক্রম খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জেলার কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ সাইফুল ইসলাম। কয়েক বছর আগে দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য একটি গাভী কিনেন। পরে ওই গাভী থেকে একটি বাছুরের জন্ম হয়। খুব সুন্দর দেখে বাছুরটিকে লালন পালন শুরু করেন তিনি। নাম রাখেন বাহাদুর। ৪৫ মাস বয়সী বাহাদুরের ওজন এখন ১১শ কেজি বা সাড়ে ২৭ মণ। কোরবানির জন্য বাহাদুরকে পশুরহাটে দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। চাষী সাইফুল ইসলাম জানায়, তিনি কখনো কল্পনাও করেননি তার গরুটি এত বড় হবে।
রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিলব্রিজ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ ডেইরী খামারে মাত্র ৬ টি গরু পালন করেন, মোহাম্মদ উল্লাহ। তার খামারের একমাত্র গরু বড় গরুটির নাম ''কিং''। তার কিং এতবড় যার কোন ক্রেতা লক্ষ্মীপুর জেলায় নেই। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা তার গরুটি মেপে যে সনদ দিয়েছে তাতে কিং এর ওজন ২২ শ কেজি বা ৫৭ মণ। গরুটিকে তিনি ঢাকার গাবতলি পশুর হাটে বিক্রয় করবেন বলে ঠিক করলেন। খামারি মোহাম্মদ উল্লাহ "কিং" এর দাম হাঁকছেন ৪০ লাখ টাকা।
একই ইউনিয়নের মাহবুবুর রহমানের গরু রস্তমের ওজন ১২শ কেজি বা ৩০ মণ। দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ।
রামগঞ্জ উপজেলার মাহবুব রাব্বানীর চৌধুরী ডেইরীতে ৩ টি গরুর মোট ওজন সাড়ে ৩ হাজার কেজি বা ৭৫ মণ। প্রতিটির দাম চাচ্ছেন ১১-১২ লাখ।
কমলনগর উপজেলার কলেজ ছাত্র আহমেদ খান শাকিবের একমাত্র ষাঁড়টির ওজন ৮শ কেজি বা ২০ মণ। শাকিব এ গরুটি বিক্রয় করে বিদেশ যাবেন। তবে তিনি এখনো ক্রেতা খুঁজে পাননি।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার গরু বাজারে কথা হয় ক্রেতা কবির হোসেনের সাথে। তিনি জানায়, জেলাব্যাপি যেভাবে বড় বড় গরু উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে কোরবানি করতে বড় বাজেট করতে হবে। যা অধিকাংশ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
আবদুস সালাম নামের অপর একজন জানায় বড় গরুগুলো কোরবানির হাটে বিক্রি না হলেও মাংসের বাজারে গেলে দেশে মাংসের বাজারের সংকট কাটবে।
সদর উপজেলার বাংগাখা গ্রামের খামারি বেলাল হোসেন জানায়, গত ৩-৪ বছরের মধ্যেই জেলাব্যাপী এমন বড় বড় গরু উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সকল খামারিদের প্রধান লক্ষ্য অন্য খামারীর তুলনায় বড় গরু উৎপাদন। তিনি জানান, বড় গরুগুলো বিদেশি নানা জাতের। বেলালের ধারণা আগামী বছর গুলোতে স্থানীয় খামারে বড় গরু উৎপাদন আরো ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মোশাররফ হোসেন জানায়, চলতি বছরে জেলায় ৬৩ হাজার পশু কোরবানি দেয়ার জন্য খামারিদের নিকট প্রস্তত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে গরু রয়েছে ৪৫ হাজার।
বড় গরু উৎপাদন বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ বিগত কয়েক বছর যাবত খামারিরা কৃত্রিম প্রজণনের ওপর এবং বিদেশি বড় জাতের গরু লালন পালনে উৎসাহী হয়েছেন। সে কারণে এ বছর কোরবানি পশুর হাটে খুবই বড় বড় গরু দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরো জানান, আগামী বছর গুলোতে এ ধরনের পশু উৎপাদন লক্ষ্মীপুরে ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে চলতি বছরে লক্ষ্মীপুরে ১১টি স্থায়ী এবং ৫৫ টি অস্থায়ী পশুর হাটে কোরবানির পশু বিক্রয় হবে।
লক্ষ্মীপুর স্বপ্ন পূরণ খামার গরু উৎপাদন খামারি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।