১ অক্টোবর ২০০১। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে জুলাই মাসে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে ক্ষমতা হস্তান্তর হয় শান্তিপূর্ণ ভাবে। কিন্তু ১ অক্টোবরের নির্বাচনে ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা তান্ডব শুরু করে, শুরু হয় সন্ত্রাস, নারকীয়তার বিভৎস উৎসব। ঐ সময়কার ঘটনা উঠে এসেছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সহে না মানবতার অবমাননা’ শীর্ষক লেখায়। পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে আজ ৫ অক্টোবর লেখাটি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হলো-
এই চক্রটি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছে পরিকল্পিতভাবে। এর আগে সার
কারখানা উড়িয়ে দিয়েছে, পাটের গুদামে আগুন দিয়েছে। বাঙ্কার বানিয়ে অস্ত্র হাতে
নিয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকারের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ করেছে বহু অঘটন ঘটিয়েছে যাতে একদিকে
ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। অপরদিকে স্বাধীনতার সুফল বাংলার জনগণ না পায়। যুদ্ধের বিজয় যেন
অর্থহীন হয়ে পড়ে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেও দেশকে যখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী
করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন সংবিধানে
প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে গণতন্ত্র তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাবার কর্মসূচি দিলেন। দুর্নীতি
দূর করার আহ্বান জানালেন। ক্ষেতে খামারে উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মসূচি দিলেন। প্রতিটি মহকুমাকে
জেলা, থানা কাউন্সিল গঠন করলেন। বহুমুখী গ্রাম সমবায় গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯টি জেলাকে
ভেঙ্গে ৬৪ জেলা এবং প্রতিটি জেলায় জেলা গভর্নর নিয়োগ দিয়ে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী
করা হলো। সকল রাজনৈতিক দলকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে এসে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার পদক্ষেপ
নিলেন। সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসহ রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত
প্রতিটি স্তরকে সমন্বয় করে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত করলেন। সবুজ বিপ্লবের ডাক
দিলেন। আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অর্থনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। অর্থনীতি
চাঙ্গা হতে শুরু করল। প্রবৃদ্ধি অর্জন বৃদ্ধি পেল, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেল।
দারিদ্র্য হ্রাস পেতে শুরু করল। উৎপাদন বৃদ্ধি পেল। বাম্পার ফলন হলো।
নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে শুরু করল। সাধারণ মানুষ বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখতে
শুরু করল, নতুন জীবনের আকাঙ্ক্ষায় উদ্বেলিত হলো।
জীবনকে অর্থবহ করার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হলো। কিন্তু মানুষের সে সুখ
সইল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করল সপরিবারে। মার্শাল ল' জারি হলো।
১১ বছর ধরে প্রতি রাতে কার্ফু থাকত।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে নির্বাচন নিয়ে নতুন খেলা শুরু হলো।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ইয়াহিয়া যে তথ্য পায় নি বলে তাদের আফসোস ছিল বাংলার মানুষ
আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল, সরকার গঠনের সুযোগ দিয়েছিল কিন্তু ইয়াহিয়ার
প্রেতাত্মা, জারজ সন্তানরা এবার আর ভুল করল না। সেই দালালরা নতুন প্রক্রিয়া শুরু করল।
তা হলো নির্বাচন হবে তবে রেজাল্ট আগেই তৈরি থাকবে। যেমনি তৈরি থাকবে তেমনি রেজাল্ট
হবে। জনগণের ভোটে কি আসে যায়। এরপর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে এই খেলাই চলতে থাকল। এই
খেলার বা ম্যাকানিজম সত্ত্বেও ১৯৯৬ সালে কোনোমতে দেশবাসীকে মুক্ত করতে পেরেছিলাম। দেশের
মানুষের ভোটের ফলাফল মানুষের হাতে তুলে নিয়েছিলাম। তার ফলে পাঁচটা বছর দেশের উন্নতি
হয়েছে। ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে ভাতের অধিকার পাওয়া যায় না। দেশ কখনো
দারিদ্র্যমুক্ত হবার সুযোগ পায় না। তাই আন্দোলন সংগ্রাম করেছি জনগণের ভোটের অধিকার
অর্থাৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য।
(সূত্র: শেখ হাসিনা
রচনা সমগ্র-২।। পৃষ্টা:৩২-৩৩)
মানবতা অবমাননা শেখ হাসিনা অক্টোবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি চাকরি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
মন্তব্য করুন
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রধানমন্ত্রী নসরুল হামিদ
মন্তব্য করুন
চাকরির বয়সসীমা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জনপ্রশাসন মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গত ১৭ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রীকে দেওয়া এক ডিও লেটারে উল্লেখ করেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইস্তেহারে ৩৩ নং পৃষ্ঠায় শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। আর এ রকম একটি ডিও লেটারে শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন দেশে চাকরির বয়সসীমা উল্লেখ করেছেন।