ইনসাইড বাংলাদেশ

সহে না মানবতার অবমাননা


Thumbnail

 

১ অক্টোবর ২০০১। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে জুলাই মাসে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে ক্ষমতা হস্তান্তর হয় শান্তিপূর্ণ ভাবে। কিন্তু ১ অক্টোবরের নির্বাচনে ফলাফল ঘোষনার সাথে সাথে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা তান্ডব শুরু করে, শুরু হয় সন্ত্রাস, নারকীয়তার বিভৎস উৎসব। ঐ সময়কার ঘটনা উঠে এসেছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘সহে না মানবতার অবমাননা’ শীর্ষক লেখায়। পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে আজ ৮ অক্টোবর লেখাটি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হলো-

 

মানবাধিকার সংস্থা অধিকার, মিডিয়া মনিটর ডেমোক্রেসি ওয়াচ, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, বিসিডিজেসি, এমএমসি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে গত এক বছরে মোট হত্যা ও অস্বাভাবিক মৃত্যু ২৩,৭৪০ জন, ধর্ষণ ১৪৭৭, শিশু ধর্ষণ ৭০১, নারী নির্যাতন ৬৪৯১, এসিড নিক্ষেপ, ৪১০, সাংবাদিক নির্যাতন ৪২৫ (নিহত ৩), পুলিশী নির্যাতনে নিহত ১০১।

কেবল সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে সংস্থাগুলো তাদের রিপোর্ট প্রণয়ন করেছে। মোট সংঘটিত ঘটনার এক-তৃতীয়াংশ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। হত্যা, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

প্রতিদিনই জাতীয় দৈনিকের অসংখ্য সংবাদ ছাপা হয়। কোথাও খুন, কোথাও ধর্ষণ এবং কোথাও বা নির্মম নির্যাতন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা পর্যন্ত নেওয়া হয় না। সরকারের প্রচ্ছন্ন মদদে এসব সহিংস ঘটনা ও পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে। এর কয়েকটি চিত্র নিচে নেওয়া হলো :

১/ মহিমা

রাজশাহী জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম পুঠিয়া । দশম শ্রেণীর ছাত্রী মহিমা খাতুন অভাব-অনটনের সংসারেও অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করত। স্বপ্ন ছিল একদিন বড় হবে। বাবা ও ভাই আওয়ামী লীগের কর্মী ছিল। অক্টোবর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে তারা কাজ করে। আর তাই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী ক্যাডারদের রোষ ছিল তাদের ওপর। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সন্ত্রাসী উজ্জ্বল ফরিদ, ফারুক ও সেলিম মহিমার ওপর আক্রমণ করে । তাকে অস্ত্রের মুখে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং সেই ধর্ষণের ছবিও তুলে। তারপর তাদের শাসায় যে, এরপরও যদি আওয়ামী লীগের কাজ করে তাহলে গ্রামের ঘরে ঘরে এই ছবি বিলি করা হবে। কিশোরী মহিমা এই অপমান সহ্য করতে না পেরে ১৯ ফেব্রুয়ারি আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার খবর পত্রিকায় ছাপা হলে সারা দেশের মানুষ বিশেষভাবে আলোড়িত হয়।

