সেপ্টেম্বর মাস বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জন্ম মাস। এই সেপ্টেম্বর মাসেই দুনিয়ার নজরকাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্জনের উজ্জ্বল নেতৃত্বদানকারী বিশ্বনেতা রাষ্টনায়ক শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি জন্মগ্রহণ না করলে হয়তো বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি, আইনের শাসন এবং উন্নত বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের অবস্থান উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভবপর হতো না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম ‘বাংলাদেশের আলোর পথযাত্রা’। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মমাসে ‘শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-১’ থেকে সপ্তম পর্বে পাঠকদের জন্য তাঁর একটি লেখা তুলে ধরা হলো।
বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম (পর্ব -৭)
-শেখ হাসিনা
জে. জিয়া ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী হবার ইচ্ছা পূরণ করবার জন্য চরম স্বেচ্ছাচারিতার পথ বেছে নেন। ২৮ এপ্রিল ১৯৭৮ সালে সামরিক ফরমান জারি করেন যা দ্বিতীয় ফরমান ত্রয়োদশ সংশোধন আদেশ নং ২ ছিল।
১৯৭৫ সালের ৮ নভেম্বর সামরিক ফরমান (ক) দফার সঙ্গে (কক) এবং (ককক) দফাসমূহ যুক্ত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স সংশোধনপূর্বক এই অর্ডিন্যাল জারি করা হয়। এই সংশোধনীতে বলা হয় যে, সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে কেবলমাত্র সেনাবাহিনী প্রধান রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়াসহ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে প্রার্থী হবার যোগ্যতা রাখবেন। এই ফরমানে ঘোষণা করা হয় যে, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের কমান্ডার-ইন-চিফ থাকবেন এবং সকল কর্মবিভাগের ওপর তাঁর তত্ত্বাবধান, আদেশ দান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকবে। প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবেন। এইভাবে মেজর জেনারেল জিয়া একদিকে সেনাকেন্দ্রে স্বীয় চাকরি ও অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হবার যোগ্যতা অর্জনের ব্যবস্থা করেন অবৈধভাবে। শুধু তাই নয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২৮ এপ্রিল। ১৯৭৮ তারিখের ফুল ৫-১/৭৮/২৪১ নম্বর আদেশ বলে সংশোধিত সেনা আইনের ২৯৩-ক বিধি জারি করেন। এই বিধিতে বলা হয়
“৯৩৯ক-২৯১, ২৯২, ২৯৩ বিধিগুলোর বিধানাবলি অর্ধেক বেতনে কিন্তু মার্শালের পদে অধিষ্ঠিত আছেন এমন কোনো অফিসারের ক্ষেত্রে অথবা বাংলাদেশের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের বা রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত আছেন এমন কোনো অফিসারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।” ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করবার জন্য জে. জিয়া ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করেন। যারা শুধুমাত্র চতুর্থ সংশোধনীর দোষারোপ করেন তাদের প্রতি অনুরোধ তারা এ বিষয়গুলোও তলিয়ে দেখবেন এবং ভেবে দেখবেন এই কর্মকাণ্ডগুলো গণতন্ত্রের কোন সংজ্ঞায় পড়ে এবং কি ধরনের গণতন্ত্র জে. জিয়া এনেছিলেন।
এই সমস্ত সামরিক ফরমানগুলোই পরবর্তীকালে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে সংযুক্ত করে বুলেট দ্বারা অর্জিত ক্ষমতা জবরদস্তি করে ব্যালটের মাধ্যমে বৈধতাদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। জেনারেল জিয়া ক্ষমতা দখলের যে ষড়যন্ত্রমূলক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন ও অনুশীলন করেন জে. এরশাদ সেই পদাঙ্ক করেই ক্ষমতা দখল করেন।
‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরবর্তী সরকারদের কি রূপ আমরা দেখতে পাই? ক্ষমতায় গিয়ে তারা চতুর্থ সংশোধনী বাতিল করেন নি। কেন করেন নি? চতুর্থ সংশোধনীর যদি দোষ ধরবেন তবে তা বাতিল করলেন না কেন? সামরিক আইন হচ্ছে এমন একটি আইন যা সংবিধানকে লঙ্ঘন করে আনা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই অসাংবিধানিক আইন জারি করে অবৈধভাবে যে ক্ষমতা দখল করা হয় তাকেই আবার সংবিধানে সংযোজন করে বৈধ করে নেওয়া হয়। আর এই বৈধকরণের প্রক্রিয়ায় গিয়ে দেশের যা ক্ষতি জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ করেছেন তা হলো:
১. জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে এবং ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ও নির্বাচনে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কারচুপির আশ্রয় গ্রহণ করে।
২. রাজনীতির দুর্নীতির প্রসার ঘটিয়ে অসৎ টাকার ব্যবহার করে রাজনৈতিক চরিত্র ধ্বংস করেছেন।
৩. বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও টাকা ঢেলে ভাঙন সৃষ্টি করেছেন।
8. বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিশেষ করে জিয়ার আমলে এটা ব্যাপকভাবে দেখা গেছে যে, রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে ক্রোক করে, নিঃস্ব করে দিয়ে অসৎভাবে দলে ভিড়িয়েছেন।
৫. রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে বন্দি করেছেন। বন্দি অবস্থার শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছেন। যেমন নাকের ভিতর পানি ফেলেছেন, সিলিংয়ে ঝুলিয়ে দিনের পর দিন অত্যাচার করেছেন। গুহ্যদ্বারে ব্যাঞ্চ অথবা গরম ডিম ঢুকিয়েছেন।
জেনারেল জিয়া প্রথমে প্রলোভন, তা না মানলে অত্যাচার করেছেন। দিনের পর দিন হয়রানি করে একসময় আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে দলে ভিড়িয়েছেন। এই ধরনের নানা শক্তি প্রয়োগ করে দল গঠন করে নির্বাচনী প্রহসন করেছেন। অসাংবিধানিক পন্থায় দখলিকৃত অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধকরণের জন্য দল গঠন করেই নির্বাচনে নেমেছেন। জে. জিয়ার "হ্যা" বা 'না' ভোটের যে প্রহসন দেশবাসী জানেন সেখান থেকেই কারচুপি শুরু। এরপর ছিল তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ১৯৭৮ লাগে ‘হ্যা’ বা ‘না’ ভোট ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বিদেশি পত্রপত্রিকায় লিখেছিল জিয়া কোন কোন এলাকায় ১১০ ভাগ ভোট পেয়েছেন। এতেই বোঝা যায় কারচুপির কি পরিমাণ ছিল।
জিয়াউর রহমান প্রথম এই ন্যক্কারজনক ভোটের খেলা শুরু করেছিলেন অস্ত্র ও ষড়যন্ত্র দ্বারা ক্ষমতা দখল করে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। যেহেতু মার্শাল ল’র প্রতি জনগণের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই এই ভোটে শিক্ষিত মানুষ অংশগ্রহণ করলেও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। কারণ অতীতে তারা দেখেছে যে, ন – তে ভোট দিয়ে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে রায় দিলেও তা অদৃশ্য শক্তির হাতের কারসাজিতে সব ‘হ্যাঁ’ হয়ে গেছে। তাই তারা এখনও মনে করে তাদের ভোট দেবার কোনো প্রয়োজন নেই, যা হবার এমনিতেই হবে।
(সূত্র: শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-১।। পৃষ্টা: ৯৬-৯৮)
বাংলাদেশ স্বৈরতন্ত্র জন্ম শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার ডি হাসের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ডেভিড স্লেটন মিল। আর নতুন এই রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ মনোনয়নকে আমরা স্বাগত জানাই। মাস দেড়েক আগে এ বিষয়টা আমাদের জানানো হয়েছে। এখন তারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। আশা করছি— নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বিশ্বের কোনো দেশেই মানবাধিকার আদর্শ অবস্থানে নেই।
হাছান মাহমুদ বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ যেভাবে দমন করছে, সেটি আমরা টিভির পর্দায় দেখছি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নাগরিক আন্দোলনকে কীভাবে পুলিশ দমন করছে, সেটিও আমরা দেখছি।
তিনি বলেন, সব দেশের উচিত মানবাধিকার উন্নয়নে একযোগে কাজ করা। আমরাও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের জুলাই থেকে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন কূটনীতিক মিল। মিনিস্টার কাউন্সেলর হিসেবে ১৯৯২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন তিনি। এরপর ওয়াশিংটনের ফরেইন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের লিডারশিপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্কুলের সহযোগী ডিন, ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন ডেভিড মিল।
ডেভিড মিল বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপি ফেসবুক আইডি ভেরিফায়েড আইডি
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে পিটার ডি হাসের অধ্যায়। বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এখন এটি সিনেটের অনুমোদন হলে ডেভিড মিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে আবির্ভূত হবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নিচ্ছেন পিটার ডি হাস। অর্থাৎ এটি সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে যে মার্কিন নীতি অনুসরণ করছিল সেই নীতিতে পরিবর্তন আসছে। নিশ্চয়ই ডেভিড মিল একটি নতুন মিশন নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। আর এ কারণেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরিয়ে নেওয়া হল পিটার ডি হাসকে।
প্রশ্ন উঠেছে যে, নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে মার্কিন নীতির কী পরিবর্তন করবেন, তার নীতি কী ধরনের হবে? একজন রাষ্ট্রদূতকে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয় তখন প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই দেশে তাদের পররাষ্ট্রনীতির কৌশলপত্র চূড়ান্ত করে। আর ওই কৌশল বাস্তবায়নের জন্য যাকে যোগ্য মনে করা হয় তাকে মনোনয়ন দেয়।
পিটার ডি হাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি, বাংলাদেশের র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট চাপ দিচ্ছিল। এই চাপকে আরও বাড়ানোর জন্যই পিটার ডি হাস বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার দায়িত্ব পালনকালে সুস্পষ্টভাবে তিনি তার অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব দেখানোর লক্ষ্যেই নির্বাচন নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রায় প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিটার ডি হাস মিশন ব্যর্থ হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তাও দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পিটার ডি হাসের সরে যাওয়াটা ছিল অবধারিত। অবশেষে সেটাই ঘটল।
এখন ডেভিড মিল বাংলাদেশে কী করবেন? প্রথমত, ডেভিড মিলের কূটনৈতিক ক্যারিয়ার যদি আমরা পর্যবেক্ষণ করি তাহলে দেখব যে, তার কূটনৈতিক ক্যারিয়ার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দেয়। একই সাথে বাংলাদেশে চীনকে মোকাবেলা করার জন্য মার্কিন কৌশলেরও একটি ইঙ্গিত বহন করে। ডেভিড মিল বাংলাদেশে উপ-রাষ্ট্রদূত হিসাবে বা ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কাজেই বাংলাদেশ তার পরিচিত। বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের মানুষের মন মানসিকতা এবং বাংলাদেশে কীভাবে কাজ আদায় করতে হয় ইত্যাদি কলাকৌশল সম্পর্কে তাকে নতুন করে শিখতে হবে না। এটি ডেভিড মিলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এটি বিবেচনা করেই সম্ভবত ডেভিড মিলকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।
দ্বিতীয়ত, ডেভিড মিল এখন এই মুহূর্তে চীনের বেজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মার্কিন-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার জন্য কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, ডেভিড মিল চীনের রাজনীতি এবং চীনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অনেক পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ ধারণা রাখেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়গুলোতে অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ চীনের উপর অর্থনৈতিকভাবে অনেকখানি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর এর প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছেন যিনি চীনের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্বের একটি বড় বিষয় হল, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি মাখামাখির সম্পর্ক। আর এ কারণেই চীনের কূটনীতিতে অভিজ্ঞ এবং চীনের কূটনীতি অলিগলি চেনা ডেভিড মিলকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ডেভিড মিলের নিয়োগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি বার্তা সুস্পষ্ট হয়েছে। তা হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সুসম্পর্ক, বিশেষ করে অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং বাংলাদেশে কাজ করা একজন ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছে। তৃতীয়ত বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের লাগাম টেনে ধরতে পারে এজন্য চীনের কূটনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে এমন একজন কূটনৈতিককে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এখন দেখা যাক, ডেভিড মিলের বাংলাদেশ মিশন কতটুকু সফল হয়।
ডেভিড মিল বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতি
মন্তব্য করুন
বর্তমানে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল। তবে এই লাইন বধিত হচ্ছে নতুন নকশায়। যা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের আশুলিয়া নয়, বর্ধিত হবে টঙ্গী পর্যন্ত।
এরই মধ্যে বর্ধিত এ পথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। দ্রুতই নকশা চূড়ান্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মেট্রোরেল এখন চলছে উত্তরা থেকে মতিঝিল। বর্ধিতাংশ আসছে বছর কমলাপুরে পর্যন্ত চালু হবে।
এদিকে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সময়ই দিয়াবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ তৈরি করে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। পরিকল্পনা ছিল পথটি আশুলিয়া পর্যন্ত নেয়ার। তবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী পর্যন্ত নেয়া হবে এ রেলপথ; পরিকল্পনা টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত যুক্ত করার।
উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পথ তৈরি হয়েছে বিআরটি। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে এ পথে নতুন করে আরো একটি উড়াল রেলপথ বের করা অসম্ভব। যার জন্য রুট কোনটি হবে তা নিয়ে চলছে পরিকল্পনা।
মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, এখন টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত এ পথটি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মূলত টঙ্গী রেলস্টেশন এবং সড়ক জংশনকে যদি সংযুক্ত করতে পারি, তাহলে ঐ অঞ্চলের মানুষের সুবিধা বাড়বে।
তিনি বলেন, যদিও প্রাথমিক পরিকল্পনায় এখনই এ অংশের কাজে হাত দেওয়ার কথা ছিল না। তবে এবার দ্রুত এ পথে হাঁটতে চায় ডিএমটিসিএল। এরই মধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শুরু হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত নকশা হবে। এ পথটি যুক্ত হলে টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ৪৮ মিনিট।
মেট্রোরেল বাংলাদেশ ঢাকা রাজধানী
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রামের
পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত পাইলট
অসিম জাওয়াদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ
জেলা শহরের সেওতা কবরস্থানে নানা মরহুম মোহাম্মদ
রউফ খানের কবরে তাকে দাফন
করা হয়।
এর
আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে
নিহত পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ
বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জের
শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ
করে। এর কিছুক্ষণ পর
হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি
মরদেহ কাঁধে করে নামিয়ে আনেন
বিমানবাহিনী সদস্যরা। পরে নিহত অসিমকে
গার্ড অব অনার দেওয়া
হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে
পরেন মা নিলুফা খানমসহ
স্বজনরা।
পরে
দুপুর ২টার দিকে শহীদ
মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে জুমার
নামাজের পর পাইলট আসিম
জাওয়াদের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এর পর
লাশবাহী গাড়িতে করে মরদেহ সেওতা
কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা
শেষে নানা মরহুম মোহাম্মদ
রউফ খানের কবরে দাফন করা
হয় এই পাইলটকে।
এদিকে
পাইলট অসিম জাওয়াদের মরদেহ
শেষবারের মতো এক নজর
দেখতে সকাল থেকেই স্টেডিয়ামে
ভিড় করতে থাকেন নানা
শ্রেণি-পেশার মানুষসহ তার স্বজনরা। অসিমের
মরদেহ বহনকারী বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার করে তার বাবা
আমানউল্লাহ, স্ত্রী অন্তরা আক্তার ও দুই সন্তানসহ
স্বজনরা সেখানে নামেন। এ সময় এক
হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহত অসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট অসিম মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।
মন্তব্য করুন
ফেক আইডি দিয়ে অপপ্রচার বন্ধে মন্ত্রী-এমপিদের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার জন্য পাঠালে আমরা ফেরিফাই করে দেবো। ফলে ফেক আইডি দিয়ে আপনার নামে কেউ অপপ্রচার করতে পারবে না।
শেষ পর্যন্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে পিটার ডি হাসের অধ্যায়। বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এখন এটি সিনেটের অনুমোদন হলে ডেভিড মিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে আবির্ভূত হবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নিচ্ছেন পিটার ডি হাস। অর্থাৎ এটি সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে যে মার্কিন নীতি অনুসরণ করছিল সেই নীতিতে পরিবর্তন আসছে। নিশ্চয়ই ডেভিড মিল একটি নতুন মিশন নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। আর এ কারণেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরিয়ে নেওয়া হল পিটার ডি হাসকে।