নির্বাচনের আগে বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমারা বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পারে। আর এই সমস্ত চাপের বিষয়গুলো ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। এই চাপগুলো দিয়ে নির্বাচন বন্ধ করা বা নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতার সংকটে ফেলার চেষ্টা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো বেশ কিছু ঘটনা ঘটাতে পারে বা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, যা আগামী নির্বাচনের জন্য এক ধরনের হুমকি সৃষ্টি করতে পারে বা অনিশ্চয়তা তৈরী করতে পারে।
যেসব বিষয়ে পশ্চিমারা বাংলাদেশকে সরাসরি চাপ দিতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে-
১. বাণিজ্য সংকোচন: ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এই নিন্দা প্রস্তাবের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে যেয়ে অনেকে মনে করছেন, ইইউ’র সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের পণ্যের বড় বাজার। বাংলাদেশের মোট পণ্য রপ্তানির ৪৮ শতাংশের গন্তব্য ইইউভুক্ত ২৭টি দেশ। দেশে বছরে রপ্তানির পরিমান আড়াই হাজার কোটি ডলার। তার বিপরীতে ইউরোপ থেকে আমদানি হয় চারশো কোটি ডলারেরও কম। ফলে ইউরোপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নে আমাদের যে সমস্ত পণ্য রপ্তানি হয়, তার মধ্যে ৯৩ শতাংশই পোশাক। অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপির কল্যাণে গত দুই দশকে এই বাজারে পোশাক শিল্প শক্ত জায়গায় পৌঁছেছে। এবার ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, সেই প্রস্তাবের ফলে এই বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের ইস্যুতে যদি ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এই বাজার নিয়ে প্রশ্ন তুলে বা বাজার সংকোচনের নীতি গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় একটি ধাক্কা খাবে। আর এই কারণেই অনেকে মনে করছেন, মানবাধিকার নিয়ে ইউরোপের পার্লামেন্টের এই প্রস্তাবটিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।
২. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নানা রকম সহায়তা দেয়, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধের হুমকি আসতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছে। বিশেষ করে মানবাধিকার ইস্যুতে এ ধরনের হুমকি দেওয়া হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
৩. জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন: নির্বাচনের আগে সবচেয়ে বড় যে আঘাতটি আসার শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা হলো জাতিসংঘের শান্তি মিশন। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তি মিশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী বাংলাদেশেরই রয়েছে। আর যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরে টানা অপপ্রচার করছে, বিভিন্ন পশ্চিমা দেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের এখন প্রধান টার্গেট হলো শান্তি মিশন বন্ধ করে দেওয়া এবং এটিই তাদের হাতে শেষ অস্ত্র। যারা এই ধরনের অপপ্রচার করছে তারা জানে যে, ২০০৭ সালে এক/এগারো আনার ক্ষেত্রে এই শান্তি মিশনকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
এখন তারা বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোতে এ নিয়ে দেন-দরবার করছেন, লবিং করছেন। সেখানে সরকারের আসু পাল্টা কূটনীতি জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে এই তিনটি বিষয় নিয়েই সরকারের ওপর যে চাপ, তা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে।
পশ্চিমা সরকার চাপ বাংলাদেশ ইইউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
মন্তব্য করুন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রধানমন্ত্রী নসরুল হামিদ
মন্তব্য করুন
চাকরির বয়সসীমা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জনপ্রশাসন মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে দেওয়া এক ডিও লেটারে উল্লেখ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহারে ৩৩ নং পৃষ্ঠায় শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আর এ রকম একটি ডিও লেটারে শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন দেশে চাকরির বয়সসীমা উল্লেখ করেছেন।