২/ যে পূর্ণিমায় এখন কৃষ্ণপক্ষ

‘ঘর হইতে বাহির হইয়া জ্যোৎস্না ধরতে যাই আমার হাত ভর্তি চাঁদের আলো হাত খুললেই নাই।' ঘর হতে বের হয়ে কবিরা আসে জ্যোৎস্না ধরতে কিন্তু যখন কিছু মানুষ নামের পশুরা আসে তখন জ্যোৎস্না যেন ঝলসানো একখণ্ড রুটি হয়ে যায়। পূর্ণিমা রাণী শীল ১৪-১৫ বছরের এক কিশোরী। চার বোন এবং পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে শেষের দিকে তার অবস্থান। এদের পিতা এবং বড় ভাইরা নাপিত এটাই পেশা। পূর্ণিমা উল্লাপাড়া হামিদা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রী। উল্লাপাড়ায় দেলুয়া গ্রামে তার বাড়ি। সেই গ্রামেরই বাবলু ডাক্তারের দুই বাচ্চাকে পড়িয়ে সে কিছু টাকা পায় এবং সেই টাকার মধ্যে থেকেও সে নিজের জন্য একজন গৃহশিক্ষক রেখেছে। এভাবে পূর্ণিমা তার সমাজ ব্যবস্থার হাজারো অসুবিধার মধ্যেও নিজের জন্য একটা অবস্থান সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু অসংখ্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতো তার এবং তার পুরো পরিবারের ওপর চেপে বসেছে কতকগুলো মানুষরূপী পশুর অভ নখের হিংস্র থাবা। অক্টোবরের প্রথম দিন অষ্টম জাতীয় সংসদের ভোট গ্রহণ করার সময় পূর্ণিমা তার বাড়ির কাছে দেলুয়া হাইস্কুলের কেন্দ্রে যায়। সেখানে তার গৃহশিক্ষক সাধন পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন, পূর্ণিমাকে দেখে সে বাসা থেকে খেয়ে আসার জন্য তাকে একটু বসতে বলে। সাধন দুপুরের খাবার খেয়ে ফিরে আসলে পূর্ণিমা বাড়ির দিকে রওনা দেয়। এ সময় কয়েকজন বিএনপি কর্মী ও সমর্থক পূর্ণিমাকে শাসায় ভোটকেন্দ্রে সাময়িক বসার জন্য। যা হোক, নির্বাচনে বিএনপি তথাকথিত চারদলীয় জোট নির্বাচিত হবার পর তাদের ওপর নেমে আসে বিএনপি সন্ত্রাসীদের খড়গহস্ত। তারা বৃদ্ধ অনিল চন্দ্র শীলের কাছে চাঁদা দাবি করে এবং না পেলে মারার হুমকি দেওয়া হয়। অনিল বাবু তাদের কাছে অনেক হাতজোড় করে মিনতি করে বলে, বাবা গরিব মানুষ চাঁদার টাকা কোথায় পাব। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তার কথায় কর্ণপাত করে নি।

৮ অক্টোবর পূর্ণিমা যায় গৃহশিক্ষকতা করতে। ফেরার পথে একই গ্রামের ছেলে এবং বিএনপি কর্মী আলতাফ অশ্লীল ইঙ্গিত করে, আজেবাজে কথা বলে। কিন্তু পূর্ণিমা ভয়ে তার কথার কোনো জবাব না দিয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসে। পূর্ণিমা রাতে ভাত, তরকারি রান্না করে টিফিন বাটিতে ভরে তার বাবার কাছে দেয় ভাইয়ের খাবার জন্য। ছেলের ভাত নিয়ে তিনি বগুড়া-নগরবাড়ি সড়কের কাছে বিএনপির স্থানীয় অফিসের সামনে এলে ২০-২৫ জন তাকে ঘিরে ধরে। যুবকদের প্রত্যেকের হাতে তখন লাঠি এবং বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ছিল। তাকে ভীষণ প্রহার করার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ছেলে গোপাল বাবাকে এই অবস্থায় দেখে কিছু টাকা বাড়ি থেকে এনে আহত বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পূর্ণিমার মা বাসনা রাণী শীল এমন অবস্থায় পূর্ণিমা এবং ছেলে অর্জুনকে নিয়ে স্বামীর অবস্থা দেখতে রাস্তায় বের হতেই সন্ত্রাসীরা হামলে পড়ে। তারা পূর্ণিমাকে জোর করে নিতে চাইলে তার মা তাতে বাধা দেয়। তখন সন্ত্রাসীরা বাসনা রাণী শীলকে মেরে হাত ভেঙে দেয়। এ অবস্থায় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পূর্ণিমা কিছু না বুঝেই দৌড়ে পালায়। সে পার্শ্ববর্তী ইসমাইল দারোগার কলাবাগানে লুকোয় । এই সময় সন্ত্রাসীরা ফাঁকা বাড়িতে লুটতরাজ চালায়। কিন্তু এত কিছু করার পরও শেষ রক্ষা হয় নি পূর্ণিমার। ছোট্ট একটি কিশোরী শেষ পর্যন্ত লুকিয়ে রাখতে পারে নি নিজেকে। ইসমাইল পুলিশের স্ত্রীর কাছে পূর্ণিমা অনেক কাকুতি মিনতি করে একটু আশ্রয়ের জন্য। তিনিও তাকে একটু আশ্রয় দেন নি। আমি জানি না সেই মহিলার কোনো কন্যা সন্তান আছে কিনা, তবে না থাকাই ভালো।

এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে পূর্ব দেলুয়ার একটি শ্মশানঘাটের পতিত জায়গায় নিয়ে যায়। পূর্ণিমা জানায়, অন্ধকারে সে গলার আওয়াজ ও ধর্ষণের সময় কিছু লোককে চিনতে পারে। সে আসামিরা কিভাবে তাকে বিবস্ত্র করেছে এবং ধর্ষণ করেছে। ওই সময় সে চিৎকার করে কিন্তু সন্ত্রাসীরা তার মুখ চেপে ধরে রাখে। ২ জন ধর্ষণ করার পর শেষের দিকে সাধন, অসীম, আকবর মেম্বার ঘটনার জায়গায় আসে এবং তাকে রক্ষা করে। পূর্ণিমাকে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস হাসপাতালে চেকআপ করানো হয়। তার শারীরিক পরীক্ষায় ধর্ষণের যাবতীয় আলামত পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, পূর্ণিমার মেডিক্যাল রিপোর্ট রেখে এবং রিপোর্টের বয়স দেখে সিরাজগঞ্জের একজন প্রৌঢ় উকিল কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, আমার এত বছরের আইন পেশায় ধর্ষণ মামলা করেছি অনেক ধর্ষিতার মেডিক্যাল রিপোর্টও করেছি। কিন্তু এই রিপোর্টে যে নির্মম পাশবিকতা দেখেছি তারপরও ওই কিশোরী মেয়েটি কোন মানসিক জোরে বেঁচে আছে এটাই আশ্চর্য। উকিল সাহেব আপনি আমার থেকে অনেক বড় তারপরও বলতে হয় এ যে বাংলার সর্বসহা প্রকৃতি। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, এত ঘটনা ঘটার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার এমপি এম আকবর আলী বক্তব্য দেয় সাংবাদিক সম্মেলন করে। তিনি বলেন, নির্যাতিত হয় নি ধর্ষিতও হয় নি। তিনি বলেন, মেডিক্যাল রিপোর্ট পূর্ণিমার জবানবন্দী কিছুই সত্য নয়। এই বক্তব্য রাখার পর সেখানকার সাধারণ জনগণ অসন্তোষ প্রকাশ করে। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি, আইনপ্রণেতা কিভাবে বলেন ধর্ষণের ঘটনা ঠিক নয়। কারণ পূর্ণিমার মতো সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ার মেয়ের বড়ই অভাব। ধর্ষিত হওয়ার পর সাধারণত লুকিয়ে রাখা হয় অথবা কেউ কেউ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে আত্মহত্যা করে। সেই সময় একজন দৃঢ়চেতা কিশোরীর এই সাহসকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেই সাংসদের উচিত ছিল তার পাশে দাঁড়ানো এবং তার দলীয় সন্ত্রাসীদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া। অথচ তিনি পূর্ণিমার অভিযোগ সর্বোপরি ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্টকে অস্বীকার করে বলেন, পূর্ণিমা ধর্ষিত হয় নি । কেন এই জনপ্রতিনিধি এই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা উড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে কি তিনিই এ ঘটনার নেপথ্য নায়ক? তা না হলে তিনি পূর্ণিমার মাকে ডেকে কেন মামলা তুলে ফেলার হুমকি দেন। আবার তিনি পূর্ণিমার বাবাকে ২০ হাজার টাকার লোভ দেখান মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য। পূর্ণিমার ব্যাপারটা একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লেই বোঝা যায় এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত প্রতিটি ব্যক্তির আদালতে বিচার হচ্ছে এটা দেখতে চাই। আমরা একজন আইনজ্ঞ, সুকঠিন দৃঢ়চেতা পূর্ণিমা শীলকে দেখতে চাই। যে আর দশটা নির্যাতিত মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে আইনি সহায়তা দেবে

৩/ পিতার কোল থেকে কেড়ে নেওয়া হলো শিশু নওশীনকে

আইয়ামে জাহেলিয়াতের সময় শিশু কন্যার জন্ম হলে নিষ্ঠুরভাবে মেরে মাটির নিচে ফেলা হতো। কিন্তু নবী কারীম (সা)-এর সময় প্রথম শিশু কন্যার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করা হলো যার এক পর্যায়ে আমরা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান শরীফে পাই— মায়ের মায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। সুতরাং বলার অপেক্ষা রাখে না নারীকে মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থের মাধ্যমে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিছুদিন আগেও প্রথম সন্তান মেয়ে হলে দাদা-দাদি বা নানা-নানী মনে হয় একটু কষ্ট পেতেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, একটি কন্যা শিশুর আগমনের পর গোটা পরিবারের সবাই আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠছে, ঠিক সেভাবে ১০ মাস মায়ের গর্ভে থাকার পর, বাবা-মা, চাচা-চাচী, ফুফু সবাইকে আনন্দের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়ে এ পৃথিবীতে এসেছিল শিশুকন্যা মেরিয়ান ইসলাম নওশীন। তারপর আস্তে আস্তে তার সবার চোখের মণি হয়ে বেড়ে উঠা, কলা খেতে খুব পছন্দ করত নওশীন এবং তার সবচেয়ে বেশি আবদার ছিল ছোট চাচীর কাছে। এক বছরের জন্মদিন পালিত হলো খুব ধুমধামের সাথে। কত খেলনা, কত জামাকাপড়, পুতুল সব স্মৃতির ধুলো জমিয়ে সযত্নে সাজানো ঘরের একটি কোণায়। স্মৃতি বলছি কারণ ওই খেলনা দিয়ে নওশীন আর কোনোদিন খেলতে আসবে না। নির্মমভাবে সন্ত্রাসীদের হাতে পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ স্থান বাবার কোল থেকে চলে যেতে নওশীনকে এই পৃথিবীর যত সুগন্ধী গন্ধ সাথে করে নিয়ে গেছে নওশীন। কৃষ্ণচূড়ার সমস্ত রং নওশীনের রক্তের সাথে মিশে গেছে। তাই তো মনে হয় যখন এই সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আল্লাহর মাল আল্লায় নিয়েছেন। পরম পিতা তখন কানে আঙ্গুল দেন। কারণ তাহলে তো তাকেই সন্ত্রাসীদের গডফাদার বলা হয়।

দৈনিক সংবাদ, ১০ মে ২০০২

৪/ ফাহিমা ধর্ষণ ও আত্মহত্যা

ঢাকার মিরপুরের টোলারবাগে গত ৩ মার্চ রাতে আত্মহত্যা করে ১৪ বছরের ফাহিমা। আমাদের ভেবে দেখার বিষয় কেন আত্মহত্যা করবে ফাহিমা। সামান্য দোকানদারের মেয়ে ফাহিমাকে তার ভাইয়ের চটপটির দোকানের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডার সুমন, নাছির, হালিম আরও অনেকে। তারপর যা হবার তাই হয়েছে প্রকৃতি ধর্ষিত হয়েছে গরুর হাল দিয়ে। যে জমি এখনও ফসলের জন্য উপযুক্ত নয়, যে জমিটি প্রস্তুত হচ্ছিল ফসল হবার জন্য তখনই কতিপয় হায়েনা কর্ষণ করে গেল জমিটিকে। যেন আমাদের চোখে আঙ্গুল তুলে তারা দেখিয়ে দিল তোমরা আমার জন্য উপযুক্ত নও, তোমরা জান না কিভাবে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হয়। ফাহিমা আমরা সবাই তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থী। কারণ মায়ের আঁচল, বাবার কোল কিছুই তোমাকে ধরে রাখতে পারল না। কিন্তু ফাহিমা তোমার কাছে আমার প্রশ্ন তুমি কেন আত্মহত্যা করলে, তুমি কেন মাথা উঁচু করে যুদ্ধ করলে না ওইসব নরপিশাচদের বিরুদ্ধে। কেন গেলে না তাদের কাছে যারা সেইসব সন্ত্রাসীদের লালন করছে। আমরা আমরণ অনশন করতে থাকতাম তোমার পাশে। এইটুকু মনে হয় আমাদের মেয়ের জন্য আমরা করতে পারতাম। কিন্তু তুমি অভিমানের বশে ছেড়ে গেলে আমাদের, লজ্জিত করে গেলে আমাদের। হয়তো তোমার সব দুঃখ-কষ্ট মাটির নিচে কবর হয়ে গেছে, হয়তো বৃষ্টির ধারা জলে তোমার শরীরের রক্ত ধুয়ে-মুছে গেছে। কিন্তু আমরা যারা প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত হচ্ছি বল তো তাদের রক্ত মুছে দেবে কে?

৫/ পঙ্গু শেফালী রানীকে ধর্ষণ

পুরুষরূপী জানোয়ার না হলে শেফালী রানীর মতো একজন পঙ্গু মহিলার ওপর এ আক্রমণ কেন—সেটা কি তার নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধ। নাকফুল কেড়ে নেওয়ার নামে তার ওপর যে নির্যাতন চলেছে তার কথা বলতে গেলে কলম থেকে মনে হয় কালি নয় রক্ত আসছে। কিন্তু নাকফুল কেন সধবা বা সম্ভ্রমের প্রতীক হবে। শেফালি রানী খুলে ফেলুন আপনার নাকফুল। ভবদেশের ধনী মানুষদের কাছে আবেদন জানান, আপনার দুটো কৃত্রিম পা লাগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে আর কিছু না থাক পা দিয়ে তো দুটো লাথি মারতে পারবেন নরপশুদের যারা আপনাকে কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছে আঘাতে আঘাতে।

৬। তৃষা হত্যাকাণ্ড

স্কুলছাত্রী কিশোরী তৃষার মাত্র ১১ বছর বয়স। নিঃসন্তান চাচার কাছে লালিত পাশেই নিজের বাবা-মা থাকে। সুতরাং আদর ভালোবাসার কোনো অভাব তার ছিল না। কিন্তু কিছু বখাটে তরুণের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাকে বেছে নিতে হয় মৃত্যুর পথ। কিন্তু সে বাঁচতে চেয়েছিল। নরপশুরা যখন তাকে ধরার জন্য ধাওয়া করে, উপায়ন্তর না দেখে সে লাফ দেয় পুকুরে সাঁতার জানত না সে, তাই সে ওদের কাছেই আকুতি করেছিল তাকে পানি থেকে উঠানোর জন্য। কিন্তু মানুষবেশী সেই শয়তানরা পুকুরের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছে তার করুণ মৃত্যু এবং হায়েনার হাসি ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো গাইবান্ধায় ।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৯ জুলাই ২০০২

৭। বাপ্পী হত্যাকাণ্ড

নয় বছরের ছোট্ট বাপ্পী স্বাভাবিকভাবেই মাকে আশ্রয় করে তার জীবন। এ পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার কিছুদিন আগেও সে মাকে নিয়ে কবিতা লিখেছিল। 'মা কথাটি ছোট, আরও কিন্তু যেন ভাই, মায়ের চেয়ে বড় এ ভুবনে নাই। কিন্তু সে কি জানত তার ভুবন কত ছোট হয়ে আসছে। ৮ বছরের বাপ্পীকে তারই খালাতো ভাই এবং কিছু বন্ধু-বান্ধব মিলে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা পাবার আগেই তারা নির্মমভাবে খুন করে বাপ্পীকে এবং ফেলে দেয় শীতলক্ষ্যায়। শীতলক্ষ্যার জল কি পেরেছিল বাপ্পীর ছোট্ট হৃদয়ের সব কষ্টকে ধারণ করতে। সমাজের এই ভয়াবহ চিত্রতো আগে লক্ষ করা যায় নি। হঠাৎ করেই কেন এ অবক্ষয়। সমাজবিদরা হয়তো নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করবেন কেন এ সামাজিক অবক্ষয়। কিন্তু তাতে করে কি বাপ্পীকে ফিরিয়ে দিতে পারবে তার মায়ের কোলে। এভাবে যেন কোনো বাপ্পীকে হারিয়ে যেতে না হয় "তার জন্য দরকার সচেতন প্রতিরোধ।

দৈনিক আলো, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২

 

 (সূত্র: শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র-২।। পৃষ্টা:৩৯-৪৪)


মানবতা   অবমাননা   শেখ হাসিনা   অক্টোবর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রার্থীর পক্ষে গোপন বৈঠক,৫ প্রিসাইডিং অফিসার গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১০:২২ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি রিসোর্টে এক প্রার্থীর পক্ষে অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে এক শিক্ষক ও পাঁচ প্রিসাইডিং অফিসারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

 

সোমবার (৬ মে) রাত সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। 


আরও পড়ুন: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে দাওয়াত করা হবে: কাদের

 

গ্রেপ্তাররা হলেন, যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও রাশিদাজ্জোহা সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সিরাজুল ইসলাম, এসবি রেলওয়ে কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওমর আলী কওমি মহিলা মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ও এসবি রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ আবুসামা, বাহুকা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বনবাড়িয়া পাইকপাড়া মডেল স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক পিএলসির এরিয়া অফিসের প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা ও হরিণা বাগবাটি স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ইয়াসিন আরাফাত। 

 

এছাড়া, এই গোপন বৈঠকের মূল আয়োজক, শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আমিনুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়।


আরও পড়ুন: উপজেলাতেও আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ

 

এ সময় জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসে যে, কতিপয় প্রিসাইডিং অফিসার একজন লোকের সাথে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গোপন বৈঠক করছে। শোনার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ রিটানিং কর্মকর্তাসহ অভিযান পরিচালনা করে। তবে তারা বুঝতে পেরে আগেই পালিয়ে যায়।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে রিটানিং অফিসার সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপার প্রযুক্তির মাধ্যমে সেখানে কারা ছিলেন তা চিহ্নিত করেন। এরপর পাঁচজন প্রিসাইডিং অফিসার ও এই বৈঠকের মূল আয়োজককে গ্রেপ্তার করেন।'


আরও পড়ুন: চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী

 

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, ‘আমরা সেখান থেকে ডিজিটাল ফুট প্রিন্ট সংগ্রহ করে নিশ্চিত হই সেখানে কারা কারা উপস্থিত ছিলেন। এরপর এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মামলায় আমরা ৫ জন প্রিসাইডিং অফিসারসহ বৈঠকের আয়োজনকারীকে গ্রেপ্তার করি।’ 

 

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছি সেখানে আরও কে কে উপস্থিত ছিলেন এবং এর সাথে আর কে কে জড়িত। তারপর সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রিসোর্টটিতে অভিযান পরিচালনা করে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদে এর সত্যতা পাই। পরে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করি এবং তাদের সাথে পরামর্শ করেই মামলা দায়ের করি। এখানে আমাদের যে ১০ জন প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, ইতোমধ্যে আমরা তাদের পরিবর্তন করেছি এবং অন্যদের দায়িত্ব দিয়েছি।’ 

 

তিনি আরও জানান, ‘প্রার্থীকে আমরা শোকজ করেছি এবং তার উত্তর তিনি দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

কোন প্রার্থীর পক্ষে বৈঠক চলছিল সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আশা করছি নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমরা জানতে পারব তারা কোন প্রার্থীর জন্য একত্রিত হয়ে বৈঠক করছিলেন। যার নাম আসবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


উপজেলা নির্বাচন   প্রিজাইডিং অফিসার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত

প্রকাশ: ১০:১৩ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আদালতের আদেশের কারণে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (৬ মে) কমিশন এ সিদ্ধান্ত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান। 

প্রথম ধাপের ৮ মে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র একদিন আগে এ উপজেলায় সব পদের নির্বাচন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন। সোমবার (৬ মে) রাতে ইসি সচিব আতিয়ার রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৮ মে নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ছালেহা বেগম তার মনোনয়ন পত্রটি বৈধ করার জন্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। পরে হাইকোর্ট তার মনোনয়ন পত্রটি বৈধ ঘোষণা করে ২৫ এপ্রিল তাকে প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্দেশ দেন। মহামান্য হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে ইসি। আপিলে তার মনোনয়ন পত্রটির বিষয়ে সোমবার (৬ মে) নো অর্ডার প্রদান করেন আপিল বিভাগ। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এই আদেশের নিমিত্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন স্থগিত করা হলো। 

জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান গণমাধ্যমে বলেন, নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হওয়ার চিঠি মেইলে পাওয়া গেছে। পরে রাত ১১টার দিকে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও মেঘনা উপজেলায় ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করা হলেও বাকি উপজেলার নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।


নাঙ্গলকোট   উপজেলা নির্বাচন   স্থগিত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণকালে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আটক ১১

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগে প্রায় ২৩ লাখ টাকা পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানপ্রার্থী, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনকে আটক করেছে র্যাব। এ সময় তার ১১ জন সহযোগীকেও আটক করা হয়।

পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীনের ব্যবহৃত একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (৬ মে)  দিবাগত রাত ১২টার দিকে সুজানগরের নির্বাচনী এলাকা থেকে তাকে আটক করেন র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের সদস্যরা।

তাৎক্ষণিকভাবে আটকদের সবার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে, আটকদের মধ্যে সুজানগর পৌরসভার ৪ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরও রয়েছেন।

শাহিনুজ্জামান শাহীন এবারের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। তিনি সুজানগর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। এছাড়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, আগামী ৮ মে সুজানগর উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষ্যে আমাদের নিয়মিত টহল দল চর ভবানীপুর এলাকায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনকে দুই ব্যাগ ভর্তি ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা ও ১০ সহযোগীসহ আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদে জানা গেছে, ভোটারদের নানাভাবে প্রভাবিত করার জন্য টাকাগুলো বিতরণের জন্য রাখা হয়েছিল। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তিনি এসে ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি জানান, আটকদের র‌্যাবের পাবনা অফিসে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।


উপজেলা চেয়ারম্যান   নির্বাচন   র‌্যাব   পাবনা   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

প্রকাশ: ০৯:৩৪ এএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

আগামী ৮ মে ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে In Aid to the Civil Power এর আওতায় ৬ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃংখলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।


উপজেলা   নির্বাচন   আইনশৃঙ্খলা   ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে ভারতে লফার্ম নিয়োগ বাংলাদেশের

প্রকাশ: ১০:০৬ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই স্বত্ব রক্ষার জন্য আইনি লড়াই করতে ভারতীয় আইনজীবী ফার্ম নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ‘মাসন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’কে ভারতের আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৬ মে) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে লিখিতভাবে এ তথ্য জানায় শিল্প মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক জিআই পণ্যের তালিকা করে আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারোওয়াত সিরাজ শুক্লা।

সারোওয়াত সিরাজ শুল্কা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেধাসত্ত্বের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। বাংলাদেশের জিআই পণ্যের অধিকার রক্ষার জন্য সরকার আইনজীবী ফার্ম ভারতে নিয়োগ করেছে। ‘মাসন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ নামে একটি ভারতীয় ল ফার্ম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে ভারতের মাটিতে লড়াই করবে। তারা রেকটিফিশনের জন্য, বাতিল করার জন্য আবেদন করবেন বলে জানতে পেরেছি। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট বিজয়।’

উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সকল জিআই পণ্যের তালিকা করতে সরকারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ১৯ মার্চের মধ্যে এ তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে জিআই পণ্যের তালিকা তৈরি ও রেজিস্ট্রেশনে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।

১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সব জিআই পণ্যের তালিকা তৈরির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন টাঙ্গাইলের মেয়ে ব্যারিস্টার সারোওয়াত সিরাজ শুক্লা।

এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি ‘টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের নয়, দাবি ভারতের’ এমন শিরোনামে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ওই খবর প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে সরকারের। এ নিয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের বলে জানান। পরবর্তীতে ৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়।


টাঙ্গাইল শাড়ি   জিআই পণ্য  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন