সেপ্টেম্বর মাস বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্ম মাস। এই সেপ্টেম্বর মাসেই দুনিয়ার নজরকাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্জনের উজ্জল নেতৃত্বদানকারী বিশ্বনেতা জননেত্রী শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি জন্মগ্রহণ না করলে হয়তো বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি, আইনের শাসন এবং উন্নত বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের অবস্থান উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভবপর হতো না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম ‘বাংলাদেশের আলোর পথযাত্রা’। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মমাসের প্রথম দিবসে ‘শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র ১’ থেকে পাঠকদের জন্য তাঁর একটি লেখা তুলে ধরা হলো।
আমার কলেজ-জীবন
-শেখ হাসিনা
স্কুলজীবন শেষ করে কলেজে ভর্তি হয়েছি। সে কী উৎসাহ উদ্দীপনা। অধিকাংশ বন্ধু গভ. ইন্টারমিডিয়েট কলেজে ভর্তি হচ্ছে। কাজেই আমিও সেখানে গেলাম, ফর্ম নিলাম, ভর্তি হলাম। বেশ কয়েকদিন অফিসে যেতে হলো। পুরনো কিছু স্কুলের বান্ধবী যারা আমাদের আগের বছর এসএসসি পাস করেছে, তাদের সাথে দেখা হলো। ওরা অনেক সাহায্য করল। বেশ কয়েকদিন অফিসে দৌড়াদৌড়ি করাতে মোটামুটি কলেজ ক্যাম্পাসটি চেনা হয়ে গেল, বিশেষ করে ক্যান্টিনের সাথে পরিচিত হলাম। সাধারণত স্কুল ক্যান্টিন থাকে না, কিন্তু কলেজে ক্যান্টিন, এক কাপ চা নিয়ে বসে গল্প করা অর্থাৎ রীতিমতো চায়ের কাপে ঝড় তোলা বেশ মজার। রাজনীতির সাথে যারা জড়িত তারাও বেশ উৎসাহিত, আমি ভর্তি হচ্ছি দেখে।
এর কারণ হলো মেয়েদের মাঝে ছাত্র ইউনিয়ন করার প্রবণতা বেশি। তার ওপর মতিয়া চৌধুরী তখন তুখোড় নেত্রী, তাঁর সংগঠনই বেশি শক্তিশালী। স্কুলে থাকা সময় থেকেই তাঁর সংগ্রামী ভূমিকার কথা জানতাম। বিভিন্ন আন্দোলনে স্কুল থেকে মিছিল নিয়ে বটতলায়ও গিয়েছি। তবে মণি ভাই সব সময় সতর্ক করতেন আমরা আবার মতিয়া চৌধুরীর টানে যেন ভিন্ন রাজনীতিতে চলে নাই যাই। নিলুফার, পান্না, মঞ্জু, নসিবুন, নিলুফার, রানু, হাসু, টুনটুনি, মাহমুদসহ অনেক সিনিয়র মেয়েরা যারা ছাত্রলীগ করত তারা খুবই খুশি। ভর্তির সময় অনেক সাহায্য তারা করল। যাহোক ভর্তি হলাম।
প্রথম ক্লাস শুরুর দিন। খুবই উৎসাহ, সারা রাত যেন আর ঘুমই হয় না। সকালে উঠেই তৈরি হলাম। প্রথম দিন কলেজে যাব। নতুন সালোয়ার কামিজ মা তৈরি করে দিয়েছে। খুবই সুন্দর প্রিন্ট, একেবারে নতুন বাজারে এসেছে। খুব হালকা রঙের মধ্যে, আমার দারুণ পছন্দ। বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে সময় ঠিক করে নিলাম, যাতে এক সঙ্গে কলেজে ঢুকতে পারি। আগেই খবর পেয়েছিলাম র্যাগিং করবে। কিন্তু কী করবে জানি না। কলেজের গেটের ভিতরে পা রাখলাম। কত স্বপ্ন, মনে কী উৎসাহ, ক্লাসে যাব। ক্লাসরুমগুলো খুঁজে নিতে হবে। রুটিন জানতে হবে, শিক্ষকদের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। মনের মাঝে একটি উদ্বেগও কাজ করছে। কলেজ-জীবনের প্রথম দিন। দারুণ উত্তেজনা, উদ্দীপনা।
মোটামুটি সবাই ঠিক সময় এসেছে। কেউ ভেতরে প্রবেশ করে গেটের পাশেই অপেক্ষা করছে। কয়েকজন বাইরে। আমরা কয়েকজন এক সাথে গেটে ঢুকলাম। কিন্তু যেই গেটের ভেতরে পা দিয়েছি সঙ্গে সঙ্গে ঝপাঝপ রং এসে চোখ-মুখ, কাপড়-চোপড় লাল রঙে ভিজিয়ে দিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আক্রমণ। আচমকা আক্রমণে প্রথমে হকচকিয়ে গেলাম। এত শখের সুন্দর কামিজটি, সাদা সালোয়ার, সাদা ওড়না সব লাল। পুরো ভিজে গেলাম। চোখের চশমাটি ভিজে গেল। ওড়না ও রুমাল দিয়ে চশমাটি মুছে নিলাম। এ ফাঁকে কী করণীয় তাও মনে মনে ঠিক করলাম। কাজেই এক বান্ধবী ছিল। হাতের বাইগুলো ওকে ধরিয়ে দিলাম। দেখি বালতি ভরতি রং। সেখান থেকে মগে করে তুলে তুলে ছুড়ে মারছে। আমি কোন কথা না বলে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে বালতির দিকে এগুতে থাকলাম। ইতিমধ্যে আরও কয়েক মগ রং আমার দিকে ছুড়ে মারল। কোনো বাধা দিলাম না, প্রতিবাদ করলাম না। শুধু ওদের কাছে পৌঁছলাম বেশ হাসতে হাসতে। কারণ আমার মজাই লাগছিল। প্রথম ধাক্কাটি কাটিয়ে উঠতে যে সময়। কাছে এগিয়ে যেই বালতিটা হাতের নাগালে এসেছে, চকিতে বালতিটা তুলে সব রং ওদের ওপর ঢেলে দিলাম। ওরা বোধ হয় পাল্টা আক্রমণে একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। খুবই ক্ষেপে গেল। ওদের যত রং ছিল সবই আমরা ওদের ওপর ছিটালাম। তাতে আমাদের সিনিয়রা ভীষণ ক্ষেপে গেল। কিছু বিহারি মেয়ে ছিল, নন বেঙ্গলি যাদের বলা হতো, তারা দোয়াতের কালি নিয়ে এল। এক পর্যায়ে তাও কাড়াকাড়ি হলো এবং বেশিরভাগ তাদের গায়েই গেল। এতে ওরা গেল আরও ক্ষেপে। এদিকে আমাদের ওপর যে রং-কিছুক্ষণ পর দেখি রং আর নেই। বেশ বোকা বানালো আমাদের। নন বেঙ্গলিগুলো ভীষণ ক্ষেপেছে আমার ওপর। অকেনক্ষণ তারা আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল, যদিও আমি পুরোনো দালানে উঠে বসে মজা দেখছিলাম। আর একটি বান্ধবীর সাথে বারান্দায় বসে গল্প করছি। যাহোক ওরা অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে যখন হয়রান, আমরা আচমকা আবার ওদের হাত থেকে কালির দোয়াত কেড়ে নিয়ে ওদের ওপরই ছিটিয়ে দিলাম। আরও ক্ষেপে গেল ওরা।
যাহোক এ পর্ব শেষ, ক্লাসে যাব। যার জন্য এত উদ্বেগ, উৎসাহ-উদ্দীপনা। রুটিন ও ক্লাসরুম নম্বর আগেই জোগাড় করেছিলাম। কয়েকজন বান্ধবী মিলে রুম নম্বর দেখে ক্লাসে ঢুকতে গেলাম, সেখানে দেখি উঁচু ক্লাসের ক্লাস হচ্ছে, আমাদের ক্লাস না। রুম নম্বর ঠিক অথচ আমাদের ক্লাস না, যখনই ঢুকতে গেলাম সবার সে কী হাসি! সত্যিই বোকা বনে গেলাম। কী ব্যাপার, দেখি সব ক্লাসরুমের নম্বরগুলো কাগজে উল্টোপাল্টা লিখে আমাদের বোকা বানাবার জন্য লাগিয়ে রেখেছে। কাজেই প্রথম দিন ক্লাস রুম নিয়ে ধোঁকা খেয়েই কাটাতে হলো। কলেজের প্রথম দিনটি নানা ঘটনায় বেশ বৈচিত্রপূর্ণই হলো। যাহোক খুব বেশি ক্লাস সেদিন আর করা হলো না। শিক্ষকরা পর্যন্ত ক্লাসরুম নিয়ে ধোঁকা খেয়েছেন। আর ক্লাস খোঁজার জন্য কলেজটি মোটামুটি ঘুরে দেখা হলো। এটিও একটি লাভ হলো। জানি না এখনও নতুন ছাত্রীদের এভাবে পুরনো ছাত্রীরা আপ্যায়ন করে কিনা। আমাদের বড়রা মজা করেছিল।
ইন্টারমিডিয়েট কলেজের জীবন অনেক ঘটনাবহুল। আমাদের কলেজে কোন শহীদ মিনার ছিল না। আমরা দাবি করলাম একটি শহীদ মিনার কলেজের ভেতরেই করতে হবে। কিন্তু আমাদের প্রিন্সিপাল কিছুতেই করবেন না। করতে দিবেন না। আমরা আন্দোলন গড়ে তুললাম। আমাদের বাজেট, আমাদের টাকা, আমরা শহীদ মিনার করব। কিন্তু না, তিনি তা দেবেন না। একদিন আমরা কিছু ইট জোগাড় করলাম। অবশ্য কলেজেরই কাজ হচ্ছিল, সে ইট নিয়ে এসে ইটের উপর ইট সাজিয়ে একটি শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিলাম। এটি ছিল ২০ ফেব্রুয়ারি। পরদিন একুশে ফেব্রুয়ারি। কলেজ শেষে সন্ধ্যায় আমরা একুশের সভা করলাম। আমাদের প্রিন্সিপাল খবর পাবার সঙ্গে সঙ্গে রাতের মধ্যে নিজে এসে সে মিনার ভেঙে ফেললেন। পরদিন কলেজ বন্ধ। তারপরও খবর পেয়ে গেলাম কলেজে। খালি জায়গায় ফুল দিয়ে এলাম।
তার পরদিন কলেজ খুলেছে, আমরা ঠিক করলাম, ঐ জায়গাটাই আবার ফুল দেব। দেখি একজন একজন করে শিক্ষক বসিয়ে রেখে জায়গা পাহারা দেওয়া হচ্ছে যাতে আমরা ফুল দিতে না পারি। আমরাও কম যাই না, হাতে ফুল লুকিয়ে এক একজন পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আর ছুড়ে দিচ্ছি ফুল। সঙ্গে সঙ্গে পাহারারত শিক্ষক তা সরিয়ে ফেলছেন। এ ধরনের লুকোচুরি বেশ চলল।
এক সময় প্রিন্সিপাল আমাকে ডেকে তাঁর রুমে বসিয়ে রাখলেন, অনেকটা বন্দি। বের হতে দেবেন না। তাঁর ভাষায় আমিই নাকি মূল হোতা। পরে অবশ্য মেয়েরা এক হয়ে তাঁর রুমের সামনে যখন শ্লোগান দিতে শুরু করেছে, আমাকে ছেড়ে দেবার জন্য দাবি করছে, তখন আমাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
আমাদের আন্দোলন বেশ তুঙ্গে। শহীদ মিনার আমাদের চাই। ঢাকার ডিসিকে প্রিন্সিপাল খবর দিলেন। আমাকে হুমকি দিলেন অ্যারেস্ট করার। আব্বা তখন জেলে, নাজিমুদ্দিন রোড বকশীবাজার থেকে বেশি দূরে না। চার আনা রিকশা ভাড়া লাগে। প্রায় ১৫ দিন পরপর আব্বার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। কলেজ থেকে প্রায়ই যেতাম। আমাকে যখন হুমকি দেওয়া হলো গ্রেপ্তারের, বললাম, আপত্তি নেই। কারণ প্রায়ই তো যাচ্ছি। আর আব্বা যখন ভেতরে আছেনই আমি যাব জেলে। যাহোক ডিসি এলেন। সবাই আমরা ঠিক করলাম, ডিসি যেই বের হবেন, তাঁকে ঘেরাও করব। শহীদ মিনার আমাদের চাই-ই। যে কথা সেই কাজ। গ্রুপ গ্রুপ মেয়ে তৈরি। যেই বের হলেন ডিসি, আমরা ঘেরাও করলাম। আমাদের দাবি মানতেই হবে। আমাদের কলেজের বাজেট থেকেই আমরা করব। কিন্তু করতে দিতে হবে। মেয়েদের দ্বারা ঘেরাও হবে সেটি বোধ হয় বুঝতে পারেননি। কাজেই অনেকক্ষণ আটক থেকে কথা দিলেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ করবেন এবং শহীদ মিনার যাতে হয় তা দেখবেন। আমি ভিপি এবং আমার জিএস-এর সঙ্গে আরও দু’একজন প্রতিনিধি যেন তাঁর সাথে এ ব্যাপারে পরে যোগাযোগ করি। তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমরা তাকে ছেড়ে দিলাম। এরপর সময় নির্ধারণের জন্য তাঁর কাছে ফোন করি, আর ফোনও ধরে না, সময়ও দেয় না। আমাদের সাথে ভালো ধোঁকাবাজি দিয়েছে। শেষে একদিন কলেজের মেয়ে নিয়ে জিএসসহ ডিসি অফিসে গেলাম। আমরা কলেজের কথা বলি। তিনি আমাকে আব্বার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য কোন পারমিশন লাগলে দেবেন ইত্যাদি কথা বলেন, চা-পানি খাওয়ান। আসল কথা আর বলেন না। যাহোক আমরা ছাড়ি না। অবশেষে বলে এলাম, শহীদ মিনার এ কলেজে হবেই। একদিন করবই। এছাড়া কলেজের অন্যান্য অসুবিধার কথাও এ সুযোগে বলে এলাম। (অবশ্য কলেজে শহীদ মিনার পরে হয়েছে)। তবে আমি ততদিন কলেজ ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। আমার পর ছাত্র ইউনিয়ন থেকে কলেজে ভিপি হয়েছিল। মনে আছে বাজেটে সই করিনি, কারণ বাজেটে শহীদ মিনারের বরাদ্দ ছিল না। ৪/৫ ঘন্টা আমাকে সেদিনও বন্দি করে রাখা হয়েছিল প্রিন্সিপালের রুমে। বার বার প্রিন্সিপাল ও অন্য শিক্ষকরা বলায় জিএস আগে সই করল, অবশেষে আমাকেও করতে হলো। যাহোক, পরে শহীদ মিনার হয়েছে। আমাদের আন্দোলন বৃথা যায়নি। সে প্রিন্সিপালকে ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনে আইয়ুবের পতনের পর বদলি করে অন্য জায়গায় পাঠানো হয়। ছাত্র ইউনিয়ন কলেজ-সংসদে ছিল। অবশ্য আমাকে ওরা একবার খবরও দেয়নি, বলেওনি। খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। আমি এত আন্দোলন করলাম, অথচ সেই শহীদ মিনার তৈরি হলো, আমাকে একবার জানালো না। উদারতার এত অভাব, না হীনস্মন্যতা? এ কলেজ থেকে বিপুল ভোটে কলেজ ইউনিয়নে বাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হই। প্রকৃতপক্ষে সক্রিয় রাজনীতি এ কলেজ-জীবন থেকে শুরু। তারপর থেকে আজও চলছে। অনেক স্মৃতিভরা কলেজ-জীবন কত আর লেখা যায়। খুব ভালো লাগছে। এ অনুষ্ঠানটি হচ্ছে বলে কিছু বলার সুযোগ হলো। কত সুযোগ, বান্ধবীদের সঙ্গে দেখার সুযোগ হবে, শিক্ষকদের সঙ্গে দেখার সুযোগ হবে। আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
স্মৃতি বড় মধুর। কলেজে আট আনায় এক প্লেট বিরিয়ানি, চার আনায় কাবাব, দুই আনায় পরোটা, দুই আনায় এককাপ চা, আহ্ স্বাদটি যেন এখনও লেগেই আছে মুখে।
[সূত্র : শেখ হাসিনা রচনাসমগ্র-১, পৃষ্ঠা নং ২৫১-২৫৪]
কলেজ জীবন. শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি
মন্তব্য করুন
রাজবাড়ীতে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোঃ আব্দুর রহিম (৩৫) নামে এক কাভার্ডভ্যান চালক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় সারোয়ার হোসেন নামে আরও একজন আহত হয়।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত চালক আব্দুর রহিম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার দনিয়া ইউনিয়নের দোলাইরপাড় গ্রামের বাসিন্দা।
দুর্ঘটনায় আহত সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে কোম্পানির কাভার্ডভ্যানে ফ্যান নিয়ে ভোর ৪টায় ফরিদপুরে যাই। সেখানে একটি দোকানে ফ্যান ডেলিভারি দিয়ে ঢাকায় ফিরছিলাম। পথে মজলিশপুর আখ সেন্টারের সামনে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক সামনে থাকা একটি পিকআপভ্যানকে ওভারটেক করতে গিয়ে আমাদের গাড়ির সামনে চলে আসে। এ সময় ট্রাকটির সঙ্গে আমাদের গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই চালক আব্দুর রহিম মারা যান।’
আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল শেখ জানান, ‘নিহত চালকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানটি মহাসড়কের পাশে রয়েছে। তবে ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ডা. সামন্ত লাল সেন
মন্তব্য করুন
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ধুবিল ইউনিয়নে অতি-দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে প্রকল্প এলাকায় কম শ্রমিকের উপস্থিতি, হাজিরা খাতা ও সাইনবোর্ড না থাকা, শ্রমিক তালিকায় ইউপি উদ্যোক্তা, চৌকিদার, ইউপি সদস্যদের স্বজনদের নাম অন্তভূক্ত করা, শ্রমিকদের সিম ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের পকেটে রাখা সহ নানাবিধ অনিয়ম।
জানা যায়, এই উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ১৫ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ হতে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪৫টি প্রকল্পের বিপরীতে মোট ১৬৬৩ জন শ্রমিকের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। প্রতি শ্রমিকের জন্য দৈনিক চারশত টাকা মজুরী এবং সর্দারের ভাতা রয়েছে ২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ধুবিল ইউনিয়নে ৬টি প্রকল্পের বিপরীতে ১৬৭ জন শ্রমিকের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ২৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। যেখান পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ১১১ জন এবং মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা ৫৬ জন।
সরেজমিনে ধুবিল ইউনিয়নের ইছিদহ, আমশড়া, চৌধুরী ঘুঘাট, ধুবিল মেহমানশাহী, মালতিনগর, ঝাউল প্রকল্প গুলো ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিক উপস্থিতি ষাট ভাগেরও কম।
প্রকল্প এলাকার বাসিন্দারা জানান, উন্নয়নের জন্য সরকার থেকে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকল্পের নামে চলছে লুটপাট। ঝাউল লুৎফরের বাড়ী হতে শহিদুলের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ২৭ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে মূলত কাজ করছেন ১৫ জন শ্রমিক। প্রকল্পের সর্দার জানান, শুরু থেকেই এখানে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করে। প্রকল্পের সভাপতি থেকে শুরু করে কেউ তদারকিও করতে আসে না।
একই চিত্র এই ইউনিয়নের সকল প্রকল্প গুলোতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য জানান, প্রকল্প শেষে বরাদ্দের বড় একটা অংশ যায় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে। কাজেই এই প্রকল্পের দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট।
এ ব্যাপারে ঝাউল প্রকল্পের প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পে শ্রমিক অনুপস্থিত থাকবেই, কারণ চেয়ারম্যানের ভিআইপি লেবার, মহিলা ইউপি সদস্যের ভিআইপি লেবার থাকে। তারপর আবার উপজেলা অফিস ম্যানেজ করতে হয়।
কর্মসৃজন প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকল ইউনিয়নেই শ্রমিক উপস্থিতি কম। তাই আমার এখানেও কম। আপনারা পত্রিকায় লিখে কিছু করতে পারবেন না। কারণ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সবকিছু নলেজে আছে।’
অতি দ্ররিদ্র কর্মসৃজন প্রকল্প অনিয়ম
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী কমিউনিটি ক্লিনিক
মন্তব্য করুন
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, পরিবার পরিকল্পনা এবং পুষ্টি সেবা নিশ্চিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ধুবিল ইউনিয়নে অতি-দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে প্রকল্প এলাকায় কম শ্রমিকের উপস্থিতি, হাজিরা খাতা ও সাইনবোর্ড না থাকা, শ্রমিক তালিকায় ইউপি উদ্যোক্তা, চৌকিদার, ইউপি সদস্যদের স্বজনদের নাম অন্তভূক্ত করা, শ্রমিকদের সিম ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের পকেটে রাখা সহ নানাবিধ অনিয়ম।