ইনসাইড বাংলাদেশ

বাণিজ্যমন্ত্রী, প্লিজ পদত্যাগ করুন

প্রকাশ: ০৫:৩০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশের গ্রামে শহরে আগে প্রায়ই সার্কাস-শো হত। বিনোদনের জগতে এক সময় সার্কাস ছিল অন্যতম। দড়ির ওপর ছাতা নিয়ে হেঁটে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাচ্ছে কিশোরী। বানরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক চাকার সাইকেল চালাচ্ছে শিশু। এসব এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। মঞ্চের সার্কাস দেখতে পাওয়া না গেলেও বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ে সার্কাস লেগেই থাকে। মঞ্চের সার্কাস আনন্দ দিত। কিন্তু এই সার্কাস শুধুই কষ্ট আর দুর্ভোগ বাড়ায়।

গত একবছর ধরে মানুষের ওপর চেপে বসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ঘোটক। জীবনধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের অগ্নিমূল্য। চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, ফলমূল, চিনি, লবণ, গম, আটা, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্য আগের তুলনায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির আঁচ এখন উচ্চ মধ্যবিত্তরাও টের পাচ্ছেন। কখনো কাঁচামরিচ, কখনো পেঁয়াজ, আবার কখনো বা ডিমের দাম নিয়ে চলে সার্কাস। কোনকিছুর উপরই নিয়ন্ত্রণ নেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। একের পর এক ব্যর্থতার রেকর্ড গড়ে যাচ্ছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

ব্যর্থতার আরও একটি রেকর্ড আজ সামনে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে এ মাসে সার্বিক খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছর একই সময়ে যে পণ্যের দাম ছিল ১০০ টাকা, সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ১১২.৫৪ টাকায়। এছাড়া জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের মাস, অর্থাৎ জুনে এ হার ছিল ৯ দশমিক ৭৩।

গত এক বছরে বিশ্বব্যাপী অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি কমে আসলেও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। এমনকি অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া শ্রীলংকাও খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে, যা বাংলাদেশ পারেনি। ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়য়ের তদারকিতে ব্যর্থতার কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। আবার চলতি বছর বিশ্ববাজারে কিছু পণ্যের দাম যে হারে কমেছে, দেশের বাজারে সে হারে কমেনি। দু-একটি পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে বাড়তিই রয়ে গেছে।

সিন্ডিকেট নিয়ে সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে যে কেউই অবাক হবেন। তিনি বলেন, 'চাইলে জেল-জরিমানাসহ বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসঙ্গে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার- আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম; সেটা হয়তো করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে যে ক্রাইসিসটা তৈরি হবে সেটা সইতে তো আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে চেষ্টা করি।' তার এমন বক্তব্য সিন্ডিকেটদের ভয়ভীতি দূরে থাক বরং তাদের উৎসাহ দেয়া এবং তাদের ক্ষমতাকে আরও বৃদ্ধিই করে। এমন নিষ্ক্রিয় এবং সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণকারী একজন ব্যক্তি যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়য়ের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়য়ের দায়িত্বে থাকেন তাহলে বাজারের এমন বেহাল দসা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। 

কিছুদিন আগে বাংলা ইনসাইডার একটি জরিপ করে যেখানে প্রশ্ন ছিল, আপনি কি মনে করেন বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে? প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ এতে হ্যাঁ ভোট দেন। এতে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, মানুষ আর পারছে না। মানুষ অতিষ্ঠ। একটি মানুষ ব্যর্থ হতেই পারেন। সবাই সফল হবেন এমনটা ভাবা নিছক বোকামি। কিন্তু নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করতেও নারাজ এই মন্ত্রী। বরং তিনি নিজের ব্যর্থতা লুকাতে প্রধানমন্ত্রীকেও বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছেন। 

দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বাজারে সিন্ডিকেট নিয়ে প্রশ্ন করে বলেন, অনেক পণ্যের ব্যাপারে সিন্ডিকেট করে বাংলাদেশে ব্যবসা করে মানুষের পকেট থেকে অনেক টাকা নেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কথা দায়িত্বশীল মন্ত্রীরাও বলেন। সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না-দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা এমনটি বলেন। প্রধানমন্ত্রী জানতে চান সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না কোনো মন্ত্রী বলেছেন। জবাবে তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবো তো।

ঠিক পরদিনই (৩০ আগস্ট) মন্ত্রী সুর পাল্টালেন, বললেন ‘বাজার সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই।’ টিপু মুন্সী এটাও জানিয়ে দিলেন ‘প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বাণিজ্য ইস্যুতে তার কোন কথা হয়নি।’ তিনি অবলীলায় বলে দিলেন ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে না, এমন কথা আমি বলিনি।’ উল্টো তিনি বললেন ‘গতকাল (২৯আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই ঘন্টা ছিলাম। আমেরিকান চেম্বার্সের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে আমার কোন কথা হয়নি। উনিও জিজ্ঞাসা করেন নি।’

নিজের ব্যর্থতা লুকাতে প্রধানমন্ত্রীকে টেনে আনতেও তিনি দ্বিধাবোধ করেননি। অযোগ্যতা এবং ব্যর্থতার রেকর্ড গড়েও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। আর কতবার ব্যর্থ হলে তার বোধ হবে? সাধারণ মানুষ এখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। অনেকে খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েও খরচের লাগাম টানতে পারছেন না। খোলা আটা আগে যেখানে ২৬-২৮ টাকা কেজি ছিল, এখন ৫০ টাকার ওপরে। যেসব প্যাকেট করা বেকারি পণ্য ৫০ টাকা বিক্রি হতো এখন তা ৬৫-৭০ টাকা। গায়ে মাখার যে সাবানের দাম ৪২ টাকা ছিল, তা এখন ৬২ টাকা। ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া জিরার দাম এখন ১২শ টাকা। ৭৫-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিনির দাম বেড়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে। ৭০-৮০ টাকা বিক্রি হওয়া টুথপেস্টের দাম বেড়ে এখন ১৩০-১৩৫ টাকা।

মানুষ আর পারছে না। দয়া করে এবার পদত্যাগ করুন। আপনি পদত্যাগ করলে হয়ত রাতারাতি কোন পরিবর্তন হবে না। কিন্তু দেশের মানুষ অন্তত আশ্বস্ত হবে। ব্যর্থতাকে লুকানোর চেষ্টা না করে ব্যর্থতা স্বীকার করে আপনি যদি পদত্যাগ করেন তাহলেই আপনি সম্মানিত হবেন। কিন্তু আপনি যদি নিজের মন্ত্রিত্ব আঁকড়ে ধরে রাখেন তাহলে আপনি আওয়ামী লীগ, সরকার এবং জনগণ সবার কাছে বোঝা হয়ে থাকবেন। তাই আপনার কাছে অনুরোধ করছি। বাণিজ্যমন্ত্রী, প্লিজ পদত্যাগ করুন!

বাণিজ্যমন্ত্রী   জাতীয় সংসদ   দ্রব্যমূল্য  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন