আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানামুখী তৎপরতা চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগেই নানা রকম সতর্কবার্তা দিয়েছে। নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে চাইছে। অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি ভিন্ন অবস্থান জানিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশকে বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে এবং নির্বাচনের আগেই কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে তাদের অবস্থান জানানো হয়েছে। এই অবস্থানের পাঁচটি দিক রয়েছে বলে জানা গেছে।
১. সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন: প্রথমত ভারত মনে করে যে একটি দেশের নির্বাচন, সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সংবিধানে যেভাবে আছে, সেভাবেই নির্বাচন হওয়া উচিত। কাজেই কোনো দেশের নির্বাচনকে সংবিধানের বাইরে নিয়ে যাওয়া বা বাধাগ্রস্ত করাটা কারো ঠিক হবে না।
২. নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ: নির্বাচনকে দেখতে হবে সেটি সুষ্ঠ, অবাধ এবং নিরপেক্ষ হচ্ছে কিনা। নির্বাচন হওয়ার আগেই নির্বাচন নিয়ে এই ধরনের সন্দেহ কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ ভোট ছাড়া বোঝার উপায় নেই যে নির্বাচন কতটুকু নিরপেক্ষ হয়েছে, জনগণ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে কিনা এবং এই ধরনের নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন কতটা ঘটেছে। অর্থাৎ নির্বাচনের আগে একটি নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বা অংশগ্রহণমূলক হবে না- এমন অনুমিত ধারণা কখনোই বস্তুনিষ্ট হতে পারে না বলে ভারত মনে করে। আর এই বার্তাটিও তারা দিয়েছে।
৩. নির্বাচনের পর আলোচনা এবং সমঝোতার পথ: ভারত মনে করে, নির্বাচন তার সাংবিধানিক নিয়মে হয়ে যাওয়া উচিত এবং এই নির্বাচনে যে সমস্ত দল ইচ্ছা, তারা অংশগ্রহণ করবে; যে সমস্ত দল ইচ্ছা নেই, তারা অংশগ্রহণ করবে না। কারণ একটি গণতান্ত্রিক দেশে একটি দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা- তার গণতান্ত্রিক অধিকার। ইচ্ছে করলে একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, ইচ্ছা না করলে ওই রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাও করতে পারে।
৪. নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন: একটি নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে কিনা- তা দেখতে হবে। দেখতে হবে, ওই নির্বাচনে কত শতাংশ ভোটার ভোট দিলো। যদি দেখা যায় যে পঞ্চাশ শতাংশের কাছাকাছি বা তার বেশি ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে, তাহলে ধরে নিতে হবে এই নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। কিন্তু যদি তার কম হয়, তাহলে মনে করতে হবে এই নির্বাচনটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি।
৫. নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নিরপেক্ষতা: নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নিরপেক্ষ অবস্থান ইত্যাদি বোঝা যাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। নির্বাচনের তফসিলের পর রাজনৈতিক দলগুলো যখন প্রচারণায় নামবে, তখনই দেখা যাবে নির্বাচন কমিশন কতটুকু নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বা অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন কিনা। সেটির আগে আগাম বলা উপায় নেই যে, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আর সকল দলকে নির্বাচনে আসতেই হবে- এরকম কোনো শর্ত একটি ক্ষমতাশীন রাজনৈতিক দল বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। কারণ নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব পালন করে না। বরং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার দায়িত্ব পালন করে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রস্তাবনাগুলো ভারত ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে দিয়েছে এবং এই নীতিমালার ভিত্তিতেই বাংলাদেশের নির্বাচনকে দেখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচন আগে দেখুন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন- এই বার্তাটি ভারত পৌঁছে দিচ্ছে সকল কূটনৈতিকের কাছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন সিদ্ধান্ত পরামর্শ ভারত
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রামে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট অসীম জাওয়াদকে মানিকগঞ্জে দাফন করা হবে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে নিহতের পারিবারিক সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
নিহত বৈমানিক অসীম মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর শোনে কান্না থামছে না মা নিলুফা খানমের। ছেলে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
জানা
গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার
দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির
থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান
উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ
পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং
বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা
বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান
ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ প্যারাসুট
দিয়ে নদীতে নামলেও দুজন আহত হন।
পরে
তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা বিএনএস
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিমানের
উইং কমান্ডার সোহান জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল
স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে বিমান বিধ্বস্তর
ঘটনায় বৈমানিক অসীম জাওয়াদ বিএনএস
পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
১৯৯২ সালের ২০ মার্চ আসীম জাওয়াদ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।
চাকরিকালীন
তিনি দেশ-বিদেশে পেশাগত
বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে
তা সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি
অব প্রফেশনালস থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স
পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি চীন থেকে
ফাইটার পাইলটস ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স, ভারত থেকে অপারেশনাল
ট্রেনিং ইন এভিয়েশন মেডিসিন
ফর ফাইটার পাইলটস কোর্স, বেসিক এয়ার স্টাফ কোর্স
ও কোয়ালিফায়েড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর্স কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি
পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ
‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমানবাহিনী প্রধানের
প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এ
ছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ
ইন্ডিয়ান এয়ার অর্জন করেন।
মন্তব্য করুন
ঢাকায়
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে
ডেভিড স্লেটন মেলকে মনোনীত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওয়াশিংটনের
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯
মে) প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলির নাম ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে
উল্লেখ করা হয়, ডেভিড
স্লেটন মেল বর্তমানে চীনের
বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন
হিসেবে রয়েছেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ
দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ডেভিড
স্লেটন মেল স্টেট ডিপার্টমেন্টের
ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যান্ড
বিজনেস অ্যাফেয়ার্সের ট্রেড পলিসি অ্যান্ড নেগোসিয়েশনের উপ-সহকারী সচিব
ছিলেন। তিনি ঢাকাস্থ মার্কিন
দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন,
ইউক্রেনের কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক বিষয়ক পরামর্শদাতা ছাড়াও চীন, হংকং, তাইওয়ান,
গিনি ও ওয়াশিংটনে নানা
দায়িত্ব পালন করছেন।
মিলির
মনোনয়ন এরই মধ্যে সিনেটে পাঠানো
হয়েছে। সিনেটে
শুনানির পর মিলিকে যোগ্য
মনে হলে
তবেই মনোনয়ন
চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রদূত
করে তাকে
ঢাকায় পাঠানো হবে। মিলি ঢাকায়
রাষ্ট্রদূত হলে বর্তমান
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
মন্তব্য করুন
একদিনের
সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১০ মে) সকাল
৭টা ১০ মিনিটে তিনি
ঢাকা থেকে রওনা করেন।
বৃহস্পতিবার
(৯ মে) এ তথ্য
জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব এমএম ইমরুল
কায়েস রানা। তিনি বলেন, `প্রধানমন্ত্রী
টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন'।
এ
বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী
মাহবুবুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা জানাবেন।
পরে ১৯৭৫ সালের ১৫
আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু ও অপর শহীদের
বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ
ও মোনাজাতে অংশ নেওয়ার কথা
রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন