ইনসাইড বাংলাদেশ

আয়, মূল্যস্ফীতি ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সিন্ডিকেটের গল্প

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

পাঙ্গাশ মাছ তিতলির প্রিয় মাছের মধ্যে সবার উপরে থাকলেও বাড়ির অন্যান্যদের খুব একটা পছন্দ না হওয়াতে মাঝেমাঝেই বেশ মন খারাপ হতো তার। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে বেশিরভাগ দিনই তিতলির বাবা পাঙ্গাশ মাছ নিয়ে আসেন বাজার থেকে। তিতলিও বেশ খুশি এই ব্যাপারটাতে। ছোট্ট তিতলি হয়তো তার পছন্দের মাছ পেয়ে তৃপ্ত হয় আজকাল কিন্তু সে হয়তো বুঝতে পারে না আগুন বাজারের এই সময়ে যখন ১০০ টাকার পাঙ্গাশ মাছ কিনতে তিতলির বাবার চলে যায় প্রায় ২০০ টাকার মতো, তখন কিছুটা কমদামী শাক আর পাঙ্গাশ মাছেই ভরসা স্বল্প আয়ের তিতিলির বাবার।
  
উপরের গল্পটির চরিত্রেরা কাল্পনিক হলেও এই চিত্রটি মোটেও কাল্পনিক নয়। বাজারের নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে, এ দেশে জিনিসপত্রের দাম একবার বেড়ে গেলে সে জিনিসের দাম আর কমে না। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু এবং কয়েকমাস আগেও মূল্যস্ফীতি গোটা বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে আসলেও এই যায়গায় ব্যক্তিক্রম বাংলাদেশ। বেড়ে যাওয়া কোনো দ্রব্যের দাম তো কমেইনি, উল্টো বেঁচে থাকার জন্য মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাবার মতো জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বেড়েছে পরিবহণ খরচ, বাজারের দামের সাথে হিমশিম খেয়ে বাড়িওয়ালারা বাড়িয়েছেন বাড়িভাড়া। খোলা আটা আগে যেখানে ২৬-২৮ টাকা কেজি ছিল, এখন তা বেড়ে ৫০ ছুঁয়েছে। যে সকল প্যাকেটজাত বেকারি পণ্য ৫০ টাকা বিক্রি হতো এখন তা বিক্রি হয় ৬৫-৭০ টাকায়। গায়ে মাখার সাবান ৪২ টাকা ছেড়ে এখন ৬২ তে। ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া জিরা হাজার টাকার গন্ডি পেরিয়ে এখন ১২শ টাকায়। ৭৫-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিনির দাম বেড়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে। ৭০-৮০ টাকা বিক্রি হওয়া টুথপেস্টের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩০-১৩৫ টাকা। দাম বাড়লেও আদতে কি সত্যি বেড়েছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা?

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের মে মাস থেকে প্রতি মাসে যত মূল্যস্ফীতি হয়েছে, এর চেয়ে কম হারে মজুরি বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে তথ্য গতকাল ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বিবিএসের হিসাবে, গত আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত এক দশকের মধ্যে এবারই এত দীর্ঘ সময় ধরে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। বিবিএস এর তথ্য মতে দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এমন কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটির মতো। এ সকল মানুষদের প্রায় সিংহভাগই মজুরিনির্ভর। এই শ্রেণির মানুষের ওপরই মূল্যস্ফীতির এই চাপ তাদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বর্তমান সময়ে একটি পরিবার তার আয় থেকে যত অর্থ খরচ করে, তার ৪৮ শতাংশের মতো খরচ হয় খাবার সামগ্রী কিনোতে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের আয় বাড়ছে না। ফলে প্রকৃতপক্ষে তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, প্রকৃত অর্থে তারা হচ্ছেন আরও দরিদ্র। একদিকে হয়তো কিছু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে কিন্তু বাড়তি আয় খেয়ে নিচ্ছে জিনিসপত্রের বাড়তি দাম। উপার্জিত অর্থ চলে যাচ্ছে পকেট থেকে। 

কিন্তু এই সমস্যার পেছনে কি বাজারের কোনো কারসাজি কিংবা সিন্ডিকেটের সম্পর্ক রয়েছে? চলুন একটু খোঁজার চেষ্টা করি। আমাদের দেশের বাজার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ দায়িত্বে থাকেন মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী। সেইসাথে কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় সহ জনগণের কল্যাণে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে মানুষকে স্বস্তি দেয়ার দায়িত্বটাও নিতে হয়।  কিন্তু মাননীয় আজকাল সিন্ডিকেটভীতি এবং আমদানী হুমকিতেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন তার কাজের গন্ডি। এইতো ডিমের বাজার নিয়ে তুলকালামের সময়ে ঠিক কি কারণে ডিমের দাম বৃদ্ধি করে বাজার থেকে টাকা লুটে নেওয়া হলো তার সঠিক কারণ না বের হলেও হুঙ্কার ছিলো আমদানি করা হবে। পেঁয়াজের দাম বাড়লে, তেলের দাম বাড়লে শুধু আমদানি হুঙ্কারেই থেমে থাকেন মাননীয়, কিন্তু একবার বেড়ে যাওয়া দ্রব্যমূল্য আর না কমায় বাড়ে মুল্যস্ফীতি। ভোগে জনগণ। 

গত ১১ আগস্ট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এভাবে দাম বাড়ানোর কাজ যে সিন্ডিকেট করে, তা তিনি জানেন; কিন্তু পাবলিকের কষ্ট বাড়াতে চান না বলেই তিনি সিন্ডিকেটে হাত দেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘ধরুন আমরা সিন্ডিকেট বন্ধ করে দিলাম, সিন্ডিকেট চক্র বাজারে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিল। তখন ভোক্তারা পণ্য পেল না। এ জন্য আমাদের সবদিকে খেয়াল রাখতে হয়। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রীর শেষ কথায় তিনি সবদিকে খেয়াল রাখেন, তিনি জানেন সিন্ডিকেটের সাথে কারা জড়িত, কিভাবে সিন্ডিকেট হচ্ছে কিন্তু তিনি কি তাহলে ভয় দেখালেন জনগণকে? খেয়াল তিনি রাখেন ঠিকই, তবে জনগণের খেয়াল রাখার যে দায়িত্ব তার উপরে বর্তায় সে খেয়াল না রেখে খেয়াল রাখছেন সিন্ডিকেট যেন না ভাঙ্গে সেদিকে। অসাধু সিন্ডিকেটের পকেটে জনগণের টাকা ঢুকলে মাননীয়ের লাভের জায়গাটা নিয়ে গবেষণা হতেই পারে। এই গবেষণাকর্মে সুবিধার্থে একটু ক্লু দিয়ে রাখছি। আপনাদের নিশ্চই মনে আছে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছিলেন “মন্ত্রীদের মধ্যেও সিন্ডিকেট আছে”। মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেটের প্রতি আনুগত্যের কথা অনেকবার নিজেই বলেছেন। যার মধ্যে তিনবারই বলেছেন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে। সাপ কামড়ে যাচ্ছে জনগণকে কিন্তু বীণ তাহলে কার হাতে। যদি বাণিজ্যমন্ত্রীর হাতেই থাকে বাজার নিয়ন্ত্রণের মন্ত্র তাহলে সিন্ডিকেটে জড়িত কে বা কারা তাদের বোতলবন্দি করতে কিসের ভয় তিনি ছড়ান। কোনো দ্রব্যের দাম বেড়ে গেলে মাননীয় বলছেন আমদানি করা হবে, কিন্তু আসলেই কি ঐ পণ্যের সংকটের কারণে দাম বাড়লো নাকি সিন্ডিকেটের পকেটে টাকা ঢোকার পরেই মাননীয় হুঙ্কার দেন সেটি স্পষ্ট নয়। পণ্যের দাম যদি চাহিদা আর যোগানের উপরে নির্ভর করে তাহলে কেন আমদানি হুমকির আড়ালে লুকানো হচ্ছে দাহিদা আর যোগানের সঠিক তথ্য। অবশ্য মাননীয় ৫৬ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ৪২ বছরের পুরনো ব্যবসায়ী। 

বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা করছে ১৫ বছর ধরে। এই ১৫ বছরে সরকারের যত ভালো অর্জন সেগুলো ম্লান হচ্ছে কয়েকজন চাটুকার মাননীয়র হাত ধরেই। সত্য গোপন করে প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করতেও তারা পিছপা হন না। এই যেমন গত ২৯ আগস্ট সিন্ডিকেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবেন বলার পরদিন ৩০ আগস্ট মন্ত্রী সুর পাল্টে বলছিলেন “বাজার সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই”। তবে প্রধানমন্ত্রীর উপরে জনগণের আস্থা আছে বলেই জনগণ আশ্বস্ত যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সত্যি সত্যি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরতে চাওয়ার মাধ্যমে আসলে বাণিজ্যমন্ত্রীর সিন্ডিকেট গল্পের ভিলেনকেই পাকড়াও করবেন।

মূল্যস্ফীতি   বাণিজ্যমন্ত্রী   সিন্ডিকেট   দ্রব্যমূল্য   টিপু মুনশি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন