বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তবে এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সমর্থন পায়নি দলটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে- তা নিয়ে তারা এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেন সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে, সেইজন্য কূটনৈতিক মহল সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বিভিন্ন যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এই যোগোযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না, বরং নির্বাচনের সময় জাতীয় সংসদের পরিণতি কি হবে- তা নিয়েই আলোচনা গুরুত্ব পাচ্ছে।
বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সংসদ বাতিলের কোনো বিধান নেই। বিধানে সংসদ বহাল থাকে এবং নতুন সংসদ সদস্যরা শপথ নেওয়ার পর বিদায়ী সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ এখন যে সংসদ রয়েছে, সে সংসদ নির্বাচনের সময়ও বহাল থাকবে। আগামী নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন, তাদের শপথ গ্রহণের পর বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত হবে। এটি ৭২’র সংবিধানের বিধান। একই রকম বিধান রয়েছে ব্রিটেনে এবং ভারতেও। কিন্তু বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল বলছে, একটি সংসদ বহাল রেখে আরেকটি সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপির অন্যতম একটি দাবি হলো- নির্বাচনকালীন সময়ে সংসদ বাতিল করা। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, পশ্চিমা দেশগুলো এই দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। তারা মনে করছে, নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের স্বার্থে সংসদ বিলুপ্ত হওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে তারা সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে বলেও জানা গেছে। তবে সরকারের অবস্থান এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে অনঢ়। সরকার বলছে যে, বাংলাদেশে ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমেক্রেসি রয়েছে। কাজেই অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশে সংসদ একমাত্র বিলুপ্ত হতে পারে, যদি সংসদ নেতা রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত চিঠি দিয়ে সংসদ বিলুপ্ত করার কথা বলেন এবং সেটি যদি মেয়াদ পূর্ণ না করে। সরকার যেহেতু তার পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে চাচ্ছেন, কাজেই এই সময়ে সংসদ বিলুপ্তের কোনো বিধান নেই। তবে কূটনৈতিক মহলের কেউ কেউ বলছেন যে, পূর্ববর্তী সংসদ যদি বহাল থাকে, সেক্ষেত্রে যারা এমপি বা মন্ত্রী রয়েছেন, তারা বাড়তি সুযোগ-সুবিধা পান। সংসদ সদস্যরা এলাকায় গেলে প্রশাসন, পুলিশ তাদেরকে প্রোটোকল দিতে বাধ্য থাকেন। এ রকম একটি বাস্তবতায় সংসদ বহাল রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সম্ভব নয় বলে কোনো কোনো কূটনীতিকের ধারণা। এ কারণেই সংসদ বাতিল করা যায় কি না- এ বিষয়টি নিয়ে তারা সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন।
তবে সরকার মনে করছে যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সঙ্গে সংসদ বাতিলের কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারের পক্ষ থেকে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, সংসদ সদস্য যখন একজন নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় যাবেন, তখন তিনি নির্বাচনী আচরণবিধির আওতায় পড়বেন। সেক্ষেত্রে তিনি কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা বা প্রোটোকল পাবেন না। একইভাবে কোনো মন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচন প্রচারণাকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। কাজেই এক্ষেত্রে কোনোভাবেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ক্ষুন্ন হওয়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই।
তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সংসদ থাকবে না বাতিল হবে- এটিই এখন ক্রমশ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চেয়ে বড় প্রশ্ন হিসেবে দাঁড়িয়েছে এবং সমঝোতার আলাপ-আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নয়, বরং সংসদ থাকা না থাকার ইস্যুটি প্রাধান্য পাচ্ছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংসদ বিলোপ চাপ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
মন্তব্য করুন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রধানমন্ত্রী নসরুল হামিদ
মন্তব্য করুন
চাকরির বয়সসীমা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জনপ্রশাসন মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে দেওয়া এক ডিও লেটারে উল্লেখ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহারে ৩৩ নং পৃষ্ঠায় শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আর এ রকম একটি ডিও লেটারে শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন দেশে চাকরির বয়সসীমা উল্লেখ করেছেন।