কক্সবাজারের সাগর দ্বীপ কুতুবদিয়া দ্বীপের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠেছে সম্ভবনাময় আরেকদ্বীপ স্থানীয়রা যার নাম দিয়েছে ‘মায়াদ্বীপ’।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ববিদ ড, আবদুল হক জানিয়েছেন নতুন
এ দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপের চাইতে অনেক বড়। তবে এ দ্বীপে ম্যানগ্রুপ ফরেষ্ট সৃজন
করে যথাযত পরিচর্যা করা হলে ৫/৬ বছরের মধ্যে এ দ্বীপ ব্যবহার উপযোগী করা যাবে।আর
যদি সাগর থেকে মাটি উত্তোলন করে দ্বীপটি ভরাট করা হয়, মানুষ প্রাণ প্রকৃতি ও
জীববৈচিত্র্য সমাহার ঘটতে সময় লাগবে দুই থেকে তিন বছর।ফলে এ দ্বীপ কক্সবাজারের
আরেকটি পর্যটন স্পট হিসাবে নয়া দিগন্তের সূচনা করবে।
অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ
কুতুবদিয়া। এ দ্বীপের অদূরে এই মায়াদ্বীপ দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অনন্য
আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে চিহ্নিত হবে, সেদিন খুব বেশী দূরে নয়। অপার সম্ভাবনার
হাতছানি দিচ্ছে এই মায়াদ্বীপ। সেন্টমার্টিন, মাতারবাড়ি ধলঘাটা, সোনাদিয়া, ডিজিটাল
আইল্যান্ড মহেশখালী ও কুতুবদিয়া হলো সাগরবেষ্টিত দ্বীপ। কুতুবদিয়ার পশ্চিম
বঙ্গোপসাগরের আরও একটি দ্বীপ জেগে উঠেছে। এ যেন প্রকৃতির অনন্য অবদান।কারণ
সাগর বা নদী একদিকে গড়ে অন্যদিকে ভাঙে এইতো প্রকৃতির খেলা। কুতুবদিয়ার
পশ্চিম প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের বুকে দ্বীপটির অবস্থান। এর নাম স্থানীয়রা
দিয়েছেন ‘মায়াদ্বীপ’।
কুতুবদিয়া থেকে পশ্চিমে এ দ্বীপের দূরত্ব প্রায় আড়াই থেকে মাত্র
তিন কিলোমিটার। এটি জোয়ারের সময় অর্ধেক ডুবে, ভাটার সময় পুরোটাই জেগে উঠে। এ
দ্বীপের বৈশিষ্ট হচ্ছে সূর্যদোয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়।পড়ন্ত বিকেল থেকে সূর্যাস্ত
পর্যন্ত এ সময়টাতে এর সৌন্দর্য অপরূপ। শেষ বিকেলে সূর্যের আলো বুকে নিয়ে দ্বীপটি
যখন জেগে ওঠে তখন স্বর্গীয় এক সৌন্দর্য ফুটে ওঠে দ্বীপজুড়ে।
স্থানীয়দের মতে, এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও ২০১৮ সালে তৎকালীন
নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান ফেনী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুজন চৌধুরীর
নেতৃত্বে কুতুবদিয়া কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক দুলাল কান্তি বড়ুয়ার আয়োজনে উপজেলার
বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা এ দ্বীপটি পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা মৎস্য
অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ এ চরের নাম জন আকাঙ্খানুযায়ী এ দ্বীপকে
‘মায়াদ্বীপ’ হিসাবে প্রস্তাব করেন। তবে আরও কিছু নাম প্রস্তাবে আসলেও বৈঠক শেষে
সবার মতামতের ভিত্তিতে এ চরের নামকরণ করা হয় মায়াদ্বীপ। সেই থেকে এ নামটি পরিচিতি
পায়। বড়ঘোপ সমুদ্র সৈকত হতে নৌকায় পড়ন্ত বিকেলে স্থানীয় যুবকরা ফুটবল খেলতে যায়
সেখানে।
কুতুবদিয়া খেলোয়াড় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রশিদ বাদশা বলেন, শীত
মৌসুমে বিকেলের দিকে তারা দল বেঁধে নৌকায় চড়ে মায়া দ্বীপে ফুটবল খেলতে যায়।
উপযুক্ত মাঠ ও পরিবেশের কারণে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য আরেকটি নতুন উপহার এই
মায়াদ্বীপ।
জেলে ফরিদ আলম, গিয়াস উদ্দিন, মানিকসহ অনেকেই বলেন, সাগরে মাছ ধরতে
যাওয়া আসার পথে নৌকাটি দক্ষিণ পাশ দিয়ে চালাতে হয়। তাদের একটু কষ্ট হলেও এ দ্বীপটি
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কুতুবদিয়াকে রক্ষা করে।
সাবেক ইউএনও সুজন চৌধুরীর সফরসঙ্গী কক্সবাজার জেলা আঞ্চলিক পল্লী
সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা সুপানন্দ বড়ূয়া বলেছেন, মায়াদ্বীপের কারণে কুতুবদিয়া
দ্বীপটি সাগরের ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে। মায়াদ্বীপকে নিয়ে সরকারিভাবে
উন্নয়নের পরিকল্পনা করলে বড় ধরনের সুফল পাবে বলে মনে করেন তিনি। দেশী-বিদেশী
পর্যটকদের ঢলও নামবে সেখানে। শুধু তাই নয় কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি ও চেম্বার অফ
কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, আমরা যদি বিমান বন্দরের রানওয়ের
জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করতে পারি,মাতারবাড়িতে কোহেলিয়া নদী ভরাট করে সড়ক নির্মাণ
করতে পারি,ও ধলঘাটাতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য বিশাল সমুদ্র ভরাট করে ভূমি
উদ্ধার করতে পারি। তাহলে প্রায় ৬০/৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জেগে উঠাচরকে কাজে লাগাতে
পারবোনা কেন। কুতুবদিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট
ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নতুন এ দ্বীপ কুতুবদিয়ার রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ
করছে।প্রাকৃতিক নিয়মে এ দ্বীপ জেগে উঠেছে। এটি কুতুবদিয়া মানুষের জন্য
অমূল্য সম্পদ। তবে কৃত্রিম ভাবে এ দ্বীপ জাগিয়ে তুলতে ফিজিবিলিটি স্টাডি ও
রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন
রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেরি করায় ডাক্তারকে বেধড়ক পেটানো সেই আওয়ামী
লীগ নেতা এলিম পাহাড় এবার পা ধরে মাফ চেয়েছেন।
রোববার (৫ মে) শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর উপস্থিতিতে
চিকিৎসকের পা ধরে মাফ চান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার মাফ চাওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে
পড়েছে। এলিম পাহাড় শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সভাপতি।
ভুক্তভোগীরা হলেন, চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার
ডাক্তার শেহরিয়ার ইয়াছিন ও তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান।
ভিডিওতে দেখা যায়, সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর বাসভবনে হামলার
শিকার চিকিৎসকরাসহ কয়েকজন চিকিৎসক বসে আছেন। এলিম পাহাড়কে তাদের পায়ে ধরে মাফ চাইতে
বলছেন এমপি। তখন এলিম দুই চিকিৎসকের মধ্যে প্রথমে ডাক্তার শেহরিয়ারের পায়ে এবং পরে
তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমানের কাছে পা ধরে ক্ষমা চান। এ সময় তাকে সংসদ সদস্য ইকবাল
হোসেন অপুর পায়ে ধরতেও দেখা যায়।
ভিডিওতে পালং মডেল থানার ওসি মেজবাউদ্দিন আহমেদ, যুবলীগ নেতা বাচ্চু
বেপারী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিদ্দিক পাহাড় ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) শরীয়তপুর
জেলা শাখার সভাপতি ডা. মনিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দেখা যায়।
মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক
হাবিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি। ঘটনাটি
না বাড়িয়ে মীমাংসা করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। তাই তার উপস্থিতিতে ওই ব্যক্তি ক্ষমা
চেয়েছেন। তাই তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডাক্তার শেহরিয়ার ইয়াছিন বলেন, স্থানীয় সংসদ
সদস্য অনুরোধ করায় আমি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে বাধ্য হয়েছি। আমার কানের পর্দা
ও কণ্ঠনালিতে আঘাত লেগেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা এলিম পাহাড়, মোবাইল
ফোনে বলেন, সংসদ সদস্য আমাদের মুরব্বি। উনি বলেছেন, তাই মীমাংসা করেছি। আমার ছেলেরে
অন্য জায়গায় চিকিৎসা করাচ্ছি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম (পিপিএম)
বলেন, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলা পুলিশের কাছে
একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গেই এলিম পাহাড়কে আটক করে পুলিশ। কিন্তু
আসামি গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগী তার অভিযোগপত্রটি তুলে নেন। যার কারণে কোনো মামলা গ্রহণ
করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে শনিবার (৪ মে) দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে মারামারিতে আহত ছেলেকে চিকিৎসা দিতে দেরি করার অভিযোগে ডা. শেহরিয়ারকে বেধড়ক পেটান এলিম পাহাড়। এই সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমানকেও লাঞ্ছিত করা হয়। পরে ডা. শাহরিয়ার বাদী হয়ে দুপুরে সদরের পালং মডেল থানায় একটি মামলার আবেদন করলে পুলিশ এলিম পাহাড়কে আটক করে।
এমপি ইকবাল হোসেন অপু শ্রমিক নেতা চিকিৎসক
মন্তব্য করুন
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ওসি
মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা
ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতনের
শিকার আব্দুল বারেক।
মামলা দায়ের করা আব্দুল বারেক সিরাজদিখান
উপজেলার বড়বর্তা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা
ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হান্নান মামলার ঘটনার সত্যতা যাচাই-পূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন
দেওয়ার জন্য পিবিআই পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একইসঙ্গে বাদী তথা ভুক্তভোগীদের জখমের
বিষয়ে সিভিল সার্জনকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. জামাল
হোসাইন জানান, গত ১৮ এপ্রিল জেলার সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। ২৪ এপ্রিল
ওই মামলায় এজাহার নামীয় আসামি দেখিয়ে উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের আব্দুল বারেকসহ ১১
জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর ওই দিন রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের থানা
পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে
পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, জেল হাজতে থেকে আব্দুল
বারেক বাদী হয়ে সিরাজদীখান থানার ওসি ও অন্যান্য আরো ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন আদালতে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান
সার্কেল) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি আদালতে একটি পিটিশন মামলা হয়েছে। তবে ওই
ঘটনার সময় আমি ট্রেনিংয়ে ছিলাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিমানবন্দর বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন